আপনার দেশের নাম কী? এর সম্ভাব্য উত্তর হতে পারে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা বা অন্য কোনো দেশ। কিন্তু মাত্র কয়েক বছর আগেও যে লোকটির দেশের নাম ছিল সিরিয়া, বর্তমানে তার দেশের নাম কী? এর উত্তর দেয়া বেশ জটিল, কেননা তার সেই দেশ এখন অনেক ভাগে বিভক্ত; যুদ্ধ বিধ্বস্ত; মাতৃভূমিতে কেউ আর ফিরতে পারবেন কি না তা-ও অনিশ্চিত। ফলে তিনি হয়ে পড়েছেন ‘রাষ্ট্রবিহীন মানুষ’। এই রাষ্ট্রবিহীন মানুষের তালিকা দিনকে দিন ভারী হয়ে চলছে। আরাকান থেকে ইয়েমেন কিংবা আসাম থেকে সিরিয়া- সর্বত্র যেন একই দৃশ্যের নানা রূপ।
তবুও এই রাষ্ট্রহীন মানুষগুলো নতুন করে স্বপ্ন দেখেন। নতুন পৃথিবী বিনির্মাণ করতে চান। আবার তারা তাদের সোনালি অতীতে ফিরে যেতে চান অথবা চান আরও উত্তম কিছু করতে। যুদ্ধবিধ্বস্ত মধ্যপ্রাচ্য থেকে জার্মানিতে এসে আশ্রয় নেয়া কিছু উদ্বাস্তু মানুষের চোখে মুখে যেন তেমনই রঙিন স্বপ্ন। সেজন্য তারা বার্লিনে গড়ে তুলেছেন একটি অ্যারাবিক পাবলিক লাইব্রেরি, যা জার্মানির বুকে প্রথম কোনো আরবি ভাষার গণগ্রন্থাগার। হয়তো এটিই তাদের স্বপ্ন যাত্রার প্রথম বীজরোপণ।
‘বাইনাতনা‘ নামক এই পাবলিক লাইব্রেরিটি বার্লিনের মিট্টি নামক এলাকায় অবস্থিত। বার্লিন পৌরসভার স্টাডটবাইবিলিওথেক গণগ্রন্থাগারের নিকটে অবস্থিত এই লাইব্রেরিতে প্রবেশ করলে আপনি দেখতে পাবেন নানা ধরনের আরবি বই, চিত্ত-বিনোদনের বিভিন্ন উপকরণ ও বেশ সংখ্যক আরবি ভাষাভাষী পাঠক। শুধুমাত্র যে উদ্বাস্তু মানুষজন সেখানে বই পড়তে আসে এমনটি নয়, বহু আগে থেকে যেসকল আরবি ভাষাভাষী মানুষ বার্লিনে বসবাস করে আসছেন তাদের কাছেও লাইব্রেরিটি সমানভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
লাইব্রেরিতে প্রবেশ করতেই দেখা গেলো, এক মিশরীয় দম্পত্তি লাইব্রেরিতে সাজানো বইয়ের তাক থেকে আরবি ভাষায় লিখিত উপন্যাস, কবিতা ও নন-ফিকশন বই খোঁজ করছেন; কিছু সিরিয়ান ও ফিলিস্তিনি তরুণ-তরুণী কফি খাওয়ার ফাঁকে নিম্নস্বরে গল্প করছেন; আবার কেউ কেউ ল্যাপটপ নিয়ে কাজে মগ্ন হয়ে আছেন। লাইব্রেরির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মুহান্নাদ কুয়াইকনি বলেন,
প্রত্যেকের জন্য এটি একটি প্রশান্তিদায়ক ও স্বস্তির জায়গা।
লাইব্রেরির নামটিও রাখা হয়েছে একটি আরবি শব্দের অনুকরণে। আরবি ‘বাইনাতনা’ শব্দের অর্থ ‘আমাদের মধ্যে’। অর্থাৎ এই লাইব্রেরিটি সবার মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করতে চায়।
কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক নিজেদের উদ্যোগে এই লাইব্রেরিটি প্রতিষ্ঠা করেছেন। বই পড়ার পাশাপাশি তারা এখানে মাঝেমধ্যে গান, কবিতা ও গল্প পাঠের আয়োজন করেন।
