Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

সময়: ভারতীয় ধর্মগুলোর বিশেষত্ব যেখানে

দেবরাজ ইন্দ্র প্রাসাদ বানাবেন। দায়িত্ব পড়লো দেবতাদের স্থপতি বিশ্বকর্মার কাঁধে। কিন্তু মুশকিল হলো, প্রাসাদ বানানো শেষ হলেও ইন্দ্রের পছন্দ হয় না। একের পর এক প্রাসাদ প্রস্তুত হয়; আর এটা ওটা খুঁত ধরে বাতিল করে দেন দেবরাজ। আহার, নিদ্রাহীন পরিশ্রমে ক্লান্ত বেচারা বিশ্বকর্মা সাহায্য চাইলো ব্রহ্মার কাছে। প্রার্থনা মঞ্জুর হতে দেরি হলো না। একদিন ইন্দ্র স্বর্গলোকে প্রাসাদ তদারকি করছেন; হঠাৎ প্রবেশ করলো এক ব্রাহ্মণ বালক। বিশ্বকর্মার কাজ দেখতে এসেছে নাকি। বেশ কিছু দিন দেখে বললো, “অপূর্ব; তোমার পূর্ববর্তী কোন ইন্দ্র যা পারেনি; তুমি তা পারছো।”

বালকের মুখে এই মন্তব্য প্রত্যাশা করেননি দেবরাজ। প্রশ্ন করলেন “তোমার বয়স তো অল্প দেখি, তা কয়জন ইন্দ্রকে চেন?” বালক মুখ খুললো, “তোমার বাবা তো কশ্যপ, তাই না? আর ঠাকুরদার নাম তো মরীচি? ঠাকুরদার বাবা ব্রহ্মা না? তুমি প্রলয় দেখেছো ইন্দ্র? প্রলয়ের পর সৃষ্টি দেখেছো? আমি কিন্তু দেখেছি। জানো কতগুলো ব্রহ্মাণ্ড আছে? আমি কিন্তু জানি।” এই অব্দি বলে একসারি পিঁপড়ার দিকে তাকিয়ে হো হো করে হেসে উঠলো বালক। কারণ জানতে চাইলে বললো, “পিঁপড়া দেখেই হাসছি। ওরা কারা জানো? সকলেই তোমার মতো ইন্দ্র ছিলো একেক ব্রহ্মাণ্ডে। নিজের কর্মফলে এখন পিঁপড়া।” (কিশোর পুরাণসমগ্র, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ থেকে সংক্ষেপিত, পৃষ্ঠা-২৫১)  

আখ্যানের শেষে ইন্দ্রের বোধোদয় ঘটে। সেই সাথে প্রকাশিত হয় ভারতীয় চিন্তায় সময়ের ধারণা। ভারতীয় ধর্ম আর ইব্রাহিমি ধর্মের মধ্যে আপাত যে পার্থক্য দেখা যায়; তার গোড়া সময় সম্পর্কে ধারণার উপর প্রোথিত। ইহুদি, খ্রিস্টান এবং ইসলামে সময় সরলরৈখিক। পৃথিবী সৃষ্টির একটি নির্দিষ্ট সময়কে উল্লেখ করে পরবর্তীতে সমাপ্তির কথা বলা হয়। হিন্দু, বৌদ্ধ এবং জৈন ধর্মে সময়কে বুঝতে হলে আরেকটু জুম আউট করতে হবে। দেখতে হবে আরো উপর থেকে। যেখানে সৃষ্টি এবং প্রলয়ের গল্প কেবল একটা চ্যাপ্টারে সমাপ্ত হয়নি। এখানে সময় চক্রাকার; যা অবশ্যম্ভাবী করে তুলেছে জন্মান্তর এবং নির্বাণের মতো বিশেষত্বপূর্ণ ধারণাকে।

ভারতীয় চিন্তায় সময় চাক্রিক; চিত্রে যুগ এবং প্রতিযুগের অবতার; Image Source: detechter.com

