কমিক বুকের পাতায় কিংবা রূপালী পর্দায় ওয়ান্ডার ওম্যানের দুর্দান্ত সব অ্যাকশন কারিকুরির সাক্ষী হয়েছেন অনেকেই। তবে আজ আপনাদেরকে কোনো কাল্পনিক চরিত্রের গল্প শোনাব না, শোনাব এক বাস্তব ওয়ান্ডার ওম্যানের কাহিনী, যার নাম কিটি ও’নিল। তাকে ওয়ান্ডার ওম্যান হিসেবে আখ্যায়িত করাও স্রেফ আবেগের ঔদার্য্যবশত নয়। এর পেছনে যুক্তিসঙ্গত কারণও আছে। ১৯৭০’র দশকের বিখ্যাত টিভি সিরিজ ওয়ান্ডার ওম্যানের মুখ্য চরিত্র লিন্ড্রা কার্টারের স্টান্ট ডাবল হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনিই।
তবে কিটির কৃতিত্ব কেবল ওটুকুতেই সীমাবদ্ধ নয়। স্থলে, জলে এবং বাতাসে তিনি গতিময়তার এমন অসাধারণ সব রেকর্ড গড়েছিলেন যে, তাকে ভূষিত করা হয় ‘বিশ্বের দ্রুততম নারী’ হিসেবে। সর্বমোট ২২টি বিশ্ব রেকর্ডের অধিকারী ছিলেন তিনি। অথচ বিস্ময়ের কথা কি জানেন? ছোটবেলা থেকেই তিনি শারীরিকভাবে শতভাগ সুস্থ ছিলেন না। শুনতে পেতেন না কানে। কিন্তু তারপরও এই শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জীবনে চলার পথে বাধার কারণ হয়ে উঠতে দেননি কখনও। কেননা তিনি নিজেই বলতেন,
আমি জানি আমি বধির। কিন্তু তারপরও আমি স্বাভাবিক। যেভাবে আমি বিষয়টাকে চিন্তা করি, প্রতিবন্ধী হওয়া কোনো খুঁত নয়। লোকে আমাকে বলে, আমি নাকি কিছু করতে পারি না। আমি তাদেরকে বলি, আমি চাই এমন সবকিছুই আমি করতে পারি।
যেভাবে বধির হলেন
কিটির জন্ম ১৯৪৬ সালে, টেক্সাসের করপাস ক্রিস্টিতে। মাত্র চারমাস বয়সে একবার হাম, গুটিবসন্ত ও মাম্পস হয় তার। এর ফলে প্রচণ্ড জ্বরও আসে। অবস্থা বেগতিক দেখে তার মা তাকে বরফে মুড়ে রাখেন। তারপরও জ্বরের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার। কিন্তু দু’বছর বয়স হওয়া অবধি তার বাবা-মা বুঝতেও পারেননি যে, সেই জ্বরে শ্রবণশক্তি হারিয়েছেন তিনি! তার ছোটবেলার আরো একটি বড় ট্র্যাজেডি ছিল বিমান দুর্ঘটনায় বাবাকে হারানো।
প্রতিবন্ধকতা জয়ে খেলাধুলাকে আঁকড়ে ধরা
বাবার আকস্মিক মৃত্যুর পর মা একাই বড় করতে থাকেন কিটিকে। মা-ই জোর করে লিপ রিডিং শিখিয়েছিলেন তাকে, যেন মানুষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেন তিনি। তবে অন্য একটি বিষয়ে তাকে জোর করা লাগেনি। সেটি হলো খেলাধুলা। বধির হওয়ার কারণেই হয়তো, অন্তত তার নিজের এটিই বিশ্বাস, তিনি ছোটবেলা থেকেই খুবই ইতিবাচক মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন। তিনি মনে করতেন, মানুষের কাছ থেকে সহানুভূতির কোনো প্রয়োজন তার নেই, বরং মানুষকে দেখিয়ে দেয়া দরকার যে তিনিও আর দশটা সাধারণ বাচ্চার মতোই সবকিছু করতে সক্ষম।
নিজেকে প্রমাণের লক্ষ্যে প্রথমে ডাইভিং শুরু করেন তিনি। অভাবিত সাফল্যও পেয়ে যান। তার কোচ স্যামি লির ভাষ্যমতে, ‘ক্ষুধার্ত মাছের মতো’ একটার পর একটা ট্রফি জিততে শুরু করেন তিনি। কিন্তু ১৯৬৪ সালে অলিম্পিক গেমসের জন্য প্রস্তুতি নিতে গিয়ে কবজি ভেঙে যায় তার, আর সেখান থেকে আক্রান্ত হন স্পাইনাল মেনিনজাইটিসে।
ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়া ও অ্যাথলেটিকসকে বিদায়
