‘উৎসব’ শব্দটি আমাদের সকলেরই প্রিয়। ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক কিংবা অন্য যেকোনো প্রকার উৎসব হোক, সেসবে অংশগ্রহণ করতে কার না ভালো লাগে! আর বর্তমানে বিশ্বায়নের এ যুগে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে উদযাপিত উৎসবের হালনাগাদ তথ্য আমাদের কাছে চলে আসছে। ফলে উৎসব এখন আর ধর্ম, সম্প্রদায় কিংবা জাতীয় সীমার মধ্যেও আবদ্ধ নেই।
বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর হাজারো বর্ণিল উৎসব উদযাপিত হয়। সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় উৎসবগুলোই আমাদের চোখে পড়ে। কিন্তু অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হলেও কিছু উৎসবে আমরা আকৃষ্ট না হয়ে পারি না। ধরনে, রীতিতে, বিশ্বাসে- সমস্ত কিছুতেই অদ্ভুত এবং বিচিত্র রকমের তেমন ১০টি উৎসব নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন।
১. নাকি সুমো, জাপান
জাপানের টোকিওতে প্রতি বছর এপ্রিল মাসে পালিত হয় ‘নাকি সুমো’ নামক এক অদ্ভুত খেলার উৎসব। সুমো শব্দটি দেখেই ভাববেন না এটি দৈত্যাকার সুমো পালোয়ানদের কোনো কুস্তি খেলা। কারণ, নাকি সুমোতে প্রত্যেক সুমো পালোয়ানের কোলে থাকে অনুর্ধ্ব দুই বছরের একটি করে শিশু। খেলার ময়দানে উভয় সুমো তাদের কোলের শিশুটিকে আরামদায়কভাবে ধরে দোল দিতে থাকে আর রেফারি পালাক্রমে উভয় শিশুর দিকে চেয়ে “নাকি নাকি” (কাঁদো কাঁদো) বলে চিৎকার করতে থাকেন। যার কোলের শিশুটি আগে কেঁদে উঠবে, সে-ই হবে এই খেলার বিজয়ী!
ভাবছেন, এ আবার কেমন খেলা? জাপানিদের কাছে কিন্তু এটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, তারা বিশ্বাস করে, নাকি সুমোতে তাদের শিশুরা কাঁদলে শিশুটির অনাগত জীবনের কান্না (দুর্ভাগ্য) বিলীন হয়ে যায় এবং সৌভাগ্যের আগমন ঘটে। যদি কোনো শিশু সুমোর কোলে না-ই কাঁদে, তাহলে রেফারিরা চেহারায় ভয়ানক সব মুখোশ ধারণ করে শিশুটিকে ভয় দেখান। কারণ, ময়দান থেকে না কেঁদে ফিরে আসলে শিশুটির অমঙ্গল হতে পারে!
২. কুপারস হিল চিজ রোলিং, ইংল্যান্ড
ইংল্যান্ডের গ্লুচেস্টারে অবস্থিত ‘কুপারস হিল’ নামক একটি ছোট পাহাড়ে প্রতি বছর মে মাসে অনুষ্ঠিত হয় ‘চিজ রোলিং’ উৎসব, যা বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে, যত জনপ্রিয়ই হোক না কেন, সাধারণ উৎসবকেন্দ্রিক খেলার তুলনায় কিছুটা বিপদজনক এই উৎসব এর রীতি ও ধরনে অত্যন্ত অদ্ভুত।
কুপারস হিলের ঢালে জমা হন দর্শকগণ, আর মাঝখানে ফাঁকা যায়গায় অনুষ্ঠিত হয় প্রতিযোগিতা। একে গড়াগড়ির প্রতিযোগিতা বললেও ভুল হবে না, যেখানে হাত-পা ভাঙারও সম্ভাবনা থাকে। প্রথমে, কুপারস হিলের উপর থেকে ঢাল বরাবর একটি ৭ পাউন্ডের গোলাকার পনির গড়িয়ে ছেড়ে দেন কেউ একজন, আর প্রায় তৎক্ষণাৎ প্রতিযোগীরা সেই পনিরের দিকে ছুট দেন। পনির ধরতে গিয়ে পাহাড়ের ঢাল দিয়ে আছড়ে, গড়িয়ে, ডিগবাজি খেতে খেতে নিচের দিকে নামতে থাকেন প্রতিযোগীরা। যিনি সবার আগে পনিরটি কব্জা করবেন, বিজয়ী তিনিই। আর ঢালের নিচে অপেক্ষমাণ থাকেন একদল স্থানীয় রাগবি খেলোয়াড়, যারা নিয়ন্ত্রণ হারানো প্রতিযোগীদের ধরে ফেলেন। থাকে চিকিৎসক দলও!
