জন মিলটন: এক মহাকবির সংগ্রামমুখর জীবন

ইংল্যান্ডে রানী প্রথম এলিজাবেথের রাজত্ব শেষ হয় ১৬০৩ খ্রিষ্টাব্দে। কিন্তু তার রাজত্বকাল ইংরেজি সাহিত্যে চিরস্মরণীয় হয়ে থেকে যায়। দূরদর্শী ও সুকৌশলী শাসক রানী এলিজাবেথের পৃষ্ঠপোষকতায় তার আমলে উদ্ভব ঘটে স্পেন্সার, মার্লো, শেক্সপিয়ার, জনসন ও বেকনের মতো বহুমুখী প্রতিভার অধিকারীদের। রানীর অনুগ্রহপুষ্ট হয়ে এবং কাজে স্বাধীনতা পেয়ে ইংরেজি সাহিত্যে নতুন নতুন চিন্তা-চেতনা ও ধ্যান-ধারণার উন্মেষ ঘটান এই গুনী প্রতিভাধর সাহিত্যিকগণ। যে নবজাগরণের ঝড় একদিন ভূমধ্যসাগরের উপকূলবর্তী ইটালীর বুক থেকে উত্থিত হয়ে সমগ্র ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েছিল, তা আটলান্টিক পেরিয়ে ইংল্যান্ডের বুকে এসে এক বাস্তব সত্ত্বায় পরিণত হয়। রানী এলিজাবেথের শাসনকাল শেষ হলেও তার আমলে প্রাপ্ত নতুন ধ্যান-ধারণার হাওয়া পালে লাগিয়েই ইংরেজি সাহিত্য জোয়ারে গা ভাসিয়ে দেয়।

রানী প্রথম এলিজাবেথ; liveinternet.com

এলিজাবেথ পরবর্তী যুগের সাহিত্যিকদের মধ্যে সবচেয়ে সেরা বলা যায় জন মিলটনকে। কবি মানেই একটি যুগের সৃষ্টি। সুতরাং মিলটন মানেই একটি যুগ। ১৬০৮ সালের ৯ ডিসেম্বর লন্ডনের ব্রীড স্ট্রিটে জন্মগ্রহণ করেন মিলটন। বাবা সিনিয়র জন মিলটন ছিলেন উঁচুদরের কেরানী, তার কাজ ছিল দলিল দস্তাবেজ করা। প্রটেস্ট্যান্টিজম গ্রহণ করার কারণে নিজের ক্যাথলিক পিতা কর্তৃক ত্যাজ্য হয়ে লন্ডনে এসে বসতি গড়েছিলেন সিনিয়র মিলটন। মিলটনের মা সারাহ জেফরি ছিলেন পবিত্রতার মূর্ত রুপ।

জন মিলটন; karar.com

মিলটনের শৈশবকাল আর পাঁচটা সাধারণ ছেলের মতো ছিল না। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন গম্ভীর প্রকৃতির আর চিন্তাশীল। পড়াশোনার দিকে ছিল তার প্রবল আসক্তি। যেকোনো পাঠের মধ্যে গভীরভাবে ডুব দিয়ে সেখান থেকে কিছু আয়ত্ব করার চেষ্টা করতেন তিনি। বারো বছর বয়সে তাকে দেখা যেতো গভীর রাত জেগে পড়াশোনা করতে। অর্থাৎ এক কথায় মিলটন ছিলেন পড়াপাগল ছেলে।

