Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

এই মুহূর্তে কারা আছে এফবিআইয়ের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায়?

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই বা ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের কল্যাণে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ শব্দযুগল কম-বেশি আমাদের সবার কাছে বেশ আগ্রহ জাগানিয়া বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে এফবিআই কুখ্যাত ও ভয়ঙ্কর সব অপরাধীদের ধরতে এই তালিকা তৈরি করে আসছে। ৫৬টি ফিল্ড অফিসের এজেন্টদের রিপোর্ট একত্রিত করে সবচেয়ে বিপজ্জনক এবং দীর্ঘদিন যাবত অপরাধকর্মের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের তালিকা বানায় এফবিআই।

আপনি জানেন কি, এফবিআইয়ের এই মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকার পাশাপাশি একটি ওয়েটিং লিস্ট বা অপেক্ষমান তালিকাও থাকে? অপেক্ষাকৃত কম বিপজ্জনক কিছু অপরাধীর নাম টুকে রাখা হয় দ্বিতীয় পর্যায়ের একটি তালিকায়। প্রথম পর্যায়ে জায়গা খালি হলে বা তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অগ্রগতি হলে ক্রমান্বয়ে শুরুর দিকের তালিকায় প্রবেশ করতে থাকে দ্বিতীয় পর্যায়ের সন্ত্রাসীরা। ওসামা বিন লাদেন অপেক্ষমান তালিকায় ছিল প্রায় এক বছর। কেনিয়াতে একটি দূতাবাসে বোমা বিস্ফোরণ করার পর তাকে প্রথম সারির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এফবিআই এ পর্যন্ত যে কয়টি মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে মোট অপরাধীর সংখ্যা ৫০০ এরও বেশি। এদের মধ্যে মাত্র ৯ জন নারী; প্রথমজনের নাম আসে ১৯৬৮ সালে, শেষজন ২০১৬ সালের। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে এই পর্যন্ত এফবিআই প্রকাশিত মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় কারা কারা স্থান পেল, দেখে নেয়া যাক।

১০. ইয়াসের আবদেল সাঈদ

জন্মস্থান: সিনাই, মিশর

জন্মতারিখ: জানুয়ারি ২৭, ১৯৫৭

চোখের রঙ: বাদামি

উচ্চতা: ৬’২”

ওজন: ১৮০ পাউন্ড

পেশা: ট্যাক্সি ড্রাইভার

জাতীয়তা: মিশরীয়

লক্ষণীয়

সাঈদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য উল্লিখিত তথ্যের সাথে সবসময় না-ও মিলতে পারে, পরিচয় লুকানোর জন্য অনেক সময় ছদ্মবেশ ধারণ করে সে। ঘরে-বাইরে সব জায়গায় সে গাঢ় রঙের সানগ্লাস পরে। মিশরে জন্মগ্রহণ করা সাঈদ মিশরীয় বা মিশরীয় বংশোদ্ভূত লোকজনের কাছে আশ্রয় চাইতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। ‘ডেনি’স’ এবং ‘আইএইচওপি’ রেস্টুরেন্ট এলাকায় তাকে প্রায়ই দেখা যেত, মার্লবোরো লাইট ব্র্যান্ডের সিগারেট ব্যবহার করে সে। নিউ ইয়র্ক, টেক্সাস, ভার্জিনিয়া, কানাডা কিংবা মিশরে এখন আর তার কোনো আত্মীয়-স্বজন নেই। সাঈদ কুকুর ভালবাসে, বিশেষ করে কালো রঙের জার্মান শেফার্ড তার খুব পছন্দ। তার কাছে সবসময় একটি আগ্নেয়াস্ত্র থাকে বলে জানা গেছে।

ইয়াসের আবদেল সাঈদ; Source: youtube.com

সতর্কতা

ইয়াসের আবদেল সাঈদ তার দুই অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে খুনের দায়ে অভিযুক্ত। মেয়েরা পরিবারের সম্মানহানি করেছে- এই সন্দেহে তাদের ট্যাক্সিতে করে রেস্টুরেন্টে নিয়ে যাওয়ার নাম করে ট্যাক্সিতে বসেই গুলি করে খুন করে সে। ঘটনাটি ঘটে ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি, টেক্সাসের আর্ভিংয়ে।

