Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

নেইমার কি পারবেন নায়ক হতে?

১.

বিশ্ব ফুটবলে ব্রাজিল সবসময়ই শক্তিশালী দল। এই শক্তিশালী হবার প্রধান কারণ হচ্ছে প্রতিনিয়ত অসাধারণ সব খেলোয়াড়ের আবির্ভাব। সেই ‘৬০ এর দশকে পেলে, গ্যারিঞ্চা থেকে শুরু করে আশির দশকের জিকো, সক্রেটিস কিংবা নব্বইয়ের দশকের রোমারিও, রোনালদো, রিভালদো এবং বিংশ শতাব্দীর রোনালদিনহো- প্রত্যেক খেলোয়াড়ই ব্যক্তিগত দক্ষতা দেখানোর সাথে সাথে দলীয় সফলতাও অর্জন করে ব্রাজিলিয়ানদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন।

কিন্তু রোনালদিনহো পরবর্তী যুগে হঠাৎ করেই যেন ব্রাজিলিয়ানদের মাঝে ঠিক সেরকম কোনো খেলোয়াড় উঠে আসছিল না। রবিনহোকে মনে করা হয় হারিয়ে যাওয়া প্রতিভা। আদ্রিয়ানো কিংবা আলেক্সান্দার পাতোও অনেক আশা জাগিয়েছিলেন, কিন্তু পূর্ণতা পাননি। কাকা নামের এক যুবরাজের শুরুটাও চমৎকার হয়েছিল, কিন্তু ইনজুরির সাথে লড়াই করে আর পেরে উঠছিলেন না।

তাদের সময়টার পর ব্রাজিল যেন কিছুটা নিষ্প্রভ হয়ে যায়; Source: Pinterest

১৯৯১ সাল থেকে ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কার প্রবর্তন করার পর থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ১৭ বারের মধ্যে ব্রাজিলিয়ানরা এই পুরস্কারটি নিয়েছে ৮ বার। এর মধ্যে প্রথম দুবার বাদ দিলে কেবলমাত্র ১৯৯৫ আর ২০০১ সালেই কোনো ব্রাজিলিয়ান সেরা তিনের বাইরে ছিলেন। এই কারণেই বিষয়টি খুব বিস্ময়কর যে, ২০০৭ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কোনো ব্রাজিলিয়ান বর্ষসেরার প্রথম তিনে নিজের জায়গা করে নিতে পারেনি

২০১৫ সালে বর্ষসেরার তালিকায় তৃতীয় স্থান অর্জন করেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার নেইমার। অবশ্য এর বেশ কিছুদিন আগ থেকেই নেইমারকে অলিখিতভাবে ধরা হতো মেসি-রোনালদোর পর বর্তমান বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে। ধারণা করা হয়, ২০১৫ সালের আগে সেই স্বীকৃতিটা না পাওয়ার প্রথম কারণ ছিল ইউরোপে না খেলা। ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার জেতার কিংবা নূন্যতম সেরা তিনে থাকার একটি অলিখিত নিয়ম হচ্ছে খেলোয়াড়টিকে অবশ্যই ইউরোপে খেলতে হবে। অতীতের রেকর্ড দেখলে সেটি বুঝতে পারা যায়। নেইমারের বর্ষসেরা তালিকার সেরা তিনে না থাকার পেছনে হয়তো এই কারণটাই বড় ভূমিকা রেখেছে।

২.

অথচ সান্তোসে থাকাকালেই নেইমার অসাধারণ ছিলেন। সাও পাওলোতে আয়োজিত ‘ক্যাম্পিওনাটো পাওলিস্টা’ নামের এক অভিজাত টুর্নামেন্টে (অংশগ্রহণকারী দল হচ্ছে করিন্থিয়াস, সাও পাওলো, সান্তোস আর পালমেইরাস) ২০১০, ২০১১ আর ২০১২ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় সান্তোস। এছাড়া ক্লাবের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো (এই পর্যন্ত একমাত্র) ‘কোপা ডো ব্রাজিল’ জয় করে নেইমারের সান্তোস, যে নকআউট টুর্নামেন্টে ব্রাজিলের ৮৬টি দল অংশগ্রহণ করে।

