শেষ হয়ে আসছে ঘটনাবহুল ২০১৭ সাল। ট্রাম্পের একের পর এক বিতর্কিত পদক্ষেপ, মোহাম্মদ বিন সালমানের উত্থান, বাশার আল-আসাদের ঘুরে দাঁড়ানো, আইএসের পরাজয়, আলি আব্দুল্লাহ সালেহ’র মৃত্যু– ইতিহাস সৃষ্টিকারী অনেক কিছুই ঘটে গিয়েছে এ বছর। কিন্তু কেমন যাবে আগামী বছরটা? ট্রাম্প কি পদত্যাগ করতে বাধ্য হবেন? সিরিয়ায় কি শান্তি আসবে? বিন সালমান কি সৌদি আরবের বাদশাহ হবেন?
বিজনেস ইনসাইডারের সামরিক এবং প্রতিরক্ষা বিভাগ একটি বিশ্লেষণী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে আগামী বছরে বিশ্ব রাজনীতিতে কী কী উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটতে পারে, তার সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। চলুন দেখে নিই সেই প্রতিবেদনে আলোচিত সম্ভাবনাগুলোর মধ্য থেকে ১০টি উল্লেখযোগ্য বিশ্লেষণ।
ট্রাম্পই থাকবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একের পর এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন। একাধিক নারী তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছে। তার নির্বাচনী প্রচারণার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের সাথে রাশিয়ার যোগাযোগ এবং নির্বাচনকে প্রভাবিত করার ব্যাপারে রাশিয়ার ভূমিকা নিয়ে তদন্ত চলছে। অনেকেই ধারণা করছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষে তার চার বছরের মেয়াদ পূর্ণ করা সম্ভব হবে না। তবে বিজনেস ইনসাইডারের সামরিক এবং প্রতিরক্ষা বিষয়ক সম্পাদক পিটার জ্যাকবসের মতে, ২০১৮ সালে ট্রাম্পের পদত্যাগ করার বা পদচ্যুত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
বেশ কিছু সিনেটর ডোনাল্ড ট্রাম্পের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছেন। তার বিরুদ্ধে এমনকি অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ডেমোক্র্যাটিক পার্টির পক্ষ থেকেই সে উদ্যোগ আপাতত চাপা দেওয়া হয়েছে। কারণ এখনও পর্যন্ত কংগ্রেস এবং সিনেট উভয় হাউজেই ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টিই সংখ্যাগরিষ্ঠ। জ্যাকসের ধারণা, যৌন হয়রানির ব্যাপারে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে না। তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করেই যেতে থাকবেন।
ট্রাম্পের মূল বিপদটা আসবে বিশেষ কৌসুলি রবার্ট মুলারের দিক থেকে, যিনি রাশিয়ার সাথে ট্রাম্পের সম্পর্ক নিয়ে তদন্তকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং ধীরে ধীরে কিন্তু নিশ্ছিদ্রভাবে চারদিক থেকে তার জাল গুটিয়ে আনছেন। আগামী এক বছরে ট্রাম্পের ক্যাম্পেইন চেয়ারম্যান, নিরাপত্তা উপদেষ্টা, এমনকি ট্রাম্পের ছেলে এবং জামাতাও এই তদন্তে ফেঁসে যেতে পারেন। কিন্তু জ্যাকবসের ধারণা, ট্রাম্পকে পদত্যাগ বা পদচ্যুত করাতে আরো সময় লাগবে।
উত্তর কোরিয়ার হুমকি অব্যাহত থাকবে, তবে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে না
উত্তর কোরিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের একটা বড় ধরনের যুদ্ধের আশঙ্কা আছে বলে অনেকেই মনে করেন। বিশেষ করে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তার সাথে কিম জং উনের দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে। কিম একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র এবং পারমাণবিক পরীক্ষা অব্যাহত রেখেছেন এবং ট্রাম্পও আপাতত তার বিরুদ্ধে টুইটার যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্পাদক অ্যালেক্স লকির মতে, ২০১৮ সালেও দুই দেশের সম্পর্কে খুব বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে না।
