বিশ্বের ফ্যাশন জগতে বেশ কিছু নাম আজ প্রায় সকল শ্রেণীর মানুষের কাছেই মোটামুটি পরিচিত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্রিশ্চিয়ান দিওর, শ্যানেল, লুঁই ভ্যুঁতো, গুচ্চি, প্রাদা, টিফ্যানি এণ্ড কো., ফেণ্ডি সহ আরও বেশ কিছু নাম। আর এই সকল নামের পেছনে রয়েছে একটি সমন্বিত প্রতিষ্ঠান- এলভিএমএইচ।
সাহসী সূচনা
১৯৮৪ সালে বার্নার্ড আর্নল্ট নামের একজন ব্যবসায়ী জানতে পারেন- ক্রিশ্চিয়ান দিওর নামের ফ্যাশন প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি হবে। ব্র্যাণ্ডের মূল প্রতিষ্ঠাতা প্রতিষ্ঠান ‘ব্যুজাক’ দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় ফরাসি সরকার প্যারিসের ক্রিশ্চিয়ান দিওরসহ উক্ত প্রতিষ্ঠানের অধীনে পরিচালিত আরও বেশ কিছু পোশাকের প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন মালিকানা খুঁজছে। সেই সময়ের ৩৫ বছর বয়সী যুবক আর্নল্ট নিজের পরিবারের থেকে ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ফরাসি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ নিয়ে ‘ব্যুজাক’ ক্রয় করেন- উদ্দেশ্য উক্ত ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর মালিকানা লাভ করা।
১৯৮৯ সালে, অর্থাৎ ব্যুজাক ক্রয়ের মোটামুটি দুই বছরের মধ্যেই তিনি বছরে ১৫ মিলিয়ন ডলার আয়ের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ২০ গুণ লাভজনক ও বৃহত্তর করে তুলতে সক্ষম হন। আর এটা করতে গিয়ে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবেই প্রতিষ্ঠানকে কিছুটা নেতিবাচক দিকে ঠেলে দেন, ৯,০০০ কর্মীকে ছাঁটাই করেন এবং এর ডিসপজিবল ডায়াপার বিভাগসহ টেক্সটাইল ব্যবসায়ের বেশিরভাগ অংশ ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিক্রি করে দেন। তবে এর পেছনে তার মূল উদ্দেশ্য ছিল ‘লুঁই ভ্যুঁতো মুট হ্যানেসি’ (এলভিএমএইচ) এর নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেওয়া। প্রতিষ্ঠানটি তখনই ছিল বেশ কিছু ফ্যাশন হাউস ও স্পিরিট প্রস্তুতকারক খণ্ড খণ্ড প্রতিষ্ঠানের একটি সমন্বয়। ১৯৯০ সালে তিনি এর মালিকানা লাভের চেষ্টা শুরু করেন।
এরপর থেকে আর্নল্ট কয়েক বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে এবং অক্লান্ত পরিশ্রম করে উক্ত প্রতিষ্ঠানের অধীনে প্রায় ৭০টি বিলাসদ্রব্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে আসেন, এবং ৭১ বছর বয়সে নিজেকে পৌঁছে দেন ব্লুমবার্গ-এ প্রকাশিত বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিত্তশালী ব্যক্তিদের তালিকায়।
বর্তমানে এলভিএমএইচ বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান বিলাসজাত ব্র্যাণ্ডের সমন্বিত প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের সফলতা অন্যদেরও উৎসাহিত করেছে এরকম কিছু করার জন্য। ২০১৮ সালে সিএনবিসি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আর্নল্ট বলেন,