সান্তোসের হয়ে শিরোপা; Source: China Daily Europe

তবে নেইমার তার মূল খেলাটা দেখান কোপা লিবার্তাদোরেসে। ইউরোপের যেমন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, দক্ষিণ আমেরিকার জন্য ঠিক তেমনই এই কোপা লিবার্তাদোরেস। নেইমার আসার আগে সান্তোস তাদের ইতিহাসে এই টুর্নামেন্ট জেতে মাত্র দুবার, সেটিও পেলের আমলে। পেলে পরবর্তী যুগে নেইমারই এই কাপটা জিতে প্রমাণ করেন যে, তাকে পেলের উত্তরসূরী বলাটা বড় ধরনের ভুল কিছু নয়।

ছয় গোল করে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হন নেইমার, যার মাঝে ২-১ গোলে জেতা ফাইনালের প্রথম গোলটিও তারই ছিল। তার এই পারফর্মেন্স তাকে ২০১১ সালের দক্ষিণ আমেরিকার বর্ষসেরা খেলোয়াড়ে পরিণত করে

২০১১ সালে ১৯ বছর বয়সে মাত্র পাঁচটি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে কোপা আমেরিকা দলে জায়গা পান নেইমার। ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই দেখালেন নিজের স্কিল। গোলশূন্য ড্র হওয়া ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পেলেন তিনি।

প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটিও ২-২ গোলে ড্র হলো। ইকুয়েডরের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটি জিততেই হবে, এমন পরিস্থিতিতে নেইমার আর পাতো দুটি করে গোল করায় ব্রাজিল জিতলো ৪-২ গোলে।

তবে তারা বাদ পড়ে গেল প্যারাগুয়ের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে। গোলশূন্য ম্যাচটি টাইব্রেকারে গড়ানোর পর অবিশ্বাস্যভাবে চারটি পেনাল্টির চারটিই মিস করে ব্রাজিলীয়রা।

৩.

ব্রাজিলের হয়ে শিরোপা না জিতলেও ক্লাবে অবিশ্বাস্যভাবেই পারফর্ম করছিলেন নেইমার। ২০১২ সালের কোপা লিবার্তাদোরেসেও নেইমার অসাধারণ ছিলেন। আট গোল করে যৌথভাবে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়েছিলেন, কিন্তু সেমিফাইনালে করিন্থিয়াসের কাছে তার দল বাদ পড়ে যায়। দুই লেগ মিলিয়ে ২-১ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচে সান্তোসের পক্ষে একমাত্র গোলটিও করেন নেইমার। তবে দল হেরে গেলেও নেইমার দক্ষিণ আমেরিকার বর্ষসেরা পুরস্কারের সম্মানটি পান।

কনফেডারেশন কাপ জয়ের পর; Source: Pinterest

ইতোমধ্যে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ থেকে নেইমারকে দলে নেওয়ার জন্য অনেকেই উঠে পড়ে লেগেছে। প্রথম প্রস্তাবটি দিয়েছিল ওয়েস্ট হ্যাম, সেটিও ২০১০ সালে। একই বছর চেলসিও আগ্রহ দেখায়। তবে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ব্রাজিলে হবার কারণে নেইমারের ইচ্ছে ছিল বিশ্বকাপের পর ইউরোপে যাওয়ার।

কিন্তু এরই মাঝে সান্তোস থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, তারা নেইমারের জন্য দুটো প্রস্তাব পেয়েছে। ২০১৩ সালের ২৭শে মে তারিখে নেইমার ঘোষণা দেন, তার পরবর্তী গন্তব্য বার্সেলোনা এবং তিনি কনফেডারেশন কাপের পরেই সেখানে যাবেন

৪.

