বাংলাদেশের ভুতুড়ে স্থানসমূহ

কাজ শেষে বাড়ি ফিরতে দেরি হয়ে গেল। এলাকার এদিকটা সুনসান। দুই-একটা কুকুর ব্যতীত অন্য কোনো জন-প্রাণীর দেখা নেই। হঠাৎ ফাঁক হয়ে গেল মাটি, পা জড়িয়ে টেনে নিয়ে গেল সেখান থেকে ওঠা একটা কিছু! কণ্ঠনালীতে চেপে বসলো আঁধারে এগিয়ে আসা একটা হাত! শেষ অস্ফুট আর্তচিৎকারটি শুনতে পায়নি কেউ!
কমবেশি অনেক ভৌতিক গল্প বা সিনেমায় এমন ঘটনার অবতারণা দেখা যায়। এইসব কাহিনীর কোনোটি নিছক বানানো গল্প, আবার কোনো কোনোটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি বলে দাবি অনেকের। এসবের পাশাপাশি দুনিয়াতে অভাব নেই ভূতুড়ে প্রভাবযুক্ত জায়গারও। বাংলাদেশেও কিছু কিছু স্থান নিয়ে প্রচলিত আছে গা ছমছম করা কাহিনীর। বাংলাদেশের এমনি কিছু ভুতুড়ে স্থান ও ঘটনা নিয়েই আজকের লেখা।

চলনবিল

ভৌতিক স্থানের বিচারে শোনা যায় চলনবিলের কথা। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত সবচেয়ে বড় বিল চলনবিল; নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা এই তিন জেলা জুড়ে যার বিস্তৃতি। আমাদের এই ভূতুড়ে কাহিনীর মূলবিন্দু আপাতত সিরাজগঞ্জ। আরো ভেঙ্গে বললে তাড়াস উপজেলা। শোনা যায়, চলনবিলের এই এলাকায় অনেক আগে একজন জমিদারের বাস ছিল। এই জমিদার অতিপ্রাকৃত ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। একদিন রাতে হঠাৎ করে জমিদার মারা গেলে সেই রাতের ভেতরেই সেখানে রাতারাতি তিনটি মন্দির গড়ে ওঠে বলে শোনা যায়, যার একটি আবার পরদিনই নিজ থেকে ভেঙ্গে পড়ে।

এই তিনটি মন্দির ও মধ্যবর্তী বিলের এলাকা ভূতুড়ে বলে প্রচলিত। এছাড়াও চলনবিলে জ্বীনের প্রভাব আছে বলেও বিশ্বাস প্রচলিত আছে। বিশেষ করে রাতের বেলা চলনবিল পাড়ি দিতে গিয়ে অনেকেই জ্বীনের আছরের শিকার হয়েছেন বলে শোনা যায়। এমনকি অনেক পথিকও অশরীরির উপস্থিতি আঁচ করতে পেরেছেন বলে জনশ্রুতি আছে।

চলনবিল; Image Courtesy: wikipedia.org

ফয়’স লেক

নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের জন্য মানুষের কাছে এক আকর্ষণীয় নাম ফয়’স লেক। তবে সৌন্দর্যের পাশাপাশি এর ভুতুড়ে গল্পগুলোর জন্যও এর নামডাক আছে। এখানে সাদা ও কালো পোশাক পরিহিত দুজন রহস্যময় নারীর উপস্থিতি আছে বলে জানা যায়। কালো পোশাক পরিহিত নারীটি হুটহাট সন্ধ্যার সময় লেকের পাশে হন্টনরত মানুষের সামনে এসে ভয় দেখায়। সাদা পোশাক পরিহিতা নারীটি সেই তুলনায় বেশ ভালই বলতে হয়। কেননা কালো পোশাক পরিহিতার মাধ্যমে বিপদে পড়তে যাওয়ার আগে সে মাঝে মাঝে মানুষকে সাবধান করে দিয়ে যায়। আসলে কি রহস্য লুকিয়ে আছে ঐ পাহাড় ঘেরা এলাকায় তা কেউ ই জানে না। তবে ধারণা করা হয় জীবদ্দশায় কালো পোশাক পরিহিতা নারীটি ভালো মানুষ ছিল না।