ছোটখাট সংঘর্ষ অবশ্য লাগতে পারে। যেমন উত্তর কোরিয়া হয়তো দক্ষিণ কোরিয়ার জনমানবহীন কোনো অঞ্চলে পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো উত্তর কোরিয়ার কোনো ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে, দুই দেশের মধ্যে সাইবার যুদ্ধও চলতে পারে, কিন্তু তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ তো অনেক পরের ব্যাপার, পারমাণবিক বোমা হামলা বা দুই দেশের মধ্যে বড় কোনো ধরনের সংঘর্ষ সৃষ্টিরও সম্ভাবনা খুব কম।
অ্যালেক্সের মতে, যুদ্ধ বেধে গেলে দুই রাষ্ট্রই অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হবে। কোনো দেশই সেই ঝুঁকি নিতে চাইবে না। পৃথিবী ধ্বংসের হুমকি দিয়ে অনেক কিছু অর্জন করা যেতে পারে, কিন্তু সত্যি সত্যিই পৃথিবী ধ্বংস করে কারো তেমন কোনো লাভ হবে না।
পুতিন পুনঃনির্বাচিত হবেন, দৃষ্টি দিবেন জর্জিয়া ও বেলারুশের দিকে
আগামী বছরের মার্চে রাশিয়াতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা আছে। সবচেয়ে জনপ্রিয় বিরোধী দলীয় প্রার্থী অ্যালেক্সি ন্যাভালনিকে রাশিয়ার আদালত নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করেছে। কাজেই প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, ২০১৮ সালেও পুতিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হবেন। পুতিন পুনরায় নির্বাচিত হলে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর উপর রাশিয়ার প্রভাব বৃদ্ধি পাবে। পুতিন এই অঞ্চলগুলোর উপর প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে রাশিয়া এবং পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর মধ্যবর্তী ‘বাফার জোন’ হিসেবে তাদেরকে ব্যবহার করতে চাইবেন।
বিজনেস ইনসাইডারের মিলিটারি এবং ডিফেন্স টিমের প্রতিবেদক ড্যানিয়েল ব্রাউনের মতে, আগামী বছর জুড়ে পূর্ব ইউক্রেনে যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে। সেখানকার রাশিয়া সমর্থিত বাহিনী পূর্বের তুলনায় আরো বেশি সমর্থন পাবে। ইউক্রেনের পাশাপাশি রাশিয়া নতুন করে জর্জিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইবে। এছাড়াও রাশিয়া বেলারুশের সাথে নিজেদের সেনাবাহিনী একীভূত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে, যেন পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সাথে যেকোনো সংঘর্ষের ক্ষেত্রে তাদেরকে ব্যবহার করা যায়।
ট্রাম্পের ফিলিস্তিন শান্তি পরিকল্পনা ঘোষিত হবে এবং ব্যর্থ হবে
ট্রাম্প অনেক দিন ধরেই বলে আসছিলেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকটের, বিশেষ করে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকটের স্থায়ী সমাধান করবেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি করেছেন সম্পূর্ণ উল্টো কাজ। জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তিনি এ অঞ্চলকে আরো অশান্ত করে তুলেছেন। তার এ পদক্ষেপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মধ্যপ্রাচ্যে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোরও দূরত্ব তৈরি হয়েছে।
ট্রাম্পের ঐ সিদ্ধান্তটি ছিল শুধুই ইসরায়েলের স্বার্থে, যাতে ফিলিস্তিনের জন্য কোনো সান্ত্বনার বাণীটুকুও ছিল না। পিটার জ্যাকবসের ধারণা, আগামী বছরের প্রথম দিকে হয়তো ট্রাম্প তার তথাকথিত শান্তির পরিকল্পনা প্রকাশ করবেন। কিন্তু তার মতে, জেরুজালেমকে রাজধানী স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকেই বোঝা যায়, ট্রাম্প প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্যের ব্যাপারে কতটুকু অজ্ঞ। তাই তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ করার পরপরই মুখ থুবড়ে পড়বে।
