পৃথিবীর চিত্রকলার ইতিহাসে অন্যতম সৃষ্টিশীল আন্দোলনের নাম ইমপ্রেশনিজম। আলো, রঙ, কম্পোজিশন নিয়ে ইমপ্রেশনিস্টদের যুগান্তকারী চিন্তাভাবনাগুলো আধুনিক চিত্রকলার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিল।
প্রথমদিকে নিদারুণ উপহাসের শিকার হওয়া এই ধারাটি পরবর্তীকালে ইউরোপসহ পুরো পৃথিবীতে ব্যাপক প্রশংসিত হয় এবং বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। আজকে চিত্রকলার তীর্থভূমি প্যারিসসহ বিশ্বের বড় বড় শহরগুলোতে ইমপ্রেশনিস্ট আর্টের বড় বড় সংগ্রহশালাগুলোই তার প্রমাণ।
ইমপ্রেশনিস্টদের সেই সময়ে নেয়া নিয়ম ভাঙার সাহসী পদক্ষেপগুলোই পরবর্তীকালে পিকাসো বা জ্যাকসন পলকদের উদ্বুদ্ধ করেছিল নতুন কিছু করতে। সেই ইমপ্রেশনিজম ও ইমপ্রেশনিস্টদের বৈপ্লবিক শিল্পযাত্রা নিয়েই আজকের এই লেখা।
গোড়ার কথা
সময়টা ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি। ফ্রান্সে তখন তৃতীয় নেপোলিয়নের শাসন চলছে। সেই সময়ে ফ্রান্সের চিত্রকলার জগত নিয়ন্ত্রণ করত অ্যাকাডেমি অভ ফাইন আর্টস। অ্যাকাডেমির নিয়ম ছিল- ছবি আঁকতে হবে ঐতিহাসিক, ধর্মীয় ও পৌরাণিক বিষয়ের ওপর। ল্যান্ডস্কেপ ও স্টিল লাইফের ছবিকে তখন তেমন গুরুত্ব দেওয়া হতো না।
আঁকা ছবিগুলো নিয়ে আবার অ্যাকাডেমি কঠোরভাবে নিরীক্ষা চালাত- ব্রাশস্ট্রোক ঠিকমতো করা হয়েছে কি না, গোল্ডেন ভার্নিশ করা হয়েছে কি না ইত্যাদি। তারপর অ্যাকাডেমি নিয়ন্ত্রিত একমাত্র বার্ষিক প্রদর্শনী স্যালন দ্য প্যারিসে সেই ছবিগুলো প্রদর্শিত হতো।
স্যালনে যেসব শিল্পীর ছবি যেত, তাদের কপাল খুলে যেত। তারা পুরস্কার পেতেন, টাকাপয়সা কামানোর একটা ব্যবস্থা হতো তাদের, তাদের মানসম্মানও বাড়ত। তাই সবাই অ্যাকাডেমির নিয়ম মেনে ছবি আঁকার খুব চেষ্টা করতেন।
১৮৬০ এর দশকে চার তরুণ শিল্পী- ক্লদ মোনে, পিয়েরে অগাস্তে রেনোয়াঁ, এডগার ডেগাস, ক্যামিল পিসারো ভাবলেন ভিন্ন কথা। তারা ঠিক করলেন, তখনকার সময়ে প্রচলিত ঐতিহাসিক ছবি না এঁকে বরং তারা আঁকবেন ল্যান্ডস্কেপ ও স্টিল লাইফের ছবি। তাও আবার তখনকার চল অনুযায়ী স্টুডিওতে বসে সতর্কভাবে করা স্কেচের উপর মলিন রঙ বসিয়ে নয়, ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে জনপ্রিয় হতে শুরু করা ‘En plein air’ পদ্ধতিতে, খোলা আকাশের নিচে!