৯০ এর দশকে আমি, বিলাসজাত ব্র্যাণ্ডের একটি সমন্বিত প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কথা ভাবি। আর এজন্য আমাকে অনেক সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়। আমার মনে আছে, সকলে আমাকে বলেছিল, এতগুলো ব্র্যান্ডকে একত্র করার কোনো মানে হয় না। কিন্তু আমি সফল হই। আর বিগত ১০ বছর যাবৎ আমাদের সকল প্রতিদ্বন্দ্বীই এই কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে যা আমাদের জন্য পুরস্কারস্বরূপ। আমার মনে হয় না তারা সফল হতে পেরেছে, কিন্তু তারা চেষ্টা করছে।
লুঁই ভ্যুঁতোর ইতিকথা
লুঁই ভ্যুঁতোর যাত্রা শুরু হয় মূলত বিত্তশালী ও ক্ষমতাশীল ভ্রমণকারীদের জন্য উন্নতমানের উপাদান (যেমন- পশুর চামড়া, কাপড়) দিয়ে আধুনিক ও আকর্ষণীয় ডিজাইনে ভ্রমণোপযোগী ব্যাগ তৈরির মাধ্যমে। ১৮৩৫ সালে ১৪ বছর বয়সে লুঁই ভ্যুঁতো নিজ গ্রাম ছেড়ে প্যারিসের উদ্দ্যেশ্যে রওনা হন এবং বছরখানেকের পায়ে হাঁটা যাত্রা শেষে পৌঁছাতে সক্ষম হন। সেখানে পৌঁছানোর পর খুব অল্প সময়েই তিনি প্যাকার ও ট্রাঙ্কমেকার তৈরির কাজে শিক্ষানবিশ হিসেবে যোগ দেন। কাঠমিস্ত্রীর ছেলে হওয়ায় কাঠের নকশা তৈরিতে তিনি আগে থেকেই দক্ষ ছিলেন। কাজেই উক্ত নকশার ট্রাঙ্ক তৈরি করে মাত্র দশ বছরের মধ্যেই তিনি সুদক্ষ হয়ে ওঠেন। শিক্ষানবিশ থাকাকালে বিত্তশালী নারীদের বাড়িতে গিয়ে তাদের দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস গোছানোর কাজ, তথা প্যাকিংয়ের কাজ করতে গিয়েই তিনি এই বিষয়ে অভিজ্ঞতা লাভ করেন। এসকল নারীর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিলেন তুইলারিস প্যালেসের সম্রাজ্ঞী ইউজিন ও তার সহায়তাকারীরা।
১৮৫৪ সালে ‘রু ন্যুভ দ্য ক্যাপুচিন্স’-এর প্লেস ভেন্দোম-এর কুতুর হাউজগুলোর খুব কাছেই তিনি তার নিজের ব্যবসায় শুরু করেন। কাঠ, সিল্ক ও স্যাটিন এর সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকায় উক্ত কুতুর হাউজের মালিকেরা নিজেদের পণ্য প্যাকিং করার কাজে প্রায়ই তাকে নিয়োগ দিতেন। ভ্যুঁতো উপরিভাগে চ্যাপ্টা এমন ডিজাইনের ট্রাঙ্ক তৈরি করেন যা চিরাচরিত ডোম আকৃতির ট্রাঙ্কের তুলনায় সহজে পরিবহন করা যেত, কারণ এগুলো একটার উপর অন্যটা রাখা যেত। তার এই নতুন ডিজাইনের ট্রাঙ্কই তাকে ‘মাস্টার লাগেজ-মেকার’ হিসেবে খ্যাতিমান করে তোলে। তিনি ত্রিয়ানন ক্যানভাস কাপড় দিয়ে তার তৈরি ট্রাঙ্কগুলো কভার করতে শুরু করেন। এই কাপড় একদিকে ছিল আভিজাত্যময়, আর অন্যদিকে ছিল পানিরোধী।
এসকল লাগেজ তৈরিতে ব্যবহৃত উপাদান, অভ্যন্তরীণ গঠনবিন্যাস, ও সামগ্রিক নির্মাণ শৈলীর কারণে ভ্যুঁতোর তৈরি এসকল ‘ডিলাক্স ট্রাঙ্ক’ ছিল এর আগের সকল প্রকার লাগেজের তুলনায় অনন্য। এরপরের যাত্রা ছিল শুধুই ঊর্ধ্বমুখী। বিশ্ব ভ্রমণের সংস্কৃতিতে আসতে থাকা দ্রুত ও ব্যাপক পরিমাণ পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ করার সামর্থ্যই লু্ঁই ভ্যুঁতোর সাফল্যের মূল। ১৯৭৭ সালের লু্ঁই ভ্যুঁতোর প্রপৌত্রী ওডির স্বামী হেনরি রিকেমিয়ার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার ব্যবসায় নীতি ছিল স্বকীয়, বিনয়ী ও বিচক্ষণ প্রকৃতির।
মুট হ্যানেসির ইতিকথা
