উত্তর আফ্রিকার সাগরপাড়ের দেশ মরক্কো। আটলান্টিকের পাড়ে আর ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত মরক্কো একইসাথে প্রকৃতি ও ইতিহাসের অবারিত দানে ধন্য। যদি প্রকৃতির মায়াবী সৌন্দর্যে বিমোহিত হতে চান, তাহলে মরক্কো হতে পারে আপনার জন্য সেরা গন্তব্য। আবার যদি ইতিহাসের নানা বাঁকে হারাতে চান, তাহলেও মরক্কোকে চোখ বন্ধ করে রাখতে পারেন আপনার ভ্রমণ তালিকায়। সবুজ বন, বিস্তীর্ণ মরুভূমি, নীল সাগর, সাদা বালুকাবেলা, সুউচ্চ পর্বত থেকে শুরু করে প্রাচীন শহর, বিশাল দুর্গ, রঙ-বেরঙের বাজার- কী নেই মরক্কোতে! এছাড়া মরক্কোর শহরগুলোতে মধ্যযুগীয় ধাঁচের সাথে আধুনিকতার বিস্ময়কর সংমিশ্রণ আপনাকে মুগ্ধ করবেই। পাঠক, তো চলুন ডুব দেয়া যাক মরক্কোর জাদুকরী ভুবনে। জানা যাক মরক্কোর পর্যটন রত্নগুলো সম্পর্কে।
মারাকেশ
তুষারঢাকা অ্যাটলাস পর্বতমালার পাদদেশে, মরক্কোর ঠিক মাঝখানে অবস্থিত মারাকেশ মরক্কোর চতুর্থ বৃহত্তম শহর। রাজধানী রাবাত থেকে ৩২৭ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত এই শহরটি প্রতিষ্ঠা করেন আলমোরাভিদ সুলতান ইউসুফ বিন তাশফিন। মারাকেশকে বলা হয় ‘লাল শহর’। এর বেশিরভাগ বাড়িঘর লাল পাথরে নির্মিত বলে এহেন তকমা জুটেছে মারাকেশের কপালে। রুপসী মারাকাশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ এর বিখ্যাত নগরচত্বর জামা এল ফিনা।
এখানে এলে লক্ষ্য করা যায় অতীত আর বর্তমান মরক্কোর এক দারুণ মেলবন্ধন। মরক্কোর প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী উপাদানগুলোর সাথে আধুনিক উপকরণের সংমিশ্রণ ঘটেছে যেন এই চত্বরে। এই চত্বরটি মারাকেশ প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে এ পর্যন্ত সকল ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক উত্থানপতনের সাক্ষী হয়েছে। প্রথম প্রথম এই জায়গাটি রাজাবাদশারা জনগণের শিরশ্ছেদ করার কাজে ব্যবহার করতেন। পরে একসময় স্থানীয় মরুচারী ও পর্বতবাসীদের ব্যবসায়িক আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত এই এই চত্বরটি। ধীরে ধীরে এখানে নানারকম দোকানপাট গড়ে ওঠে এবং রমরমা ব্যবসা শুরু হয়।
তারপর থেকেই এই চত্বরটি পরিণত হয় গায়ক-বাদক, জাদুকর-বাজিকর, সাপুড়ে, বানর নাচিয়ে, আয়ুর্বেদিক ওষুধ বিক্রেতা, গল্পকথক থেকে শুরু করে চোর-বাটপার, এমনকি পকেটমারদের লোভনীয় আশ্রয়ে। নগরচত্বর ছাড়াও মারাকেশে রয়েছে মরক্কোর ঐতিহ্যবাহী ‘সউক’ (বাজার)। জলপাই, খেজুর, ডুমুর থেকে শুরু থেকে হাতে বোনা ঝুড়ি, সুগন্ধি, হ্যাট, স্কার্ফ, টি-শার্ট, চা, কার্পেট – সবই পাওয়া যায় বাজারগুলোতে। এছাড়া মারাকেশে রয়েছে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শাসকের নির্মাণ করা নগরপ্রাচীর, দুর্গ, সমাধিসৌধ, বাগান, রাজপ্রাসাদ, মসজিদ প্রভৃতি। মসজিদের কথা যখন উঠলই তখন কুতুবিয়া মসজিদের কথা না বললেই নয়।