ফয়’স লেক; Image Courtesy: wikipedia.org

লালবাগ কেল্লা

অন্যতম আকর্ষণীয় ও ঐতিহাসিক স্থাপনা হল লালবাগ কেল্লা যা মুঘল আমলে নির্মিত হয়েছিল। লালবাগ কেল্লাও ভূতুড়ে স্থান হিসেবে পরিচিত। কেউ কেউ বলে লালবাগ কেল্লায় সুবেদার শায়েস্তা খাঁর কন্যা পরীবিবির আত্মাকে রাতের বেলা ঘুরতে দেখা যায়। আবার মাথাবিহীন উল্টোপায়ের ঘোড়াকেও (মতান্তরে একটি লোক যার মাথা ও পা দুটোই ঘোড়ার মতো, তবে পা উল্টো দিকে ঘোরানো) নাকি মাঝে মাঝে দেখা যায়। সেখানকার স্থানীয় মসজিদে অনেক সময় রাত ৩টার সময় অনেকে এসে নামাজ পড়ে, যদিও ফজরের নামাজের আসল সময় ঋতুভেদে ৪:৩০-৫:০০ টার আশেপাশে হয়। তাদের নামাজের শব্দ অনুসরণ করে সেখানে গেলে দেখা যায় কক্ষটি ফাঁকা। রাত্রিকালীন রক্ষীদের মতে, তারা রাতে কেমন যেন অস্বস্তি অনুভব করেন সেখানে।

লালবাগ কেল্লা, Image Source: steemlit.com

লালবাগ কেল্লার আরেকটি ভুতুড়ে জিনিস হলো এর তলদেশের একটি সুড়ঙ্গ। কথিত আছে, এর ভেতরে কেউ একবার গেলে আর ফিরে আসে না। কেউ বলে সুড়ঙ্গটি এখান থেকে দিল্লী পর্যন্ত বিস্তৃত, আবার কারো মতে এটি টঙ্গী নদীতে গিয়ে পড়েছে। তবে প্রকৃতপক্ষে কেউই জানে এর গহীনে কী রহস্য লুকিয়ে আছে।

বৃটিশ আমলে একবার একটি অনুসন্ধানী দল দুটি কুকুরের গলায় চেইন বেঁধে তাদের সুড়ঙ্গের ভেতরে পাঠায়। একটু পর চেইন ধরে টান দেয়া হলে চেইনদুটি ফেরত আসলেও কুকুরগুলোর নাম নিশানা পাওয়া যায়নি। এরপর কিছু হাতিও সেখানে পাঠানো হয়। বলা বাহুল্য, সেগুলোরও কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার পর বৃটিশ সরকারের পক্ষ থেকে ঐ সুড়ঙ্গমুখ বন্ধ করে দেয়া হয়। সেই সুড়ঙ্গ আজও বন্ধ। কি লুকিয়ে আছে ঐ বদ্ধ দরজার ওপারে তা এখনো মানুষের জানা নেই। তবে সব মিলিয়ে লালবাগ কেল্লা শুধু ইতিহাসেরই না, বরং রহস্যেরও আধার বটে।

ঢাকা এয়ারপোর্ট রোড

ঢাকার অন্যতম পুরনো মহাসড়কগুলোর একটি এটি। এখানে গভীর রাতে অশরীরীর উপস্থিতি পাওয়া যায় বলে দাবি অনেকের। গাড়ি চালাতে চালাতে হঠাৎ করে চালক দেখেন সামনে রাস্তায় সাদা পোশাক পরিহিতা একজন নারীকে। নারীটি অবিশ্বাস্য গতিতে গাড়ির দিকে এগিয়ে আসে। ভয় পেয়ে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললেই ঘটে দুর্ঘটনা। এই অশরীরী কোনো মানুষকে স্পর্শ কিংবা সরাসরি ক্ষতি বা আঘাত করে না। ভয় দেখিয়ে দুর্ঘটনা ঘটানোই এর উদ্দেশ্য। কাজেই ভয় পেয়ে গাড়ির উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ না হারালে ঘটবে না কোনো দুর্ঘটনা।

ধারণা করা হয়, অনেক বছর আগে ঐখানে সড়ক দুর্ঘটনায় তার ও তার পরিবারের মৃত্যু হয়েছিল বিধায় প্রতিশোধ নিতে সেও চায় মানুষ একইভাবে দুর্ঘটনায় মারা যাক। চলন্ত গাড়ির একাকী চালককেই গভীর রাতে ভয় দেখায় মেয়েটি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এখনো পর্যন্ত অনেক দুর্ঘটনা ও বেশ কিছু প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছে অনেকে। কারো মতে জসীম উদ্দীন ও বিমান অফিসের মধ্যবর্তী সড়ক এলাকায় আবার অনেকের মতে নিকুঞ্জ ও বিমান অফিসের মধ্যবর্তী সড়ক এলাকায় দেখা পাওয়া যায় এই অশরীরীর। তবে দিনের বেলা সেখানে এর কোনো দেখা পাওয়া যায় না।

