সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর আফ্রিকা থেকে দক্ষিণ ককেশাস পর্যন্ত বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে তুরস্কের নির্মিত ড্রোন বিশেষ সাফল্য প্রদর্শন করেছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তুর্কি–ইরাকি ও তুর্কি–সিরীয় সীমান্তে কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী দল ‘পিকেকে’, ইদলিবের যুদ্ধক্ষেত্রে সিরীয় সরকারি বাহিনী, পশ্চিম লিবিয়ায় লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি এবং নাগর্নো–কারাবাখে আর্মেনীয় সেনাবাহিনী– এদের সকলেই তুর্কি ড্রোনের কারণে প্রভূত ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। আর এই সফল তুর্কি ড্রোন প্রকল্পের স্বপ্নদ্রষ্টা যিনি, তার নাম সেলজুক বায়রাকতার।
বায়রাকতার ১৯৭৯ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের সারইয়ের জেলায় একটি তুর্কি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ওজদেমির বায়রাকতার এবং মায়ের নাম জানান বায়রাকতার। ওজদেমির ছিলেন একজন ইঞ্জিনিয়ার এবং তার নিজস্ব কোম্পানি ‘বায়কার মাকিনা’ তুরস্কের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরি করত। ওজদেমিরের তিন সন্তানের মধ্যে সেলজুক বায়রাকতার ছিলেন মধ্যম।
সারইয়ের প্রাইমারি স্কুলে অধ্যয়নের মধ্য দিয়ে বায়রাকতারের শিক্ষাজীবন আরম্ভ হয়, এবং ১৯৯৭ সালে তিনি ইস্তাম্বুল আমেরিকান রবার্ট হাই স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি ইস্তাম্বুল টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন। সেখানে থাকা অবস্থায় তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় অবস্থিত পেন্সিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের জন্য একটি বৃত্তি লাভ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন। ২০০৪ সালে তিনি সেখান থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখানে অধ্যয়নরত থাকাকালেই তিনি বিখ্যাত ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে (এমআইটি) অধ্যয়নের জন্য আরেকটি বৃত্তি লাভ করেন এবং সেখানে অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিক্স বিভাগে একজন রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে যোগদান করে সেখান থেকে আরেকটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নকালেই ড্রোন প্রযুক্তির প্রতি তার আগ্রহ প্রকাশ পায় এবং এই বিষয়ে তিনি কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। ২০০৩ সালে পেন্সিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় তিনি ভূমিতে অবস্থিত রোবট টিমের সঙ্গে আকাশে উড়ন্ত ড্রোনবহরের কার্যক্রমের সমন্বয় সাধন করেন। এটি ছিল বিশ্বের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ড্রোন ও রোবটের এয়ার–গ্রাউন্ড কোঅর্ডিনেশন। এমআইটিতে থাকাকালেও তিনি এ বিষয়ে নতুন নতুন কৃতিত্ব অর্জন করতে থাকেন। এ সময় তিনি চালকবিহীন হেলিকপ্টার সিস্টেমকে আগ্রাসীভাবে চালনা করার বিষয়ে গবেষণা করেন এবং কন্ট্রোলস ইঞ্জিনিয়ারিং সংক্রান্ত বিভিন্ন শীর্ষ জার্নালে তার গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়।
একই সময় তুরস্ক নিজস্ব প্রযুক্তিতে ড্রোন উৎপাদনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল। ১৯৯৫ সালে তুরস্ক প্রথম ‘ড্রোন যুগে’ প্রবেশ করে, কিন্তু এ সময় তুরস্কের কোনো নিজস্ব ড্রোন প্রকল্প ছিল না এবং তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল থেকে আমদানিকৃত ড্রোনের ওপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু এই ড্রোনগুলো ছিল তুলমামূলকভাবে অনুন্নত এবং অকার্যকর। যেমন: তুর্কিরা মার্কিন–নির্মিত ‘গ্নাট ৭৫০’ ড্রোন ব্যবহার করে ইরাকি ও সিরীয় সীমান্ত বরাবর পিকেকে মিলিট্যান্টদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করত, কিন্তু ড্রোন থেকে প্রাপ্ত ভিডিও বিশ্লেষণ করে অভিযান পরিচালনার আগেই পিকেকে গেরিলারা সেখান থেকে সরে পড়ত। তদুপরি, ইসরায়েল থেকে আমদানিকৃত ড্রোনগুলো সরবরাহ করতে ইসরায়েলি সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করে এবং তুর্কি কর্মকর্তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরবরাহকৃত ড্রোনগুলোতে অন্তর্ঘাত চালানোরও অভিযোগ করেন।