এটি মারাকেশ শহরের সবচেয়ে বড় মসজিদ। খলিফা ইয়াকুব আল-মনসুরের সময় এটি নির্মিত হয়। এই মসজিদের বিশেষত্ব হচ্ছে এর ৭৭ মিটার উঁচু মিনার। এই মিনারের চূড়ায় রয়েছে তামার বলের নজরকাড়া কারুকাজ। তো বুঝতেই পারছেন, আফ্রিকার ব্যস্ততম এই শহরটি ঘুরে না দেখলে আপনার মরক্কো ভ্রমণ কখনোই পূর্ণতা পাবেনা।
ফেজ আল বালি
মরক্কোর ফেজ শহরের পুরনো প্রাচীরঘেরা অংশকেই মূলত ফেজ আল বালি বলা হয়। সরু প্যাঁচানো গলিপথের গোলকধাঁধায় হারিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলে আপনাকে স্বাগত জানাই ফেজ আল বালিতে।
এই শহরের রাস্তাগুলো এত সরু যে এখানে কোনো যানবাহন চলাচল করে না। সেজন্য এই শহরটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘মোটর কারমুক্ত নগরী’ উপাধিতে ভূষিত হয়েছে। ফেজ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মধ্যযুগীয় নগরী, যা এখনও পুরোপুরি বহাল তবিয়তে টিকে আছে। শহরের রাস্তাগুলোর দুপাশ দোকান, মসজিদ, মাদ্রাসায় ঠাসা। ঐতিহাসিক এই স্থাপত্যগুলোতে অরিয়েন্টাল, আফ্রিকান এবং মুরিশ স্থাপত্যের সংমিশ্রণ লক্ষণীয়।
ফেজ শহরটি নির্মিত হয়েছিল ইদ্রিসিদ রাজবংশের শাসনামলে, তাদের রাজধানী হিসেবে। পরে আলমোরাভিদরা এসে ফেজ নদীর অপর পাশে নতুন শহর নির্মাণ করে এবং নদীর উপর সেতু বানিয়ে দুই শহরকে সংযুক্ত করে। শহরের নতুন ও পুরনো অংশকে একত্রে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করে ১৯৮১ সালে। ফেজের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিশেষত্ব হচ্ছে এখানেই অবস্থিত গিনেস বুক কর্তৃক স্বীকৃত উচ্চশিক্ষার সর্বপ্রাচীন প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি অব আল কারউইন।
তাঞ্জিয়ার
জিব্রাল্টার প্রণালির নাম তো নিশ্চয়ই শুনেছেন। বিখ্যাত এই প্রণালি সংযুক্ত করেছে আটলান্টিক মহাসাগর আর ভূমধ্যসাগরকে। এই জিব্রাল্টার প্রণালির দক্ষিণ তীরে অবস্থিত আফ্রিকা তথা মরক্কোর গুরুত্বপূর্ণ বন্দর নগরী তাঞ্জিয়ার। সুবিধাজনক ভৌগলিক অবস্থানের কল্যাণে দীর্ঘদিন ধরে এই শহরটি ইউরোপ থেকে আফ্রিকা গমনের প্রবেশদ্বারের ভূমিকা পালন করে আসছে। সাদা চুনাপাথরে গঠিত একটি পাহাড়ের পাদদেশে গড়ে উঠেছে এই শহরটি। সাদা পাহাড়ের পটভূমিতে নীল-সাদা রঙের বাড়িঘর- সবমিলিয়ে যেন অনিন্দ্যসুন্দর এক ছবি।
মারাকেশকে যদি ‘লাল শহর’ বলা হয়, তাহলে তাঞ্জিয়ারকে বলতে হবে ‘সাদা শহর’। বিশ শতকের শুরু থেকে মধ্যভাগ পর্যন্ত বিভিন্ন যৌথ রাজনৈতিক তত্ত্বাবধানে ছিল এটি পরিণত হয়েছিল আধা-স্বাধীন এক নগরীতে। সেই সুবাদে তাঞ্জিয়ার পরিণত হয় কূটনীতিক, ব্যবসায়ী, লেখক, চিত্রকর ও গুপ্তচরদের নিরাপদ স্বর্গে। শুধু ভূরাজনৈতিক বিশেষত্বই নয়, তাঞ্জিয়ারের রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং বিচিত্র সংস্কৃতির সংমিশ্রণে গড়া সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক জীবন। ইবনে বতুতাকে চেনেন নিশ্চয়ই? আরে ঐ যে সেই বিখ্যাত পর্যটক!
