Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

হেনরি ফোর্ড: অটোমোবাইল শিল্পের বিপ্লব ঘটেছিল যার হাত ধরে

আজ আমরা বিলাসবহুল গাড়ি দেখে চমকে যাই। অগণিত নামিদামি প্রতিষ্ঠানের প্রতিযোগিতায় আধুনিক বিশ্বের মানুষ এখন আর আশ্চর্য হয় না। মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত সবার সাধ্যের ইঞ্জিনচালিত গাড়ি সরবরাহ করছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

কিন্তু ১০০ বছর আগেও পৃথিবীতে যানবাহনের সংখ্যা এত ছিল না। ছিল না বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ, টাটা, টয়োটা, নিশানের মতো এলিট গাড়ি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। তাহলে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন জাগতেই পারে, এর মাঝের সময়টিতে কী এমন ঘটেছিল, যার কারণে পাল্টে গেছে অটোমোবাইল শিল্প। কেউ না কেউ তো এই বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন নিশ্চয়ই।অটোমোবাইল শিল্প-বিপ্লবের ইতিহাস খুব বেশি পুরনো নয়। ১৮৮৫ সালে জার্মানির কার্ল বেনজ যখন অটোমোবাইল ইঞ্জিনের ধারণা দেন, তখনও বাণিজ্যিকভাবে এর বাজারজাতকরণ শুরু হয়নি। শুধুমাত্র যারা খুব বেশি ধনী ছিলেন, তারাই তখন শখের বসে গাড়ি কিনতে পেরেছিলেন।

পরবর্তীতে যিনি প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে গাড়ি উৎপাদন ও বিপণন শুরু করেছিলেন তিনিও হয়তো কল্পনা করেননি তার শুরু করা কাজটি এক সময় বিশ্বের শীর্ষ ব্যবসাগুলোর মধ্যে একটিতে পরিণত হবে। আর এই খাতে ব্যয় হবে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার। তিনি তার জীবদ্দশায় বলেছিলেন, গাড়ি এক সময় সকল শ্রেণীর মানুষের নিকট অতিপ্রয়োজনীয় এবং সহজলভ্য হয়ে উঠবে। অথচ তিনি তার প্রতিষ্ঠান চালু করার পূর্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের মধ্যবিত্ত এবং কিছু কিছু ধনী ব্যক্তিরাও গাড়ি ক্রয় করতে পারেননি।

কৃষিজীবী পরিবারের সন্তান হয়েও পৃথিবীর প্রথম ও বৃহত্তম অটোমোবাইল প্রস্তুতকারী হিসেবে এই শিল্পের উন্নয়নে সর্বাধিক অবদান রাখা ব্যক্তিটি হেনরি ফোর্ড। কিশোর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে গ্যারেজে কাজ করা ফোর্ড তার জীবদ্দশায় টমাস এডিসনকে অনুসরণ করতেন। আর গ্যারেজে বসেই অটোমোবাইল প্রকৌশলকে নিজের মগজে গেঁথে নেন। এক সময় ঝুঁকি নিয়ে প্রতিষ্ঠা করে বসেন ফোর্ড মোটর কোম্পানি নামক প্রতিষ্ঠানটি।

হেনরি ফোর্ড; Image Source: Britanica

যদিও ফোর্ড মোটর কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করার আগ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার ব্যর্থও হয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি ধীরে ধীরে তার ব্যবসার সফলতা লাভ করেন এবং সুনাম অর্জন করেন। হেনরি ফোর্ড তার প্রতিষ্ঠানে অটোমোবাইল শিল্পের এমন কিছু যুগান্তকারী যন্ত্রপাতি, ইঞ্জিন আবিষ্কার করেন যেগুলো সেকালে এই শিল্পে বিপ্লব সৃষ্টি করেছিল।

শুধু তা-ই নয়, বারবার যুদ্ধের বিরোধিতা করায় জনমানুষের নিকট তিনি খুবই শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। আমাদের আজকের লেখাটি সাজানো হয়েছে বিখ্যাত আবিষ্কারক হেনরি ফোর্ডের শৈশব, কৈশোর, কর্মজীবনকে ঘিরে।

শৈশব

১৮৬৩ সালের ৩০ জুলাই আমেরিকার মিশিগানে উইলিয়াম ও মেরি ফোর্ড দম্পতির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন হেনরি ফোর্ড। তার মা এবং বাবা উভয়ে কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাদের অনেক জমি ও খামার ছিল। হেনরি ছাড়াও ঐ দম্পতির ছিল আরো চার সন্তান। তবে হেনরি ছিলেন সবার থেকে বেশি কৌতূহলী এবং চতুর প্রকৃতির।