পুরষ্কার

ইয়াসের আবদেল সাঈদকে সরাসরি ধরিয়ে দিলে বা সাঈদ পর্যন্ত পৌঁছানোর মতো সঠিক তথ্য দিতে পারলে এফবিআই ১ লক্ষ মার্কিন ডলার পুরষ্কার দেবে বলে ঘোষণা করেছে।

৯. আলেহান্দ্রো ক্যাস্টিলো

জন্মস্থান: অ্যারিজোনা

জন্মতারিখ: নভেম্বর ২৬, ১৯৯৮

চোখের রঙ: বাদামি

উচ্চতা: ৫’৬”

ওজন: ১৮০-১৯০ পাউন্ড

ভাষা: ইংলিশ, স্প্যানিশ

জাতীয়তা: আমেরিকান

আলেজান্দ্রো ক্যাস্টিলো; Source: fbi.gov

লক্ষণীয়

ক্যাস্টিলোকে শেষবার দেখা গেছে উত্তর ক্যারোলিনার শার্লটে। অ্যারিজোনার ফোনিক্সে তার বেশ কিছু আত্মীয়-স্বজন আছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, তাকে মেক্সিকোর সীমানা পার হতে দেখা গেছে, সান ফ্রান্সিস্কো হতে পারে তার সম্ভাব্য ঠিকানা। খাটো চুল, মুখের দু’পাশে দাঁড়ি রাখার স্টাইল দেখা যায় তার সব ছবিতে।

সতর্কতা

২০১৬ সালে উত্তর ক্যারোলিনার শার্লটে প্রাক্তন প্রেমিকা ও সহকর্মীকে হত্যার দায়ে আলেজান্দ্রো ক্যাস্টিলোকে খুঁজছে পুলিশ। ২০১৬ সালের ১৫ আগস্ট সেই নারী সহকর্মীর গাড়িটি উদ্ধার করা হয় ফোনিক্সের এক বাস স্টেশনের কাছ থেকে। আগস্টের ১৭ তারিখে তার মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যায় উত্তর ক্যারোলিনার এক জঙ্গলের মধ্যে, মাথায় গুলি করে খুন করা হয় তাকে। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে ক্যাস্টিলোর সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তার কাছে আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে এবং ক্যাস্টিলোর সহিংস সংঘাতে জড়িয়ে পড়া ও পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা খুব বেশি।

পুরষ্কার

আলেজান্দ্রো ক্যাস্টিলোকে সরাসরি ধরিয়ে দিলে বা ক্যাস্টিলো পর্যন্ত পৌঁছানোর মতো সঠিক তথ্য দিতে পারলে এফবিআই ১ লক্ষ মার্কিন ডলার পুরষ্কার দেবে বলে ঘোষণা করেছে।

৮. অ্যালেক্সিস ফ্লোরেস

জন্মস্থান: হন্ডুরাস

ব্যবহৃত জন্মতারিখ: ১৮ জুলাই, ১৯৭৫/ ১৮ জুলাই, ১৯৮২/ ১৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৮০/ ১৭ জুলাই, ১৯৮২

চোখের রঙ: বাদামি

উচ্চতা: ৫’৪”

ওজন: ১৩০-১৪০ পাউন্ড

পেশা: হ্যান্ডিম্যান বা গৃহস্থালি জিনিসপত্র সারাই করা

জাতীয়তা: হন্ডুরান

অ্যালেক্সিস ফ্লোরেস; Source: fbi.gov

লক্ষণীয়

মারিও ফ্লোরেস, মারিও রবার্তো ফ্লোরেস, মারিও এফ রবার্তো, অ্যালেসিস কন্ট্রেরাস এমন আরও বেশ কিছু ছদ্মনাম ব্যবহার করে অ্যালেক্সিস ফ্লোরেস। হন্ডুরাসে তার বেশ কিছু পরিচিত লোকজন আছে।