সেই বতুতার জন্মস্থান ও সমাধিসৌধ কিন্তু এই তাঞ্জিয়ারেই অবস্থিত। আফ্রিকার সবচেয়ে বিখ্যাত ও বিতর্কিত লেখক মুহাম্মাদ শুকরির বই রচিত হয়েছে তাঞ্জিয়ারের পটভূমিতে। বিখ্যাত লেখক পাওলো কোয়েলহোর ভূবনজয়ী উপন্যাস ‘দ্য আলকেমিস্ট’-এও তাঞ্জিয়ারের উপস্থিতি ছিল, তাই না? মনে করে দেখুন। এছাড়াও এখানে এসেছেন অ্যালেন গিন্সবার্গ, উইলিয়াম বারোসের মতো সাহিত্য প্রতিভারা।
এবার তাঞ্জিয়ারের বিশেষ বিশেষ পর্যটন আকর্ষণের কথা বলবো। প্রথমেই বলতে হয় ‘কাসবাহ’ এর কথা। কাসবাহ হচ্ছে এমন জায়গা যেখানে রাজা-বাদশাহরা বাস করেন এবং যুদ্ধের সময় শহরের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করেন। তাঞ্জিয়ারের ‘কাসবাহ’ মরক্কোর সুলতানদের ঐতিহাসিক আবাস ছিল।
কাসবাহর কেন্দ্র আছে ‘দার এল মেকজেন’। বর্তমানে একে জাদুঘরে পরিণত করা হয়েছে। এছাড়া রয়েছে সমুদ্রসৈকত, স্পারটেল অন্তরীপ, তাঞ্জিয়ার গ্র্যান্ড মসজিদসহ আরো অনেক কিছু।
বাদশাহ দ্বিতীয় হাসান মসজিদ
মরক্কোর বৃহত্তম শহর ক্যাসাব্ল্যাঙ্কায় অবস্থিত দ্বিতীয় হাসান মসজিদ আফ্রিকার বৃহত্তম এবং পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম মসজিদ।
বাদশাহ দ্বিতীয় হাসান এটি নির্মাণ করেন পঞ্চম মুহাম্মাদের স্মৃতির সম্মানে। এর নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৮৬ সালে এবং শেষ হয় সাত বছর পর ১৯৯৩ সালে। এটি মরক্কোর সবচেয়ে ব্যয়বহুল স্থাপনা। মসজিদটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৫৮৫ মিলিয়ন ইউরো। এর নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে গ্র্যানাইট, মার্বেল, কাঠ এবং কাচ। এতে মিশ্রণ ঘটেছে মরক্কান স্থাপত্যশৈলীর সাথে মুরিশ স্থাপত্যশৈলীর।
মার্বেলের কারুকাজ করা মেঝে, সিডার কাঠের ছাদ, দেয়ালে জেলিজের কারুকাজ- সবমিলিয়ে নান্দনিক এর অভ্যন্তরীণ সজ্জা। এই মসজিদটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভাসমান মসজিদ। এর কিছু অংশ অবস্থিত ভূমিতে অবস্থিত, আর কিছু অংশ সাগরের উপর।
মসজিদের কেন্দ্রীয় প্রার্থনাস্থল নিচতলায়। এখান থেকে স্বচ্ছ কাচের মেঝের ভেতর দিয়ে উপভোগ করা যায় আটলান্টিক মহাসাগরের নৈসর্গিক সৌন্দর্য। মসজিদটির আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর ২১০ মিটার উঁচু মিনার। এটি পৃথিবীর সর্বোচ্চ মিনার!
