আপনি কী আরবি গান শোনেন?
নাহ, শোনা হয়নি কখনো।
আচ্ছা, অন্তত একটা আরবি গানের নাম তো জানেন?
উম্ম্ … হাবিবি হাবিবি?
উপরের কথপোকথনের অংশটুকু কাল্পনিক হতে পারে, কিন্তু বাস্তবতা এর চেয়ে খুব বেশি ভিন্ন না। মূল গানটি না শুনলেও ‘হাবিবি ইয়া নূরেল আইন’ গানটির নাম শোনেননি, এরকম মানুষের সংখ্যা খুব কমই আছে। হাবিবি গানটিকে বলা হয় সর্বকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় আরবি গানগুলোর মধ্যে একটি। আরব বিশ্ব ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, আফগানিস্তান, ইরান, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, চিলি, ফ্রান্স সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গানটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠেছিল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিল্পীরা গানটিকে নিজেদের মতো করে কভার করেছেন। বাংলা সহ বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় গানটির সুরের হুবহু অনুকরণে একাধিক গান নির্মিত হয়েছে।
‘হাবিবি ইয়া নূরেল আইন’ গানটির কন্ঠশিল্পী, গীতিকার এবং সুরকার হচ্ছেন মিসরীয় সঙ্গীতশিল্পী আমর দিয়াব, যাকে সর্বকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় আরব গায়কদের মধ্যে একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার গানের রেকর্ডের বিক্রয় ৩০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে, যা সমগ্র আরব বিশ্ব এবং মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ। আরবি সঙ্গীতের জগতে তিনি নতুন এক ধারার সৃষ্টি করেছেন। পশ্চিমা সুরের সাথে আরবের ক্লাসিকাল সুরের সংমিশ্রণে তৈরি এই ধারাকে বলা হয় ভূমধ্যসাগরীয় গান (মুসিকা আল-বাহ্র আল-মুতাওয়াস্সাত)। আর আমর দিয়াবকে বলা হয় এই ভূমধ্যসাগরীয় গানের জনক। আজ আমরা জানব আরবি সঙ্গীতের এই মহানায়ক আমর দিয়াব এবং জনপ্রিয়তম সৃষ্টি ‘হাবিবি’ গানটি সম্পর্কে।
জন্ম এবং প্রাথমিক খ্যাতি
আমর দিয়াবের জন্ম ১১ অক্টোবর, ১৯৬১ সালে, মিসরের পোর্ট সাঈদের এক সঙ্গীতানুরাগী পরিবারে। তার বাবা আব্দুল বাসেত দিয়াব ছিলেন মিসরের সুয়েজ খালের মেরিন কনস্ট্রাকশন এবং শিপ বিল্ডিংয়ের চেয়ারম্যান। আমর দিয়াবের সাফল্যের পেছনে তার বাবার বিশাল অবদান এবং অনুপ্রেরণা ছিল।
আমর দিয়াব প্রথম জাতীয় পর্যায়ে পরিচিতি পান মাত্র ছয় বছর বয়সে। ১৯৬৭ সালের ২৩ জুলাই, সুয়েজ খাল থেকে ব্রিটিশ সেনাদের বিতাড়ন দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি মিসরের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জামাল আব্দুল নাসেরের উপস্থিতিতে এককভাবে মিসরের জাতীয় সঙ্গীত ‘বিলাদি বিলাদি’ (بلادي بلادي) গেয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তার গাওয়া সেই গান মিসরের রাষ্ট্রীয় রেডিও থেকে সম্প্রচার করা হলে তিনি জাতীয় পর্যায়ে পরিচিতি পেয়ে যান। তার কন্ঠে মুগ্ধ হয়ে পোর্ট সাঈদের গভর্নর তাকে একটি গিটার উপহার দেন।