যুগ

ভারতীয় চোখে দেখলে সময় এক অনন্ত চক্রের নাম। বিষয়টি বাস্তব জীবনের সাথে প্রাসঙ্গিক। চাঁদের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে; দিন ও রাত, সপ্তাহ ও মাস, বছর ও যুগ- ঘুরে ফিরে আবর্তিত হয়। যা-ই হোক, সময় পরিমাপের একক যুগ। প্রত্যেক যুগের রয়েছে উত্থান এবং পতনপর্ব। যুগ বিভাজনে এই উত্থান, স্থিতি এবং পতনকে মনে রাখা জরুরি। কেননা, অস্তিত্বশীল সকল কিছুই এই তিন পর্বের মধ্য দিয়ে যায়। সময়ের এই তিন প্রেক্ষাপটের কারণেই পরমেশ্বরের তিন রূপ- ব্রহ্মা সৃষ্টিকর্তা, বিষ্ণু পালনকর্তা এবং শিব ধ্বংসকারী।

একটি পূর্ণচক্র বা মহাযুগ গঠিত চারটি যুগ নিয়ে। প্রথমে সত্যযুগ- ন্যায়, শান্তি এবং সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ; যখন দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত থাকে ধর্ম। দ্বিতীয় ত্রেতাযুগ কিছুটা অবক্ষয়ের; কাজ, ভোগান্তি আর মৃত্যু মানুষকে তটস্থ করে রাখে। তৃতীয় যুগ দ্বাপরে বৃদ্ধি ঘটে অন্যায় আর পাপাচার। টিকে থাকে ধর্মের অর্ধেক। সবশেষে কলিযুগে কেবল বিশৃঙ্খলার আধিপত্য। অন্যায়ের সামনে কোণঠাসা হয়ে ধর্ম টিকে থাকে এক-তৃতীয়াংশ মাত্র। অর্থ হয়ে যায় সম্মানের মাপকাঠি। যৌনতা থাকে ফুর্তির জন্য; ধর্ম হয় আচারসর্বস্ব।

যুগ, মহাযুগ, মন্বন্তর, কল্প করে চলতে থাকে অনন্ত চক্র; Image Source: stoicsadhu.com

যুগের নামগুলো এসেছে প্রাচীন ভারতে বহুল প্রচলিত পাশা খেলার চাল থেকে। সত্য বা কৃত চালে ৪টি গুটি নিয়ে নিশ্চিত বিজয়াবস্থা। ত্রেতা মানে ৩টি গুটি নিয়ে পশ্চাদপদতা। দ্বাপরে ২ গুটিতে ধরে থাকা এবং কলি হলো ১টি গুটি নিয়ে হারসূচক চাল। বিষয়টি প্রাসঙ্গিক এজন্য যে, যুগের হিসাবে এর প্রভাব আছে। সত্যযুগের বিস্তৃতি ৪,৮০০ বছর; তার মধ্যে ৪,০০০ বছর স্থিতিকাল, ৪০০ বছর উত্থান বা সন্ধ্যা এবং ৪০০ বছর পতন বা সন্ধ্যাংশ। কৃত চালে ৪ গুটির কথা মনে করা যেতে পারে এখানে। একইভাবে ত্রেতাযুগের বিস্তৃতি ৩,৬০০ বছর, দ্বাপর যুগের ২,৪০০ বছর এবং কলি যুগের ১,২০০ বছর। অর্থাৎ এক মহাযুগের বিস্তৃতি ১২,০০০ বছর।

এই যে বছরের কথা বলা হচ্ছে; এগুলো মূলত দেবতাদের বছর বা দৈব বছর। মানুষের বছরে আসতে তেমন বেগ নেই। দেবতাদের এক বছর মানুষের ৩৬০ বছরের সমান আর দেবতাদের একটা পূর্ণ দিন মানে মানুষের একটা পূর্ণ বছর। আরো স্পষ্ট করা যায় হিসাবটা। দেবতাদের রাত এবং দিন মিলে মানুষের জন্য ছয় মাস করে মোট এক বছর। দেবতাদের দিন দুনিয়ায় উত্তরায়ণ এবং দেবতাদের রাত দুনিয়ায় দক্ষিণায়ন নামে পরিচিত। সেই হিসাবে কলিযুগের বিস্তৃতি ১,২০০×৩৬০ = ৪,৩২,০০০ বছর। অনুরূপভাবে বাকি যুগের হিসাবও পরিমাপ করা যায়। অর্থাৎ এক মহাযুগের বিস্তৃতি ১২,০০০×৩৬০= ৪৩,২০,০০০ বছর।