বাব আল মানসুর
মরক্কোর মেকনেস শহরের এল হেদিম চত্বরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত ধনুকাকৃতির এই প্রবেশপথটি মরক্কোর সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে সুন্দর প্রবেশপথ। এটি মরক্কোর অন্যতম সুরক্ষিত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। এর গায়ে শোভা পাচ্ছে চকচকে টাইলস জেলিজের চোখধাঁধানো কারুকাজ। খোদাই করা আরবি শিলালিপিও এর সৌন্দর্যবর্ধন করেছে। ফটকটির সামনে আরবিতে লেখা রয়েছে, “আমি মরক্কোর সবচেয়ে সুন্দর ফটক। আমি যেন আকাশের চাঁদ। আমার কপালে সম্পদ আর ঐশ্বর্য খোদিত আছে।”
এই ফটকটির বিশেষত্ব হচ্ছে এটি কোনো দুর্গ বা রাজপ্রাসাদে উন্মুক্ত হয়নি। এই দরজা দিয়ে কোথাও যাওয়া যায় না। এই দরজাটি মূলত নির্মাণ করা হয়েছিল জনগণের মনোরঞ্জনের জন্য এবং শহরের সৌন্দর্য বাড়াতে। মরক্কোর একসময়ের স্বৈরাচারী শাসক মৌলে ইসমাঈলের শাসনামলে মেকনেস শহরকে জাঁকজমকপূর্ণ করে গড়ে তোলার অংশ হিসেবে এই ফটকটি নির্মিত হয়। এর নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৭৩২ সালে, তার পুত্র মৌলে আবদুল্লাহর শাসনকালে। এই কারুাকর্যময় ফটকটি দেখলে বাদশাহ ইসমাঈলের রাজকীয় রুচির পরিচয় বেশ ভালোভাবেই পাওয়া যায়।
ভলিউবিলিস
মেকনেস শহরের অদূরে অবস্থিত ভলিউবিলিস গম ক্ষেতে ঘেরা উর্বর কৃষিজমির মাঝখানে অবস্থিত একটি প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শন। ৪২ হেক্টর জায়গাজুড়ে গড়ে ওঠা এই নিদর্শনটি খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে ছিল মৌরিতানিয়ার রাজধানী। পরে এটি রোমান উপনিবেশে পরিণত হয়। সেই সূত্রে এখানে রোমান স্থাপত্যশৈলীতে অনেক ভবন নির্মাণ করা হয়।
মরক্কো যে একসময় রোমান সাম্রাজ্যের অংশ ছিল তার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ এই প্রত্মতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষটি। এটি প্রাগৈতিহাসিককাল থেকে শুরু করে ইসলামী সভ্যতা পর্যন্ত অসংখ্য সভ্যতার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এর বিচিত্র নির্মাণ উপকরণ, যেমন- মোজাইক, মার্বেল, ব্রোঞ্জ, শত শত শিলালিপি এবং বৈচিত্র্যময় নির্মাণশৈলী নানা সময়ের প্রতিভাবান নির্মাতা ও স্থপতিদের মেধার স্বাক্ষর বহন করে চলেছে। খননকাজের মাধ্যমে এখানে আবিষ্কৃত হয়েছে রাজপ্রাসাদ, পার্লামেন্ট ভবন, রাজকীয় প্রবেশপথ প্রভৃতির ভগ্নাবশেষ।
