সাবকালচার নিয়ে আলোচনায় কিংবা ব্রিটেনের ইতিহাসের পাঠে কিংবা সংস্কৃতি-অনুরাগীদের কাছে একই সঙ্গে ধ্রুপদী ও কুখ্যাত লড়াই হচ্ছে মড বনাম রকার। ব্রিটেনের তরুণরা মূলধারা থেকে নিজেদের আলাদা করবার প্রবল তাগিদ থেকে গড়ে তুলেছিলো এসব সাবকালচার। ফ্যাশন, অ্যাটিচিউড আর সঙ্গীত- এই তিনে নির্ধারিত হতো সেসব সংস্কৃতির ধারাপ্রবাহ।
পঞ্চাশের দশকে টেডি বয়রা সাবকালচার যুগের প্রথম অভিযাত্রিক ছিলেন। এদের নিয়েই লেখা হয়েছিলো এই সিরিজের প্রথম লেখা। এই টেডি বয়দের পুনরাবির্ভাব এবং সত্তরের দশকে পাঙ্কদের সাথে দ্বন্দ্ব নিয়ে লেখা হয়েছিলো সিরিজের দ্বিতীয় লেখা। মাঝখানে ষাটের দশকে রাজ করেছিলো মড ও রকাররা, এদের দ্বৈরথেই ফিকে হয়ে গিয়েছিলো টেডরা। ষাটের দশকের মাঝামাঝি দাঙ্গা ছিলো চরমে, হয়েছে রক্তারক্তিও। পুলিশরা ব্যতিব্যস্ত ছিলো কোন্দল সামলাতে, কোর্ট ব্যস্ত ছিলো বিচারকাজে, থানাগুলো ভরে ছিলো দাঙ্গাবাজে, ওদিকে পার্লামেন্ট সদস্য আর পেনশনভোগী সিনিয়র-সিটিজেনরা মুণ্ডুপাত করছিলেন পুরো তরুণ প্রজন্মের। আজ বলা হবে সেই মড বনাম রকারের ঐতিহাসিক বৈরিতা নিয়ে।
টেডদের উত্থান নিয়ে লেখাটি থেকে আপনারা জেনেছেন যে, টেডদের প্রথম প্রজন্ম যখন পঞ্চাশের শেষ দিকে প্রায় হারিয়ে যাচ্ছিলো, তখন অনেক টেড রকারদের দলে যোগ দেয়। এর মানে হলো, রকারদের জন্ম বেশ আগেই। ‘৫০ এর দিকে যখন মোটরবাইক সহজলভ্য হচ্ছিলো, তখন ব্রিটেনের ক্যাফে রেসারকে কেন্দ্র করে বাইকারদের একটা দল গড়ে ওঠে। ওদিকে ‘৪০ এর দশকে আমেরিকায় হিস্পানিক জনগোষ্ঠীর নিম্নবিত্ত-শ্রমজীবীদের ভেতরে নতুন একটা ফ্যাশনধারা জন্ম নেয়। টন-আপ বয়েজ বা র্যাগার বা গ্রিজার। কালো লেদার জ্যাকেট-আটসাঁট জিন্সের প্যান্ট, বড় বুট আর কালো রোদচশমা। এই গ্রিজার ঘরানার ফ্যাশনকেই গ্রহণ করে ব্রিটেনের বাইকারদের সেই দল।
‘৫০ এর দশকে রক এন্ড রোল জনপ্রিয় হতে শুরু করে ব্রিটেনে। এই জনরা নিয়ে সর্বপ্রথম সাড়া পড়ে যায় এই বাইকার দলের ভেতরেই। বাইক, রক আর গ্রিজারধর্মী ফ্যাশন- এই তিনে তৈরি হয়ে যায় নতুন সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয়- রকার। মূলত টিনেজার-তরুণদের ভেতর জনপ্রিয় হতে থাকে এ সাবকালচার। এর আগেই অবশ্য টেডি বয় প্রতিষ্ঠা পেয়ে যায়। টেডি বয়দের কয়েক বছর পরে আস্তে আস্তে রকাররাও বড় হতে থাকে আকারে।
রকাররা ছিলো একটু অগোছালো। এলোমেলো চুল, কখনো লম্বা, কখনো ছোট। গায়ে কালো লেদার জ্যাকেট, গলায় সাদা স্কার্ফ ও ধাতব চেইন, কারো কানে দুল, সাথে লেভিসের ডেনিম বা জিন্সের প্যান্ট। রকের পাঁড়ভক্ত রকাররা এলভিস প্রিসলি, জিন ভিনসেন্টের রীতিমতো পূজা করতেন। ওদিকে ফ্যাশনের দিক থেকে গডফাদারখ্যাত অভিনেতা মার্লন ব্র্যান্ডো ও জেমস ডিনকে অনুসরণ করতেন। মেয়েরা পরতেন আঁটসাঁট ব্ল্যাক-ক্যাপরি প্যান্ট, চুলে দিতেন মৌঢিবির মতো সাজ। বিয়ার আর সিগারেট ছিলো তাদের নিত্যসঙ্গী।