স্কুল জীবনে আমর দিয়াব স্কুল ব্যান্ডের সদস্য হিসেবে তার সঙ্গীত চর্চা অব্যাহত রাখেন। ১৯৮৬ সালে তিনি কায়রো অ্যাকাডেমি অফ আর্টস থেকে সঙ্গীতের উপর ব্যাচেলর ডিগ্রী অর্জন করেন। হাই স্কুলের ছাত্র থাকাবস্থায়ই তিনি একাধিক অ্যালবাম প্রকাশ করেন, কিন্তু সেগুলো খুব একটা সফলতা পায়নি। তার প্রথম অ্যালবাম ছিল ১৯৮৩ সালের ‘ইয়া তারীক’। কিন্তু তার প্রথম সাফল্য আসে ১৯৮৭ সালে, ‘খালসিন’ অ্যালবামের মধ্য দিয়ে। ১৯৮৮ সালে তিনি বিখ্যাত মিসরীয় তারকা ইলহাম শাহীন এবং ইউসুফ শাবানের সাথে একটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। এর পরেও তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেতা ওমর শরীফ সহ অন্যান্য অভিনেতাদের সাথে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে পরিচিতি
নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত যখন আরব এবং প্রায় সমগ্র প্রাচ্যের সঙ্গীত শিল্পীরা পশ্চিমা সঙ্গীতের ধাঁচ অনুকরণ করে স্থানীয় পরিমন্ডলে জনপ্রিয়তা পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন, তখন আমর দিয়াব হাঁটছিলেন বিপরীত দিকে। স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয়তার পাশাপাশি তিনি চাইছিলেন আরব এবং পশ্চিমা সঙ্গীতের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি পাওয়ার। ১৯৯০ সালে আফ্রিকান স্পোর্টসের পঞ্চম টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি মিসরের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণ করেন এবং আরবি, ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায় গান গেয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আন্তার্জাতিক পরিচিতির এই ধারাবাহিকতায়ই সে বছর তিনি বিশ্ব ভ্রমণে বের হন এবং ওয়াশিংটনের কেনেডি সেন্টারে কনসার্টের আয়োজন করেন। তিনি ছিলেন কেনেডি সেন্টারে সঙ্গীত পরিবেশন করা তৃতীয় আরব সঙ্গীত শিল্পী।
১৯৯০ সালে আমর দিয়াবের ‘মাতখাফিশ’ অ্যালবামটি মুক্তি পায়। অ্যালবামটিকে জনপ্রিয় করার জন্য দিয়াব এর টাইটেল গানের একটি মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করেন। এটি ছিল প্রচারণার উদ্দেশ্যে নির্মিত আরব বিশ্বের প্রথম মিউজিক ভিডিও। পরবর্তীতে তার বিভিন্ন মিউজিক ভিডিওর মধ্য দিয়ে তিনি এই ধারাকে আরো জনপ্রিয় করে তোলেন এবং আরব বিশ্ব ছাড়িয়েও বহির্বিশ্বে আরবি গানের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