সতর্কতা

পেনিসিলভেনিয়ার ফিলাডেলফিয়ায় পাঁচ বছর বয়সী একটি মেয়েকে অপহরণ ও খুনের দায়ে অভিযুক্ত অ্যালেক্সিস ফ্লোরেস। ২০০০ সালের জুলাই মাসের শেষদিকে মেয়েটি নিখোঁজ হয়েছে বলে খবর পায় পুলিশ। আগস্ট মাসের শেষের দিকে পার্শ্ববর্তী এক অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তার শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলা দেহটি উদ্ধার করে এফবিআই। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অ্যালেক্সিস ফ্লোরেসকে মারাত্মক বিপজ্জনক হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

পুরষ্কার

অ্যালেক্সিস ফ্লোরেসকে সরাসরি ধরিয়ে দিলে বা ফ্লোরেস পর্যন্ত পৌঁছানোর মতো সঠিক তথ্য দিতে পারলে এফবিআই ১ লক্ষ মার্কিন ডলার পুরষ্কার দেবে বলে ঘোষণা করেছে।

৭. জেসাস রবার্তো মুঙ্গুইয়া

জন্মস্থান: টরেন্স, ক্যালিফোর্নিয়া

জন্মতারিখ: আগস্ট ১৩, ১৯৭৬

চোখের রঙ: বাদামি

উচ্চতা: ৫’৭”

ওজন: ২১০ পাউন্ড

চিহ্নিতকরণ: সারা গায়ের অসংখ্য ট্যাটু, বুকে লেখা ‘মাই বেবি জেসিকা’, কেটে ফেলা মধ্যাঙ্গুলি

জাতীয়তা: আমেরিকান

জেসাস রবার্তো মুঙ্গুইয়া; Source: fbi.gov

লক্ষণীয়

মুঙ্গুইয়া কুখ্যাত ‘টেপা ১৩’ গ্যাংয়ের সদস্য, এখনো পর্যন্ত গ্যাংয়ের অন্যান্য সদস্যদের সাথে তার সম্পর্ক আছে। লস অ্যাঞ্জেলস, বেকারসফিল্ড, ক্যালিফোর্নিয়ায় তার পরিচিত লোকজন আছে।

সতর্কতা

জেসাস রবার্তো মুঙ্গুইয়া তার স্ত্রীকে অপহরণ করে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত। ২০০৮ সালের ২ জুলাই, নেভাডার লাস ভেগাসে এই কাজ করে সে। লাস ভেগাসের জজ কোর্ট তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথম ডিগ্রি খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। অবৈধভাবে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার অপরাধে একই বছরের ৯ জুলাই তার নামে ফেডারেল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আদালত।

পুরষ্কার

জেসাস রবার্তো মুঙ্গুইয়াকে সরাসরি ধরিয়ে দিলে বা মুঙ্গুইয়া পর্যন্ত পৌঁছানোর মতো সঠিক তথ্য দিতে পারলে এফবিআই ১ লক্ষ মার্কিন ডলার পুরষ্কার দেবে বলে ঘোষণা করেছে।

৬. রবার্ট উইলিয়াম ফিশার

জন্মস্থান: ব্রুকলিন, নিউ ইয়র্ক

জন্মতারিখ: এপ্রিল ১৩, ১৯৬১

চোখের রঙ: নীল

উচ্চতা: ৬’

ওজন: ১৯০ পাউন্ড

পেশা: মূত্রনিষ্কাশন অস্ত্রোপচার যন্ত্রের টেকনিশিয়ান, শ্বাসযন্ত্রের চিকিৎসক, দমকল কর্মী

জাতীয়তা: আমেরিকান

রবার্ট উইলিয়াম ফিশার; Source: fbi.gov

লক্ষণীয়

শারীরিকভাবে একদম ফিট এবং বাইরের কাজ যেমন শিকার করা, মাছ ধরায় বিশেষ পারদর্শী। উপরের সারির একটি দাঁতে সোনার ক্যাপ পরানো রয়েছে রবার্ট উইলিয়াম ফিশার। তার হাঁটার স্টাইলের মধ্যে সামান্য ত্রুটি চোখে পড়বে, কোমরের ব্যথার জন্য ঝুঁকে হাঁটতে হয় ফিশারকে। সারাক্ষণ তামাক চিবোতে থাকে সে। নিউ মেক্সিকো আর ফ্লোরিডায় তার বেশ কিছু আত্মীয়-স্বজন রয়েছে। অত্যাধুনিক রাইফেলসহ বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র সার্বক্ষণিক তার সাথে থাকে।