তারা যথারীতি খোলা আকাশের নিচে বসে উজ্জ্বল রঙে ছবি আঁকলেন এবং স্যালনে প্রদর্শনীর জন্য জমা দিলেন। কিন্তু স্যালনের বিচারকমণ্ডলী তাদের বেশিরভাগ ছবি ‘প্রদর্শনীর অযোগ্য’ বলে বাতিল করে দিল।
১৮৬৩ সালে সম্রাট নেপোলিয়ন তৃতীয় তাদের ছবিগুলো দেখার পর ঘোষণা করলেন, জনগণই তাদের চিত্রকর্মগুলো বিচার করুক। ফলে বাতিলকৃত ছবিগুলো নিয়ে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে অ্যাকাডেমি এবং তাতে ব্যাপক লোকসমাগম হয়। কিন্তু পরের কয়েক বছর আর স্যালন তাদের ছবিগুলোর প্রদর্শনী করতে রাজি হয়নি।
শেষমেষ মোনে, পিসারো, সেজান, সিসলি, বার্থা মরিসটসহ অনেকে ‘কো-অপারেটিভ অ্যান্ড এননিমাস অ্যাসোসিয়েশন অভ পেইন্টারস, স্কাল্পটরস অ্যান্ড এনগ্রেভারস’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন, যেন তারা স্বাধীনভাবে নিজেদের ছবির প্রদর্শনী করতে পারেন।
তাদের প্রথম প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হলো ১৮৭৪ সালে। ইগুয়েন বদিনসহ সেই সময়ের অনেক প্রগতিশীল শিল্পীকে তারা তাদের প্রদর্শনীতে আমন্ত্রণ জানালেন। প্রদর্শনী দেখতে আসা দর্শকদের প্রতিক্রিয়া ছিল মিশ্র। কেউ তাদের নতুন রীতির চিত্রকর্মের ভূয়সী প্রশংসা করলেন, আবার কেউ কর্কশ সমালোচনা।
লুই ল্যরি নামের এক শিল্পসমালোচক লা কারিভারি পত্রিকাতে তাদের সম্পর্কে ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য করে ‘দ্য এক্সিবিশন অভ ইমপ্রেশনিস্টস’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ ছাপলেন। সেখানে ক্লদ মোনের ইমপ্রেশন, সানরাইজ ছবিটি সম্পর্কে তার মন্তব্য ছিল,
এটি একটি খসড়া ছাড়া কিছুই না। আমি এটা দেখে যারপরনাই মুগ্ধ, এতে মুগ্ধ হওয়ার মতো বিষয় না থেকে পারেই না! শিল্পীর কী স্বাধীনতা, কী অসাধারণ কারিগরী নৈপুণ্য! ভ্রুণদশার একটা ওয়ালপেপারও সমুদ্রের এই ছবির থেকে বেশি পরিণত হয়!
তার ব্যবহৃত ‘ইমপ্রেশনিস্ট’ শব্দটি জনগণের মাঝে দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। শিল্পীরাও তার দেওয়া নাম সাদরে গ্রহণ করেন। এরপর ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ সাল পর্যন্ত ইমপ্রেশনিস্ট শিল্পীদের আটটি প্রদর্শনী হয়েছে। পরে শিল্পীদের মাঝে নানা কারণে ভাঙন ধরলেও ইমপ্রেশনিজম ধারাটি ব্যাপক প্রশংসিত হয় এবং বাণিজ্যিক সফলতা লাভ করে।
ইমপ্রেশনিজম ধারার ছবি আঁকার কৌশল
ইমপ্রেশনিজম একধরনের অনুভূতি। সব বড় শিল্পীই কমবেশি ইমপ্রেশনিস্ট। এটা আসলে সহজাত একটা ব্যাপার।
– ক্লদ মোনে
ইমপ্রেশনিজমের আগে চিত্রকলার জগতে জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী দু’টি ধারা ছিল রোমান্টিসিজম এবং রিয়্যালিজম। রোমান্টিক শিল্পীরা তাদের কল্পনা ও ভাবাবেগকে তুলির আঁচড়ে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলতেন। আর রিয়্যালিজমের শিল্পীরা প্রকৃতিতে যা দেখতেন, সেটাই একদম বাস্তবের মতো করে আঁকতেন।