প্রথমে মিলটনকে সেইন্ট পল স্কুলে ভর্তি করা হয়। এখানে গ্রীক ও ল্যাটিন ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন তিনি। তার সাহিত্যকর্মেও গ্রীক ও ল্যাটিনের ক্ল্যাসিক্যাল ছাপ প্রবল। এরপরে কেম্ব্রিজের ক্রাইস্ট কলেজে ভর্তি হন মিলটন এবং তারপর কেম্ব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে। ১৬২৯ সালে কেম্ব্রিজ থেকে স্নাতক লাভ করেন তিনি। সে বছর কেম্ব্রিজের ২৪ জন স্নাতকের মধ্যে তিনি ছিলেন চতুর্থ। ১৬৩২ সালে স্নাতকোত্তর লাভ করার পর মিলটনকে কেম্ব্রিজ ইউনিভার্সিটির ইন্সট্রাক্টর হিসেবে কর্মভার গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু মিলটন সে প্রস্তাব গ্রহণ না করে হর্টনে পিতার কাছে চলে যান। উদ্দেশ্য চার্চের পাদ্রী হওয়া। ধর্ম নিয়ে তার অনুরাগ সহজেই অনুমেয়।

কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ও ধন্য ছিল মিলটনের পদচারণায়; esgroup.uz

এই সময় মিলটন অনেক কবিতা রচনা করেছেন। যৌবনের স্বপ্নীল আবেশে ডুবে দু’চোখ ভরে দেখেছেন লন্ডনের পার্কে নতুন গজিয়ে ওঠা কুঁড়ির মতো তরুণী-তন্বীদের, দেখেছেন বসন্তের প্রগলভতাকে, দেখেছেন নববর্ষের প্রারম্ভে সূর্যালোকে ভরা ফসলকে, দেখেছেন মাটি আর মানুষকে। সুদর্শন মিলটন চাইলে তরুণীদের সাথে ফুর্তি করে, মদের পেয়ালায় রঙিন ক্ষণগুলোকে আরও রঙিনতর করে উপভোগ করতে পারতেন। কিন্তু তার চরিত্রের মন্দিরে কাম-কলুষতার অপদেবতার কোনো স্থান ছিল না। কাম-প্রবৃত্তিতে সিক্ত মানবজীবন তার কাছে কলুষিত মনে হতো। তাই তার রচনার মধ্যেও সস্তা প্রেমের অতিরঞ্জিত উচ্ছ্বাসের কোনো স্থান নেই। গুরু-গম্ভীর বিষয় নির্বাচন করে, মানবজীবনের গভীরতর সত্য অন্বেষায় তিনি ব্রতী হয়েছেন।

এই সময় দেশ ভ্রমণের মধ্যে দিয়ে অর্জিত জ্ঞানকে পরিণত রুপদানের রেওয়াজ ছিল। মিলটনের মনে আকাঙ্খা ছিল স্বপ্নের দেশ রোম পরিভ্রমণের। ১৬৩৭ সালে মায়ের মৃত্যুর পর তার সাংসারিক বন্ধন আরও শিথিল হয়ে এলো। পিতার অনুমতি নিয়ে তাই বেরিয়ে পড়লেন দেশ ভ্রমণে। দেখলেন প্যারিস, জেনোয়া আর ফ্লোরেন্স। বহু খ্যাতনামা কবি ও সাহিত্যিকের সংস্পর্শে তিনি এলেন আর নিত্য নতুন জ্ঞানসুধা পান করতে থাকলেন।

ফ্লোরেন্স থেকে মিলটন গেলেন রোমে। ল্যাটিন ভাষা ভালোভাবেই আয়ত্ব ছিল তার। রোমে প্রবাসী জীবনের বেশিরভাগ সময় তার কাটে ভ্যাটিকান লাইব্রেরিতে বসে। ক্ল্যাসিক প্রীতি তার চেতনার জগৎকে উদ্ভাসিত করে রেখেছিল। রোমের অতীত সভ্যতা নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে আরও বেশি করে ক্ল্যাসিক সাহিত্যের প্রেমে পড়ে যান তিনি। মিলটন দেখা করেন গ্যালিলিওর সাথে। এই মহান বিজ্ঞানী প্রচলিত ধ্যান-ধারণার ঊর্ধ্বে উঠে মানুষকে শুনিয়েছিলেন সত্যের বাণী, আর তাই হয়েছিলেন শাসক শ্রেণীর হাতে কারাবন্দী ও বিচার নামক প্রহসনের শিকার। মিলটনের পরবর্তী জীবনে এই মহতী বিজ্ঞানীর প্রভাব ছিল অপরিসীম। তার বিভিন্ন লেখায় তিনি বারবার গ্যালিলিওর প্রসঙ্গ টেনেছেন। ‘প্যারাডাইস লস্ট’-এ গ্যালিলিওর টেলিস্কোপের উপমা টেনেছেন মিলটন। এরপরে মিলটন নেপলস যান। সেখান থেকে সিসিলি যাবার কথা ছিল তার, কিন্তু ইংল্যান্ডে সে সময় রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে পিউরিটানদের সংগ্রাম শুরু হয়ে গেছে।

