Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিং পদ্ধতি: বিশ্বাসযোগ্যতা কতটুকু?

বিশ্বজুড়ে উচ্চশিক্ষা প্রদানে নিয়োজিত আছে লাখো বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু ক’টা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম জানা আছে আমাদের? যে নামগুলো আমরা সচরাচর শুনে থাকি, বিভিন্ন পত্রিকায় পড়ে থাকি সেগুলোই মূলত বিশ্বের সকল দেশের উচ্চশিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট মানুষের নিকট পরিচিত। কারণ তারা তাদের একাডেমিক মান এত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে যে শিক্ষা, গবেষণা সহ প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে। আর তাদের এসব সাফল্য সারা বিশ্বের উচ্চশিক্ষার্থীদের নিকট পৌঁছে দিচ্ছে অসংখ্য র‍্যাংকিং ওয়েবসাইট ও ম্যাগাজিনগুলো

ব্যাপারটা এমন নয় যে, যখন এসব র‍্যাংকিং ছিল না তখন সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা মানুষ জানতো না। কিন্তু র‍্যাংকিং ভিত্তিক ওয়েবসাইটগুলোর জন্য এখন আমরা সহজেই সেরাদের মধ্য থেকে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেছে নিতে পারছি। কিন্তু কতটা বিশ্বাসযোগ্য এই র‍্যাংকিং? কোন উপায়েই বা তারা র‍্যাংকিং তৈরি করে? ভুরি ভুরি বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাংকিংয়ের মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী এবং বিশ্বাসযোগ্য তিনটি র‍্যাংকিং ওয়েবসাইট নিয়ে আজ আলোচনা করবো। এই তিনটি র‍্যাংকিং পদ্ধতি সম্পর্কে জানলে আপনি সহজেই ধারণা করতে পরবেন কীভাবে এসব র‍্যাংকিং তৈরি হয়।

টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাংকিং

টাইমস হায়ার এডুকেশন ম্যাগাজিন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাংকিং; source: santannapisa.it

বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী শিক্ষা বিষয়ক ম্যাগাজিন ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন ম্যাগাজিন’ ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর প্রকাশ করছে বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি র‍্যাংকিং। মূলত এই র‍্যাংকিং তারা ২০০৪ সাল থেকেই শুরু করেছিল। তবে ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তারা কিউএসের সাথে একত্রে র‍্যাংকিং প্রকাশ করতো। ২০১০ সাল থেকে টাইমস হায়ার এডুকেশন ম্যাগাজিন আলাদাভাবে র‍্যাংকিং প্রকাশ করতে শুরু করলে তারা দ্রুতই হয়ে ওঠে বিশ্বের সেরা তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাংকিং পদ্ধতির একটি। তাদের সর্বশেষ প্রকাশিত র‍্যাংকিংয়ে মোট ৯৮০টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছিল। টাইমসের র‍্যাংকিং মোট ৫টি মানদণ্ডের ভিত্তিতে হয়ে থাকে। সেগুলো সংক্ষেপে আলোচনা করা যাক।

১) সাইটেশন

অন্যান্য র‍্যাংকিং এর মতো টাইমস হায়ার এডুকেশন র‍্যাংকিংয়েও একটি বড় ভূমিকা পালন করে একাডেমিক রিসার্চ বা গবেষণা। এক্ষেত্রে ৩২.৫ ভাগ পয়েন্ট বরাদ্দ থাকে গবেষণার জন্য।

২) টিচিং

এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ সংক্রান্ত নিম্নোক্ত পাঁচটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে মোট ৩০ ভাগ পয়েন্ট বরাদ্দ রাখা হয়।

  • বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পরিচিতি বিষয়ক সমীক্ষা।
  • শিক্ষদের পিএইচডি ডিগ্রির সংখ্যা।
  • শিক্ষক প্রতি শিক্ষার্থীর সংখ্যা।
  • শিক্ষার্থী প্রতি শিক্ষকের আয়।
  • বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রদান করা পিএইচডি ও অন্যান্য ডিগ্রি।

