৩৫ হাজার কৃষকের লংমার্চ মুম্বাইয়ে; আলোচনা শুরু

  • ঋণ মওকুফ ও জমির মালিকানা আদায়ের দাবি নিয়ে ৩৫ হাজারের বেশি কৃষক এখন আছেন মুম্বাইয়ে।
  • মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে ছয় দিনে ১৮০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে মুম্বাইয়ের আজাদ ময়দানে জড়ো হয়েছেন কৃষকেরা।
  • দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামীকাল মঙ্গলবার বিধানসভা ঘেরাও করবেন তারা।
  • ঋণ ও বিদ্যুৎ বিল মওকুফ এবং স্বামীনাথান কমিশনের প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন চায় কৃষকেরা।
  • একইসাথে কয়েক পুরুষ ধরে চাষ করে আসা জমির মালিকানা কৃষকদের কাছে হস্তান্তর এবং সাম্প্রতিক দুর্যোগের শিকার কৃষকদের ক্ষতিপূরণের দাবিও জানাচ্ছেন তারা।
  • আজ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাদনাভিস এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনায় বসেছেন কৃষকদের প্রতিনিধিরা।

অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভার ডাকে ভারতের অর্থনৈতিক রাজধানী মুম্বাইয়ে অবস্থানরত কৃষকদের মাঝে আছেন নারী, শিশু, বৃদ্ধ- সবাই। সরকার কথানুযায়ী কৃষকদের ঋণ সুবিধা প্রদান করেনি বলে দাবি তাদের

মুম্বাইয়ে জড়ো হয়েছেন প্রায় হাজার হাজার কৃষক; Source: bbc.com

কৃষকদের দাবি, প্রদেশ অনেক এগিয়ে গেলেও এর প্রভাব তাদের উপরে পড়েনি। তাদের অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। মুম্বাইয়ের আজাদ ময়দানে জড়ো হওয়ার জন্য ছয়দিন আগে নাসিক থেকে পায়ে হেঁটে রওনা দেন কৃষকরা। তাদের লক্ষ্য ছিল সোমবার সকালে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছানো। শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেটা মাথায় রেখেই খুব সকালে এখানে আসেন তারা।

কৃষকদের মতে, তারা তাদের খরচের অন্তত দেড়গুণ মূল্য পেতে চান। এছাড়া পার্বত্য অঞ্চলে চাষাবাদ করা আদিবাসী কৃষকরাও যেন নিজেদের জমির অধিকার পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হয় সেটিও চান তারা। সরকার তাদের এই দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আগ পর্যন্ত মুম্বাইয়ের আজাদ ময়দানেই অবস্থান করবেন তারা।

কৃষক নেতা বিজয় জাভান্ধিয়া জানান, দেশে কৃষিখাতে আয় করার পরিমাণ অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। তুলা, শস্য, ডাল ইত্যাদি উৎপাদনে আয় অনেক কমে যাওয়ায় দেশের গ্রামাঞ্চলগুলোতে উন্নতি স্থবির হয়ে পড়েছে এবং অর্থনৈতিকভাবে গ্রাম মুখ থুবড়ে পড়েছে। নাসিকের ৬৫ বছর বয়সী নারী শাখুবাই বলেন, তারা কেবল নিজেদের জমির অধিকার চান।

আজাদ ময়দানে অবস্থান করছেন কৃষকরা; Source: DNA India

মিছিলের অন্যতম আয়োজক ধারামরাজ শিন্ধে জানান, তারা জমির জন্য লড়াই করছেন। আদিবাসী হওয়ায় সরকারের উচিৎ তাদের জমির অধিকার তাদেরকে দিয়ে দেওয়া। আন্দোলনটি কষ্টকর, বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের জন্য। নিজেদের কাজ থেকেও পাঁচদিন ধরে বিরত আছেন কৃষকেরা। তবু তারা মরিয়া নিজেদের অধিকার নিয়ে। আধুনিকতার প্রভাবে ধীরে ধীরে কৃষকদের জীবন ভারতে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। ভারতের জনসংখ্যার মোট অর্ধেক মানুষ কৃষিকাজে নিয়োজিত আছেন। তবে দেশের জিডিপির মাত্র ১৫ শতাংশ আসছে কৃষি থেকে।

কৃষিকাজে বর্তমানে আয় করাটা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে ভারতে। কৃষকদের মৃত্যুর ঘটনার ঘটছে অহরহ। ঐতিহাসিক এই লংমার্চ থেকে আশা করা হচ্ছে, এবার হয়তো গোটা পরিস্থিতিতে কোনো পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে।

ফিচার ইমেজ: DNA India

Related Articles

Exit mobile version