গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঈর্ষণীয়। ক্রমবর্ধমান জিডিপি, শ্রমশক্তি রপ্তানি আর তৈরি পোশাক শিল্পের কল্যাণে বাড়ন্ত রিজার্ভ, অর্থনীতির রপ্তানিমুখী অগ্রযাত্রা, উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠে আসা- সবকিছুই উন্নয়নের উর্ধ্বমুখী গ্রাফের দিকে ইঙ্গিত করে।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন একপাশে রেখে সবচেয়ে চোখে পড়ার মতো অগ্রগতি হয়েছে শিল্পায়নে, যার প্রমাণ মেলে নিত্যনতুন প্রযুক্তির ব্যবহার আর দেশের শিল্প ও ব্যবসায় চমৎকার সব আইডিয়ার আগমন থেকে।
কিন্তু সেসব নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা হচ্ছে কই? দেশীয় উৎপাদনে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, স্বপ্নবাজ তরুণদের বুকভরা সাহস আর সৃজনশীল আইডিয়া নিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে যাওয়া, প্রথাগত পণ্যের বাইরে গিয়ে আন্তর্জাতিক মানের পণ্য উৎপাদন- এসব অগ্রগতির খবর সবার কাছে যাচ্ছে কি? বিশেষ করে বাংলাদেশের বৈশ্বিক সহযোগী দেশগুলোকে কি আমরা বলতে পারছি যে তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা পেছনে ফেলে বাংলাদেশ এখন সক্ষম উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে?
বাংলাদেশের কোনো এক শিল্পকারখানার সেই সর্বাধুনিক প্রযুক্তির গল্প, মেগাপ্রকল্পের কর্মযজ্ঞ, দেশি বিজ্ঞানীদের তাক লাগানো কোনো গবেষণা, কিংবা দুর্দান্ত কোনো আইডিয়া নিয়ে এক তরুণের উদ্যোক্তা বনে যাবার গল্প- এসব সবার কাছে পৌঁছে দিতে প্রকাশনা শুরু করেছে ‘ইন্ডাস্ট্রি ইনসাইডার’– বাংলাদেশের প্রথম ও পূর্ণাঙ্গ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ত্রৈমাসিক ম্যাগাজিন।
দেশী শিল্পখাতের উন্নয়ন, প্রযুক্তির বিকাশ, দেশী কিংবা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে নতুন কোনো আইডিয়া বা প্রোডাক্ট, অর্থনীতি ও বাণিজ্য, সমস্যা ও সম্ভাবনা- সবকিছু নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী লেখনীর মাধ্যমে স্থানীয় শিল্পখাতের জন্য একটি আন্তর্জাতিক মানের ‘নলেজ শেয়ারিং’ প্লাটফর্ম তৈরি করার উদ্দেশ্য নিয়েই ইন্ডাস্ট্রি ইনসাইডারের যাত্রা।
‘দ্য ইকোনমিস্ট’ কিংবা ‘হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ’-এর মতো বিশ্বমানের প্রকাশনা বাংলাদেশেও সম্ভব, ইন্ডাস্ট্রি ইনসাইডারের দুই উদ্যোক্তা – সম্পাদক তারেক আহমেদ রবিন এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এমনটাই বিশ্বাস করেন। ইন্ডাস্ট্রির ভেতরের ও বাইরের খবরাখবর দেয়ার মতো পর্যাপ্ত প্লাটফর্মের অভাব দূর করতে পারবে ইন্ডাস্ট্রি ইনসাইডার, এমনটাই আশা তাদের।
এখন ত্রৈমাসিক হলেও উদ্যোক্তারা যথাযথ সক্ষমতা লাভের পর ইন্ডাস্ট্রি ইনসাইডারকে মাসিক কিংবা পাক্ষিক ম্যাগাজিন হিসেবে প্রকাশ করতে চান ভবিষ্যতে। তবে এ মুহূর্তে মানসম্মত কন্টেন্টেই মনোযোগ তাদের। ম্যাগাজিনটিকে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির এক্সপার্ট এবং প্রফেশনালদের জন্য একটি ‘আইডিয়া শেয়ারিং’ প্লাটফর্ম হিসেবে গড়ে তুলতে চান তারা।
“যদি আপনি জ্ঞানী হন, তার আলোয় অন্যকে আলোকিত করুন”