পার্কি বিচ, চট্টগ্রাম

লম্বায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার; ৩০০-৩৫০ ফিট চওড়া এবং ২০ কিলোমিটার ঝাউবনযুক্ত এই সৈকতটি অত্যন্ত নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অধিকারী। এই অনিন্দ্যসুন্দর সমুদ্র সৈকতকে ঘিরেও প্রচলন আছে ভৌতিক কাহিনীর। প্রথমত, সেখানে কিছু এলাকায় অদ্ভুদ পদশব্দ, চিৎকার ও ভুতুড়ে আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়। অনেক পর্যটক ও স্থানীয় ব্যক্তি কৌতূহলবশত অনুসরণ করে এসব শব্দের উৎস খুঁজে বের করবার চেষ্টা করলেও প্রকৃতপক্ষে কোনো উৎসই খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনেক সময় মনে হয় শব্দগুলো পানির ভেতর থেকে আসছে। আবার কখনো সেটি পার্শ্ববর্তী বন থেকে আসছে বলে মনে হয়। শব্দগুলো যেনো কৌতূহলী মানুষকে পানিতে টেনে নিয়ে যেতে চায়।

পার্কি বিচ, চট্টগ্রাম ; Source: Beautiful Bangladesh

 

সেখানে পর্যটক হিসেবে আগত এক দম্পতির মতে, বিচে সূর্যাস্তের পর সান্ধ্যকালীন ভ্রমণের সময় তাদের দুজনেরই মনে হচ্ছিল কোনো অশরীরী তাদের ওপর চোখ রাখছে। তাদের এই অনুভূতি তাদের থাকার স্থানে ফেরার আগ পর্যন্ত হয়েছে।

এছাড়াও গভীর সাগরে নৌকাসহ এক বুড়ো নাবিকের দেখা মেলে। কখনো একজনের আবার কখনো বা অনেককে তাদের নৌকা নিয়ে গভীর সাগরে যেতে দেখা যায়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এরা কেউই মানুষ না। ধারণা করা হয় সাইক্লোনের সময় নৌকা পাড়ে ভেড়াতে ব্যর্থ হওয়া যে সব নাবিক মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তাদেরই আত্মা এখনো নৌকোসমেত মাঝ সাগরে পাড়ি জমায়। যদিও এ সকল ঘটনার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই, তবুও অনেক পর্যটক ও স্থানীয় মানুষের দাবী তারা এগুলো চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করেছেন।

সুন্দরবন

বিস্ময়কর হলেও সত্যি ইদানীং সুন্দরবনের জল-ডাঙ্গার কুমির ও বাঘের পাশাপাশি অন্য বিপদের কথাও শোনা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে অবস্থিত সুন্দরবন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃত। প্রকৃতিকে কাছ থেকে একনজর দেখতে সেখানে গিয়েছিল একটি দল। এ দলেরই একজন আরেকজনকে গহীন বনে তার একটা ছবি তুলে দিতে বলে। ছবি তুলতে গিয়ে লোকটি চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে যায়। এই ঘটনার দুদিন পর একটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে লোকটির হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়। তোলা ছবিটি ডেভেলপ করার পরে যার ছবি তোলা হচ্ছিল তার পেছনে সাদা রঙের আবছা নারীমূর্তি দেখা যায়। যদিও অনেকেই পুরো ঘটনাকে গুজব হিসেবে উড়িয়ে দিচ্ছেন এবং ঐ ছবিটিকে ফটোশপের কারসাজি বলে অভিহিত করছেন। উল্লেখ্য যে, আর কোনো সুন্দরবনগামী দলের সাথে এরূপ হয়নি। সুন্দরবন নিয়ে অনেক স্থানীয়দের মধ্যে প্রচলিত আছে যে, মৃত বাঘের আত্মারা নাকি গভীর জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনকে ঘিরে প্রকৃতির পাশাপাশি অপ্রাকৃতিক কিছুর গল্পও জড়িয়ে গেছে এভাবে, যদিও এর সত্যাসত্য নিয়ে সন্দেহ আছে।

সুন্দরবন; Image source: wikipedia.org

 