সাহিত্য ও অনুবাদ বিভাগের সাবেক ছাত্র কাইকোনাই। সিরিয়ার আলেপ্পোতে তার একটি ব্যক্তিগত লাইব্রেরি ছিল। কিন্তু ২০১৩ সালে যুদ্ধের কারণে যখন তিনি দেশ ছাড়েন, তখন তিনি সেখানেই লাইব্রেরিটি ফেলে রেখে আসতে বাধ্য হন।
গত কয়েক শতক যাবত জার্মানিতে বেশ বড় একটি আরবি ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী বসবাস করে আসছে। কিন্তু গত পাঁচ বছরে, বিশেষত ইরাকে ও সিরিয়ায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সেই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব শরণার্থীরা তাদের সর্বস্ব হারিয়ে জার্মানিতে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। মুহান্নাদ কুয়াইকনি বলেন,
আমরা শুধু আমাদের ঘর-বাড়ি ও মাতৃভূমি হারাইনি, আমরা আমাদের বইগুলোও হারিয়ে ফেলেছি, যা আমাদের জীবনযাপনের অন্যতম সঙ্গী ছিল।
জার্মানিতে আশ্রয় নেয়া এসব শরণার্থীরা বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান দ্বারা সাহায্য প্রাপ্ত হয়েছেন, অনেকে নিজ উদ্যোগেও তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু বই হারানোর সেই দুঃসহ স্মৃতি কেউ তাদেরকে ভোলাতে আসেননি। তিনি বলেন:
অধিকাংশ সাহায্য সংস্থা শরণার্থীদের খাদ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে সহায়তা প্রদান করেন। কিন্তু তারা আমাদের সাংস্কৃতিক ও জ্ঞানগত প্রয়োজনকে খুব খাটো করে দেখেছে।
এবার তাহলে বাইনাতনা লাইব্রেরি গড়ে তোলার পেছনের গল্প জানা যাক। কুয়াইকনি যখন দেশ ছেড়ে জার্মানিতে আসেন, তখন তিনি এই অভাববোধ থেকে বার্লিনের বিশিষ্ট সাহিত্য বোদ্ধা ও সাংবাদিক ইনেস ক্যাপেরটের সাথে যোগাযোগ করেন। তিনি প্রথমে তার কাছে শরণার্থী জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন। একপর্যায়ে তিনি ক্যাপেরটের কাছে জানতে চান, জার্মানিতে কীভাবে আরবি ভাষায় লিখিত বই পাওয়া যেতে পারে? কিন্তু এই প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধান করতে গিয়ে তিনি বেশ হতাশ হয়ে পড়েন। কেননা সমগ্র জার্মানিতে কোনো আরবি ভাষায় লিখিত বইয়ের দোকান বা লাইব্রেরি নেই।
২০১৬ সালে কুয়াইকনি আলি হাসান নামের এক সিরিয়ান গায়কের সাথে দেখা করেন। আলি হাসান নিজেও বেশ কিছুদিন যাবত মাতৃভাষা আরবিতে বই না পড়তে পারার যাতনায় ভুগছিলেন। পরে তারা দুজন ও ইনেস ক্যাপেরট মিলে বাইনাতনা লাইব্রেরিটি প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেন। এবং সেখানে আরবি বইয়ের একটি বড় সংগ্রহশালা গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখতে থাকেন।
পরিকল্পনা অনুসারে তারা বই সংগ্রহের মিশন শুরু করেন এবং ইনেস ক্যাপেরট তাদের এই কাজে উৎসাহ প্রদান করতে থাকেন। ক্যাপেরট সাহিত্য ও সাংবাদিকতা জগতের লোক হওয়ায় তার সাথে জার্মানির প্রচুর প্রভাবশালী মানুষের যোগাযোগ ছিল। তিনি সেসব প্রভাবশালী ও মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী মানুষদের সাথে বাইনাতনা লাইব্রেরিকে পরিচয় করিয়ে দেন এবং তাদেরকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান।