সতর্কতা

২০০১ সালের এপ্রিল মাসে স্ত্রী ও ছোট দুটি সন্তানকে হত্যার দায়ে তাকে খুঁজছে এফবিআই। গোটা পরিবারকে খুন করে অ্যারিজোনার যে বাড়িটিতে তারা থাকত, তাতে আগুন ধরিয়ে দেয় ফিশার। তাকে মারাত্মক বিপজ্জনক হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

পুরষ্কার

রবার্ট উইলিয়াম ফিশারকে সরাসরি ধরিয়ে দিলে বা ফিশার পর্যন্ত পৌঁছানোর মতো সঠিক তথ্য দিতে পারলে এফবিআই ১ লক্ষ মার্কিন ডলার পুরষ্কার দেবে বলে ঘোষণা করেছে।

৫. এডুয়ার্ডো রাভেলো

জন্মস্থান: মেক্সিকো

ব্যবহৃত জন্মতারিখ: অক্টোবর ১৩, ১৯৬৮/ ডিসেম্বর ২২, ১৯৬৫/ অক্টোবর ১৫, ১৯৬৮/ নভেম্বর ১৩, ১৯৬৯

চোখের রঙ: বাদামি

উচ্চতা: ৫’৯”

ওজন: ১৫০-১৮০ পাউন্ড

জাতীয়তা: মেক্সিকান

এডুয়ার্ডো রাভেলো; Source: fbi.gov

লক্ষণীয়

বারিও আযটেকা অপরাধ সংঘের নেতা হিসেবে পরিচিত রাভেলো। তার নির্দেশে মেক্সিকোর জুয়ারেয এলাকায় আস্তানা গেড়েছে এই গ্যাংয়ের সদস্যরা। রাভেলোসহ তার গ্যাংয়ের সদস্যরা সবাই ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করে। মাদক চোরাচালান, অস্ত্র পাচার থেকে শুরু করে অসংখ্য খুনের দায়ে অভিযুক্ত রাভেলো। প্লাস্টিক সার্জারি করে চেহারা পাল্টানো থেকে শুরু করে আঙুলের ছাপ পরিবর্তন করার রেকর্ডও আছে তার।

সতর্কতা

এডুয়ার্ডো রাভেলো ‘ট্যাবলাস’ নামে পরিচিত। টেক্সাস জুড়ে বহুজাতিক গ্যাং ‘বারিও আযটেকা’র সাথে তার সরাসরি সম্পর্ক, কালবাজারি, অর্থ আত্মসাৎ এবং মাদক সংক্রান্ত অপকর্মের জন্য তাকে খুঁজছে এফবিআই। ২০০৩ সাল থেকে পলাতক রাভেলোর নামে অসংখ্য খুনের অভিযোগ রয়েছে।

পুরষ্কার

এডুয়ার্ডো রাভেলোকে সরাসরি ধরিয়ে দিলে বা রাভেলো পর্যন্ত পৌঁছানোর মতো সঠিক তথ্য দিতে পারলে এফবিআই ১ লক্ষ মার্কিন ডলার পুরষ্কার দেবে বলে ঘোষণা করেছে।

৪. উইলিয়াম ব্র্যাডফোর্ড বিশপ জুনিয়র

জন্মস্থান: প্যাসেডিনা, ক্যালিফোর্নিয়া

জন্মতারিখ: আগস্ট ১, ১৯৩৬

চোখের রঙ: বাদামি

উচ্চতা: ৬’১”

ওজন: ১৮০ পাউন্ড

পেশা: যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বৈদেশিক পরিষেবা কর্মকর্তা

