সিরিয়ার উত্তরে কুর্দি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল আফরিনে তাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্থল ও বিমান হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে তুরস্ক। কয়েকদিনের গোলাবর্ষণের পর তুরস্ক গত শনিবার সিরিয়ার কুর্দিশ দল ওয়াইপিজি ও পিওয়াইডিকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় বলে খবর প্রকাশ করেছে আল জাজিরা। আঙ্কারা সমর্থিত সিরিয়ার বিদ্রোহী সংগঠন হিসেবে পরিচিত সেনাদল আফরিনে যেতে শুরু করলে প্রবল গোলাবর্ষণ শুরু হয় বলে জানিয়েছে আনাদোলু সংবাদ সংস্থা।
স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় হওয়া এই হামলায় অন্তত সাত জন বেসামরিক মানুষ মারা গেছেন। তুরস্কের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, তারা সে অঞ্চলকে কুর্দিশ সেনাদের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করার লক্ষ্য নিয়েছেন, কেননা উত্তর সিরিয়াকে তারা তুরস্কে হামলা চালানোর ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করছে। তিনি আরও জানান, তারা এরপর পার্শ্ববর্তী শহর মানবিজকেও কুর্দিশদের থেকে মুক্ত করতে অগ্রসর হবেন। ২০১৬ সালে কুর্দিশরা আইএসদের থেকে মানবিজ দখল করে।
এদিকে রাশিয়া জানিয়েছে, আফরিন থেকে তারা রুশ বাহিনী সরিয়ে ফেলেছে। উদ্বিগ্ন হলেও তারা এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে চায় না।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসগলু বলেন, সিরিয়া সরকারসহ এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকেই হামলা সম্পর্কে জানিয়েছে। কিন্তু সিরিয়া অস্বীকার করেছে। শনিবার সকালে তুরস্ক জানায়, তারা আফরিনে ‘অপারেশন অলিভ ব্রাঞ্চ’ নামে এ অভিযান শুরু করেছে।
ওয়াইপিজির মুখপাত্র বিরুস্ক হাসাকা জানান, এ হামলায় তাদের তিনজন যোদ্ধা আহত হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন তাদের মহিলা দলের সদস্য। আঙ্কারার পক্ষ থেকেও হতাহতের খবর জানানো হয়েছে। তাদের মতে, এদের সকলেই কুর্দিশ সেনা।
শনিবার ওয়াইপিজি পরিচালিত ‘সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস’ এর একজন মুখপাত্র বলেন, হামলা চালালে প্রতিহত করা ছাড়া তাদের কোনো উপায় থাকবে না। তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী জানান, স্থল বাহিনী রবিবার হামলায় অংশগ্রহণ করবে। প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছেন, তারা যখন প্রয়োজনীয় কাজটি করেন, তখন কেউ আপত্তি করতে পারে না। এসকল সন্ত্রাসীদের তারা তাদের দেশে হানা দেওয়া থেকে প্রতিহত করবেন।
এদিকে সিরিয়া জানিয়েছে, এটিকে সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করা হবে। সিরিয়ার যুদ্ধে প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। নতুন এই হামলার কারণে আরও অনেক মানুষ মারা যেতে পারে।
ফিচার ইমেজ: The Independent