মহাযুগকে মানববর্ষে রূপান্তরিত করলে সংখ্যাটা নেহায়েত ক্ষুদ্র না; Image Source: realitysandwich.com

১,০০০ মহাযুগ মিলে এক কল্প হয়। ১৪ কল্পে হয় এক মন্বন্তর। মন্বন্তর বলতে মনুর প্রজন্ম বা মানবজাতিকে বোঝানো হয়। ভারতীয় বিশ্বাসে মনুই মানবজাতির আদিপিতা। অন্যদিকে কল্প হলো ব্রহ্মার রাত কিংবা দিন। অর্থাৎ দুই কল্প মিলে ব্রহ্মার এক দিন এবং এক রাতের সমান। ব্রহ্মার একশো বছরের হিসাব মানববর্ষে বের করতে গেলে সংখ্যাটা কম বড় হবে না। ব্রহ্মার জীবনকাল ২৫,৬০,০০০ মহাযুগ। প্রত্যেক মহাযুগে আছে সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর এবং কলিযুগ। প্রত্যেক যুগে আছে উত্থান, স্থিতি এবং প্রলয় পর্ব। মহাযুগের শেষে আছে মহাপ্রলয়; মহাপ্রলয়ের পরে আবার সৃষ্টির শুরু। ফলে অনন্ত সময় পরিণত হয়েছে অনন্ত পৌনঃপুনিকতায়।

মায়া!

সময়ের এই অনন্ত যাত্রার ভেতরে নিজের অবস্থানকে অনুধাবন করা হোক। মহাযুগ, মন্বন্তর আর কল্পের চক্রে পড়ে সম্রাট, রাজবংশ, বিপ্লব, প্রতিবিপ্লব সমস্ত কিছু অর্থহীন। দুনিয়াই যেন সাবানের ফেনার মতো। অস্তিত্বই যেন এক অবাস্তবতা। এভাবেই গড়ে উঠেছে ভারতীয় ভাববাদ; পার্থিবতা যেখানে মায়া মাত্র। এই মায়া আর নশ্বরতা থেকে মুক্তির জন্যই যুগে যুগে সাধু আর ঋষিরা অবিনশ্বর পরম সত্যকে খুঁজেছেন। আবিষ্কার করেছেন ইন্দ্রিয়জ জ্ঞানের ধোঁকা। এর উপরে দাঁড়িয়েই প্রস্তুত হয়েছে সমৃদ্ধ আর শক্তিশালী সব দার্শনিক তত্ত্ব। এক্ষেত্রে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসের উদ্ধৃত আখ্যানটা বলা যায়। জগৎ বনাম সময় সম্পর্কে ভারতীয় দর্শনের উত্তম উদাহরণ এই আখ্যান।

নারদ মুণি একবার বিষ্ণুর কাছে মায়ার ক্ষমতা জানতে চাইলো। বিষ্ণু সম্মত হলেন এবং তাকে অনুসরণ করতে ইশারা বললেন। কিছু না বলে দুজন চলছেন পাশাপাশি। এক মরুভূমি অতিক্রম করার সময় তৃষ্ণা পেলো বিষ্ণুর। অল্প দূরেই গ্রাম। নারদকে বললেন গ্রামে গিয়ে একটু পানি আনার জন্য। বিষ্ণুর কথা পালন করতে দ্রুত গ্রামে ঢুকলো নারদ। প্রথম বাড়িতে টোকা দিতেই দরজা খুলে দিলো এক সুন্দরী তরুণী। এত সুন্দরী যে, বেচারা ভুলেই গেলো; কেন বাড়িতে ঢুকেছে। মেয়ের বাবা মা এসে অচেনা সন্ন্যাসীকে রীতিমতো আপ্যায়ন করলো। কেউ কাউকে অপছন্দ করেনি। ফলে, নারদ তরুণীকে বিয়ে করে সেখানেই কায়িক পরিশ্রমে জীবন অতিবাহিত করতে লাগলো।               