মহতী বিজ্ঞানী গ্যালিলিও : molbuk.ua

পিউরিটানরা ছিল মূলত প্রটেস্ট্যান্ট ধর্মমতের অনুসারী। তারা চার্চ ও ক্যাথলিকদের ধর্মানুষ্ঠানের সংস্কার ও বিশুদ্ধিকরণ চেয়েছিল। গোঁড়া ক্যাথলিকদের দ্বারা পিউরিটানরা বরাবর অনাচারের শিকারা হতো। তৎকালীন রাজা প্রথম চার্লসও ছিলেন চার্চের শাসনে বিশ্বাসী। বলাই বাহুল্য, সকল রাজনৈতিক কর্মকান্ডের মূল উৎস হয়ে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান চার্চ পরিণত হয়েছিল দুর্নীতির আখড়ায়। জাতির এই দুর্দিনে মিলটন দূরে থাকতে পারলেন না। ফিরে এলেন স্বদেশে। ১৬৪০ থেকে ১৬৬০ সাল পর্যন্ত, ২০ বছর মিলটন সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে একজন কট্টর বিপ্লবীর ভূমিকা পালন করেন। তার শক্তিশালী লেখনী এবং ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে তার মতামত সেদিন বিপ্লবের শক্তি যুগিয়েছিল। বিপ্লবের প্রচন্ডতায় শেষমেষ রাজশক্তি হার মানলো। রাজা চার্লসের জনসমক্ষে শিরচ্ছেদ করা হলো। ১৬৪৯ সালে রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে মিলটন ল্যাটিন সেক্রেটারি হিসেবে নিযুক্ত হলেন।

এই সময় মিলটনের জীবনে দুর্ভোগ নেমে এলো। তিনি দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসলেন। অবশ্য ছোটবেলা থেকেই তার দৃষ্টিশক্তি একটু করে ক্ষীণ হয়ে আসছিল। চিকিৎসকরা তাকে অবিলম্বে সকল রকম পড়াশোনা ও লেখার কাজ থেকে বিরত হতে বললেন। কিন্তু সৃষ্টি যার রন্ধ্রে, তাকে ইন্দ্রিয়ের সীমাবদ্ধতায় থামায় সাধ্য কার! তিনি নিবৃত হলেন না। ১৬৫২ সালে দৃষ্টি হারিয়ে পুরোপুরি অন্ধ হয়ে গেলেন মিলটন।

১৬৬০ সালে ক্রমওয়েলের মৃত্যুর পর প্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্রের অবসান ঘটলো এবং রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলো। প্রথম চার্লসের পুত্র দ্বিতীয় চার্লস সিংহাসনে বসলেন। মিলটন হলেন পদচ্যুত। তার সমস্ত রচনা আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হলো। অন্ধত্বের জন্য রাজরোষ থেকে কোনোরকমে মুক্তি পেলেন তিনি। লন্ডনের অদূরে এক গ্রামের ছোট্ট কুটিরে পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্র্য় নিলেন মিলটন।