একপর্যায়ে তাদের সাথে জর্ডান থেকে আগত এবং জার্মানির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগে অধ্যয়নরত দানা হাদ্দাসের সাথে যোগাযোগ হয় এবং দানা নিজেও এই কর্মসূচির সাথে যুক্ত হন। হানা একাই লাইব্রেরির জন্য প্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র দান করেন। ধীরে ধীরে তাদের সেই স্বপ্নের লাইব্রেরি বাস্তব রূপ লাভ করতে থাকে। কুয়াইকনি বলেন,
আমি বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার সাথে যোগাযোগ করতে থাকলাম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বই দান করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানালাম। এতে আমি দেখলাম, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বই আসতে শুরু করেছে। অনেকে অপরিচিত লোক বই পাঠাতে শুরু করলো। কিছু কিছু পরিবার তাদের মৃত্যুবরণ করা সদস্যের প্রিয় বইগুলোও আমাদের দান করে দিতে থাকলো।
একজন ইরাকি দানকারী তার বাবার দুটি বুকসেলফ বইসহ দান করে দিলেন। সেলফ দুটি বিভিন্ন আরবি নাটকের বই দিয়ে ভর্তি ছিল। অন্যদিকে তার বাবা নিজেও একজন নাট্যনির্মাতা ছিলেন। এক ইতালীয় দম্পতি তার মেয়েকে উৎসর্গ করে প্রায় ২০টি বই দান করলেন। তাদের মেয়ে আরবি ভাষা নিয়ে পড়ালেখা করছিল। কিন্তু এক মর্মান্তিক গাড়ি দুর্ঘটনায় সে প্রাণ হারায়। দান করা বইগুলোও সেই নিহত মেয়েটির ছিল। বিষয়টি স্মরণ করে কুয়াইকনি বলেন,
কিছু কিছু বইতে এখনো তাদের মেয়ের টীকাটিপ্পনী অক্ষত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।
গত কয়েক মাস আগেও বাইনাতনা লাইব্রেরিতে বই ছিল মাত্র ৭০০টির মতো। বর্তমানে সেই সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৩,৫০০টিরও বেশিতে পরিণত হয়েছে। বাইনাতনা লাইব্রেরি এখনো দান গ্রহণ করছে, পাশাপাশি নিজেরাও বই সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কুয়াইকনির জানান, তাদের এখনো অনেক আরবি বইয়ের সংগ্রহ দরকার।
ফেলে রেখে আসা বইয়ের স্মৃতি
ফিলিস্তিনের বংশদ্ভুত সিরিয়ান সাংবাদিক ও লেখক হিবা ওবায়েদ ২০১৩ সালে যখন সিরিয়া ত্যাগ করেন, তখন তিনি সাথে মাত্র একটি বই নিয়ে আসতে পেরেছিলেন। এখন যেন সেই বইটিই তার বাস্তব জীবন। বইটির নাম ‘দ্য বাটারফ্লাই বারডেন’, যা ফিলিস্তিনের প্রখ্যাত কবি মাহমুদ দারবিশের লেখা। দারবিশ এই বইটিতে নির্বাসন, স্থানচ্যুতি, উদ্বাস্তু জীবন ও নানা মানবিক আকাঙ্ক্ষার চিত্রায়ন করেন। দারবিশ যেন হিবা ওবায়েদের এই উদ্বাস্তু জীবন কল্পনা করেই বইটি রচনা করেছিলেন!