ক্রিশ্চিয়ান দিওর পার্ফিউম, ডম পেরিনঁ শ্যাম্পেন, ও হ্যানেসি এক্স.ও. কনিয়াক- এর মতো বড় বড় নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মুট হ্যানেসি, ফ্রান্সের একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ও সফল এন্টারপ্রাইজ। ২৫০ বছরেরও বেশি সময় আগে আরম্ভ হওয়া একজন ফরাসি মদ্যবিক্রেতার ছোট্ট ব্যবসা আজ ওয়াইন, স্পিরিট, কসমেটিক্স ও সুগন্ধি প্রস্তুতকারক হিসেবে বিশ্বে শীর্ষস্থান অধিকার করে আছে। পরিবেশকদের ওপর নিজের তৈরি পণ্য বিক্রি করার প্রক্রিয়ায় হতাশ হয়ে ক্লদ মুট ১৭৪৩ সালে, ‘মুট এণ্ড কোম্পানী’ প্রতিষ্ঠা করেন। পুত্র ক্লদ-লুইস এর সাথে কাজ করে মুট খুব দ্রুত ক্রেতাদের সাথে ভাল সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এসকল ক্রেতার মধ্যে অনেকেই ছিলেন আর্থ-সামাজিকভাবে শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ।
১৭৫০ সালে পিতাপুত্র, তাদের পণ্যের নিয়মিত ক্রেতা ‘মাদাম দ্যু পম্পাদর’ এর সাথে যৌথভাবে ব্যবসায় শুরু করেন। একই বছর থেকে মুট জার্মানি, স্পেন, ইস্টার্ন ইউরোপ ও আমেরিকা-তে শ্যাম্পেন বিক্রি করতে শুরু করেন। ১৭৯২ সালে ক্লদ মুট মৃত্যুবরণ করলে তার নাতি জঁ-রেমি ব্যবসায়ের হাল ধরেন এবং তার হাতেই প্রতিষ্ঠানের পরবর্তী সাফল্যের ভিত্তি স্থাপিত হয়। নেপোলিয়নের সাথে বন্ধুত্ব তার প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সাথে দীর্ঘকালীন সম্পর্ক গড়ে তুলতে সহায়তা করে। ১৮৩২ সালে জঁ-রেমি অবসর গ্রহণ করেন এবং প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব বর্তায় তার পুত্র ভিক্টর ও জামাতা পিয়ের-গ্যাব্রিয়েল শ্যান্দঁ দ্য ব্রিয়্যালিসের ওপর। এই নতুন অংশীদারী ব্যবসায়ের নাম পাল্টে রাখা হয় ‘মুট এ শ্যান্দঁ’।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ব্যবসায়ে বাধা সৃষ্টি হলেও প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত সামলে ওঠে এবং আরও সফলভাবে পরিচালনা চালিয়ে যেতে থাকে। ১৯৫০ এর দশকে ফ্রান্সের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ওয়াইন ক্রেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কাউন্ট রবার্ট-জঁ দে ভোগ। তিনি নেতৃত্ব গ্রহণ করলে প্রতিষ্ঠানটির সফলতা আরও বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।
অনেক চড়াই-উৎরাই পার করার পরে ‘মুট এ শ্যান্দঁ’ ১৯৭১ সালে ফ্রান্সের দ্বিতীয় বৃহত্তম কনিয়াক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘জ্যাস হ্যানেসি এণ্ড কোম্পানি’র সাথে যৌথ ব্যবসায়ে যুক্ত হয়। নতুন এই প্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়া হয় ‘মুট এণ্ড হ্যানেসি’। এই নতুন প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থান যথেষ্ট প্রসারিত ছিল, এবং এর ফলে বিদেশের বাজারের চাহিদা মেটাতেও তারা সফল ছিল। মুট-হ্যানেসির সংযুক্ত হওয়ার পেছনে মূল কারণ ছিল ১৯২৭ সালের একটি প্রাদেশিক আইন যেখানে শ্যাম্পেন উৎপাদনের জন্য ভূমির পরিমাণ ৩৪,০০০ হেক্টরের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হয়।
১৯৭৩ সালে মুট-হ্যানেসি, ক্যালিফোর্নিয়ার নাপা ভ্যালি-তে ‘ডোমেন শ্যান্দঁ’ নামের ওয়াইনারি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান আরও দৃঢ় করে তোলে। এই সাফল্যের মূল কৃতিত্ব ছিল অ্যালান শেভালিয়ারের। তিনি ছিলেন দে ভোগ-এর একজন শিষ্য। তার নেতৃত্বে, মুট-হ্যানেসি একটি রক্ষণশীল প্রতিষ্ঠানের গণ্ডী থেকে বেশ খানিকটা বেরিয়ে আগ্রাসী প্রচারণার নীতিতে ব্যবসায় পরিচালনা করতে শুরু করে।