৩. ওয়ার্ম চার্মিং, ইংল্যান্ড
ইংরেজি ‘স্নেক চার্মার’ এর বাংলা প্রতিশব্দ যদি হয় সাপুড়ে, তাহলে ‘ওর্ম চার্মার’ এর প্রতিশব্দ কি ‘কেঁচুড়ে’ হওয়া সম্ভব? প্রতিশব্দটি সঠিক হোক আর না হোক, ইংল্যান্ডের ডেভনের ব্ল্যাকঅটন গ্রামে প্রতিবছর মে মাসে অনুষ্ঠিত হয় এক বিচিত্র উৎসব, যার নাম ‘ব্ল্যাকঅটনস ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল অব ওর্ম চার্মিং’। এই উৎসবে ব্যক্তিগতভাবে নয়, দলগতভাবে যোগ দিতে হয়।
প্রতিটি দলকে কোনো আবাদযোগ্য জমিতে এক বর্গ মিটার জমি এবং ১৫ মিনিট সময় দেয়া হয়। এই ১৫ মিনিটে তারা পৃথিবীর তাবৎ কৌশল প্রয়োগ করতে পারবেন, কেবল খুঁড়তে পারবেন না। ১৫ মিনিটে যে দল সবচেয়ে বেশি কেঁচো মাটির উপর নিয়ে আসতে পারবে, তারাই বিজয়ী। তো খনন না করে কীভাবে কেঁচো বের করে আনে তারা? কেউ মধুর সুরে বাঁশি বাজান কেঁচোদের আকৃষ্ট করতে, কেউ বা মাটিতে ড্রাম রেখে প্রচণ্ড শব্দে বাজাতে থাকেন যেন অতিষ্ঠ কেঁচোরা উপরে উঠে আসে! কেউ আবার নির্ধারিত ভূমির এক পাশে আগুনের তাপ প্রয়োগ করেন, যেন অন্য পাশে উঠে আসে কেঁচোরা। আরেকটি পদ্ধতি হলো ধীর লয়ে ঝিরি ঝিরি পানি বর্ষণ করা, যেন কেঁচোদের কাছে মনে হয় বৃষ্টি নেমেছে!
৪. কাস্ট্রিলো ডি মুরসিয়া, স্পেন
স্প্যানিশ ভাষায় ‘কাস্ট্রিলো ডি মুরসিয়া’র অর্থ ‘দ্য বেবি জাম্পিং ফেস্টিভ্যাল’। এটি স্প্যানিশদের জন্য একটি আনন্দঘন উৎসব তো বটেই, ধর্মীয় অনুষ্ঠানও। উৎসবের মূল আকর্ষণ ভয়ানক সব মুখোশধারী মানুষজন, যারা শয়তানের প্রতীক। তারা মিছিল করে মূল উৎসবে আসার আগে রাস্তায় মানুষকে নানাভাবে ভয় দেখিয়ে থাকে। তবে উৎসবের মূল আকর্ষণ হলো শিশুদের ভাগ্য থেকে অশুভ শক্তিকে তাড়ানো। উৎসবের জন্য নির্ধারিত স্থানে রাস্তায় শিশুদের শুইয়ে রাখা হয় ছোট ছোট বিছানায় আর তাদের উপর দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে যায় মুখোশধারীরা। এর অর্থ হচ্ছে, অশুভ শক্তি শিশুদের না ছুঁয়ে চলে যায়।
৫. ইউকোনকান্তো, ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডের সংকাজার্ভিতে প্রতি বছর অক্টোবর মাসে উদযাপিত হয় ‘ইউকোনকান্তো’ বা ‘ওয়াইফ ক্যারিং কম্পিটিশন’। নাম থেকে ধারণা করা যায় এই উৎসবের ধরন। ১৯৯২ সাল থেকেই ফিনল্যান্ডে এটি উৎসব হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে। প্রতিযোগীদের আড়াইশ মিটারে কিছু বেশি পথ অতিক্রম করতে হয়, যে পথে তাদের জন্য অপেক্ষা করে বিভিন্ন হেঁয়ালিপূর্ণ বাধা। এসব বাধা পেরিয়ে যিনি সবার আগে গন্তব্যে পৌঁছুবেন, তিনিই বিজয়ী। ও হ্যাঁ, এই পথটুকু কিন্তু অবশ্যই নিজের স্ত্রীকে কাঁধে নিয়ে পাড়ি দিতে হবে! সবার আগে স্ত্রীকে বয়ে নিতে পারলে বিজয়ী প্রতিযোগী পুরস্কার হিসেবে তার স্ত্রীর সমান ওজনের বিয়ার পান!