ওবায়েদ আলেপ্পোতে আরবি ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়ালেখা করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনি সেই পড়ালেখাকেই জীবনের উৎসাহের মূল কেন্দ্রবিন্দু মনে করেন। আর সেই উৎসাহ থেকে তিনি নিজেও হয়ে উঠেছেন একজন সাহিত্যিক। কিন্তু যুদ্ধের মর্মান্তিক পরিণতি সবকিছু এলোমেলো করে দিল। তিনি বলেন,
আমি আলেপ্পোতে থাকতে একটি বই লিখতে শুরু করেছিলাম। যুদ্ধ শুরু হলে আমি আমার সেই পাণ্ডুলিপি হারিয়ে ফেলি, যদিও সেই গল্প এখনো আমার স্মৃতিতে সংরক্ষিত আছে।
তিনি বার্লিনে নতুন একটি বাড়ির সন্ধান পেয়েছেন, যেটি এখন আরব লেখক ও শিল্পীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। সেটি হলো বাইনাতনা লাইব্রেরি। ওবায়েদ বলেন:
আমি অ্যারাবিক স্ট্রিটে যাই, সেখান থেকে মুদি পণ্য ও নেশাজাত দ্রব্য সিসা কিনে নিয়ে আসি। লাইব্রেরিতে বই পড়ি, অনেকের সাথে পরিচিত হই- এটি এখন আমার কাছে আরেক আলেপ্পোর মত লাগে।
গত জুলাই মাসে বাইনাতনা লাইব্রেরিতে আরবি সাহিত্যের উপর অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি অংশগ্রহণ করেন। সেখানে শিশুদের জন্য লিখিত খালদুম ফানসার ‘ওল্ড সিটি অফ আলেপ্পো’ বইটি নিয়ে আলোচনা করা হয়। সেই অনুষ্ঠানের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ওবায়েদ বলেন,
সেখানে অসংখ্য জার্মান নাগরিকও অংশগ্রহণ করেন। কেননা তারা যুদ্ধ-পূর্ব আলপ্পো সম্পর্কে আরও জানতে চান।
বইটির লেখক ফানসা প্রধানত যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সেই সব শিশুদের টার্গেট করে এই বইটি লিখেছেন, যাদের পূর্বপুরুষগণ আলেপ্পোতে বসবাস করতেন, কিন্তু তারা জানেন না যুদ্ধের কারণে সেই প্রাচীন শহরটি কীভাবে ধ্বংস হয়ে গেল।
বই পড়ার পাশাপাশি বাইনাতনা লাইব্রেরিতে শিশুদের জন্য গেম খেলার ও নিয়মিত গল্প বলার আসর আয়োজন করা হয়। লাইব্রেরিতে আগত পাঠকদের মধ্য থেকে অনেকে আবার ‘ব্যাক অন ট্র্যাক‘ সংগঠনের সাথে কাজ করছেন। যেসব শিশু যুদ্ধে আক্রান্ত হয়ে পড়ালেখা থেকে ছিটকে পড়েছে তাদেরকে নিয়ে কাজ করাই এই সংগঠনটি উদ্দেশ্য।
বাবা-মায়েরাও দল বেঁধে তাদের সন্তানদের নিয়ে বাইনাতনা লাইব্রেরিতে আসেন। কেননা তারা তাদের সন্তানদের নিজ ভাষা আরবি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেন। এসব শিশুরা এখন জার্মান, তুর্কি বা গ্রিক ভাষার পাশাপাশি কিছুটা আরবিও শিখে নিচ্ছে।
বাইনাতনা লাইব্রেরির উদ্যোক্তারা শুধুমাত্র আরবি ভাষাভাষী পাঠকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে চান না। এজন্য তারা যেসব আরবি ভাষার বই জার্মান ও ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়েছে তা-ও সংগ্রহে রাখছেন। এতে করে বার্লিনের স্থানীয় অধিবাসীরাও আরব বিশ্ব সম্বন্ধে অনেক কিছু জানতে পারছে; আরবদের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে অবগত হতে পারছে। লাইব্রেরির অন্যতম উদ্যোক্তা ইনেস ক্যাপেরট বলেন,
বার্লিনে এমন একটি আরবি লাইব্রেরির খুব দরকার ছিল, যেখানে আরবি ভাষাভাষী মানুষ একত্রিত হয়ে মন খুলে কথা বলতে পারবেন ও সময় ব্যায় করতে স্বস্তিবোধ করবে। পাশাপাশি আমাদের এমন একটি পরিবেশেরও দরকারও ছিল, যেখানে আরবি ও জার্মান ভাষাভাষী লোকজন একত্রিত হয়ে পরস্পর ভাব বিনিময় করতে পারবে।
যে সময়টিতে আরব বিশ্ব সম্পর্কে ইউরোপের মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ভুল ধারণা ও অবিশ্বাস ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে, সে সময় বাইনাতনা লাইব্রেরি সে ভুল ধারণাকে অপসারণ করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। মানুষের মধ্যে আরবদের ‘অপর’ করে দেখার চেষ্টাকে দূর করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে জর্ডানের নাগরিক ও লাইব্রেরির অন্যতম উদ্যোক্তা দানা হাদ্দাস বলেন,
আমাদের মধ্যে কোনো ‘অপর’ নেই। এখানে শুধু ‘আমরা’ আছে। আর আছে ‘আমাদের মধ্যে’ বা বাইনাতনা।