একটি ‘হিট স্কোয়াড’ পরিচালনায় অভিযুক্ত পাকিস্তানের একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা রাও আনোয়ারকে গত মঙ্গলবার দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় প্লেনে ওঠার সময় প্রতিহত করা হয়েছে। হিট স্কোয়াডটি প্রায় ২৫০ জনের বিচার বহির্ভূত হত্যার দায়ে অভিযুক্ত, যাদেরকে তিনি তালেবান সদস্য বলে মিথ্যা দাবি জানিয়েছিলেন।
নকিবুল্লাহ মেহসুদ নামের এক ২৭ বছর বয়সী যুবককে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনায় আসে এই হিট স্কোয়াডের কর্মকাণ্ড। সন্ত্রাসী হিসেবে সন্দেহভাজন নকিবুল্লাহ চলতি বছরের জানুয়ারির ১৩ তারিখে করাচিতে পুলিশের সাথে ‘গুলি বিনিময়ের সময়’ নিহত হয়।
মেহসুদ হত্যার পর অনেক পরিবারই দাবি করে যে, করাচিতে প্রায় দশ বছর দায়িত্ব পালনকালে রাও আনোয়ার ও তার সহযোগী পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের আত্মীয়-স্বজনদের হত্যা করেছে। আনোয়ার সহ বেশ কিছু পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে তালেবানের সন্দেহে জড়িতদের সাথে ‘ভুয়া লড়াইয়ের’ অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে ‘ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি’র কর্মকর্তারা রাও আনোয়ারকে জিন্নাহ বিমান বন্দরে প্লেনে উঠতে বাধা দেন। এদিনই মেহসুদের বাবা মোহাম্মদ খান রাও আনোয়ার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মেহসুদকে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ দায়ের করেন। এটিই এই ঘটনায় আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার প্রথম পদক্ষেপ।
রবিবার করাচির সীমান্ত অঞ্চলে প্রায় এক হাজার বিক্ষুব্ধ মানুষ এবং মেহসুদ গোত্রের সদস্যরা সকল বিচার বহির্ভূত হত্যার জন্য অনুসন্ধানের দাবি জানিয়ে একটি র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।
শের পাওলো মেহসুদ বলেন, “রাও আনোয়ারকে জনসম্মুখে ফাঁসিতে ঝোলানো উচিত।” ত্রিশ বছর বয়সী ফয়জুল্লাহ খান জানান, সাত বছর পূর্বে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু জিম্মায় থাকা অবস্থায় আনোয়ারের দলের হাতে নিহত হয়। তিনি আরও জানান, তারপর থেকে এর বিচারের দাবি করলে তাকে তিনবার গ্রেফতার করা হয়। জেল থেকে বের হতে তাকে ঘুষ দিতে বাধ্য করা হয় এবং দুই বছর করাচির বাইরে অবস্থান করতে বলা হয়।
চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি তারিখে মেহসুদকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। স্থানীয় গণমাধ্যমের মতে, আনোয়ারের গুপ্তচরদের একজন মেহসুদকে দুবাই থেকে টাকা পাঠানো সম্পর্কে ভাইয়ের সাথে ফোনে কথা বলতে শোনে। ১৩ জানুয়ারি আনোয়ার সংবাদকর্মীদের জানান, চারজন সন্ত্রাসী পুলিশের সাথে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে। এদের মাঝে তিনজনের ছবি দেখালেও মেহসুদের ছবি অস্পষ্ট ছিল। পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যরা তার মৃতদেহ শনাক্ত করে।
পরবর্তীতে অনুসন্ধানে মেহসুদের সাথে তালেবানের কোনো সম্পর্ক না পাওয়া গেলে আনোয়ারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় এবং এগারো জন পুলিশ কর্মকর্তার পদাবনতি করা হয়।
ফিচার ইমেজ: Dunya News