আমর দিয়াবের ‘হাবিবি’ গান
নব্বইয়ের দশকের প্রথম ভাগে আমর দিয়াবের বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় গান এবং মিউজিক ভিডিও মুক্তি পায়। কিন্তু তার ব্লকবাস্টার হিট অ্যালবামটি বের হয় ১৯৯৬ সালে। ‘নূর আল-আইন’ শিরোনামের এই অ্যালবামটি ছিল বিখ্যাত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘আলাম আল-ফেন্’ এর সাথে করা দিয়াবের প্রথম অ্যালবাম। অ্যালবামটির সবচেয়ে আলোচিত গানটিই ছিল হাবিবি ইয়া নূরেল আইন। এই গানটির একটি পূর্ববর্তী সংস্করণ বের হয়েছিল তার ১৯৯১ সালের ‘হাবিবি’ নামের অ্যালবামে। গানটির গীতিকার এবং সুরকার ছিলেন আমর দিয়াব নিজেই। কিন্তু তখন তা খুব একটা আলোচিত হয়নি।
১৯৯৬ সালে আমর দিয়াব নতুন করে ‘হাবিবি’ গানটির সুর করেন। পশ্চিমা মিউজিকের সাথে আরবি মিউজিকের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে নতুন করে গাওয়া এই গানটি মুক্তির পরপরই শ্রোতাদের মধ্যে তুমুল সাড়া ফেলে। আরব বিশ্বের গন্ডি ছাড়িয়ে গানটি ছড়িয়ে পড়ে এশিয়া, ইউরোপ সহ সমগ্র বিশ্বে। ইউরোপের ড্যান্স ক্লাবগুলোতে এই গানটি হয়ে ওঠে নৃত্যের প্রধান অনুষঙ্গ। গানটির অসংখ্য রিমিক্সে বাজার ছেয়ে যায়।
‘আলাম আল-ফেন্’ এর প্রযোজনায় গানটির মিউজিক ভিডিও নির্মিত হয় সে বছরই। এটি ছিল সে সময়ের আরব বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মিউজিক ভিডিও। আন্দালুসীয় গ্রামের পটভূমিতে চিত্রায়িত গানটি সে সময়ের দর্শকদের কাছে এক নতুন অভিজ্ঞতা ছিল। গানটিতে মডেল হিসেবে আমর দিয়াবের সাথে অভিনয় করেন সাবেক মিস লেবানন নিকোল বারদাউই ছাড়াও মিসর এবং সিরিয়ার বিভিন্ন অভিনেতা-অভিনেত্রী।
‘নূর আল-আইন’ অ্যালবামটি সে সময় সর্বকালের আরব বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিক্রীত অ্যালবাম হওয়ার রেকর্ড সৃষ্টি করে, যে রেকর্ড আমর দিয়াব নিজেই পরবর্তীতে একাধিকবার ভঙ্গ করেন। অ্যালবামটি ১৯৯৬ সালের ‘বেস্ট সেলিং অ্যালবাম ইন দ্য মিডল ইস্ট’ হিসেবে ‘ওয়ার্ল্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করে। তিনিই ছিলেন এই পুরস্কার বিজয়ী প্রথম মিসরীয় শিল্পী। পুরস্কারের টাকা দিয়ে তিনি কায়রোতে একটি হাসপাতাল নির্মাণ করেন।
‘হাবিবি ইয়া নূরেল আইন’ গানটির মাধ্যমে ‘হাবিবি’ শব্দটি বিশ্বব্যাপী তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। হাবিবি শব্দটির অর্থ ‘আমার ভালোবাসা’ অথবা ‘আমার প্রিয়তমা’। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গীত শিল্পীরা গানটি কভার করেন। বিশ্বের অনেকগুলো দেশে গানটির সুরের অনুকরণে বিভিন্ন গান তৈরি হয়। পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী নচিকেতার ‘আমিই পারি’ (১৯৯৮) অ্যালবামের ‘রাজশ্রী তোমার জন্য’ শিরোনামের গানটি এই ‘হাবিবি’ গানেরই অনুকরণ।