পঞ্চাশের দশকের শেষভাগে ব্রিটেনে ইতালিয়ান ফ্যাশন-প্রভাবিত মর্ডানিস্ট ধারার সূচনা হয়। ওদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বিরাট পরিমাণে আফ্রো-ক্যারিবীয় অভিবাসন ঘটে দেশটিতে। এদের কাছ থেকে পাওয়া ব্লুবিট ব্রিটেনের সঙ্গীতের মূলধারায় মিশতে শুরু করে। একে ঘিরে জমতে থাকে ভক্তকূল। এই ভক্তকূলের প্রথম প্রজন্মই হলেন মর্ডানিস্ট বা মডরা। সাধারণত সামাজিক-রাজনৈতিক সংস্কারবাদের মতো খুব ‘সিরিয়াস’ কিছুই মনে হয় ‘মর্ডানিস্ট’ শব্দটি শুনলে। তবে এই মডরা অত ‘গভীর’ নন। তাদের চিন্তা কেবল নিজের বাবুয়ানা ঠিক রেখে আপন সমাজে দাপট নিয়ে চলা। অবশ্য তাদের আর দোষ কী! ততদিনে যে ব্রিটেনের সাবকালচার বা সাংস্কৃতিক বিদ্রোহের ধারাটি কেবল গায়ের জোরে নিজেকে আলাদা জাহির করবার প্রয়াস এবং দলগত রেষারেষিতে পরিণত হয়েছে। তাই খুব গঠনমূলক কিছু আশা করাও বাড়াবাড়ি।
বাটন-ডাউন শার্ট, ইতালিয়ান স্লিম-ফিট স্যুট, চাপানো প্যান্ট, বেঢপ পার্কাস জ্যাকেট, চুলগুলোও ঠিকঠাক ছাঁটা ও আচড়ানো – এই ছিলো তাদের বেশভূষা। মেয়ে মডরা কিছুটা ‘পুরুষালি’ থাকতো, ছোট চুল, অল্প মেক-আপ আর শার্ট-প্যান্ট। এদের সবসময়ের চলার সঙ্গী ছিলো ইতালিয়ান ভেস্পা বা ল্যামব্রেটা স্কুটার। এরা নিজেদের স্কুটারও সাজিয়ে রাখতো আয়না, স্টিকার, মাস্কট, খেলনা ইত্যাদি ঝুলিয়ে। সোল, স্কা, আর এন্ড বি (রিদম এন্ড ব্লুজ) আর জ্যাজ ছিলো মডদের প্রিয় জনরার সঙ্গীত। লন্ডনের দ্য সিন ও দ্য মার্কির মতো বড় বড় নাইটক্লাবে আনাগোনা ছিলো তাদের। নাচ-গানের উদ্দামতার সাথে নিজেদের ফ্রেঞ্চ, ইতালিয়ান ফ্যাশনের শো-অফ করার সেরা জায়গা ছিলো সেগুলো।
পূর্বসূরি টেডি বয়দের থেকে শিক্ষাদীক্ষাসহ সব দিক থেকেই এগিয়ে ছিলো মড ও রকাররা। বনে দুই সিংহ থাকলে বিবাদ হবেই। মড-রকারদের মাঝেও তাই ছিলো। কিন্তু মিলও ছিলো এদের। এরা সবাই-ই হতে চাইত শহরের সবচাইতে কেতাদুরস্ত তরুণ। সকলেই চাইত সঙ্গীতে পারদর্শিতা বা সমঝদারি দেখিয়ে জাতে উঠতে বা অটুট রাখতে কিংবা কিছু নাম কামাতে।
পরিপাটি মডদের কাছে রকাররা ছিলো ‘নোংরা’, ‘দুর্গন্ধময়’ ও ‘তেলচিটচিটে’। ওদিকে রকারদের কাছে মডরা ছিলো প্রামসে (শিশুদের ট্রলিচেয়ার) বসা দুগ্ধপোষ্য শিশু, যারা আদুরে জামাকাপড় পরে। মডরা শুরুতে আসলেই ছিলো নিরীহ গোছের। পৃথিবী যেহেতু শক্তের ভক্ত, নরমের যম, তাই মডরা ছিলো ‘সফট টার্গেট’। এদের কেবল রকাররাই হেয় করতো না, বরং নিজ পরিবার থেকেও টিটকারি শোনানো হতো। অনেকে তো মারও খেয়েছেন। পাল্টা মার তারা তখন দিতে পারেননি। কীভাবেই বা দেবেন? দামি শার্টের বোতাম ছিঁড়ে যাবার ভয়ে তারা জোরে কথাই বলতেন না।