জাতীয়তা: আমেরিকান

উইলিয়াম ব্র্যাডফোর্ড বিশপ জুনিয়র; Source: trbimg.com

লক্ষণীয়

প্রায় ৮১ বছর বয়সী বিশপ বহির্জগতের প্রতি আগ্রহী এক ব্যক্তি ছিল এবং খুব সম্ভবত এখনো আছে। ক্যাম্প করা, পাহাড়ে ওঠা এসব ছিল তার নেশা। আফ্রিকা এলাকায় খুব ঘুরে বেড়াত সে। মাছ ধরা, সাঁতার কাটা, জগিং করা, টেনিস খেলা, স্কিইং, মোটরসাইকেল চড়া সব কাজে ছিল তার দক্ষতা। সপ্তাহের বেশিরভাগ দিনই বাইরে কাটাত। বিশপ আফ্রিকার লাইসেন্সধারী পাইলট। রেগে গেলে খুব বাজেভাবে সেই রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটানো এবং নিজের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত ভালোবাসা তার জীবনে কাল হয়ে আসে।

সতর্কতা

উইলিয়াম ব্র্যাডফোর্ড বিশপ জুনিয়র প্রচণ্ড আঘাত করে খুন করে তার স্ত্রী (৩৭), মা (৬৮), এবং তিন ছেলেকে (৫, ১০, ১৪ বছর বয়সী)। ১৯৭৬ সালের ১ মার্চ ম্যারিল্যান্ডের বেথেসডায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় সে। তাদের মৃতদেহ উত্তর ক্যারোলিনার কলাম্বিয়ায় পাঠিয়ে দেয় বিশপ। অগভীর গর্ত খুঁড়ে সবাইকে সেখানে মাটিচাপা দিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয় সে। ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকলে সে আত্মহত্যার চেষ্টা করতে পারে।

পুরষ্কার

উইলিয়াম ব্র্যাডফোর্ড বিশপ জুনিয়রকে সরাসরি ধরিয়ে দিলে বা বিশপ পর্যন্ত পৌঁছানোর মতো সঠিক তথ্য দিতে পারলে এফবিআই ১ লক্ষ মার্কিন ডলার পুরষ্কার দেবে বলে ঘোষণা করেছে।

৩. সান্তিয়াগো ভিয়ালবা মেডেরোস

জন্মস্থান: ট্যাকোমা, ওয়াশিংটন

জন্মতারিখ: জুলাই ৫, ১৯৯১

চোখের রঙ: বাদামি

উচ্চতা: ৫’১০”

ওজন: ১৪০ পাউন্ড

চিহ্নিতকরণ: বাম কাঁধে ‘এস’ এবং ডান কাঁধে ‘ই’ লেখা ট্যাটু

জাতীয়তা: আমেরিকান

সান্তিয়াগো ভিয়ালবা মেডেরোস; Source: fbi.gov

লক্ষণীয়

‘ইস্টসাইড লোকোটেস সুরেনো’ (ইএলএস) গ্যাংয়ের সদস্য মেডেরোস। ওয়াশিংটন এবং মেক্সিকোতে তার সঙ্গী-সাথীর অভাব নেই। ইংলিশ এবং স্প্যানিশ দুই ভাষাতেই কথা বলতে পারদর্শী সে।

সতর্কতা

সান্তিয়াগো ভিলালবা মেডেরোস ‘পুছো’ নামেই বেশি পরিচিত। ২০১০ সালের থেকেই অসংখ্য অপরাধকর্মের সাথ জড়িত সন্দেহে তাকে খুঁজছে এফবিআই। সে বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাস্তায় চলমান গাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়তে থাকে মেডেরোস। তাতে নিহত হয় ২০ বছর বয়সী এক মেয়ে এবং মারাত্মকভাবে আহত হয় তার ভাই। মার্চ মাসে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা এক লোককে উদ্দেশ্য করে গুলি ছোড়ে মেডেরোস, ঘটনাস্থলেই মারা যায় ২১ বছরের ছেলেটি। এই দুই ঘটনায় ২০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার। গ্রেপ্তার এড়াতে অবৈধভাবে দেশ ছেড়ে পালায় মেডেরোস।

পুরষ্কার

সান্তিয়াগো ভিলালবা মেডেরোসকে সরাসরি ধরিয়ে দিলে বা মেডেরোস পর্যন্ত পৌঁছানোর মতো সঠিক তথ্য দিতে পারলে এফবিআই ১ লক্ষ মার্কিন ডলার পুরষ্কার দেবে বলে ঘোষণা করেছে।