একটা পর্যায়ে এমনও মনে হয়েছিল যে, কিটি হয়তো আর কোনোদিন হাঁটতেই পারবেন না। কিন্তু সেই অবস্থা থেকেও সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছিলেন তিনি। তবে দুর্ভাগ্য তার পিছু ছাড়েনি। বয়স বিশের কোঠায় থাকতেই দুবার ক্যান্সারের মুখোমুখি হতে হয় তাকে। প্রবল বিক্রমে তিনি জয় করেন ক্যান্সারকেও। কিন্তু চিকিৎসকেরা সাফ জানিয়ে দেন, শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় তার পক্ষে আর অ্যাথলেটিকস ক্যারিয়ারে সামনে এগোনো সম্ভব নয়।
এবার শুরু রেসিং
চিকিৎসকেরা জবাব দিয়ে দিয়েছেন তো কী হয়েছে, কিটির রক্তে যে খেলাধুলা আর প্রতিযোগিতার নেশা ঢুকে পড়েছে। এখন চাইলেও তো এসব ছেড়েছুড়ে কোনো সাধারণ কর্মজীবন বেছে নেয়া সম্ভব নয় তার পক্ষে। তাই তিনি ঠিক করলেন, রেসিং শুরু করবেন। বিভিন্ন মোটরবাইক ও কার রেসিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে শুরু করলেন তিনি। এর মধ্যে ছিল অফ-রোড রেস মিন্ট ৪০০-ও।
একবার এক মোটরবাইক রেসের মাঝ পর্যায়ে হাতে ভীষণ জোরে আঘাত পান তিনি। রেস শেষ করে গ্লাভস খুলে দেখেন, ভেতরে দুটি আঙ্গুল ভেঙে গেছে। তখন তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন আরেক রেসার, যার নাম ডাফি হ্যাম্বলটন। ডাফিই তাকে জোর করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
বিবাহ-বিতর্ক
কিছু প্রতিবেদন বলছে, পরবর্তীতে ডাফিকে বিয়ে করেছিলেন তিনি, এবং এরপর কিছুদিন রেসিং থেকে বিরতিও নিয়েছিলেন। তবে আসলেই বিয়েটি হয়েছিল কি না, এ ব্যাপারে অনেকের মনেই সন্দেহ আছে। ১৯৮৮ সালে এক রিপোর্টারকে তার স্ক্র্যাপবুক দেখিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ডাফির সাথে থাকা তার একটি ছবি থেকে ডাফির মুখ নখ দিয়ে আঁচড়ে তুলে ফেলা ছিল। এছাড়াও অন্য একটি ছবির পাশে, যেখানে লেখা ছিল ডাফি কীভাবে তার ক্যারিয়ারে অবদান রেখেছেন, তিনি লিখে রেখেছিলেন: মিথ্যা! তবে এটা অস্বীকার করা যাবে না যে ডাফির কল্যাণেই তার সাক্ষাৎ হয়েছিল প্রতিষ্ঠিত স্টান্টম্যান হ্যাল নিধামের সঙ্গে, যিনি তাকেও এ লাইনে নিয়ে এসেছিলেন, এবং গড়েপিটে একজন উপযুক্ত স্টান্টওম্যানে পরিণত করেছিলেন।
বিশ্বের দ্রুততম নারী
৭০’র দশকের মাঝামাঝি সময়ে কিটি যোগ দেন হ্যাল নিধামের স্টান্টস আনলিমিটেড দলে। সেখানে মোট ৪০ জন এলিট স্টান্টম্যান ছিলেন। তবে কিটিই ছিলেন সেখানে চুক্তিবদ্ধ হওয়া প্রথম নারী। এবং এই দলের অংশ হিসেবেই তার সামনে আসতে থাকে নিজেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে মেলে ধরার একটার পর একটা সুযোগ। বধির হওয়ায় একটি বাড়তি সুবিধা পেতেন তিনি, সেটি হলো- নিজের কাজে অন্যদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশি মনোনিবেশ করতে পারতেন।
১৯৭৬ সালের ৬ ডিসেম্বর তিনি পরিণত হন বিশ্বের দ্রুততম নারীতে। সেদিন তিনি ৪৮,০০০ হর্সপাওয়ার বিশিষ্ট, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডে চলা তিন চাকার একটি রকেট কার চালান, যেটির নাম ছিল মোটিভেটর। মোটিভেটর নিয়ে তিনি ওরিগন রাজ্যের অ্যালভর্ড মরুভূমির উপর দিয়ে ছুটে যান গড়ে ৫১২.৭১০ মাইল/ঘণ্টা গতিবেগে। এর মাধ্যমে তিনি গড়েন নারীদের ক্ষেত্রে ভূমির উপর গড়া সর্বোচ্চ গতির রেকর্ড। সেই সময়ে তিনি দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্যক্তির চেয়ে ২০০ মাইল/ঘণ্টা বেশি গতি সৃষ্টি করেছিলেন। এখনও এই রেকর্ডটি তার দখলেই রয়েছে।