সিরিয়ায় আংশিক শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে
সিরিয়ায় সাত বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধ অনেকটাই শেষের দিকে উপনীত হয়েছে। রাশিয়া এবং ইরানের হস্তক্ষেপে বাশার আল-আসাদ নিশ্চিত পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে উল্টো বেশ শক্ত অবস্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। রাশিয়া, ইরান, যুক্তরাষ্ট্র সহ প্রায় সবগুলো বৃহৎ শক্তির পৃথক পৃথক আক্রমণে আইএসের তথাকথিত খিলাফতের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটেছে। বিদ্রোহী দলগুলোও একাধিক ছোট ছোট বাহিনীর পরিবর্তে মোটামুটি সুসংগঠিত একটি ব্যানারের নিচে একত্রিত হয়েছে।
বিজনেস ইনসাইডারের সম্পাদক অ্যালেক্স লকির মতে, আগামী বছরই সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ একটি রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে পাবে। বাশারকে ক্ষমতাচ্যুত করাটা যেরকম ওবামা প্রশাসনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল, ট্রাম্প প্রশাসন সে লক্ষ্য থেকে অনেকটাই সরে এসেছে। আইএস পরাজিত হওয়ার পর তাই সিরিয়াতে তাদের আর তেমন কিছু করার নেই। ট্রাম্প হয়তো এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সিরিয়ার সংকট থেকে নিজেকে কিছুটা গুটিয়ে নিতে পারেন। অন্যদিকে ইরান, রাশিয়া এবং তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে এবং বাশারকে ক্ষমতায় রেখেই সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতি এবং শান্তি স্থাপনের পথে অনেক দূরে এগিয়ে যেতে পারে।
এমবিএস সংস্কার অব্যাহত রাখবেন, হয়তো বাদশাহও হবেন
গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে রীতি ভঙ্গ করে যুবরাজ হিসেবে নিয়োগ পান সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজের পুত্র মোহাম্মদ বিন সালমান। ইয়েমেন যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া, কাতারের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করা, লেবাননের প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগে বাধ্য করা, কোটিপতি রাজপুত্র এবং ব্যবসায়ীদেরকে আটক করা, ভিশন ২০৩০ ঘোষণা, নারীদের অধিকার এবং বিনোদনের পক্ষে অবস্থান নেওয়া, সৌদি আরবকে মডারেট ইসলামে ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা, শত শত কোটি ডলারের ইয়াট, চিত্রকর্ম এবং প্রাসাদ ক্রয় প্রভৃতির কারণে পুরো বছর জুড়েই তার নাম ছিল সংবাদ শিরোনামে।
পিটার জ্যাকবসের মতে, আগামী বছরও বিন সালমানের সংস্কার এবং রাজনৈতিক আগ্রাসন অব্যাহত থাকবে। ইরানের সাথে সৌদি আরব সরাসরি কোনো যুদ্ধে জড়াবে না, তবে ইয়েমেন, লেবানন সহ বিভিন্ন ফ্রন্টে ছায়া যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে, হয়তো আরো বিস্তার লাভ করবে। যদিও সৌদি বাদশাহ বছরের শেষ নাগাদ পুত্র মোহাম্মদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বলে যে গুজব শোনা যাচ্ছিল, তা বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, কিন্তু জ্যাকবসের মতে আগামী বছর সত্যি সত্যিই বিন সালমান বাদশাহ হয়ে গেলে আশ্চর্যের কিছু থাকবে না।
ইয়েমেন সংকটের কোনো সমাধান হবে না, বরং আরো তীব্রতা পাবে