ব্রাজিলের মাঠে শুরু হয় বিশ্বকাপের প্রস্তুতিমূলক টুর্নামেন্ট কনফেডারেশন কাপ। কনফেডারেশন কাপের জন্য পরিস্কারভাবে ফেভারিট ছিল ইউরো চ্যাম্পিয়ন হিসেবে খেলতে আসা স্পেন। স্বাগতিক হবার কারণে ব্রাজিলও ফেভারিটের তালিকায় ছিল।

মেক্সিকো, জাপান আর ইতালির বিপক্ষে গ্রুপ পর্যায়ের তিনটি ম্যাচেই ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন নেইমার। মাঝে সেমিফাইনালে উরুগুয়েকে হারালেও ফাইনালে ফেভারিট ছিল স্পেনই। তবে ফাইনালে ৩-০ গোলের বড় ব্যবধানেই স্পেনকে হারায় ব্রাজিল, ম্যান অব দ্য ম্যাচ আবারও নেইমার।

টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতে নেন নেইমার। এছাড়া ৪ গোল করে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হন তিনি।

তবে আক্ষরিক অর্থে এটি ছিল আসলে ব্রাজিলিয়ানদের জন্য সাধারণ এক টুর্নামেন্ট। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ, সেই বিশ্বকাপে তাদের মূল সেনাপতি নেইমার।

ইনজুরিতে ভেঙে গেল ব্রাজিলিয়ানদের হৃদয়; Source: The New York Times

একেবারে হতাশ করেনি নেইমার। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন। কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত খেলে ৪ গোল করে টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা, সাথে একটি অ্যাসিস্ট। ইনজুরির জন্য সেমিফাইনাল খেলতে পারেননি, মনোবল ভেঙে ফেলা ব্রাজিলের লজ্জাজনক ৭-১ গোলের পরাজয়। দল বাদ পড়লেও নিজে জিতলেন ব্রোঞ্জ বুট।

কিন্তু সমর্থকদের কি আর সামান্য এই ব্যক্তিগত পুরস্কারে মন ভরে? নেইমারের তাই দায় ছিল দলকে বড় কিছু উপহার দেবার। সুযোগ এসে গেল তাড়াতাড়িই। ২০১৫ কোপা আমেরিকাতে অধিনায়ক হিসেবেই খেলতে গেলেন। পেরুর বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই আবার ম্যান অব দি ম্যাচ, গোলও করলেন একটি। কিন্তু পরের ম্যাচেই কলম্বিয়ার কাছে হেরে গেল ব্রাজিল। এর চেয়েও ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছে, ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে লাল কার্ড দেখলেন নেইমার। ফলাফল, চার ম্যাচের সাসপেনশন। নেইমারবিহীন ব্রাজিল গ্রুপের শেষ ম্যাচে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে কষ্টার্জিত ২-১ গোলের জয় পেলেও কোয়ার্টার ফাইনালে আবারো প্যারাগুয়ের কাছে টাইব্রেকারে হেরে যায়।

কোপা ২০১৫ তে লাল কার্ড; Source: The New York Times 2

৫.

২০১৬ সালে ব্রাজিলের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট ছিল দুটি। একটি কোপা আমেরিকার শতবর্ষ উপলক্ষ্যে আয়োজিত টুর্নামেন্ট, আরেকটি হচ্ছে অলিম্পিক। ব্রাজিলের ফুটবল ফেডারেশন চাইছিল, নেইমার দুটো টুর্নামেন্টই খেলুক, কিন্তু বার্সেলোনার কোচ লুইস এনরিকে অনুরোধ করেন যাতে অন্তত একটি টুর্নামেন্টে নেইমারকে বিশ্রাম দেওয়া হয়। তুলনামূলক বিচারে অলিম্পিক ছোট টুর্নামেন্ট হলেও এই একটি কাপই ব্রাজিলের শোকেসে অনুপস্থিত ছিল। তাই ব্রাজিলিয়ান ফেডারেশন সিদ্ধান্ত নেয়, নেইমারকে অলিম্পিক একাদশে নেবার। নেইমারবিহীন ব্রাজিল কোপা সেন্টেনারিওতে পেরু, ইকুয়েডর এবং হাইতির মতো দলের সাথে থাকা সত্ত্বেও গ্রুপ পর্ব পার হতে ব্যর্থ হয়।