ইতোমধ্যে বারো বছর কেটে গেছে। নারদের এখন তিনটা বাচ্চা। শ্বশুর মারা যাওয়াতে সে-ই সবকিছুর মালিক। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে জায়গাটিতে বৃষ্টিপাত বেড়েছে খুব। এক রাতে তার ঘরটা ধসে পড়লো; পালিত পশুগুলো গেলো ডুবে। উপায়ান্তর না দেখে নারদ এক হাতে স্ত্রী আর অন্য হাতে দুই সন্তানকে ধরে রইলো। অপর সন্তানকে রাখা হয়েছিল কাঁধে। এভাবেই চলছিলো কিছুক্ষণ। হঠাৎ ফসকে কাঁধের সন্তানটা পানিতে পড়ে যায়, তাকে ধরতে গিয়ে বাকি হাতের দুই সন্তানকে ছেড়ে দেয় নারদ। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। তিনটা সন্তানই স্রোতের টানে ভেসে যায় দূরে। তারপর আসে স্ত্রীর পালা। সবিশেষ নারদ নিজেই ফসকে অচেতন হয়ে পানিতে ভেসে যায় বহু দূর।

জ্ঞান ফিরলে নিজেকে এক পাথরে আটকে থাকতে দেখে নারদ। নিজের দুঃখের কথা মনে করে হাউ মাউ করে কেঁদে উঠলো। এই সময়ে কানে আসলো পরিচিত কণ্ঠ, “বৎস নারদ, আমার জন্য পানি আনতে কই গেলে? আধা ঘন্টা ধরে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।” চমকে উঠে তাকালো নারদ। চারপাশ থেকে বন্যার জল উধাও হয়ে গেছে। তার বদলে দেখতে পেলো মরুভূমি আর প্রচণ্ড সূর্যের তাপ। বিষ্ণু হাসিমুখে জিজ্ঞাসা করলেন, “এবার কি মায়ার রহস্য বুঝতে পেরেছো?”

দৃশ্যমান বাস্তবতাকে ছাপিয়ে ভারতীয় দর্শন খুঁজেছে পরম বাস্তবতাকে; Image Source: hinduwebsite.com

সত্য

সময়ের এই অনন্ত চক্র প্রায়শ সাধারণ মানুষের বোধগম্য হয়নি। কিন্তু সময়ের এই ভয়াবহ রূপ তৎকালীন পণ্ডিতেরা ঠিক ধরে ফেলেছিল। ফলে চেয়েছেন সময়কে ছাপিয়ে উঠতে। বার বার এই জন্মানোর ধারণাকেই মোটা দাগে পুনর্জন্ম বলা হয়। মোক্ষ লাভ করা হলো এই পুনর্জন্মের চক্র থেকে মুক্তি লাভ করা। অর্থাৎ সে আর পরের দফায় জন্ম নেবে না। জন্ম আর মৃত্যুর উর্ধ্বে উঠে যান। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন এবং শিখ ধর্মে মোক্ষের ধারণা উপস্থিত। এখানে বুদ্ধের ব্যাখ্যা সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক।

বুদ্ধের কাছে তার পরিচয় জানতে চাওয়া হলো। বুদ্ধ বললেন, “মুরগী অনেকগুলো ডিমে তা দিচ্ছে। একটা ডিম খোলস ভেঙে বের হয়ে আসলো। তোমরা তাকে কী বলবে- নবীন নাকি প্রবীণ?” শিষ্যরা বললো, “প্রবীণ; কারণ সে-ই ডিমগুলোর মধ্যে প্রথম জন্ম নিলো।” বুদ্ধ বললেন, “সমস্ত অজ্ঞতা আর অন্ধকারের মধ্যে আমার অবস্থান তা-ই।”

পরবর্তী বৌদ্ধধর্ম, বিশেষ করে মহাযান বৌদ্ধদের মধ্যে, সময়-চিন্তা ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। বুদ্ধ প্রতিনিয়ত বর্তমানে হাজির থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। না অতীতে; না ভবিষ্যতে। ধ্যানকারীরা স্বপ্ন দেখেছে এক অনন্ত বর্তমানের। সময় এবং সময়হীনতার এই দ্বন্দ্ব আপাতভাবে প্যারাডক্স মনে হতে পারে। কিন্তু সত্যকে সব সময় যুক্তি বা বুদ্ধি দিয়ে ধরা যায় না। বৈপরীত্যের পর্দা অতিক্রম করতে পারলেই পরমের মোলাকাত।

