আফগানিস্তানের রাজধানীর কাবুল ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে তালেবান সশস্ত্র বাহিনীর হামলায় অন্তত পাঁচজন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে আল জাজিরা। প্রায় ১৬ ঘণ্টা লড়াইয়ের পরে হোটেলটির অবরোধের অবসান হয়।
আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাজিব দানিশ জানান, এ ঘটনায় আরো ৬ জন আহত হয় এবং ৪১ জন বিদেশীসহ ১৫৩ জনকে হোটেল থেকে অপসারণ করা হয়। তিনি আরো বলেন,
“আমরা অন্তত চারজন আক্রমণকারীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছি।”
শনিবার রাতে কাবুলের বাগ-ই বালা অঞ্চলের পাহাড়চূড়ায় অবস্থিত এ হোটেলে চারজন বন্দুকধারী প্রবেশকালে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হয়, যা রবিবার সকাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, প্রায় তিন সপ্তাহ আগে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হোটেলটির নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয়। তারা অনুসন্ধান চালাচ্ছে, যেখানে সরকারি কর্মকর্তা ও বিদেশী নাগরিকদের আনাগোনা রয়েছে সেখানে কিভাবে সন্ত্রাসীরা দালানের ভিতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। শনিবার সন্ধ্যার জন্য হোটেলটির ২০০ কক্ষের সবগুলোই বুকিং দেওয়া ছিল।
হামলার সময় টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত একটি সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য অন্তত ৩৪ জন প্রাদেশিক কর্মকর্তা একত্রিত হয়েছিলেন। সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার জন্য ঘটনার সময় হোটেলটিতে উপস্থিত আব্দুল রাহমান নাসেরি নামে এক ব্যক্তি জানান, তিনি চারজন বিদ্রোহীকে সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত অবস্থায় দেখেন। তিনি বলেন,
“তারা পশতু ভাষায় কথা বলছিল। তাদের একজন চিৎকার করে বলে ‘ভালো-খারাপ যেটাই হোক, এদের একজনকেও বাঁচিয়ে রেখো না। সবাইকে গুলি করে হত্যা করো’“
তালেবান এ হামলার দায়দায়িত্ব স্বীকার করেছে। তালেবানের মুখপাত্র যাবিহুল্লাহ মুজাহিদ হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছেন যে, হামলায় পাঁচ জন বন্দুকধারী অংশগ্রহণ করে। শহরটির হোটেলগুলোতে সশস্ত্রবাহিনী হামলা করার পরিকল্পনা আঁটছে, কাবুলে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে এ ধরনের সতর্কবাণী দেওয়ার কয়েকদিন পরেই এ ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার রাতের আক্রমণসহ এই নিয়ে হোটেলটির উপর দ্বিতীয়বারের মতো হামলা হলো। এর আগে ২০১১ সালের এক রাতে, তালেবান আক্রমণকারী ও আত্মঘাতীদের বোমা হামলায় অন্তত দশ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়। নিরাপত্তা বাহিনী সকল হামলাকারীকে হত্যা করে।
ফিচার ইমেজ: NewIndianExpress