২. জ্যাসন ডেরেক ব্রাউন

জন্মস্থান: ক্যালিফোর্নিয়া

ব্যবহৃত জন্মতারিখ: জুলাই ১, ১৯৭৯/ জানুয়ারি ১৭, ১৯৭১

চোখের রঙ: সবুজ

উচ্চতা: ৫’১০”

ওজন: ১৮০ পাউন্ড

পেশা: গলফ খেলার সরঞ্জাম আমদানি-রপ্তানি

জাতীয়তা: আমেরিকান

জ্যাসন ডেরেক ব্রাউন; Source: fbi.gov

লক্ষণীয়

অনর্গল ফ্রেঞ্চ ভাষায় কথা বলে যাওয়া জ্যাসন ডেরেক ব্রাউনের আন্তর্জাতিক ব্যবসায় মাস্টার্স ডিগ্রী আছে। অনবদ্য গলফার, স্নোবোর্ডার, স্কিয়ার আর বাইকার ব্রাউনের বেশ নামডাক আছে নাইটক্লাবগুলোতে। সেখানে নিজের দামী গাড়ি, নৌকা আর অন্যান্য জিনিসের বড়াই করে সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে পছন্দ করে সে। গ্লক ৯ মিমি. এবং ০.৪৫ ক্যালিবারের দুটি পিস্তল সবসময় তার সাথে থাকে। ফ্রান্স থেকে মরমন মিশন শেষ করা ব্রাউনের আত্মীয়-স্বজন রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া, অ্যারিজোনা এবং উটাহ শহরে।

সতর্কতা

অ্যারিজোনার ফোনিক্সে খুন এবং সশস্ত্র ডাকাতির দায়ে জ্যাসন ডেরেক ব্রাউনকে খুঁজছে এফবিআই। ২০০৪ সালের নভেম্বর মাসে, সিনেমা থিয়েটারের সামনে ব্যাংকের টাকা বহনকারী গাড়িবহরে গুলি চালিয়ে এক গার্ডকে খুন করে টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় ব্রাউন।

পুরষ্কার

জ্যাসন ডেরেক ব্রাউনকে সরাসরি ধরিয়ে দিলে বা ব্রাউন পর্যন্ত পৌঁছানোর মতো সঠিক তথ্য দিতে পারলে এফবিআই ২ লক্ষ মার্কিন ডলার পুরষ্কার দেবে বলে ঘোষণা করেছে।

১. ভদ্রেশকুমার চেতানভাই প্যাটেল

জন্মস্থান: গুজরাট, ভারত

জন্মতারিখ: মে ১৫, ১৯৯০

চোখের রঙ: বাদামি

উচ্চতা: ৫’৯”

ওজন: ১৬৫ পাউন্ড

পেশা: ডোনাট শপের কর্মচারী

জাতীয়তা: ভারতীয়

ভদ্রেশকুমার চেতানভাই প্যাটেল; Source: fbi.gov

লক্ষণীয়

প্যাটেলকে শেষবার দেখা গেছে নিউ জার্সির নিওয়ার্ক এলাকায়।

সতর্কতা

একসাথে ডোনাট শপে কাজ করার সময় ভারী কোনো অস্ত্র দিয়ে বারবার আঘাত করে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে প্যাটেলকে খুঁজছে এফবিআই। ২০১৫ সালের ১২ এপ্রিল ম্যারিল্যান্ডে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় প্যাটেল। প্রথম ও দ্বিতীয় ডিগ্রী খুন, প্রথম ও দ্বিতীয় ডিগ্রী বেআইনিভাবে প্রহার এবং খুনের উদ্দেশ্যে মারাত্মক অস্ত্র বহনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল পালিয়ে কোথায় চলে যায় প্যাটেল, তার খোঁজ এখনো পায়নি এফবিআই।

পুরষ্কার

ভদ্রেশকুমার চেতানভাই প্যাটেলকে সরাসরি ধরিয়ে দিলে বা প্যাটেল পর্যন্ত পৌঁছানোর মতো সঠিক তথ্য দিতে পারলে এফবিআই ২ লক্ষ মার্কিন ডলার পুরষ্কার দেবে বলে ঘোষণা করেছে।

ফিচার ইমেজ: trbimg.com

Related Articles