তখন ল্যান্ডস্কেপ আঁকা হতো স্টুডিওতে বসে, অত্যন্ত সতর্কভাবে ব্রাশস্ট্রোক চালিয়ে- যেন বোঝা না যায় যে, ছবিগুলো আদৌ কোন শিল্পীর হাতে আঁকা। তবে ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি রিয়্যালিজম ধারার ব্রিটিশ শিল্পী জন কনস্ট্যাবল এবং ফ্রান্সের বার্বিজন স্কুলের শিল্পীরা স্টুডিওর চার দেয়ালের বাইরে গিয়ে খোলা আকাশের নিচে ছবি আঁকা শুরু করেন। ইমপ্রেশনিস্টরা তাদের এই পদ্ধতিকে গ্রহণ করেন।
রোমান্টিক শিল্পী জে.এম.ডব্লিউ টার্নার এবং ইগুয়েন ডেলাক্রয়ের ছবি আঁকার ধরন ও রঙের ব্যবহারও ইমপ্রেশনিস্টদের প্রভাবিত করেছিল। এগুলোর সাথে নিজস্ব চিন্তাভাবনার সমন্বয় ঘটিয়ে ইমপ্রেশনিস্টরা একটি নতুন ধারা তৈরি করেন। এই ধারাটিকেই আমরা ইমপ্রেশনিজম বলতে পারি।
ইমপ্রেশনিজমে বেশ কিছু নতুন ও বিশেষত্বপূর্ণ কলাকৌশল মেনে চলা হতো। ইমপ্রেশনিস্টদের কম্পোজিশনে সতর্কতা অবলম্বন করেননি, বরং তাদের কম্পোজিশন ছিল সাবলীল ও স্বতঃস্ফূর্ত। তারা ছোট ছোট ও আলাদা আলাদা ব্রাশস্ট্রোক ও চড়া রঙের মাধ্যমে মানুষের প্রতিদিনের জীবনযাত্রার ছবি এঁকেছেন। তাদের অতি পরিচিত একটি জিনিসকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি ছিল নতুন।
রিয়্যালিজমের শিল্পীদের মতো প্রকৃতিকে বাস্তবের মতো করে তুলে ধরার চেয়ে তারা প্রকৃতির মূল রূপ বা নির্যাসকে প্রাধান্য দেন। ইমপ্রেশনিস্টরা ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড ও বিষয়বস্তুর মধ্যকার সীমারেখা তুলে দেন, ফর্মের স্পষ্টতা পরিহার করেন এবং আদর্শ ও নিখুঁত প্রতিসাম্যে থেকে বের হয়ে এসে একটা দৃশ্যকে যেমন দেখাত, ঠিক তেমনিভাবে আঁকার চেষ্টা করেন। ফলে ছবিগুলো দেখাত অনেকটা স্ন্যাপশটের মতো।
ফটেগ্রাফির আবিষ্কার তাদের এই প্রচেষ্টাকে অনেকটাই সহজ করেছিল। চিত্রশিল্পে ইমপ্রেশনিস্টদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান হচ্ছে ছবিতে সময় ধরে রাখতে পারা। দিনের বিভিন্ন সময়ে একটা প্রাকৃতিক দৃশ্যে সূর্যালোক পড়ে বিভিন্ন ক্ষণস্থায়ী আবহ তৈরি হয়।
ইমপ্রেশনিস্টরা খোলা আকাশের নিচে প্রকৃতির খুব কাছ থেকে আলো ও সময়ের এই খেলাকে প্রত্যক্ষ করেন এবং দ্রুত হাতে দৃশ্যমান স্ট্রোকের সাহায্যে উজ্জ্বল ও বিচিত্র সব রঙ ব্যবহার করে ক্যানভাসে ব্যাপারটিকে নাটকীয়ভাবে উপস্থাপন করেন।
ঊনিশ শতকে সিনথেটিক পিগমেন্টের আবিষ্কার তাদেরকে এক্ষেত্রে ব্যাপক সহায়তা করেছিল। তারা পরিপূরক ধরনের রংগুলোকে পাশাপাশি বসিয়ে একধরনের বৈপরীত্য তৈরি করতেন, যা সহজেই দর্শকের নজর কাড়ত।
ইমপ্রেশনিজমের প্রধান প্রধান শিল্পীরা
এডওয়ার্ড ম্যানে, ক্লদ মোনে, ক্যামিল পিসারো, ফ্রেড্রেরিক বাজিল, রেনোয়াঁ, পল সেজান, এডগার ডেগাস, বার্থা মরিসট, ম্যারি ক্যাসট প্রমুখ ইমপ্রেশনিজমের উল্লেখযোগ্য শিল্পী ছিলেন। ইমপ্রেশনিজমের কিছু মৌলিক নিয়ম-কানুন থাকলেও প্রত্যেক শিল্পীরই আঁকার ধরন, চিন্তাভাবনা ও বিষয়বস্তুতে নিজস্বতা ছিল।
