Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তান লড়াই, বিপাকে শত শত মানুষ!

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান গুলি ছোড়াছুড়িকে কেন্দ্র করে ভারত অধ্যুষিত কাশ্মীরের শ্রীনগর থেকে প্রচুর পরিমাণ মানুষ সীমান্ত পার হয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। উত্তর বারামুল্লা জেলার ডেপুটি কমিশনার নাসির আহমেদ নাকাশ জানান, ২০০৩ সালে যুদ্ধবিরতির পর এই দুই প্রতিপক্ষ দেশের মধ্যে উরি সেক্টরে গত ১৫ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম সংঘর্ষ এত বেড়ে গিয়েছে। সীমান্তবর্তী গ্রামের প্রায় ১,০০০ জন মানুষ পালিয়ে গিয়েছেন।

বাকিদের কেউ আছেন আত্মীয়দের কাছে, কেউ আছেন সরকারি তত্ত্বাবধানে। ৪০ বছর বয়সী নাজির আহমেদ জানান, গত শনিবার সীমান্তের অন্যপাশ থেকে ঘোষণা আসে সবাইকে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার। ফলে সবাই খুব চিন্তিত এবং আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। শ্রীনগর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে চুরুন্দা গ্রামে নাজির আহমেদের বাড়ি। বর্তমানে উরির একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরিবারসহ অবস্থান করছেন তিনি।

Source: Al Jazeera

নাজির আহমেদের মতো আরো একজন, গোলাম নবী, দাবী করেন যেন ভুক্তভোগী মানুষদের ভালোর জন্য দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। “আমরা চাই সরকার আমাদের দ্রুত কোনো নিরাপদ স্থানে থাকার স্থান প্রদান করে। বুলেট আর বন্দুকের ভয়ে ভীত এই গ্রামে আমরা আর থাকতে চাই না।” বলেন তিনি।

সীমান্তের এই সমস্যায় ভুগছে সমস্ত গ্রাম। তবে এদের মধ্যে সবচাইতে বাজেভাবে আক্রান্ত হয়েছে চুরুন্দা, সিলিকেট এবং তিলওয়ারী গ্রামগুলো। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেকার এই অস্থিরতা জন্ম নেয় জাম্মু শহরের সানজুয়ান এলাকায় আর্মি বেসে আক্রমণের পর। এই মাসের প্রথমদিকেই ঘটে ঘটনাটি। এতে করে মারা যায় মোট সাতজন সৈনিক। উক্ত ঘটনার জন্য ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে। আক্রমণটিকে কেন্দ্র করে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সিথারামান পাকিস্তানকে এর জন্য অনেক বড় প্রতিদান দিতে হবে বলে জানান তিনি। আর তারপর থেকেই বছর শুরুর সাথে সাথে সীমান্তে পারাপার শুরু হয়।

কয়েকশ’ মানুষ প্রাণভয়ে চলে যান অন্য দেশে। তথ্যানুসারে, ঘরবাড়ি এবং গবাদি পশুপাখির মৃত্যু ছাড়াও এই গোলাগুলিতে গত জানুয়ারি থেকে প্রায় ১৫ জন মানুষ নিহত হন। ২০০৩ সালে করা শান্তিচুক্তি ভেঙ্গে পড়ে যখন গত তিন বছরে সামরিক সদস্যসহ প্রায় ১০০ জন মানুষ নিহত হন ভারতে এই সমস্যার কারণে। গত বছরের মে মাসে পরিস্থিতি শান্ত হলেও এই বছরের জানুয়ারি থেকে সমস্যা অনেক বেড়ে যায়। বর্তমানে কিছুটা শান্তি এলাকায় ফিরে এলেও মানুষ ঘরে ফিরতে সাহস পাচ্ছে না। ঘটনাগুলোর দায় অবশ্য কেউ নিতে চাচ্ছে না। দুই দেশ পরস্পরকে দোষারোপ করছে কেবল। ভারতকেও ১৮ জন মানুষ মারার পাল্টা অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে পাকিস্তান। ২০০৩ সালের চুক্তির পরেও লাইন অব কন্ট্রোলের উপরে চলছে গোলাগুলি। ভারত বরাবর এর পেছনে পাকিস্তানের হাত আছে বললেও এড়িয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। কী হবে কাশ্মীরের এই সীমান্তবর্তী মানুষের ভাগ্যে? কবে এই গোলাগুলি থামাবে দুই দেশ? উত্তর এখনো কারো জানা নেই।

ফিচার ইমেজ: independent.co.uk

Related Articles