ছোটবেলায় তার বাবা তাকে একটি পকেট ঘড়ি উপহার দেন। আর হেনরি সেটিকে লুকিয়ে লুকিয়ে পুরোপুরি খুলে আবার জোড়া লাগান এবং তার বাবাকে দেখান। শুধু সেখানেই ক্ষান্ত দেননি হেনরি! প্রতিবেশীদের সবরকম ঘড়ি মেরামতের কাজ করে দিতেন তিনি। এতে করে খুব অল্প বয়সে যান্ত্রিক দক্ষতা অর্জন করেন হেনরি। এছাড়াও ছোটবেলা থেকেই তার মধ্যে প্রখর আত্মবিশ্বাস এবং নেতৃত্বগুণ ছিল।

এই জায়গাটিতেই জন্মেছিলেন অটোমোবাইল শিল্পের মহানায়ক; Image Source: restomods

১৯৭৬ সালে হেনরির মা মারা যান। মায়ের অপ্রত্যাশিত মৃত্যু যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না তিনি। বেশ কিছুদিন ভবঘুরের মতো দিনযাপন করে বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। পাশাপাশি কৃষিকাজকে নিজের পেশা হিসেবে নিতে পারবেন না বলেও জানিয়ে দেন।

অতঃপর ১৮৭৯ সালে তিনি বাড়ি ছাড়েন এবং ডিট্রয়েটে জেমস এফ ফ্লাওয়ার্স এন্ড ব্রাদার্স নামক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষানবিশ মেকানিক হিসেবে যোগদান করেন। মূলত সেখানেই হেনরির যন্ত্রপাতি নিয়ে জীবন শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৮৮২ সালে বাড়ি ফেরার পূর্বে হেনরি ডিট্রয়েট ড্রাই ডোক কোম্পানিতেও কাজ করেছিলেন হেনরি।

কর্মজীবন

যন্ত্রকৌশল রপ্ত করে হেনরি বাড়ি ফেরায় তার বাবা কিছুটা আশ্চর্যও হয়েছিলেন। বাড়ি ফেরার পর হেনরি যখন বাবার সঙ্গে খামারে কাজ করা শুরু করেন তখন পিতা উইলিয়াম ফোর্ড ছেলের মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করেন।

মূলত হেনরি বাড়ি ফিরেছিলেন গোপন একটি উদ্দেশ্য নিয়ে। ডিট্রয়েটে দুটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার পর হেনরি সিদ্ধান্ত নেন কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ব্যাপক অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন। আর সেই সুবাদে তিনি বাড়ি ফিরে ওয়েস্টিংহাউসের বহনযোগ্য বাষ্পীয়-ইঞ্জিন পরিচালনার কৌশল শিখতে কাজে নেমে পড়েন। পরবর্তীকালে তার কারিগরি দক্ষতা স্বীকৃতি পায় এবং ওয়েস্টিংহাউস কর্তৃপক্ষ তাকে ডেকে নিয়ে নিয়োগ দিয়েছিল।

 

উনিশ শতকের ডিট্রয়েট; Image Source:pbs

হেনরি ফোর্ড তার কারিগরি দক্ষতা ও উদ্ভাবনী ক্ষমতার কারণে খুব অল্প বয়সে ভালো সুনাম কুড়িয়েছিলেন। ১৮৯১ সালে তাকে নিয়োগ দেয় এডিসন ইলেকট্রিক ইলুমিনেটিং কোম্পানি। সেখানে তার পদবী ছিলো নাইট ইঞ্জিনিয়ার। তিনি সেখানে খুব কৌতূহলের সাথে কাজ করেন এবং তড়িৎকৌশল নিয়ে জানার সুযোগ পান। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে ভুল করেননি তিনি। মাত্র ৪ বছরে হেনরি তার কাজের গুণে পদোন্নতি লাভ করেন এবং প্রতিষ্ঠানের প্রধান প্রকৌশলীর পদে অধিষ্ঠিত হন।

যদিও প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশল বিভাগের সর্বোচ্চ পদও তাকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। সেখানে কাজ করার পাশাপাশি হেনরি নতুন করে একটি ভাবনাকে কাজে লাগানোর চিন্তা করেন। তিনি তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে অটোমোবাইল নিয়ে কাজ শুরু করেন।