এককালে সেই মডদের দল ভারী হলো। রকারদের দেখাদেখি তাদেরও হতে মন চাইলো ‘রাফ এন্ড টাফ’। ১৯৬৩-৬৪ এর দিকে লন্ডনের রাস্তায় রকাররা বাইক নিয়ে মহড়া দিতেন রাস্তায়। মাঠ তো কেবল ‘সিনিয়র’দেরই ছেড়ে দেয়া যায় না। ব্যস, স্কুটার নিয়ে পাল্টা মহড়া দেওয়া শুরু করলো মডরা। রাস্তায় দু’চারজন মড-রকার জড়ো হলেই লেগে যেত খোঁচাখুঁচি। তবে সব কিছু মাত্রা ছাড়াতে শুরু করে ১৯৬৪ সালের মার্চ থেকে। ব্রিটেনের দক্ষিণ উপকূল ক্লান্ত হতে থাকে একের পর এক দাঙ্গায়।
বসন্তের শুরুতে দু’দলের প্রথম লড়াইটি হয় এসেক্সে। ব্যাঙ্ক হলিডের রবিবারে মানুষ ছুটেছিলেন শহরান্তের দক্ষিণের ক্ল্যাকটন সৈকতে। সমুদ্রসম্মুখে জনসমুদ্রে মুখোমুখি হয়ে গিয়েছিলেন মড ও রকাররা। এটি অবশ্য কাকতাল ছিলো না। ঝামেলা হতে পারে জেনেও দলেবলে হৈচৈ করতে করতে বাইক আর স্কুটার নিয়ে সৈকতে পৌঁছেছিলেন তারা। কীভাবে কীভাবে যেন হাতাহাতি বেধে গেলো, তার ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া। বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা। গ্রেফতার হলেন ৯৭ জন।
এরপর মে মাসের ১৮ তারিখ বড় ধরনের একটি দাঙ্গা ঘটলো কেন্টের মার্গেট সৈকতে। আবারও একই প্রেক্ষাপট, হুইটসানের ছুটি, মড বনাম রকার। এবারে আরো বড় পরিসরে। দাঙ্গায় অংশ নিলো ৪০০ জন। গ্রেফতার হলো চল্লিশজন। মারপিট, রক্তারক্তি হলো সমানে। অস্ত্র ছিলো বুট আর মুষ্টি।
সাসেক্সের ব্রাইটন ছিলো অনেকটা মডদের তীর্থ। তাছাড়া ‘নিরীহ’ থাকতে থাকতে মডরাও মরিয়া ছিলো নিজেদের ‘জাত’ চেনাতে, প্রমাণ করতে যে রক্ত তাদেরও গরম হতে পারে। রকাররা অন্যান্য সময় ছুরি, শিকল, নাকলস (লোহার আংটা) ইত্যাদি সাথে রাখত। মারামারিতে তাদের জুড়ি মেলা ভার। রকারদের ‘রাফ এন্ড টাফনেস’ এর সাথে পাল্লা দিতে কোমর বেঁধে নামলো মডরা। কোটের ল্যাপেলে সূঁচ, মাছ ধরার বড়শি আর ব্লেড গেঁথে রাখলো তারা। এপ্রিলের ১৯ তারিখ ব্রাইটনের সৈকতেই হলো সবচেয়ে বড় দাঙ্গা।
সবচেয়ে ‘বড়’ দুটো কারণে। প্রথমত অংশগ্রহণকারী ছিলো সর্বাধিক। অন্যদিকে অসংখ্য সিনিয়র-সিটিজেন ও পরিবার ছিলো আতঙ্কগ্রস্ত জিম্মিদশায়। সেদিন উপস্থিত ১৮ বছর বয়সী মড টনি এডওয়ার্ডের বয়ান অনুযায়ী, সকালে উভয় দলই অবস্থান নিয়েছিলো সৈকতে। মডদের জটলা থেকে কোনো একজন আচমকা নুড়ি ছুঁড়ে মারেন রকারদের দিকে। ফুঁসে উঠলো রকাররা। তৎক্ষণাৎ আবার দেখা গেলো এক মডের মাথা রক্তাক্ত। ভীড়ের কারণে জানালা থেকে পড়ে গিয়ে ঘটেছিলো এ দুর্ঘটনা। কিন্তু দ্রুতই চাউর হলো, রকাররা প্রতিশোধ নিতেই ঘটিয়েছে এই কাণ্ড। ব্যস, মডরা সৈকত ও রিসোর্টের ডেক চেয়ার অবধি তুলে ভাঙতে লাগলো রকারদের মাথায়। আগের দাঙ্গাগুলোয় সমানে সমান হলেও এবার হলো খানিকটা একতরফা।