৩) রিসার্চ ভলিউম অ্যান্ড ইনকাম

একাডেমিক গবেষণা বিষয়ক নিম্নোক্ত চারটি নিয়ামকের উপর ভিত্তি করে এক্ষেত্রে বরাদ্দ রাখা হয় ৩০ শতাংশ পয়েন্ট।

  • বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কতটুকু জনপ্রিয় সে বিষয়ক সমীক্ষা।
  • প্রতিটি গবেষণা থেকে একজন শিক্ষকের আয়।
  • গবেষণার আকার, বিষয়বস্তু এবং সৃজনশীলতা।
  • সকল গবেষণা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট আয়।

৪) আন্তর্জাতিক বৈচিত্রতা

বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট বহিরাগত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সংখ্যার অনুপাতের উপর ভিত্তি করে এক্ষেত্রে থাকে আরো ৫ শতাংশ পয়েন্ট।

৫) ইন্ডাস্ট্রি ইনকাম

একাডেমিক গবেষণার দ্বারা বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের উপর থাকে ২.৫ শতাংশ পয়েন্ট।

টাইমস হায়ার এডুকেশনের ২০১৬ সালের সেরা দশ বিশ্ববিদ্যালয়; source: santannapisa.it

গ্রহণযোগ্যতা ও বিতর্ক

টাইমস হায়ার এডুকেশন ম্যাগাজিনের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নাতীত। সে অর্থে টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাংকিংয়ের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও খুব একটা সংশয় নেই। তবে এর বড় সমস্যাগুলোর একটি হচ্ছে এই র‍্যাংকিংয়ে ইংরেজিতে পড়ানো হয় না এরকম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য যোগ করা হয় না। তাছাড়া বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণার উপর বেশি মাত্রায় নির্ভরশীলতাও এই র‍্যাংকিংয়ের একটি দুর্বলতা।

কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাংকিং

source: PR Newswire

বিশ্বজুড়ে যে গুটিকয়েক সংস্থা সারা বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকা প্রণয়ন করে থাকে, নিঃসন্দেহে ইংল্যান্ডের কিউএস বা কোয়াকোয়ারেলি সাইমন্ডস লিমিটেডের র‍্যাংকিং সেগুলোর মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতায় একদম উপরের দিকেই থাকবে। পাঁচটি নির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে এই কিউএস র‍্যাংকিং তৈরি করা হয়।

১) একাডেমিক রেপুটেশন

একাডেমিক রেপুটেশন বা খ্যাতি এই র‍্যাংকিং তৈরিতে এককভাবে সবচেয়ে বড় নির্ণায়ক। এটি একটি বিতর্কিত পন্থাও বটে। এর জন্য একাডেমিক ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সার্ভে চালায় এই সংস্থা। বিশ্বজুড়ে উচ্চশিক্ষার সাথে জড়িত প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষক, গবেষক, বিশ্লেষক ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের মতামত নেওয়া হয়। তবে যাদের মতামত নেয়া হয়, তারা উচ্চশিক্ষার সাথে কমপক্ষে ১০ বছরের বেশি সময় যাবত সংযুক্ত রয়েছেন, এ বিষয়টি নিশ্চিত করে কিউএস। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের প্রতিষ্ঠান ব্যতীত মোট ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ভোট দিতে পারেন। র‍্যাংকিংয়ের মোট পয়েন্টের মধ্যে এই মতামতের জন্যই বরাদ্দ ৪০ ভাগ পয়েন্ট। অতএব এই বিষয়টি এককভাবে কিউএস র‍্যাংকিংয়ে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে।

২) এমপ্লয়ার রেপুটেশন

বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্যগুলোর একটি হচ্ছে তাদের গ্র্যাজুয়েটদের এমনভাবে গড়ে তোলা যেন তারা ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের জন্য যথেষ্ট প্রতিযোগিতামূলক, দক্ষ এবং যোগ্য হয়ে গড়ে ওঠে এবং প্রতিষ্ঠিত হয়। সেক্ষেত্রে কোন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই কাজটি সঠিকভাবে করতে পারছে তা র‍্যাংকিং করার ক্ষেত্রে একটি নিয়ামক। কিউএস র‍্যাংকিং করার জন্য প্রতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে খ্যাতিমান ৩০ হাজারের অধিক কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে জানতে চাওয়া হয় তাদের কর্মচারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী চাকরির বাজারের প্রতিযোগিতা পাশ কাটিয়ে সেরা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরি করার সুযোগ পায়, সে বিশ্ববিদ্যালয় পেয়ে যায় এই ক্যাটাগরিতে বরাদ্দ ১০ শতাংশ পয়েন্ট।

