Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

পৃথিবীর মেরু পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে আবারও!

  • প্রায় ৪০ হাজার বছর পূর্বে পৃথিবীর মেরু পরিবর্তনের সম্ভাবনা থাকলেও তা হয়নি। সর্বশেষ প্রায় ৭ লক্ষ ৮০ হাজার বছর আগে একেবারে সম্পূর্ণ অদল বদল হয়ে গিয়েছিল উত্তর ও দক্ষিণ মেরু।
  • এর আগের মেরু পরিবর্তনের প্যাটার্ন দেখে বলা যায়, বর্তমান পৃথিবী মেরু পরিবর্তনের ক্লক কিছুটা অতিক্রম করে ফেলেছে।
  • পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র এর মধ্যেই স্থান পরিবর্তন করতে শুরু করেছে, যা থেকে ধারণা করা যায়, পৃথিবী মেরু পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
  • এটি এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত না যে, পরিবর্তনের সময় খুব নিকটেই; তবে এর খুব জোর সম্ভাবনা রয়েছে।

মজার ব্যাপার হলো পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র মেরু পরিবর্তনে বেশ পারদর্শী। পৃথিবীর ইতিহাসে বহুবার উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর বদল হয়েছে। বিগত ২ কোটি বছরের ইতিহাসে প্রতি ২ থেকে ৩ লক্ষ বছর পর পর পৃথিবীতে মেরু পরিবর্তনের নমুনা রয়েছে। এর মাঝে মেরু পরিবর্তনের পরেই আবার পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসার প্রচেষ্টাও চালিয়েছে পৃথিবী।

মেরু পরিবর্তন আসন্ন কিনা তা নির্ণয়ের জন্য স্যাটেলাইট চিত্র ও চৌম্বকক্ষেত্র পরিবর্তনের জটিল হিসাব নিয়ে অধ্যয়ন করছেন বিজ্ঞানীরা। পর্যবেক্ষণ বলে, উত্তর মেরুর চৌম্বকক্ষেত্রটি বেশ নড়বড়ে। যদি চৌম্বক ব্লকগুলো দুই মেরুকে যথেষ্ট দুর্বল করে দেওয়ার মতো শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তাহলে মেরু পরিবর্তন হয়ে যাবে।

পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে পৃথিবীর মেরু; Source: BBC

যদিও মেরু পরিবর্তন পৃথিবীর জন্য নতুন কিছু নয়, তবুও এবার এটি মানবপ্রজাতির উপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র এটিকে সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি ও মহাজাগতিক রশ্মি থেকে রক্ষা করে। মেরু পরিবর্তনের সময় এই প্রতিরক্ষামূলক ঢালের শক্তি প্রায় দশ ভাগের এক ভাগের মতো কমে যেতে পারে। মেরু পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শত শত বছর ধরে চলতে পারে। এই পুরো সময় জুড়ে মহাজাগতিক বিকিরণ হামলে পড়বে পৃথিবীর প্রাণচাঞ্চল্যের মাঝে।

এভাবে এই ক্ষতিকারক রশ্মি পৃথিবীপৃষ্ঠে চলে আসলে তা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। তবে তার আগেই এর চেয়ে অপেক্ষাকৃত দুর্বল চৌম্বকক্ষেত্র কৃত্রিম উপগ্রহগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এর ফলে কৃত্রিম উপগ্রহের সময় নির্ণয়ের পদ্ধতিতে প্রভাব ফেলতে পারে, যা বৈদ্যুতিক গ্রিডকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই গ্রিডগুলোর পতন হলে সারা বিশ্বে ব্ল্যাকআউট হতে পারে, বিজ্ঞানীদের মতে যা কয়েক দশক স্থায়ী হতে পারে।

বৈদ্যুতিক গ্রিড ছাড়া আমাদের মোবাইল ফোন, বাসায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিসহ আরও অনেক কিছুই অকেজো হয়ে যাবে। জিপিএস প্রযুক্তির ক্ষতি হলে তা সামরিক অভিযান থেকে শুরু করে আমাদের গাড়ি পরিচালনার কাজেও সমস্যা দেখা দেবে। স্বয়ংক্রিয় যানবাহন, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও অন্যান্য আবিষ্কারের দ্রুত প্রসারের ফলে আমরা দিন দিন প্রযুক্তির উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। এ কারণে এমন পরিবর্তনে ভবিষ্যতে আমরা বেশ বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে পারি।

তবে এর মানে এই না যে, এর কোনো প্রতিকার নেই। মেরু পরিবর্তন শুরু হওয়ার আগে থেকেই কৃত্রিম উপগ্রহের কোম্পানিগুলো একত্রিত হয়ে এর সম্ভাব্য সমাধান বের করে আনতে পারবে বলে এই মুহূর্তে ধারণা করা যায়।

ফিচার ইমেজ: Metro

Related Articles