এডওয়ার্ড ম্যানেকে ইমপ্রেশনিস্টদের নেতা মানা হলেও ম্যানে আসলে বিশুদ্ধ ইমপ্রেশনিস্ট ছিলেন না। তার দ্বারা ইমপ্রেশনিস্টরা প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং ইমপ্রেশনিস্টদের সাথে তার খাতির ছিল- এটিই মূলত তাকে ইমপ্রেশনিস্ট মানার কারণ। তিনি সারাজীবন অ্যাকাডেমির অধীনেই কাজ করেছেন।
একদম বিশুদ্ধ ইমপ্রেশনিস্ট ছিলেন ক্লদ মোনে, আলফ্রেড সিসলি, ক্যামিল পিসারো এবং বার্থা মরিসট। এডগার ডেগাস ছিলেন আংশিক ইমপ্রেশনিস্ট আর রেনোয়া ১৮৮০’র দশকের পর ইমপ্রেশনিজম থেকে সরে আসেন।
ক্লদ মোনে নিশ্চিতভাবেই ইমেপ্রেশনিজম ধারার সবচেয়ে বিখ্যাত শিল্পী। মোনের ছবিতে রঙ ও রেখার অনন্যতা ছিল চোখে পড়ার মতো। ইমপ্রেশনিস্টদের মধ্যে মোনে ছবিতে সময় ধরে রাখতে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী ছিলেন।
তিনি বছরের ও দিনের বিভিন্ন সময়ে রুয়ান ক্যাথেড্রাল এঁকে দেখিয়েছেন, কীভাবে বিষয়বস্তু আশেপাশের পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হয়। তিনি গিভার্নিতে ১৮৯৮ থেকে ১৯২৬ সাল পর্যন্ত শাপলা ফুল নিয়ে অনেক নিরীক্ষাধর্মী অনেক ছবি এঁকেছেন।
পপিফিল্ড নেয়ার আর্জেন্টাইল, উইমেন উইথ অ্যা প্যারাসোল, অ্যা বার অ্যাট দ্য ফলিয়েস বার্জারপ্রভৃতি মোনের আঁকা বিখ্যাত ছবি। রেনোয়াঁ বিষয়বস্তুর ওপর কৃত্রিম আলোর প্রভাব নিয়ে কাজ করেছেন। তার মোলিন দে লা গ্যালেট ছবিটিতে কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক আলোর অপূর্ব সমন্বয় প্রতিফলিত হয়েছে।
তৃতীয় নেপোলিয়নের সময়ে প্যারিস তথা ফ্রান্সের আধুনিকীকরণ ঘটে। নতুন নতুন রেলওয়ে, ফ্যাক্টরি, দালানকোঠায় সজ্জিত হতে থাকে শহর। পিসারো ও অন্যান্য ইমপ্রেশনিস্টদের ছবিতে এগুলোর দেখা মেলে। পিসারো গ্রামীণ জীবনের ছবিও এঁকেছেন। অন্যদিকে ডেগাসের ছবিতে উঠে আসত গায়ক, নৃত্যশিল্পীদের জীবন। ডেগাসের দ্য ডান্স ক্লাস ছবিটি বেশ বিখ্যাত।
ইমপ্রেশনিস্টদের মধ্যে নারী শিল্পীরাও ছিলেন, যদিও তারা ঘরের বাইরে পুরুষদের আলোচনায় অংশ নিতে পারতেন না এবং সেই সময়ে মহিলাদের ছবি আঁকার বিষয়টি সমাজে ভালোভাবে দেখাও হতো না।
তবুও যারা এসব বাধা ডিঙিয়ে সফল ইমপ্রেশনিস্ট হতে পেরেছিলেন, তারা হলেন- বার্থা মরিসট ও ম্যারি ক্যাসট। তাদের ছবিতে নারী, শিশু ও সমাজের উঁচুস্তরের মানুষের জীবনযাত্রা স্থান পেয়েছে। বার্থা মরসটের দ্য ক্রেডল এবং ম্যারি ক্যাসটের ইয়ং উইমেন সিউয়িং ইন অ্যা গার্ডেন চিত্রকর্মগুলো উল্লেখযোগ্য।
চিত্রশিল্পে ইমপ্রেশনিজমের অবদান
১৮৮০’র দশকে কিছু শিল্পী রঙ, রেখা ও ফর্ম নিয়ে নতুনভাবে চিন্তাভাবনা ও গবেষণা করতে শুরু করেন। তারা হলেন ভিনসেন্ট ভ্যান গখ, পল গগাঁ, জর্জ স্যুরা প্রমুখ। ফলে জন্ম হয় নিও-ইমপ্রেশনিজম ও পোস্ট-ইমপ্রেশনিজমের মতো নতুন ধারার চিত্রকলার।
পিসারোর মতো ইমপ্রেশনিস্টও এসব ধারায় এঁকেছিলেন। পল সেজানকেও পোস্ট-ইমপ্রেশনিস্টদের কাতারেই ফেলা হয়। তো এই নতুন শিল্পীরা নতুন নতুন শিল্প আন্দোলন শুরু করার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন ইমপ্রেশনিজমের প্রথা ভাঙার গল্প থেকেই। তাই ইমপ্রেশনিজমকে আধুনিক চিত্রকলার উৎস বলা যায়।