দুর্যোগের কাছে আত্মসমর্পণ মিলটনের নীতি ছিল না। সৃষ্টি দিয়ে ধ্বংসের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবার সাহস তার ছিল। তাই অন্ধ অবস্থাতেই এক পর্ণকুটিরে বসে রচনা করলেন দুই কালজয়ী মহাকাব্য ‘প্যারাডাইস লস্ট’ আর ‘প্যারাডাইস রিগেইন্ড’। বৃদ্ধ, অন্ধ মিলটন মুখে বলে যেতেন, আর তার হয়ে লিপিবদ্ধ করতো তার কন্যা দিবোরা। তার অপর দুটি কন্যার অসহযোগিতা ও বিরুপ মনোভাব কবিকে ব্যাথিত করেছিল। ১৬৬৩ সালে ‘প্যারাডাইস লস্ট’ সমাপ্ত করলেন তিনি। ১৬৬৭ সালে প্রকাশিত হয়েই ইংল্যান্ডজুড়ে বিপুলভাবে সমাদৃত হলো এই মহাকাব্য আর আদৃত হলেন মিলটন নিজে। মহাকালের বিস্তৃত বক্ষপটে চিরকালের জন্য নিজের নাম লিখে দিলেন মিলটন।

মিলটনের রচনাকে তিনটি সময়কালে ভাগ করা যায়। প্রথম অধ্যায় ১৬২৯ থেকে ১৬৪০ সাল। এ সময়ের মধ্যে তিনি বেশ কিছু প্রবন্ধ ও কাব্য রচনা করেন। তরুণ বয়সে রচিত হলেও এ সময়কার লেখার বিষয়বস্তু গুরু-গম্ভীর। ‘On Shakespeare’, ‘On Arriving at the age of Twenty-three’, On education’ প্রভৃতি  তার সুবিখ্যাত প্রবন্ধসমূহ। ‘Arcedis’, ও ‘Lycidas’ এ সময় তার রচিত বিখ্যাত কাব্য। দ্বিতীয় অধ্যায়টি বিস্তৃত ১৬৪০ থেকে ১৬৬০ সাল অবধি। রাজনৈতিক আন্দোলনের খরস্রোতে এই সময়কাল তিনি অতিবাহিত করেছেন তার বিদ্রোহী সত্ত্বা ব্যবহার করে জনমনে উদ্দীপনা আর পথনির্দেশনা নিয়ে আসতে। ‘The Tenure of Kings and Magistrate’ আর ‘The Agreement of the People’  তার রাজনৈতিক প্রবন্ধগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য।

মিলটনের রাজনৈতিক প্রবন্ধ : darknessvisible.com

প্রথমটিতে তিনি অত্যাচারী শাসকের মৃত্যুদন্ডকে সমর্থন করে যুক্তি দেখিয়েছেন। দ্বিতীয়টিতে তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে সমর্থন করেছেন। মিলটনের কাব্য জীবনের তৃতীয় অধ্যায় ১৬৬০ থেকে ১৬৭৪ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত। এ সময়টা তার জীবনের কঠিনতম সংকটকাল। তার এতোদিনের সংগ্রামের ফল প্রজাতন্ত্র ব্যবস্থা হঠাৎ ভেঙ্গে পড়ে পুনরায় রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা, তার উপর শাসক শ্রেনীর রোষানল আর তার অকাল অন্ধত্ব সব মিলিয়ে তিনি স্তব্ধ হয়ে গেলেন। কিন্তু নিজের সম্বল বিশ্বাসটুকু তিনি ত্যাগ করেননি কখনো। সেই বিশ্বাসকে সম্বল করেই তিনি রচনা করেন তার সুবিখ্যাত ‘প্যারাডাইস লস্ট’। ঈশ্বরের সাথে শয়তানের চিরন্তন প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর মাঝখানে পড়ে মানুষের অসহায়ত্ব নিয়ে লেখা তার এই কালজয়ী মহাকাব্যের সুনাম দ্বিতীয় চার্লসের দরবারেও পৌঁছে গেলো।

রাজার ভাই ডিউক জেমস এলেন বৃদ্ধ অন্ধ কবিকে দেখতে। কথায় কথায় জিজ্ঞেস করলেন, প্রথম চার্লসের বিরুদ্ধে লেখনী ধারণ করেছিলেন বলেই তার এই অন্ধত্ব ঈশ্বরের অভিশাপ কিনা। মিলটন জবাব দিলেন, “আমার উপর যে বিপর্যয় নেমে এসেছে, তাকে যদি আপনি ঈশ্বরের অভিশাপ মনে করেন, তাহলে রাজার ভাগ্যকে আপনি কী বলে গণ্য করবেন?… আমি চোখ হারিয়েছি, রাজা হারিয়েছে মাথা।