‘হাবিবি ইয়া নূরেল আইন’ বাক্যটির অর্থ হচ্ছে, ‘প্রিয়তমা, তুমি আমার নয়নের আলো’। চলুন দেখে নিই গানটির উচ্চারণ এবং বঙ্গানুবাদ।
হাবিবি গানের উচ্চারণ
হাবিবি ইয়া নূরেল আইন, ইয়া সাকিন খায়ালি
আ’শেক বাকালি স্নিন, ওয়ালা গের’আক বিবালি
হাবিবি, হাবিবি, হাবিবি ইয়া নূরেল আইন, আহ
হাবিবি, হাবিবি, হাবিবি ইয়া নূরেল আইন, ইয়া সাকিন খায়ালি
আগমাল আইয়ুন ফিল কোন, আনা শুফতাহা
আল্লাহ আ’লেক আল্লাহ, আ’লা সিহরাহা
আইয়ুনাক মা’আয়া, আইয়ুনাক কিফায়া
তানাওয়ার লায়ালি …
হাবিবি, হাবিবি, হাবিবি ইয়া নূরেল আইন, আহ
হাবিবি, হাবিবি, হাবিবি ইয়া নূরেল আইন, ইয়া সাকিন খায়ালি
ক্বালবাক নাদানি ও ক্বাল, বিতহেব্বেনি
আল্লাহ আ’লেক আল্লাহ, তামেনতিনি
মা’আক আল-বিদায়া, ওয়া কুল্লিল হিকায়া
মা’আক লিল নিহায়া …
হাবিবি, হাবিবি, হাবিবি ইয়া নূরেল আইন, আহ
হাবিবি, হাবিবি, হাবিবি ইয়া নূরেল আইন, আহ
আহ … হাবিবি … হাবিবি … আহ
হাবিবি গানের বঙ্গানুবাদ
প্রিয়তমা, তুমি আমার নয়নের আলো, তোমার বাস আমার কল্পনায়
আমি চেয়েছি তোমায় বছর ধরে, তুমি ছাড়া কেউ নেই আর আমার মনে
প্রিয়তমা, প্রিয়তমা, প্রিয়তমা তুমি আমার নয়নের আলো, আহ্
প্রিয়তমা, প্রিয়তমা, প্রিয়তমা তুমি আমার নয়নের আলো, তোমার বাস আমার কল্পনায়
সবচেয়ে সুন্দর দু’চোখ সমগ্র মহাবিশ্বে, দেখেছি আমি তা
আল্লাহ্ তোমার সহায় হোক, কী জাদুময়ী চোখ
তোমার নয়ন আছে আমার সাথে, তোমার নয়নই যথেষ্ট
তারাই আমার রাত্রিকে করে আলোকিত …
প্রিয়তমা, প্রিয়তমা, প্রিয়তমা তুমি আমার নয়নের আলো, আহ্
প্রিয়তমা, প্রিয়তমা, প্রিয়তমা তুমি আমার নয়নের আলো, তোমার বাস আমার কল্পনায়
তোমার হৃদয় আমাকে ডেকেছে এবং বলেছে, তুমি ভালোবাস আমায়
আল্লাহ তোমার সহায় হোক, তুমি আশ্বস্ত কর আমায়
তোমার সাথেই শুরু আছে, এবং আছে সব গল্পগুলো
তোমার সাথেই থাকব আমি শেষ পর্যন্ত …
প্রিয়তমা, প্রিয়তমা, প্রিয়তমা তুমি আমার নয়নের আলো, আহ্
প্রিয়তমা, প্রিয়তমা, প্রিয়তমা তুমি আমার নয়নের আলো, আহ্
আহ্ … প্রিয়তমা … প্রিয়তমা … আহ্
অন্যান্য জনপ্রিয় গান
আমর দিয়াব যেকোনো বিবেচনায় আরব বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম জনপ্রিয় গায়ক। তার নাম প্রায় সময়ই উম্মে কুলসুম এবং ফাইরুজের মতো ক্লাসিকাল সঙ্গীত শিল্পীদের পাশাপাশি উচ্চারিত হয়। তার প্রায় প্রতিটি অ্যালবামই আরব বিশ্বে এবং মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন নির্দেশক অনুযায়ী টপ চার্টে অবস্থান করেছিল। হাবিবি ইয়া নূরেল আইন ছাড়াও তার অন্যান্য জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে আছে ১৯৯৮ সালের ‘আউয়্যেদুনি‘, ২০০০ সালের ‘আলেম আল্লাহ‘। তার অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি গান ছিল ‘তামাল্লি ম’আক’, যা ইংরেজি, ফরাসি, রাশিয়ান সহ বিশ্বের ভাষায় অনূদিত হয়েছিল। বলিউডের অত্যন্ত জনপ্রিয় গান ‘কাহো না কাহো’ও এই তামাল্লি মা’আকের অনুকরণেই তৈরি।