সেদিন উপস্থিত থাকা সাবেক পুলিশ কনস্ট্যাবল ডেভিড রোল্যান্ডের মতে, সেদিন মডরা সংখ্যায় অনেক বেশি ছিলো, তাই রকারদের পিঠেই বেশি পড়েছে। ওদিকে দাঙ্গাকারীদের ছোঁড়া পাথরে আহত হয়েছিলেন ৩০ জন পুলিশ সদস্য। প্রায় এক হাজার মড-রকার জড়িত থাকলেও গ্রেফতার কমই হয়েছিলেন, মাত্র ৭৬ জন।
গণমাধ্যম আবার এ নিয়ে বেশ রসিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছিলো। সব মিলিয়ে ইতিহাসে বেশ কড়া একটা দাগ রেখে যায় উক্ত ঘটনাটি। এ ঘটনাটি নিয়ে ১৯৭৯ সালে নির্মিত হয় বিখ্যাত ছবি ‘কুয়াড্রোফেনিয়া।’ ২০১৬-তে গুজব রটেছিলো, আসতে যাচ্ছে সিকুয়েল! এ সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন ছবির স্বত্বাধিকার কর্তৃপক্ষ।
যা-ই হোক, ব্রাইটনের এ ঘটনার শোধ চোকাতে প্রস্তুত ছিলো রকাররা। সে বছরের আগস্টে সরকারি ছুটির রবিবারে তারা বেরিয়ে পড়ে বাইক নিয়ে। ব্যস, স্কুটার নিয়ে মডরাও বেরিয়ে পড়লো রক্ষণ করতে।
হেস্টিংসে আবার অনেক মডকে ধাওয়া দিয়েছিলো রকাররা। পুলিশ শুরুতে কম ছিলো বলে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া চলছিলো। পরে পুলিশ সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ নিলে মোটামুটি অল্পের মধ্যেই শেষ হয় এ দাঙ্গা।
এরপর বেশ খানিকটা বিরতি দিয়ে ১৯৬৫ সালের ১৭ থেকে ১৯ এপ্রিল অবধি ব্রাইটনে আবারও হলো দাঙ্গা। এবারে পুলিশ গত বছরের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে কড়া ভূমিকায় ছিলো। তবুও ছুরিকাহত হয়েছিলেন দুজন দাঙ্গাকারী। বেশ বাজে রকম রক্ত ঝরেছিলো সেদিন।
কথায় আছে, অতি বাড় বেড়ো না, ঝড়ে পড়ে যাবে। তেমনটাই হলো মড, রকারদের ক্ষেত্রে। দাঙ্গা নামক পিপীলিকার পাখনা গজানোতেই এপিটাফ রচনা হলো মড-রকারদের। মানুষজন অতিষ্ট হতে থাকলো। মড-রকাররাও হাজত-আদালত দেখে দেখে বিরক্ত হয়ে গেলো। আস্তে আস্তে এই দ্বৈরথও মিইয়ে গেলো কয়েক বছরের মধ্যে। এ দ্বৈরথের স্মরণে ব্রাইটনে প্রতি বছর স্কুটার-বাইক নিয়ে অসংখ্য লোক সমবেত হন। ২০০৫ সাল থেকে জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে মড ও রকারদের বাইক-স্কুটার শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এমন একটি শোভাযাত্রা প্রতি বছর সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমেও অনুষ্ঠিত হয়।
ষাটের দশকের মড-রকার দ্বৈরথ ঝিমিয়ে যাবার পর টেডদের পুনর্জন্ম হয়। তখন সাবকালচারে লড়াইয়ের ‘বাজার’ নিয়ন্ত্রণের ভার নেয় টেড ও পাঙ্করা। এদের নিয়ে দ্বিতীয় কিস্তিতে ইতিমধ্যে লেখা এসেছে। ওদিকে মডদের অনেকে যোগ দিয়েছিলেন হিপিদের দলে। হিপিদের দল ভারি হতে না হতেই আশির দশকে চলে এলো নতুন দ্বৈরথ। হিপি বনাম স্কিনহেড। এরাও বেশ মারমুখো হয়েছিলেন নিজেদের লড়াইয়ে। এদের নিয়েই আসবে এই সিরিজের চতুর্থ কিস্তির লেখাটি।
ফিচার ইমেজ: express.co.uk