সময়ের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হবার জন্যই চলেছে প্রচেষ্টা; Image Source: hindustantimes.com

সময়ের চক্র থেকে বের হবার চেষ্টায় বেশ কিছু চর্চা সামনে আসে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সম্ভবত প্রাণায়াম। যে ক্রিয়ায় দেহের প্রাণশক্তি বৃদ্ধি পায়, ব্যাধি ও অকাল মৃত্যুকে জয় করা যায়; তার নামই প্রাণায়াম। এটি একটি শ্বাস সংশ্লিষ্ট ব্যায়াম। যোগীরা চর্চা করে বর্তমানে একনিষ্ঠ থাকার জন্য। একজন যোগী তাই স্বাভাবিক সময়কে ছাপিয়ে মহাজাগতিক সময়ে বসবাস করেন। বসবাস করেন রাত বা দিন, রোগ বা মৃত্যুর উর্ধ্বে। এর মধ্য দিয়ে প্রস্তুত হয় সম্যক সমাধির পথ। যোগী তখন জীবনমুক্ত। বস্তুত এটা এমন এক অনুভূতি; যাকে ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।

এবং

নীল নদে জোয়ার আসতো একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর। বিষয়টা লক্ষ্য করেই প্রাচীন মিশরীয়রা বছর আর মাসের ধারণা সামনে আনে। ক্যালেডিয়রা কাছাকাছি অনুপ্রেরণাতেই দেয় সপ্তাহ আর ঘন্টার ধারণা। কোনো ধর্ম সময় নিয়ে উদাসীন থাকতে পারেনি। কারণ সঠিক উপাসনার জন্য সময়ের সঠিকতা জরুরি। কিন্তু ভারতীয় চিন্তায় কেবল উপাসনাতেই স্থির থাকেনি সময়। রূপ দিয়েছে এখানকার ধর্মতত্ত্ব, দর্শন এবং বিজ্ঞান। ধর্মের কাঠামো বুঝতে হলে তাই সময়ের এই অনুধাবন জরুরি।   

সম্প্রতি ডার্ক টিভি সিরিজ নিয়ে আগ্রহের পেছনে অন্যতম কারণ সময় ধারণাকে পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা। আইনস্টাইন-পরবর্তী সময় ধারণা নতুন এক মাত্রা নিয়ে হাজির হয়েছে; যা এখন অবধি তটস্থ রেখেছে পণ্ডিতমহলকে। প্রাচীন ভারতে আপেক্ষিকতা সূত্র কিংবা বিগ ব্যাং থিওরি ছিলো না। কিন্তু অস্তিত্বকে উপলব্ধি করতে গিয়ে সময়ের ধারণাকে তারা নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। তাই ইন্দ্রের মোহভঙ্গ, নারদ মুণির অভিজ্ঞতা এবং বুদ্ধের জাগরণ প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে। আটপৌড়ে জীবনে ক্লান্তিকর অজস্র পুনরাবৃত্তির দিকে তাকিয়ে আমরাও প্রশ্ন করি, “এ তালা ভাঙবো আমি কেমন করে?”

This Bengali article is about the concept of time in Indian religions. In Abrahamic tradition time is considered as linear and whence in Indian tradition time is cyclic and repetitive.

References: 

1) Image and Symbols, Studies in Religious Symbolism, Mircea Eliade, Translation- Philip Mairet, Sheed and Ward, New York, 1952, Pages: 57

2) Patterns in Comparative Religion, Mircea Eliade, Translation- Rosemary Sheed, Sheed and Ward, New York, 1958, Pages- 388

3) কিশোর পুরান সমগ্র, চিত্তরঞ্জন ঘোষাল, গ্রন্থিক, কলেজ রোড, কলকাতা, জানুয়ারি, ২০০৬, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরান, পৃষ্ঠা- ২৫১

and which are hyperlinked.

Featured Image: hinduhumanrights.info

Related Articles