৬. মাংকি বুফ্যে, থাইল্যান্ড
১৯৮৯ সালের কথা। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের অদূরে অবস্থিত একটি ছোট্ট শহর লোপবুরির ছোট প্রাকৃতিক বনে হাজারখানেক বানরের বসবাস ছিল। শহরটিও ছিল মনোমুগ্ধকর সুন্দর। তথাপি পর্যটন শিল্প তখনো গড়ে ওঠেনি শহরটিতে। পর্যটনকে জনপ্রিয় করতেই সেই শহরে বসবাসকারী স্থানীয় এক ধনী ব্যবসায়ীর মাথায় এক নতুন বুদ্ধি খেলে গেল। তিনি সে বছর নভেম্বর মাসে শহরের হাজারখানেক বানরের জন্য এক বিশাল ব্যুফের আয়োজন করে নাম দিলেন ‘মাংকি ব্যুফে’! প্রথম বছরের বাজিমাত করলো মাংকি ব্যুফে। পরের বছর থেকে বাড়তে থাকলো মাংকি বুফ্যেতে বিনিয়োগকারী আর দর্শক, উভয়ের পরিমাণ। ২০০০ সালে পা দিতে দিতে তা পরিণত হলো এক জনপ্রিয় উৎসবে। অথচ সেই ব্যবসায়ী নিজেও হয়তো ভাবতে পারেননি যে তার সেই অদ্ভুতুড়ে কাজ একসময় জাতীয় উৎসবে পরিণত হবে। বর্তমানে শহরটিতে ২-৩ হাজার বানরের বসবাস। প্রতি বছর নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের যেকোনো একদিন উদযাপিত হয় উৎসবটি, যেখানে বানরদের খাবার জন্য সাজিয়ে দেয়া হয় পঞ্চাশোর্দ্ধ ফলমূল, কেক, চকলেট ইত্যাদি খাবার। একদিকে উৎসবমুখর পরিবেশে বানররা মাংকি ব্যুফে উপভোগ করে, আরেকদিকে স্থানীয়রা বানরের মতো সেজে নৃত্য পরিবেশন করে। এভাবেই আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপিত হয় উৎসবটি।
৭. লা টমাটিনা, স্পেন
২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বলিউডের সিনেমা ‘জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা’র কল্যাণে ‘লা টমাটিনা’ বা টমেটো উৎসবের সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত। প্রতিবছর আগস্ট মাসের শেষ বুধবার স্পেনের বুনোল শহরে মহাসমারোহে উদযাপিত হয় এই উৎসব। উৎসবের স্থায়িত্বকাল হয় মাত্র ঘণ্টা দুয়েক। তবে এই ছোট্ট সময়ের জন্য সাগ্রহে অপেক্ষারত থাকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজারো মানুষ। এখানে কোনো জয়-পরাজয় নেই, কেবল আনন্দ করাই এর মুখ্য উদ্দেশ্য। এজন্য এর নিয়মও বেশ সহজ। নির্ধারিত স্থানে ট্রাকের পর ট্রাক ভর্তি পাকা টসটসে টমেটো আসবে। আপনার কাজ কেবল সেগুলো হাতে নিয়ে চাপ দিয়ে ফাটিয়ে আপনার বন্ধু কিংবা সঙ্গীদের গায়ে ছুঁড়ে মারা। উৎসব শুরুর কয়েক মিনিটের মাঝেই অংশগ্রহণকারীরা আপাদমস্তক লাল হয়ে যান আর বুনুলের রাস্তায় হয় টমেটো সসের বন্যা! উৎসবটি এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছে যে এখানে যোগ দিতে হলে অন্তত ৩/৪ মাস আগেই আবেদন করতে হয়। কারণ, বুনোল শহরটি ছোট হওয়ায় অধিক মানুষের জায়গা সংকুলান সম্ভব হয় না। কর্তৃপক্ষ তাই আবেদনপত্রের ভিত্তিতে দেশি এবং বিদেশি পর্যটকদের উৎসবে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিয়ে থাকে।
৮. হেয়ার ফ্রিজিং ডে, কানাডা