তবে যে কারণে নেইমারকে কোপা থেকে বিশ্রাম দেওয়া হলো, সেই অলিম্পিক টুর্নামেন্টেও নেইমারের শুরুটা বাজে হলো। দক্ষিণ আফ্রিকা আর ইরাকের মতো দলের সাথে গোলশূন্য ড্র হলো। ডেনমার্কের সাথে ৪-০ গোলের জয় ব্রাজিলকে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। মূলত কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই নেইমার স্বরূপে আসতে থাকেন, সাথে ব্রাজিলও।

অলিম্পিক জয়ের পর আবেগে আপ্লুত; Source: The Ring Side ViewAFP / Odd Andersen (Photo credit should read ODD ANDERSEN/AFP/Getty Images)

কলম্বিয়াকে ২-০ গোলে হারানোর প্রথম গোলটি সরাসরি ফ্রি কিক থেকে করেন নেইমার, দ্বিতীয় গোলটিতেও অ্যাসিস্ট করেন। সেমি ফাইনালে হন্ডুরাসের বিপক্ষে ৬-০ গোলে জয়ের প্রথম আর শেষ গোলটিও করেন নেইমার। ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষেও গোল করেন ফ্রি কিক থেকে। ১-১ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচটা টাইব্রেকারে যায়, ব্রাজিলের পক্ষে শেষ পেনাল্টি শট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন করান।

৬.

ক্লাবের হয়ে নেইমারের পারফর্মেন্স অবশ্যই দুর্দান্ত। গত ২০১৬-১৭ মৌসুমে পিএসজির বিপক্ষে ঐতিহাসিক ম্যাচটি দিয়ে নেইমার প্রমাণ করেছেন, তিনি এক হাতে বড় ম্যাচ জেতানোর জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত। পিএসজিতে যোগ দিয়েও পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন তিনি।

বার্সেলোনার বিখ্যাত ত্রয়ী; Source: remezcla.com

তবে নেইমারের চূড়ান্ত পরীক্ষাটি হতে যাচ্ছে ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ। ব্রাজিলিয়ানদের হেক্সা স্বপ্ন অনেকদিন ধরেই ভেঙে যাচ্ছে। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য নেইমারের ফর্মে থাকার সাথে সাথে আরো দুটো বিষয় জরুরি। একটা হচ্ছে, মাথা ঠাণ্ডা রাখা যাতে অপ্রয়োজনীয়ভাবে ডিসিপ্লিনারি কারণে বাদ না পড়েন। আরেকটি হচ্ছে, নিজেকে ইনজুরি মুক্ত রাখা।

পরিণত হবার পর ব্রাজিলের পক্ষে নেইমার চারটি টুর্নামেন্ট খেলেছেন। এর মাঝে কনফেডারেশন কাপ আর অলিম্পিকের টুর্নামেন্ট জেতার সাথে সাথে কনফেডারেশন কাপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতে নিয়েছেন। অলিম্পিকের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার দেওয়া হয় না, দিলে নিঃসন্দেহে তিনিই পেতেন। বাকি দুই টুর্নামেন্টের একটিতে (বিশ্বকাপে) তিনি ইনজুরিতে পড়ার পরের ম্যাচেই ব্রাজিল বাদ পড়ে, অন্যটিতে (কোপা ২০১৫) লাল কার্ড দেখে কোয়ার্টারে বাদ পড়ে। নেইমারবিহীন ব্রাজিল শতবর্ষী কোপাতে গ্রুপ থেকেই বাদ পড়ে।

এই নেইমারকেই চায় ব্রাজিল; Source: Brand Thunder

ব্রাজিলের এই দলের জন্য তাই নেইমারের গুরুত্ব অনেক বেশি। নেইমার কি পারবেন বিশ্বকাপ জিতে পেলে, গারিঞ্চা, রোমারিও কিংবা রোনালদোদের মতো নায়ক হয়ে ব্রাজিলিয়ানদের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে? নাকি জিকোর মতো ট্র্যাজিক হিরো হয়েই থাকবেন?

উত্তরটা পাওয়া যাবে ২০১৮ বিশ্বকাপেই।

ফিচার ইমেজ: NewsIT

Related Articles