৩) টিচার-স্টুডেন্ট রেশিও

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অনুপাতের জন্য কিউএস র‍্যাংকিংয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট সম্ভাব্য স্কোরের ২০ ভাগ বরাদ্দ থাকে। শিক্ষক প্রতি শিক্ষার্থীর অনুপাত কম হলে স্বাভাবিকভাবেই পড়ালেখার মানোন্নয়ন ঘটে। তাই র‍্যাংকিং করার ক্ষেত্রে এই বিষয়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড।

৪) সাইটেশন পার ফ্যাকাল্টি

এই নির্ণায়কটির জন্য বরাদ্দ থাকে আরো ২০ শতাংশ পয়েন্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের করা গবেষণা এখানে নির্ণায়কের ভূমিকা পালন করে। তবে নিছক গবেষণা হলেই হবে না, কোনো আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশ হতে হবে অবশ্যই। কিউএস প্রথমে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ বছরের মোট গবেষণার তথ্য জোগাড় করে এবং মোট গবেষণা সংখ্যাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষক সংখ্যা দিয়ে ভাগ করে। ভাগ করার পর প্রাপ্ত সংখ্যাটি হয় এই অংশের স্কোর।

৫) ইন্টারন্যাশনাল রিভিউ

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মধ্যে (দেশি-বিদেশী) বৈচিত্রতা এই র‍্যাংকিং এর সর্বেশেষ ১০ শতাংশ পয়েন্টে অবদান রাখে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য পাঁচ ভাগ এবং বিদেশী শিক্ষকদের জন্য পাঁচ ভাগ বরাদ্দ থাকে।

২০১৬ সালের কিউএস র‍্যাংকিং; source: topuniversities.com/qs-world

গ্রহণযোগ্যতা ও বিতর্ক

২০০৪ সাল থেকে শুরু হওয়া এই র‍্যাংকিং পদ্ধতি বর্তমানে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। অন্তত অ্যালেক্সা র‍্যাংকিং তাই বলে। ২০১৬ সালের তথ্য অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিং তৈরি করা ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে কিউএসের ওয়েবসাইটের ভিজিটর সবচেয়ে বেশি। ২০১৫ সালে প্রভাবশালী গার্ডিয়ান পত্রিকা কিউএস র‍্যাংকিংকে সেরা বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাংকিং পদ্ধতি বলে উল্লেখ করেছিল। অন্যদিকে বিতর্কেরও অভাব নেই এই র‍্যাংকিং পদ্ধতির। বিশেষ করে এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাংকিং তৈরি করতে প্রায় যাবতীয় তথ্যই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা হয়। ফলে র‍্যাংকিংয়ের প্রামাণিকতা কতটুকু সেটি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ এবং গবেষক ডেভিড ব্লানচফ্লাওয়ার কিউএস র‍্যাংকিং সম্বন্ধে বলেন, “এটি একটি ত্রুটিপূর্ণ সমীক্ষা এবং এটি এড়িয়ে চলা উচিৎ।

একাডেমিক র‍্যাংকিং অব ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটিস

source: thisdaylive.com

ইংরেজি ও ম্যান্ডারিন সহ মোট ১০টি ভাষায় চীনের ‘সাংহাই র‍্যাংকিং কনসাল্টেন্সি’ প্রতি বছর প্রকাশ করছে ‘একাডেমিক র‍্যাংকিং অব ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটিস’ বা সংক্ষেপে এআরডব্লিউইউ যা কিনা ‘সাংহাই র‍্যাংকিং’ নামেও পরিচিত। জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতার দিক দিয়ে এটি বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাংকিংগুলোর একটি। নিম্নোক্ত চারটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে র‍্যাংকিং তৈরি করে এআরডব্লিউইউ।

