গত বুধবার সীমান্ত কৌশলের অংশ হিসেবে সিরিয়াতে দীর্ঘকাল তাদের সামরিক উপস্থিতি সম্পর্কে সংকেত দিল যুক্তরাষ্ট্র। আইএস এর পুনরুত্থান রোধ, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রস্থানের ব্যাপারে কূটনৈতিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়া এবং ইরানের প্রভাব কমাতে এ পদক্ষেপের অবতারণা বলে মনে করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভাষণে প্রেসিডেন্ট আসাদের প্রস্থানের জন্য ধৈর্য ধরতে বলেন। তার মতে, রাশিয়া ও ইরান সমর্থন দেওয়ার ফলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষমতা ছাড়বেন না।
সিরিয়া সংক্রান্ত ট্রাম্প প্রশাসনের এ নতুন কৌশল সিরিয়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী পাঠানোর ঝুঁকি ও উদ্দেশ্য পুনরায় সংজ্ঞায়িত হবে। অনেকদিন যাবত সিরিয়াতে সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি সম্পর্কে আইএস এর বিরুদ্ধে লড়ার মতো সংকীর্ণ কারণকেই দেখানো হচ্ছিল। দেশটিতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দুই হাজার স্থলবাহিনী অব্যাহত রয়েছে।
বিদেশের মাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সম্পৃক্তা সম্পর্কে অনেক আমেরিকানের সন্দেহপ্রবণতাকে স্বীকার করে টিলারসন বলেন, “পরিষ্কারভাবে বলছি: সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র তার সামরিকবাহিনী বহাল রাখবে যেন আইএস এর পুনরুত্থান না ঘটে।” যদিও সিরিয়ায় অন্য কূটনৈতিক ব্যাপারও কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে।
সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী সিরিয়া ও ইরান সমর্থিত বাহিনীর দ্বারা ইতোমধ্যে হুমকির সম্মুখীন হয়েছে, যার ফলে গত বছর ইরানীয় ড্রোন ও সিরীয় জেট প্লেন ভূপাতিত করা হয়।
প্রতিরক্ষা সচিব জিম ম্যাটিসসহ ট্রাম্প প্রশাসনের অনেক কর্তৃপক্ষই পূর্বে নীতি সংক্রান্ত কিছু তথ্য প্রকাশ করলেও টিলারসনের বক্তব্যের মানে হচ্ছে একে আনুষ্ঠানিকতা দান করা এবং পরিষ্কারভাবে নিরূপণ করা।
টিলারসনের মতে যখন একটি স্বাধীন ও স্বচ্ছ নির্বাচনে সিরিয়ায় বসবাসরত ইহুদিরাও অংশগ্রহণ করবে তখন আসান ও তার পরিবার ক্ষমতাচ্যুত হবে। কিন্ত এ প্রক্রিয়া সম্পাদিত হতে অনেক সময়ের প্রয়োজন। তাই তিনি আসাদের প্রস্থান ও নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় ধৈর্য্যধারণ করতে বলেছেন।
সিরিয়ার বিরোধীদলীয় সদস্য হাদি আল-বাহরা টিলারসনের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও আরও বিস্তারিতভাবে জানতে চেয়েছেন।প্রতিক্রিয়ায় আসাদ জানান তিনি নতুন বাহিনী দমন ও সিরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদল তাড়াতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
রাশিয়া এ পরিকল্পনাকে সিরিয়া থেকে প্রতিনিধি অপসারণ করে দেশটিকে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে নেওয়ার উদ্দেশ্য হিসেবে অভিহিত করে। আর তুরস্ক এই বাহিনীকে “ত্রাসের সৈন্যবাহিনী’ বলেছে।
ফিচার ইমেজ: Sam La Touch – Overblog