সুন্দরবনের তথাকথিত অশরীরী; Image Source: ghostexps.blogspot.com

কুয়াকাটা বিচ

‘সাগর কন্যা’ হিসেবে অভিহিত সৌন্দর্যের লীলাভূমি কুয়াকাটা। কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র সমুদ্রসৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দুটিই দেখা যায়। ২০ কিলোমিটার লম্বা ও ৬ কিলোমিটার চওড়া এই সৈকতকে ঘিরে নানান ভুতুড়ে কাহিনী প্রচলিত আছে।

মুইসুলিপাড়ার বাসিন্দা পিতা ও পুত্র মাছ ধরতে ও জ্বালানী কাঠের ব্যবস্থা করতে গঙ্গামাটির গহীন জঙ্গলে গিয়েছিল। সাগরে যেহেতু সুপেয় পানি নেই, তাই তৃষ্ণা নিবারণার্থে তারা মাটি খুঁড়তে শুরু করে সুপেয় পানির আশায়। একসময় তাদের কোদাল শক্ত কিছুতে আঘাত করে। তারা সোনালি আবরণের একটি কাঠের জার এবং কিছু কারুকাজ করা সোনার পাত খুঁজে পান। আরো খুঁড়াখুঁড়ি করার পর তারা বালিতে গেঁথে থাকা সোনা ও ধনরত্ন বোঝাই পুরনো একটি নৌকার হদিস পান। সূর্যাস্তের সময় প্রায় হয়ে যাওয়ায় সেদিনকার মতো কাজে ক্ষান্ত দিয়ে ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত নেন তারা।

পরদিন ভোর সকালে এসে আবার কাজ করবেন ভেবে সেদিনের মতো তারা সেখান থেকে চলে যান। কিন্তু তাদের জীবনে আর কোনো নতুন সকাল আসেনি। ফেরার পথে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় পিতা-পুত্রের। জনশ্রুতি আছে, সোনাবোঝাই নৌকোটি অভিশপ্ত, যে-ই তার অনুসন্ধান করবে অপঘাতে মারা পড়বে সে। আরো কিছু ঘটে যাওয়া ঘটনা স্থানীয়দের এই বিশ্বাসকে মজবুত করেছে।

কুয়াকাটা; Image Source: Beautiful Bangladesh

এমনও বলা হয় সেই পিতা-পুত্রের আত্মা হিংসাবশত সেখানেই রয়ে গেছে নৌকাটি পাহারা দেবার জন্য। তাই ওইদিকে এমনকি ওইদিকের কোনো রাস্তা দিয়ে কেউ গেলেও তাদের ছায়ামূর্তি বিভিন্নভাবে ভয় দেখাবার চেষ্টা করে।

অন্য একটি ঘটনা একটি মন্দিরকে ঘিরে। মিছরি পাড়ায় অবস্থিত ২১ ফিট উঁচু বৌদ্ধমন্দিরটির উপর অশুভ কিছুর প্রভাব আছে বলে শোনা যায়। রাস পূর্ণিমা ও মাঘী পূর্ণিমায় সাগর জলে স্নান করতে আসা মানুষের মতে মন্দিরটি অভিশপ্ত এবং অতৃপ্ত ও অপঘাতে মারা যাওয়া আত্মারা নির্দিষ্ট রাতে ওখানে এসে শয়তানের পুজো করে। এভাবে বুদ্ধের বিরোধিতা করে তারা। যদিও অনেকে এটিকে গুজব ভাবেন। তবে এই ধারণাটি অনেক বছর পুরনো। কুয়াকাটা সৈকতের একটি অংশ রাখাইন বসতির মাধ্যমে অভিশপ্ত বলে শোনা যায়।

এমনিভাবে দেশের নানা স্থানকে ঘিরে প্রচলিত আছে ভৌতিক ও অতিপ্রাকৃত ঘটনার। এগুলো কারো কাছে সত্য, কারো কাছে নিছক গুজব আবার কারো কারো বিশ্বাস দোদুল্যমান সত্যমিথ্যার বেড়াজালে। এইরকম আরোকিছু ভূতুড়ে জায়গা ও সেগুলোকে ঘিরে প্রচলিত লোককাহিনী নিয়ে দেখা হবে লেখাটির আগামী পর্বে।

 

This article is in Bengali language. It is about some mysterious and haunting places in Bangladesh.
References:

1. http://www.traveltourxp.com/5-spine-chilling-haunted-places-in-bangladesh/

2. https://www.twinkleviral.com/top-haunted-places-bangladesh/

Featured image: www.monsterwax.com

Related Articles

Exit mobile version