১৯৮৭ সালের মার্জার বা সংযুক্তি
১৯৮৭ সালের জুন মাসে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি মার্জার বা ব্যবসায়িক সংযুক্তিকরণের চুক্তি কার্যকর হয়- যার এক পক্ষে ছিল লুঁই ভ্যুঁতো এবং অপর পক্ষে ছিল মুট-হ্যানেসি। এই চুক্তির ফলে একদিকে লুঁই ভ্যুঁতো যেমন বিলাসবহুল পণ্যের ব্যবসায় বিনিয়োগ বাড়াতে সক্ষম হয়, অন্যদিকে মুট-হ্যানেসি অপর কোনো মালিকের কাছে বিক্রি হওয়া থেকে রক্ষা পায়। নিজ নিজ ব্যবস্থাপনা ও অধীনস্থ কোম্পানির পরিচালনার ক্ষেত্রে উভয় প্রতিষ্ঠানই একে অন্যের সংস্কৃতি ও রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল। মুট-হ্যানেসি, লুঁই ভ্যুঁতোর চেয়ে প্রায় তিন গুণ বড় প্রতিষ্ঠান হওয়ার কারণে এর প্রেসিডেন্ট অ্যালান শেভালিয়্যারকেই সংযুক্ত প্রতিষ্ঠান ‘লুঁই ভ্যুঁতো মুট হ্যানেসি’ (এলভিএমএইচ) এর চেয়ারপার্সন হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়, এবং রিকেমিয়ার প্রতিষ্ঠানটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বলাভ করেন।
এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ব্যাপক বাকবিতণ্ডা হয়। কারণ লুঁই ভ্যুঁতোর ব্যবস্থাপকদের মতে, মুট-হ্যানেসি তাদের প্রতিষ্ঠানকে গ্রাস করে নিতে চাইছিল। রিকেমিয়ার ও ভ্যুঁতো পরিবারের ৬০% শেয়ার, সংযুক্ত এলভিএমএইচ-এ মাত্র ১৭% শেয়ারের সমপর্যায়ের ছিল। প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা নিয়ে মাসের পর মাস ধরে চলতে থাকা বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে রিকেমিয়ার, তরুণ ভবন নির্মাতা ও অর্থনৈতিক প্রকৌশলী বার্নার্ড আর্নল্টকে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার ক্রয়ের আমন্ত্রণ জানান। যদিও নিজের অবস্থানকে মজবুত করার জন্য রিকেমিয়ার তাকে আমন্ত্রণ জানান, কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে আর্নল্টের নিজস্ব লক্ষ্যও ছিল। ফরাসি বিনিয়োগকারী ব্যাংক ‘লাজার্দ ফ্রেরেস’ ও মদ ব্যবসায়ের অন্যতম ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান ‘গিনেস পিএলসি’-এর সহায়তায় আর্নল্ট নিজের জন্য এলভিএমএইচ-এর ৪৫% শেয়ার কিনে নেন।
শেভালিয়ার পদত্যাগ করার পরে, আর্নল্ট ও রিকেমিয়ারের মধ্যে ১৮ মাসব্যাপী আইনী যুদ্ধ চলতে থাকে। লুঁই ভ্যুঁতোর সফলতার মাধ্যমে এলভিএমএইচ-এর আয়ের ৩২%-এর কৃতিত্ব থাকা সত্ত্বেও আর্নল্টের বিরুদ্ধে রিকেমিয়ার এই প্রতিষ্ঠানে নিজের মালিকানা ধরে রাখতে ব্যর্থ হন। তাছাড়া, আর্নল্টের পক্ষে মুট-হ্যানেসি পরিবারও ছিল। আদালতের রায় আর্নল্টের পক্ষে গেলে রিকেমিয়ার পদত্যাগ করেন। এরপর আর্নল্ট, রিকেমিয়ারের নিয়োগকৃত শীর্ষস্থানীয় নির্বাহী কর্মকর্তাদের ছাঁটাই করে, খণ্ডিত ব্র্যাণ্ডসমূহকে একত্র করে নিজের বিলাসবহুল সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে শুরু করেন। আর এভাবেই প্রতিষ্ঠিত হয় আজকের বিশ্বে ব্যবসায়ের বিলাসজাত ব্র্যান্ডের সমন্বিত প্রতিষ্ঠান এলভিএমএইচ।