কানাডার হেয়ার ‘ফ্রিজিং ডে’ শুধু অদ্ভুত আর বিচিত্র এক উৎসবই নয়, কিছুটা কষ্টদায়কও বটে। বিশেষ করে যাদের শীত সহনক্ষমতা কম, তাদের জন্য এই উৎসব একেবারেই অনুপযোগী। তথাপি এই উৎসবের জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। কানাডার তাকহিনি নামক স্থানে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হয় এই উৎসব। কেমন সে উৎসব? হিমাঙ্কের নিচের (-৫° থেকে -১০° সেলসিয়াস) তাপমাত্রায় পুলের জলে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে! ভয় পাবার কিছু নেই, বাইরের আবহাওয়া প্রচণ্ড ঠাণ্ডা হলেও পুলে দেয়া থাকে আরামদায়ক গরম পানি। এর মাঝে ডুবে থাকতে বরং আরামই লাগবে। আপনাকে যা করতে হবে তা হলো, কেবল একবার পানিতে ডুব দিয়ে চুলগুলো ভালোমতো ভিজিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যান। বাকি কাজটা আবহাওয়াই করে দেবে! ভেজা চুল নিয়ে দাঁড়ানোর কয়েক মুহূর্তেই দেখবেন আপনার চুলের পানি জমে বরফে পরিণত হয়েছে।
৯. চেং চাউ বান ফেস্টিভ্যাল, হংকং
তৈলাক্ত লম্বা বাঁশে চড়ার ব্যর্থতার গল্প আমরা ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি। তবে, বান (একপ্রকার ছোট গোলাকার পাউরুটি) দিয়ে ঢাকা বাঁশে আরোহণ করাও কিন্তু কোনো অংশেই সহজ কাজ নয়। আর সহজ নয় বলেই তো এটি একটি উৎসব, যেখানে বারবার ব্যর্থ হয়েও সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছুতে পারলে প্রতিযোগী পেয়ে যাবেন ভাগ্যের সন্ধান! হ্যাঁ, অষ্টাদশ শতক থেকে হংকংয়ে উদযাপিত হওয়া এই ঐতিহ্যবাহী উৎসবে অংশগ্রহণকারীদের বিশ্বাস, যত উপর থেকে তারা একটি বান সংগ্রহ করতে পারবেন, তাদের সৌভাগ্য তত প্রসারিত হবে। উৎসবের পূর্বে শতাধিক বাঁশকে বান দিয়ে ঢেকে দিয়ে ৬০ ফুট উচ্চতার টাওয়ার সদৃশ করে তোলা হয়। পরে, প্রতিবার তিনটি করে বানের টাওয়ার উৎসব কেন্দ্রে রাখা হয় এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রতিযোগী তাতে অংশগ্রহণ করে সেগুলো বেয়ে উপরে ওঠার চেষ্টা করেন। আর তখন ঝরে পড়তে থাকে বানগুলো। একসময় বাঁশগুলো সম্পূর্ণ উন্মুক্ত হয়ে গেলে নতুন করে তিনটি টাওয়ার এনে রাখা হয়। এভাবেই চলতে থাকে চেং চাউ বান ফেস্টিভ্যাল।
১০. বার্নিং ম্যান ফেস্টিভ্যাল, যুক্তরাষ্ট্র
গ্রামগঞ্জে মাসিক, সাপ্তাহিক আর দৈনিক ভিত্তিতে হাট বসে, যেগুলো একটি খোলা মাঠে জমে ওঠে আর নির্ধারিত সময় পরে বিক্রেতারা তাদের মালামাল নিয়ে চলে যান। তখন শূন্য মাঠখানি দেখলে বোঝার উপায় নেই যে সেখানে কিছুক্ষণ আগেও বেচাকেনার হাট বসেছিল। তবে এ ব্যাপারটি যখন আস্ত এক শহরের ক্ষেত্রে ঘটবে, তখন তা বিশ্বাস করা শক্ত বটে। তবে এরকমটাই ঘটে যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা অঙ্গরাজ্যের ব্ল্যাক রক মরুভূমিতে। প্রতি বছর গ্রীষ্মের শেষ ভাগে টানা আটদিনের জন্য জনমানবশূন্য ব্ল্যাকরক মরুভূমি একটি ছোট্ট অংশ পরিণত হয় জনাকীর্ণ আর কোলাহলপূর্ণ এক ছোট্ট শহরে। শিল্প, সত্ত্বা, স্বাধীনতা আর আত্মনির্ভরশীলতার প্রতীক এই উৎসব ১৯৮৬ সাল থেকে পালিত হয়ে আসছে। নানা পেশা ও বর্ণের মানুষ এ সময় কর্মব্যস্ত জীবন থেকে কিছু সময়ের জন্য অবসর নিতে নেভাডার মরুভূমিতে জড়ো হন। এক সপ্তাহের জন্য এখানে মোটামুটি গড়ে ওঠে একটি শহর, যেখানে মানুষ চেনা-অচেনা সকলের সাথে সদ্ভাব বজায় রেখে পারস্পরিক সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলে। আর সকলে মিলে তৈরি করেন পশুপাখি ও অন্যান্য প্রতিকৃতি। নির্ধারিত সময় পর যখন মানুষজন নেভাডা ছেড়ে চলে যান, তখন সবধরনের ময়লা আবর্জনা আর অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিষ্কার করে স্থানটিকে পূর্বের মতো করে রেখে যান।