১) কোয়ালিটি অব এডুকেশন

প্রথম ধাপে শিক্ষার মান যাচাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কতজন এলামনাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে নোবেল বা অন্যান্য সম্মানজনক পুরস্কার লাভ করে তার উপর ১০ শতাংশ পয়েন্ট বরাদ্দ থাকে।

২) কোয়ালিটি অব ফ্যাকাল্টি

এক্ষেত্রে শিক্ষকদের মান যাচাই করা হয় দুটি বিষয়ের ভিত্তিতে। প্রথমত, নিজ নিজ ক্ষেত্রে নোবেল বা অন্যান্য সম্মানজন পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষকের সংখ্যা। দ্বিতীয়ত, ২১টি প্রধান বিষয়ের উপর আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার সংখ্যা। এই দুটি বিষয়ের উপর রয়েছে শতকরা ৪০ ভাগ পয়েন্ট।

৩) রিসার্চ আউটপুট

গবেষণার ফলাফল যাচাইয়ে দুটি বিষয়ে প্রাধান্য দিয়ে ৪০ শতাংশ পয়েন্ট বরাদ্দ রাখা হয় এআরডব্লিউইউ ইনডেক্সে। বিষয় দুটি হচ্ছে যথাক্রমে ‘নেচার অ্যান্ড সায়েন্স জার্নাল’-এ প্রকাশিত গবেষণা এবং সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা।

৪) পিসিপি

পিসিপি বা পার ক্যাপিটা একাডেমিক পারফরম্যান্সের উপর বরাদ্দ অবশিষ্ট ১০ শতাংশ।

সাংহাই র‍্যাংকিং ২০১৬; source: timeshighereducation.com

 

গ্রহণযোগ্যতা ও বিতর্ক

‘দ্য ইকোনমিস্ট’-এর তথ্য অনুযায়ী এআরডব্লিউইউ র‍্যাংকিং হচ্ছে গবেষণার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সবচেয়ে প্রভাবশালী র‍্যাংকিং পদ্ধতি। বিশ্বজুড়ে গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তিতে এআরডব্লিউইউ খুব সহজেই কিউএস এবং টাইমস হায়ার এডুকেশন ম্যাগাজিনের র‍্যাংকিংয়ের পর জায়গা করে নিয়েছে। অন্যদিকে অপর দুটি র‍্যাংকিংয়ের মতো এই র‍্যাংকিংটি এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি অন্যায্য পক্ষপাত করে না। তবে এআরডব্লিউইউ যে কারণে সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয় তা হলো এর অতিমাত্রায় নোবেল বা অন্যান্য পুরস্কারের উপর নির্ভরশীলতা।

বিভিন্ন র‍্যাংকিংয়ে বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থান

দুঃখজনক হলেও সত্য যে বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ই সেরা তিনটি র‍্যাংকিংয়ের মধ্যে নেই। কিউএস র‍্যাংকিং ১,০০০ এর পরেও র‍্যাংকিং প্রকাশ করে এবং সেখানে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থান প্রথম ২,০০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে। অন্যদিকে ওয়েবোমেট্রিকের মতো আরো কিছু কম জনপ্রিয় ওয়েবসাইটে বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম দেখা যায়। কিন্তু এগুলো মোটেও ভরসার যোগ্য নয়। এমনকি বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে কিউএস র‍্যাংকিংও বিশ্বাসযোগ্য নয়। কেননা, একটি কথা প্রায়ই শোনা যায়- বাংলাদেশ বা অন্যান্য অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশের (বিশেষ করে এশিয়া ও আফ্রিকা) বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাংকিং তৈরির ক্ষেত্রে এসব ওয়েবসাইটগুলো ব্যাপকমাত্রায় পক্ষপাতদুষ্ট। এক্ষেত্রে তারা যে তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে র‍্যাংকিং তৈরি করে তার প্রায় পুরোটাই সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত। তাই এ সকল র‍্যাংকিংয়ে ভরসা করার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। তথাপি ২০১৬ সালের ওয়েবোমেট্রিক র‍্যাংকিংয়ে বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানগুলো একবার দেখে নিতে পারেন।

ওয়েবোমেট্রিক র‍্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের সেরা দশ বিশ্ববিদ্যালয়; source: webometrics.info

ফিচার ইমেজঃ ire.udel.edu

Related Articles