ইয়েমেনের সংকট শুরু হয়েছিল গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে, কিন্তু বর্তমানে এটি পুরদস্তুর সৌদি আরব বনাম ইরান ছায়া যুদ্ধ। বছরের শেষ নাগাদ ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আলি আব্দুল্লাহ সালেহ সৌদি আরবের সাথে আলোচনা করতে আগ্রহী হওয়ায় ক্ষীণ একটু আশার আলো দেখা গিয়েছিল, কিন্তু তার মৃত্যুর পর ইয়েমেনের ভবিষ্যত আবারও অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। ড্যানিয়েল ব্রাউনের মতে, এই নিশ্চয়তার অবসানের কোনো সম্ভাবনা নেই। বিদ্রোহী হুথিদের চূড়ান্ত পরাজয় না হওয়া পর্যন্ত সৌদি আরব ইয়েমেনের উপর অবরোধ এবং বিমান হামলা অব্যাহত রাখবে এবং এর ফলে সেখানকার মানবিক সংকট আরো তীব্র আকার ধারণ করবে।
সৌদি আরবের সাথে ইসরায়েলের সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হবে
যেটা এক সময় অসম্ভব বলে মনে হতো, সেটাই এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে- সৌদি আরবের সাথে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলের সম্পর্ক দিনে দিনে আরো গভীর হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব এবং ইসরায়েল উভয়েরই প্রধান শত্রু ইরান। আর শত্রুর শত্রু বন্ধু তত্ত্ব থেকেই ইসরায়েলের সাথে মিত্রতা স্থাপন করছে সৌদি আরব। বেন ব্রিমেলোর মতে, মধ্যপ্রাচ্যে ইরান যতই শক্তিশালী হতে থাকবে, সৌদি আরব এবং ইসরায়েলের এই ঘনিষ্ঠতা ততোই বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
আফ্রিকায় যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বৃদ্ধি পাবে
আফ্রিকাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম আলোচিত। কিন্তু সমগ্র আফ্রিকা জুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৬,০০০ সৈন্য নিযুক্ত আছে, যারা সোমালিয়া, নাইজার, মালি সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধে এবং স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ট্রেনিং দেওয়ার কাজে নিয়োজিত আছে। গত অক্টোবর মাসে নাইজার-মালি সীমান্তে মার্কিন সেনাদের মৃত্যুর সংবাদের পর ট্রাম্প প্রশাসন নতুন করে সমালোচনার মুখে পড়ে। প্রতিবেদক ডেভিড কয়ের মতে, আগামী বছরে এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যসংখ্যা, ড্রোন হামলার সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।
জাপান সাগরে চীন আরো প্রভাব বিস্তার করবে
চীন খুব ধীরে ধীরে বিশ্ব রাজনীতিতে নিজের প্রভাব বিস্তার করছে। এ বছর তারা একাধিকবার প্রশান্ত মহাসাগরের উপর জাপানের আকাশ সীমায় যুদ্ধবিমান উড়িয়ে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। জাপানের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হলে তারা অত্যন্ত রূঢ়ভাবে উত্তর দিয়ে জানিয়েছে যে, জাপানকে এতে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে হবে। বেন ব্রিমেলোর ধারণা, আগামী বছর শুধু প্লেন না, তারা জাপানের সমুদ্র সীমায় যুদ্ধজাহাজ প্রবেশ করানোর মাধ্যমে এই অঞ্চলে তাদের প্রভাব আরো বেশি বিস্তার করবে।
আইএস বিশ্বজুড়ে ছোট ছোট হামলা অব্যাহত রাখবে
ইরাক এবং সিরিয়াতে আইএসের তথাকথিত খিলাফতের পরাজয় ঘটেছে, কিন্তু এর মানে এই নয় যে, সংগঠনটি পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বরং এদের হাজার হাজার সদস্য বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছে, যা পুরো বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। ড্যানিয়েল ব্রাউনের মতে, সংগঠনটি এখন বিশাল এলাকার দখল হারিয়ে ছোট ছোট দলের সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিণত হচ্ছে। ২০১৮ সাল জুড়ে ইউরোপে, বিশেষ করে ব্রিটেন এবং ফ্রান্সে আইএসের আক্রমণ বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও মালয়েশিয়া, মিসর এবং লিবিয়াতে সংগঠনটি শক্তিশালী হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
ফিচার ইমেজ- Kayhan Ozer / AP