রয়েছে আরও রেকর্ড
কিটির রেকর্ড জয় কেবল ভূমিতেই থেমে থাকেনি। তিনি নিজের কেরামতি দেখিয়েছিলেন জলের উপরও। ১৯৭৭ সালে তিনি ১০৪.৮৫ মাইল/ঘণ্টায় স্কি করে নারীদের ওয়াটার-স্কিং রেকর্ড নিজের করে নিয়েছিলেন। এছাড়াও একবার তিনি জেট পরিচালিত ক্যাপটেইন ক্রেজি নামক একটি নৌকা বেয়েছিলেন ২৭৫ মাইল/ঘণ্টা গতিতে।
ওয়ান্ডার ওম্যানের স্টান্ট ডাবল
কিটি সবচেয়ে বেশি স্মরণীয় ওয়ান্ডার ওম্যানের স্টান্ট ডাবল হিসেবে। এবং এই ভূমিকায়ও তাকে দেখাতে হয়েছিল দুর্ধর্ষ কিছু স্টান্ট। লাল বাস্টিয়ার ও নীলের উপর ফোঁটা ফোঁটা সাদা তারকা সম্বলিত হট প্যান্ট পরে, ৫ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতা ও ৪৪ কেজি ওজনের এই নারী ১৯৭৯ সালে লাফ দিয়েছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যালি হিল্টনের ১২৭ ফুট উঁচু ব্যালকনি থেকে। তিনি পড়েছিলেন নিচে রাখা একটি এয়ার কুশনের উপর। কুশনটির ঠিক মাঝামাঝি যদি না পড়তেন, তাহলে সেদিনই তার মৃত্যু হতে পারত। তবে সেদিন তিনি প্রাণে বেঁচেছিলেন ঠিকই, এবং গড়েছিলেন সর্বাধিক উচ্চতা থেকে লাফ দেয়ার রেকর্ড। অবশ্য এই রেকর্ড বেশি স্থায়ী হয়নি। কারণ কিছুদিন পর ওয়ান্ডার ওম্যান হিসেবে আরেকটি স্টান্ট দিতে গিয়ে তিনি নিজেই ভেঙেছিলেন রেকর্ডটি। এবার তিনি হেলিকপ্টারে ১৮০ ফুট উচ্চতা থেকে লাফ দিয়েছিলেন।
নিজেই ছিলেন তারকা
ওয়ান্ডার ওম্যান ছাড়াও আরো কয়েকটি ছবি ও টিভি সিরিজে স্টান্টওম্যানের কাজ করেছিলেন কিটি। তবে প্রকৃতপক্ষে তিনি নিজেও একজন তারকার চেয়ে কোনো অংশে কম ছিলেন না। বাচ্চাদের কাছে তিনি এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিলেন যে, তার হলুদ জাম্পসুট ও সাথে লাল স্কার্ফওয়ালা বিশেষ বার্বি ডল সংস্করণও বেরিয়েছিল বাজারে। ১৯৭৯ সালে টিভিতে সম্প্রচারের জন্য তার বায়োপিকও নির্মিত হয়। ‘সাইলেন্ট ভিক্টোরি: দ্য কিটি ও’নিল স্টোরি’তে তার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন স্টোকার্ড চ্যানিং। ছবিটির নির্বাহী প্রযোজন ছিলেন ডাফি হ্যাম্বলটন। এবং স্বাভাবিকভাবেই, ছবির কিছু স্টান্ট করেছিলেন কিটি নিজেই। এছাড়া শেষ জীবন কাটিয়েছিলেন যে ইউরেকায়, সেখানকার স্থানীয় জাদুঘরের চারভাগের একভাগই কেবল পূর্ণ তার অসাধারণ ক্যারিয়ারের বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যবহৃত নানা আর্টিক্র্যাফটস দিয়ে।
অবসর
১৯৮২ সালে, ৩৬ বছর বয়সে একটু তড়িঘড়ি করেই যেন অবসর নিয়ে নেন কিটি। তবে এছাড়া তার সামনে আর কোনো রাস্তাও খোলা ছিল না। স্টান্ট করতে গিয়ে পরপর তার কয়েকজন সহকর্মী মৃত্যুবরণ করেন, যার ফলে প্রচণ্ড মানসিক চাপে ভুগতে শুরু করেন তিনি। এছাড়া ততদিনে ডাফির সাথে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে তার, এবং সহিংস ডাফি তার জীবন অতিষ্ঠ করে দিতে শুরু করেছে। (উল্লেখ্য: অভিনেতা রবার্ট ব্লেক চেষ্টা করেছিলেন তার স্ত্রীকে খুন করার জন্য ডাফিকে ভাড়া করার)। সবমিলিয়ে কিটি তখন লস অ্যাঞ্জেলেসের কর্মব্যস্ত জীবন ছেড়ে নিরিবিলি, একাকী কোথাও গিয়ে শান্তিতে খুঁজে নিতে চাইছিলেন। তাই তিনি প্রথমে মিনিয়াপোলিস, এবং পরবর্তীতে ইউরেকায় চলে যান।