কয়েকজন বন্ধুকে সাথে নিয়ে হেনরি কোয়ার্ডিসাইকেল নামক চার চাকার যান তৈরি করেন। এটির চাকাগুলো তিনি সাইকেলের চাকার ন্যায় তৈরি করেন এবং সামনের দুই চাকায় গতি প্রয়োগের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি জুড়ে দেন। অতঃপর এটি নিয়ে তিনি তার প্রতিষ্ঠানের মালিক টমাস এডিসনের সঙ্গে দেখা করেন। এডিসন তার আবিষ্কারকে স্বাগত জানান এবং এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দেন। পরবর্তী জীবনে তিনি তার সফলতার জন্য টমাস এডিসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন।

এডিসনের সাথে হেনরি; Image Source: pbs

টমাস আলভা এডিসনের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে হেনরি অটোমোবাইল নিয়ে অত্যধিক মনোযোগী হয়ে উঠেন এবং নিজের মডেলটিকে আরো উন্নত করার চেষ্টা চালিয়ে যান। ১৮৯৮ সালে হেনরি তার দ্বিতীয় যানটি তৈরি করতে সক্ষম হন। সেটি ছিল তার তৈরি প্রথম যানের চেয়েও উন্নত ও নিরাপদ।

একই বছর হেনরি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেন। ফলস্বরূপ, ১৮৯৯ সালে তিনি এডিসন ইলেকট্রিক ইলুমিনিটিং কোম্পানিতে পদত্যাগপত্র জমা দেন এবং ডিট্রয়েট অটোমোবাইল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও তার প্রতিষ্ঠানে উৎপন্ন গাড়িগুলো তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। যার কারণে তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যবসা গুটিয়ে নেন।

ফোর্ডের তৈরি সেই গাড়ি; Image Source: pbs

ব্যবসা গুটিয়েই থেমে থাকেননি হেনরি ফোর্ড। মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারে এমন গাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেন তিনি। দীর্ঘ ১ বছরের প্রচেষ্টায় হেনরি ২৬ অশ্বক্ষমতার ইঞ্জিন সম্বলিত একটি মডেল প্রস্তুত করেন। ১৯০১ সালের অক্টোবরে তিনি সেটি তৈরির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।

অতঃপর তিনি তার পুরনো প্রতিষ্ঠানের সহযোগীদের নিয়ে ডিট্রয়েট অটোমোবাইল কোম্পানিকে হেনরি ফোর্ড কোম্পানি নামে পরিবর্তন করে কাজ ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু যৌথ কারবার হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে হেনরি ফোর্ড চুক্তি বাতিল করে সরে দাঁড়ান। তার বিদায়ের পর প্রতিষ্ঠানটির নাম হয় ক্যাডিলাক অটোমোবাইল কোম্পানি।আরো একবার ব্যর্থ হওয়ার কারণে হেনরি ফোর্ড নিজের উপর খুব রেগে ছিলেন। কিন্তু তিনি তার পূর্ববর্তী মালিক টমাস এডিসনকে স্মরণ করে আত্মবিশ্বাস ফিরে পান। এডিসন নিজেও অসংখ্যবার ব্যর্থ হয়ে সফলতা পেয়েছিলেন এবং একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। নিজের উপর আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনে হেনরি ফোর্ড কয়েকটি রেসিং কার তৈরি করেন। তার তৈরি রেসিং কারগুলোর মধ্যে 999 মডেলটি সেই সময় খুব আলোচিত হয়েছিল।

ফোর্ড মোটর কোম্পানির অগ্রযাত্রা

১৯০৩ সালে হেনরি তার প্রতিষ্ঠান ফোর্ড মোটর কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছাড়াও সেখানে বিনিয়োগ করেন আলেকজান্ডার ম্যালকমসন, ডুডজ ব্রাদার্স এবং জন এস গ্রের মতো উদ্যোক্তারা। ঐ সময়ে হেনরির তৈরি 999 মডেলের রেসিং কারটি নিয়ে বিখ্যাত ড্রাইভার ব্যার্নি ওল্ডফিল্ড যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন কার রেস প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। সেই সময় গোটা যুক্তরাষ্ট্রে খ্যাতি অর্জন করে ফোর্ড মোটর কোম্পানি।

রেসিংফিল্ডে লড়ছে হেনরির গাড়ি; Image Source: pbs

১৯০৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি সে সময়ের আলোড়ন সৃষ্টিকারী মডেল ‘টি’ গাড়ি বাজারজাত করে। হেনরির নকশাকৃত গাড়িটিতে বাঁপাশের চাকার সঙ্গে স্টিয়ারিং যুক্ত করা ছিল। অটোমোবাইল শিল্পে তখন এটি ছিল নতুন সংযোজন। পরবর্তীতে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও এর ব্যবহার শুরু করে। মডেলটি বাজারে বেশ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল। কারণ এটির চালনা পদ্ধতি ছিল সহজ, দামে সস্তা এবং মেরামতযোগ্য।