‘প্যারাডাইস লস্ট’ এর প্রচ্ছদ : fantascinza.com

মিলটনের পারিবারিক জীবনও সুখকর ছিল না। নিজে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হলেও বিয়ে করেছিলেন এক রাজতন্ত্র সমর্থক ধনীর কন্যা মেরী পাওয়েলকে। মিলটনের বয়স তখন ৩৪ আর মেরী তার চেয়ে ১৮ বছরের ছোট। চঞ্চল, লঘু ও অগভীর প্রকৃতির মেরী হয়তো খাপ খাইয়ে উঠতে পারেননি মিলটনের সাথে। এক মাস পরেই তাই তিনি চলে গেলেন বাবার বাড়ি, আর ফিরে এলেন না। ফিরে এলেন তিন বছর পর, মিলটন যখন প্রজাতন্ত্র রাষ্ট্রের অন্যতম কর্ণধার। কিন্তু নিজের স্বভাবগত কঠোরতা নিয়ে ঠিক মন থেকে ক্ষমা করতে পারেননি মিলটন তাকে। স্ত্রী তাকে চলে যাবার পর সেই সময়টায় মিলটন বিবাহ বিচ্ছেদ সম্বন্ধে দু’টি পুস্তিকা রচনা করেছিলেন। ‘The Doctrine and Discipline of Divorce’ এবং ‘The judgement of Martin Bucer, concerning divorce’। তিনি নিজ অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি মত প্রকাশ করেন যে, স্বামী-স্ত্রীর মানসিক রুচি যদি ভিন্নতর ও পরপষ্পর বিরোধী হয় তাহলে সেখানে বিবাহ বিচ্ছেদ একান্ত প্রয়োজন।

বিবাহ বিচ্ছেদের উপর মিলটনের লেখা : library.sc.edu

১৬৫২ সালে মেরী মারা যান। ১৬৫৬ সালে মিলটন এক প্রজাতন্ত্র সমর্থকের কন্যা ক্যাথরিন উডকে বিয়ে করেন। কিন্তু এক বছর না যেতেই তিনিও মারা যান। তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে মিলটন গ্রহণ করেন এলিজাবেথ মিনসেলকে। এলিজাবেথ তেমন উচ্চশিক্ষিত ছিলেন না। তা সত্ত্বেও প্রয়োজন অনুযায়ী স্বামীর অনেক লেখা লিখে দিতেন। মিলটন তার শেষ রচনাটি এলিজাবেথকে উৎসর্গ করে যান।

১৬৭৪ সালের ৮ নভেম্বর মৃত্যুঞ্জয়ী কবি জন মিলটন পরপারে পাড়ি জমান। লন্ডনেই তিনি সমাহিত হন। বহু বছর পরে তার স্মৃতি রক্ষার্থে ওয়েস্টমিনিস্টারে একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়। দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনে ভালো-খারাপ দু’রকম সময়ই কাটিয়েছেন মিলটন। কিন্তু কখনো সময়ের সাথে আপোষ করেননি। তার জীবন তিন পুরোটা বেঁচেছেন, অবিকৃত ও দ্বিধাহীনভাবে। তার রচিত মহাকাব্যের নিহিত উদ্দেশ্যের মতোই ঈশ্বরের কার্যবিধির ন্যায্যতা প্রতিপাদন করে নিজ জীবনকে এক মহাকাব্যিক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি। আর তাই মহাকালও তাকে ভোলেনি।

তথ্যসূত্র

১) ইংরাজী সাহিত্যের ইতিহাস- ডঃ শীতল ঘোষ

২) poets.org/poetsorg/poet/john-milton

৩) en.wikipedia.org/wiki/John_Milton

Related Articles

Exit mobile version