মার্গারেট ফুলার, আমেরিকান সাংবাদিক ও লেখক
মার্কিন সাংবাদিকের এই উক্তিতে বিশ্বাসী প্রফেশনালদের জন্য তাদের অর্জিত জ্ঞান ও চিন্তা সবার নিকট পৌঁছে দেয়ার সুযোগ করে দিতে চায় ইন্ডাস্ট্রি ইনসাইডার।
স্পষ্টতই যেকোনো ইন্ডাস্ট্রির ভেতরের খবর সবচেয়ে ভালো জেনে থাকেন সেই ইন্ডাস্ট্রির প্রফেশনালরাই। আর তাই, ইন্ডাস্ট্রি ইনসাইডার বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির সমস্যা, সম্ভাবনা, সামর্থ্য ও শক্তি সম্পর্কে লেখার জন্য নির্ভর করছে সেই ইন্ডাস্ট্রিরই প্রফেশনালদের উপর। নিজেদের কাজের ভেতরকার তথ্য, প্রতিকূল অবস্থা, নতুন কোনো আইডিয়া বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ- এসব নিয়ে জ্ঞানগর্ভ একাডেমিক আলোচনাও করতে পারবেন প্রফেশনালরা।
এক্ষেত্রে প্রথাগত ‘সহজ ভাষায় লেখা’র সরলীকরণ থেকে বেরিয়ে ইনসাইডার হতে চায় এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে গভীর ও বিশ্লেষণধর্মী লেখার জন্য লেখককে শব্দচয়ন কিংবা টেকনিক্যাল জার্গন ভেঙে ফেলার জন্য অভিধান হাতড়ে বেড়াতে হবে না। কেননা বাধামুক্ত জ্ঞানচর্চাই যেকোনো ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন আইডিয়ার সূচনা করে, পুরনোকে পরিবর্তন করে, সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে এবং সমাধানের রাস্তা দেখায়।
দেশের প্রফেশনালদের জন্য একটি সম্মানজনক ও নির্ভরযোগ্য প্রকাশনা হবার পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রি ইনসাইডারের বৃহত্তর লক্ষ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা এবং লেখনীর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি, শিল্পায়নের সক্ষমতা সম্পর্কে বিশ্বকে জানানো, যাতে করে বাংলাদেশের বিদেশি অংশীদাররা এদেশে নতুন প্রযুক্তি আনয়ন এবং অধিক বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ হয়।
ইন্ডাস্ট্রি ইনসাইডার গুটিকয়েক মানুষের প্রচেষ্টা ও স্বপ্নের ফসল। নিজের মেধা ও অভিজ্ঞতায় ইন্ডাস্ট্রি ইনসাইডারকে পথ দেখাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা গোলাম হাবিব। সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে ইন্ডাস্ট্রি ইনসাইডারে মানসম্মত কন্টেন্ট নিশ্চিত করতে ব্যবস্থাপনা সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন সামিউল সামি; সার্বিক সমন্বয়কারীর (কোঅর্ডিনেটর) দায়িত্ব পালন করছেন মোহাম্মদ ইমরান। এছাড়াও ম্যাগাজিনটির সাথে যুক্ত আছেন বিজনেস ডেভেলপমেন্ট কনসাল্টেন্ট মঞ্জুর এলাহি সুদীপ্ত, আর্ট ডিরেক্টর দীন মোহাম্মদ, এবং ফটোগ্রাফির সহায়তা দিচ্ছে পটচিত্র।
ইন্ডাস্ট্রি ইনসাইডারের কোয়ার্টার-১ (এপ্রিল – জুন) সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে গত জুন মাসে। কোয়ার্টার-২ (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সংখ্যা প্রকাশিত হবে অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে।
ম্যাগাজিন সংক্রান্ত যেকোনো প্রশ্ন করতে, ম্যাগাজিনের সাবস্ক্রিপশন নিতে কিংবা নিজের লেখা পাঠাতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন এই ইমেইল অ্যাড্রেসে: [email protected]