পরবর্তী জীবন
লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যাওয়ার ফলে কিটিকে নিয়ে মানুষের আগ্রহে ভাঁটা পড়ে যায়। কিন্তু একজন মানুষের জীবন তো কেবল তারকাখ্যাতিতেই থেমে থাকে না। তার নিজেরও থাকে একটি জীবন, যেমনটি ছিল কিটিরও। সেই জীবনের কাহিনীও কোনো অংশে কম চমকপ্রদ নয়।
ডাফির সাথে বিচ্ছেদের পর নতুন আরেকটি প্রেম এসেছিল কিটির জীবনে। বিয়ের দিন-তারিখও ঠিক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, বিয়ের মাত্র চারদিন আগে মৃত্যু হয় তার ফিয়াসেঁর। এরপর আরো একজনের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই মানুষটি আক্রান্ত হয়েছিলেন অ্যালঝেইমার রোগে। তাই তার সাথেও বেশিদিন থাকা সম্ভব হয়নি কিটির।
একপর্যায়ে আর কোনো মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়ার চেষ্টায় ইস্তফা দিয়ে, কিটি জীবন কাটাতে শুরু করেন আইভি নামের রঙচঙে এক টিয়া পাখির সাথে। তবে খাঁচায় বন্দি জীবনে বিশ্বাসী ছিলেন না তিনি। তাই পাখিটিকে খাঁচায় আটকে রাখেননি তিনি। স্বাধীনভাবে গোটা বাড়িময় উড়ে বেড়াতে পারত আইভি। কিন্তু কিটির প্রতি ভালোবাসার টানে তাকে কখনো ছেড়ে চলে যেত না। উড়তে উড়তে কিটির কানের কাছে এসে বলত, আমি তোমাকে ভালোবাসি! যে ভালোবাসা কিটি কোনো রক্ত-মাংসের মানুষের কাছ থেকে চেয়েছিলেন, সেটি তিনি পেয়েছিলেন আইভি নামের টিয়া পাখিটির কাছ থেকে। কিন্তু কানে শুনতে না পাওয়ায়, পাখির মুখে ভালোবাসার কথা কোনোদিনও শোনা হয়নি তার।
যদিও তিনি গাড়ি চালানো ছেড়ে দিয়েছিলেন, তবু প্রায়ই কিটিকে দেখা যেত মাউন্টেন বাইকে করে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াতে। অবশ্য অ্যাথলেটিক শরীর আর তার নেই তখন। বরং আর্থ্রাইটিসে ভুগে বেঁকে গিয়েছিল সেই শরীর।
জীবনাবসান
কিটি গভীর অনুরাগী ছিলেন বাইবেলের। তিনি বিশ্বাস করতেন মৃত্যুর পর পুনরুত্থানে, প্রিয়জনদের সাথে ফের মিলিত হওয়ায়। সবসময় আওড়াতেন নরমান ভিনসেন্ট পিলের অনুপ্রেরণাদায়ী বাণী। বোঝাই যায়, জীবনে এতবার এতভাবে ভুগেও, এতবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসার পরও, এতবার ভাগ্যের নির্মমতার শিকার হয়েও, শেষ জীবনটা প্রচণ্ড নিঃসঙ্গতায় কাটিয়ে দিয়েও, জীবনের উপর থেকে বিশ্বাস হারাননি তিনি। ইতিবাচক মানসিকতাকে পুঁজি করেই প্রাণভরে বেঁচেছেন শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। সেই শেষ নিঃশ্বাসটি তিনি ত্যাগ করেন ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর, ইউরেকায়, নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে। তবে কে জানে, মৃত্যুর ঠিক পূর্ব মুহূর্তেও হয়তো তিনি স্বপ্ন দেখছিলেন মরুভূমির বালি উড়িয়ে ঝড়ের বেগে ছুটে চলার, জলে তীব্র স্রোতের আলোড়ন তোলার, ঝরা পালকের মতো বাতাসে ভেসে বেড়াবার, কিংবা শুধুই ভালোবাসার কোনো মানুষের সাথে শান্তিময় একটি জীবন কাটাবার?
চমৎকার সব বিষয়ে রোর বাংলায় লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কে: roar.media/contribute/