আর্গ চেবি
মরক্কো যাবেন আর মরুভূমিতে ঘুরবেন না, তা কী করে হয়? মরক্কোতে বেশ কিছু বাতাস অধ্যুষিত, ধূলো ওড়া, গাছপালাবিহীন অঞ্চল আছে। এগুলোকে বলা হয় আর্গ। আর্গ চেবি তেমনই এক আর্গ।
এখানে পাথর ঘেরা বালিয়াড়িগুলো ৬৫০ মিটার পর্যন্ত উঁচু। অনেক ট্র্যাভেল কোম্পানি এখানে ক্যামেল ট্রেকিংয়ের ব্যবস্থা করে। তবে আরোও অনেক মজার কাজের জন্য ভালোই উপযুক্ত এই জায়গাটি।
তার মধ্যে আছে ডেজার্ট হাইকিং, স্যান্ড বোর্ডিং, উঁচু বালির ঢিবির মাথায় চড়ে সাহারার মনোমুগ্ধকর সূর্যাস্ত বা সূর্যোদয় দেখা, মরুভূমির জীবনযাত্রা কাছ থেকে দেখতে বেদুইনদের গ্রামে ঢুঁ মেরে আসা, রাতের মরুভূমিতে ক্যাম্পিং ইত্যাদি।
এসাউইরা
আটলান্টিক পাড়ের শহর এসাউইরা। এটি মরক্কোর গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী তো বটেই, গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন আকর্ষণও। বন্দরের ব্যস্ততা, শান্ত সমাহিত সাগরে ভাসমান মাছধরা নৌকা এবং সুদীর্ঘ সাগরসৈকত এখানকার প্রধান আকর্ষণ হলেও প্রাচীরঘেরা শহর, সুরক্ষিত দুর্গ, কারুকার্যময় প্রবেশপথগুলোও আপনার মনকে আন্দোলিত করবে।
বিশেষ ধরনের উপকূলীয় বায়ুপ্রবাহ এসাউইরাকে পরিণত করেছে সারাবিশ্বের সৈকতকেন্দ্রিক খেলাধুলাপ্রেমী পর্যটকদের তীর্থস্থানে। শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহের কারণে এখানে এপ্রিল থেকে নভেম্বরে উইন্ডসার্ফিং এবং কাইটসার্ফিং করতে ভীড় জমান নানা দেশের লোকজন। প্রচুর বাতাসের কল্যাণে এই শহরের ভৌগোলিক উপনাম দেয়া হয়েছে ‘আফ্রিকার বাতাস নগরী’। তবে বেশিরভাগ দর্শক এখানে আসেন বসন্তে বা হেমন্তে, এর মশলার সুগন্ধমাখা গলিপথ বা সুরক্ষিত নগরীর প্রশস্ত রাজপথে হাঁটার সুখ পেতে। প্রচুর বাতাস থাকার কারণে এখানে গরম পড়ে না তেমন। তাই এখানে ঘুরে শান্তি পাওয়া যায়। আবার মারাকেশের মতো কোলাহলও এখানে নেই। শান্ত শহরে শুধু যেন বাতাস বয়ে যাওয়ার শব্দই প্রতিধ্বনিত হয়।
মরক্কো এমন একটা দেশ যার প্রতিটি গ্রাম, প্রতিটি শহরের একটা আলাদা সৌন্দর্য আছে। সত্যি বলতে পুরো দেশই যেন সৌন্দর্য্যের এক ভিন্নধর্মী সমুদ্রে নিমজ্জিত। মরক্কোতে একবার গেলে আপনি এর অনির্বচনীয় সেই সৌন্দর্যের প্রেমে পড়তে বাধ্য হবেন। বারবার ফিরে যেতে চাইবেন অপরুপ সুন্দর এই দেশটিতে।