পরবর্তী সময়ে বাজারে মডেল ‘টি’ এর গাড়িগুলোর চাহিদা বাড়তে থাকে এবং প্রচুর অর্ডার আসতে থাকে। হেনরি ফোর্ড এবং তার ব্যবসায়ীক সঙ্গীরা এই সমস্যার সমাধানের জন্য নতুন করে ভাবতে শুরু করেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের কর্মী, বিনিয়োগকারীসহ সবাইকে নিয়ে আলোচনা করে উৎপাদন বাড়ানোর একটি সরল নিয়ম তৈরি করেন।

১৯৯৩ সালে গৃহীত নিয়মে ফোর্ড মোটর কোম্পানি নিজেদের বাণিজ্যিক নিয়মে পরিবর্তন এনে উৎপাদন বৃদ্ধি করেন। এতে করে মডেল ‘টি’ বেশ কয়েক বছর মার্কিন বাজারে দাপুটে অবস্থান অর্জন করে। ১৯১৮ সালের হিসেবে জানা যায় যে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেক গাড়িই ছিলো ফোর্ড মোটরসের মডেল ‘টি’-এর গাড়ি।

ফোর্ডের গাড়ি-কারখানার ভেতরের দৃশ্য; Image Source: pbs

১৯২০ এর দশকে মডেল ‘টি’-র চাহিদা ক্রমশই হ্রাস পেতে শুরু করে। ফলশ্রুতিতে ফোর্ড মোটরস বাজারে আনে মডেল ‘এ’ নামক নতুন গাড়ি। আর এটি ৩০’ এর দশকের প্রথম পর্যায়ে বেশ ভালো বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু ১৯৩৬ সালে ফোর্ড মোটর কোম্পানি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৃতীয় স্থানে চলে যায়। যদিও সে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলমান অর্থনৈতিক মহামন্দাকে দায়ী করেছিলেন হেনরি ফোর্ড।

হেনরি ফোর্ড ততদিনে যুক্তরাষ্ট্রের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত হন। যদিও ব্যক্তিগতভাবে তিনি সবসময় শান্তির পক্ষে কথা বলতেন। ১৯৩৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সময় তিনি ঘোর বিরোধিতা করেন। যদিও সে সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার কথায় কর্ণপাত করেননি। পরবর্তীকালে যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মার্কিন বাহিনীর অ্যারোপ্লেন, জিপ, ইঞ্জিন ও ট্যাঙ্ক সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় ফোর্ড মোটর কোম্পানি।

কারখানার প্রকৌশলীকে নির্দেশনা দিচ্ছেন হেনরি ফোর্ড; Image Source: pbs

১৯৪৩ সালে বুড়ো হেনরি ফোর্ড একটি আকস্মিক বিপদের সম্মুখীন হন। তার ছেলে এডসেল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। যার কারণে বুড়ো বয়সেও প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। যদিও ততদিনে তিনি তার কর্মক্ষমতা হারান। এতে করে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় নানারকম জটিলতা তৈরি হয়।

অতঃপর তার নাতি দ্বিতীয় হেনরি ফোর্ড প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হন। ফোর্ড তার জীবদ্দশায় শুধুমাত্র ধৈর্য আর উদ্ভাবনী কৌশল দিয়েই সফল হননি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়ে গেছেন অমূল্য এক সম্পদ। আজ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম গাড়ি প্রস্ততকারক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্রে এই শিল্প প্রতিষ্ঠা করে মৃত্যুর আগে এটিকে শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছে দেন হেনরি ফোর্ড।

ব্যক্তিগত জীবন

কর্মজীবন ছেড়ে অবসরে যাওয়ার পর ১৯৪৭ সালের ৭ এপ্রিল ৮৩ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন কালজয়ী এই প্রকৌশলী। ১৯৮৮ সালে তিনি ক্লারা জেন ব্রায়েন্টকে বিয়ে করেন। তাদের একমাত্র পুত্রের নাম ছিলো এডসেল। এছাড়াও জীবদ্দশায় হেনরি ফোর্ড একাধিক পদকে ভূষিত হন। ১৯২৮ সালে ফ্রাঙ্কলিন ইনস্টিটিউটস ইলিয়ট ক্রেসন পদক জেতেন তিনি। অতঃপর ১৯৩৮ সালে নাজি জার্মান গ্র্যান্ড ক্রসের পক্ষ থেকে জার্মান ঈগল মেডেল লাভ করেন।

This is a Bengali article. It is about the pioneer of the automobile industrial revolution Mr. Henry Ford. Necessary references are hyperlinked within this article,

Featured Image: pbs

Related Articles