২০০৩-২০০৪ সালের দিকে আমর দিয়াব পপ সঙ্গীতের দিকে কিছুটা ঝুঁকে পড়েন। এ সময় তার জনপ্রিয় হওয়া গানের মধ্যে আছে ২০০৩ সালের ‘আনা আয়েশ‘ এবং ২০০৪ সালের ‘লেইলি ওয়া নাহারি‘ ও ‘ক্বোসাদ আয়েনি‘। ২০০৫ সালে মুক্তি পাওয়া তার ‘কাম্মেল কালামাক’ অ্যালবামটির মিউজিক ভিডিও নির্মাণে খরচ হয়েছিল ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তির আগেই গানটি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া সত্ত্বেও তার ভক্তদের নকল কপি বর্জনের আন্দোলনে অ্যালবামটির ২ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছিল।
২০০৬ সালে আমর দিয়াব পেপসির একটি বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেন, যেখানে তার সহশিল্পী ছিল বিয়ন্স, পিঙ্ক, জেনিফার লোপেজ এবং ব্রিটনি স্পিয়ার্স। এই বিজ্ঞাপনটিও তার ভক্তদের মধ্যে দারুণ সাড়া ফেলে।
পুরস্কার এবং স্বীকৃতি
আমর এ পর্যন্ত চারবার ‘বেস্ট সেলিং অ্যালবাম ইন দ্য মিডল ইস্ট’ বিভাগে ‘ওয়ার্ল্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেছেন। ওয়ার্ল্ড মিউজিকের বিভিন্ন বিভাগে তার মোট পুরস্কারের সংখ্যা সাতটি। সবচেয়ে বেশিবার এই পুরস্কার অর্জন করে তিনি গিনেজ বুক অফ ওয়ার্ল্ডেও নিজের নাম উঠিয়ে নিয়েছেন। তার নিজের রেকর্ডকেই তিনি ভেঙ্গেছেন বারবার। তিনিই একমাত্র শিল্পী, যিনি ছ’বার ‘বেস্ট আর্টিস্ট অফ নর্থ আফ্রিকা’ পুরস্কার পেয়েছেন। আই টিউনসের মিসরীয় বিভাগে তার দুটো অ্যালবাম টানা ১,০০০ দিন পর্যন্ত টপ চার্টে ছিল। তার ‘শুফ্ত আল-আইয়্যাম’ অ্যালবামটি আই টিউনসের আন্তর্জাতিক বিভাগেও দীর্ঘদিন পর্যন্ত ১ নম্বরে থাকার গৌরব অর্জন করেছিল। ফোর্বস মিডল ইস্টের জরিপে আমর দিয়াব বর্তমান সময়ের সেরা আরব তারকা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
ভাষার প্রতিবন্ধকতা আমর দিয়াবের গানকে কোনো বেড়াজালে আটকে রাখতে পারেনি। তিনি যখন ইউরোপ, আমেরিকা বা এশিয়ার কোনো কনসার্টে যান, তখন দেখা যায় তার হাজার হাজার ভক্ত একটি শব্দও না বুঝে পুরো গান তার সাথে সাথে মুখস্ত গেয়ে যেতে পারে। রোলিং স্টোন ম্যাগাজিনের সাথে এক সাক্ষাৎকারে আমর দিয়াব বলেন, ভাষা তার গানের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা না, কারণ তিনি মনে করেন মিউজিক নিজেই একটা ভাষা। আমর দিয়াব নিঃসন্দেহে মিউজিকের সেই ভাষার উপর অগাধ জ্ঞান সম্পন্ন একজন ভাষাবিদ।
ফিচার ইমেজ- knownpeople.net