এসব অভিজ্ঞতার ফলে তিক্ত তুর্কি সরকার নিজস্ব ড্রোন নির্মাণ প্রকল্প শুরু করে। বস্তুত ২০০৪ সালেই ‘টার্কিশ অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ’কে (টিএআই) এই দায়িত্ব প্রদান করে। কিন্তু টিএআই–এর প্রকল্প ছিল প্রলম্বিত এবং প্রাথমিকভাবে ব্যর্থতায় পরিপূর্ণ, যদিও ২০১৬ সালে এটি শেষ পর্যন্ত সাফল্য অর্জন করে। এর মূল কারণ ছিল তুর্কি কর্মকর্তাদের নিজস্ব প্রযুক্তিতে ড্রোন তৈরির চেয়ে বিদেশ থেকে আমদানি করার ওপর জোর দেয়া। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের ‘মিত্র’ রাষ্ট্রগুলোর কার্যকলাপ তাদেরকে হতাশ করে তোলে।
টিএআই যখন নিজস্ব প্রযুক্তিতে ড্রোন তৈরির আপাতদৃষ্টিতে ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল, সেসময় ২৬ বছর বয়সী বায়রাকতার নিজের তৈরি একটি ড্রোনের জন্য তুর্কি সরকারের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা শুরু করেন। ২০০৫ সালে তিনি একটি বিমানঘাঁটিতে একদল তুর্কি সরকারি কর্মকর্তার সামনে তার নিজের তৈরি একটি ক্ষুদ্র ড্রোন প্রদর্শন করেন। তিনি দেখান যে, তার তৈরি করা ড্রোনটি কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়াই উড্ডয়ন করতে, উড়তে এবং অবতরণ করতে সক্ষম।
বায়রাকতার তার তৈরি ড্রোনটি প্রদর্শনের পর উপস্থিত তুর্কি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে একটি ছোটখাটো বক্তৃতা দেন। তিনি বলেন, “আমার অনেক বন্ধু বিভিন্ন মার্কিন সামরিক প্রকল্পের জন্য বৃত্তি পেয়ে কাজ করছে। কিন্তু তুরস্কে ফেরার পর তারা বা আমি কীসের ওপর কাজ করব?” তিনি আরো বলেন, “বোয়িং, লকহিড, এগুলো বড় কোম্পানি, তাই না? আমরাও একই রকম সিস্টেম তৈরি করছি। যদি তুরস্ক এই প্রকল্পে সমর্থন দেয়, পাঁচ বছরের মধ্যে তুরস্ক সহজেই ড্রোনের ক্ষেত্রে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে!”
বায়রাকতারের বক্তব্য ছিল আশ্চর্যরকমভাবে আত্মবিশ্বাসী এবং বেপরোয়া। তিনি চাচ্ছিলেন, তার পারিবারিক কোম্পানি ‘বায়কার মাকিনা’কে তুর্কি সরকার সামরিক ড্রোন নির্মাণের অনুমতি প্রদান করুক। কিন্তু তুর্কি সরকারের উচ্চস্তরের কর্মকর্তাদের কাছে তখন বায়রাকতার পরিচিত ছিলেন না। তুর্কি আমলাতন্ত্র সাধারণ যোগ্যতার পরিবর্তে আনুগত্যের ভিত্তিতে এ ধরনের কন্ট্রাক্ট প্রদান করে থাকে। ফলে প্রাথমিকভাবে অচেনা এই এমআইটি পড়ুয়া তরুণের বক্তব্য তুর্কি আমলাদের ওপর প্রভাব ফেলেনি।
অবশ্য ২০০৬ সালে তুর্কি সেনাবাহিনী কর্তৃক আয়োজিত ড্রোন নির্মাণের একটি প্রতিযোগিতায় বায়রাকতার বিজয়ী হন, এবং এরপর বায়রাকতারের কোম্পানিকে তুর্কি সেনাবাহিনীর জন্য ১৯টি মিনি ড্রোন তৈরির কাজ দেয়া হয়। এই কাজটি সাফল্যের সঙ্গে সম্পাদন করার ফলে তুর্কি কর্মকর্তাদের মধ্যে কোম্পানিটি সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হয়, এবং শীঘ্রই আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বায়রাকতারের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়।
২০১০ সালে ‘গাজা ফ্রিডম ফ্লোটিলা’র ওপর ইসরায়েলি আক্রমণের ফলে কয়েকজন তুর্কি নাগরিক নিহত হয়, এবং এর ফলে তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যেকার সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। তুর্কি–ইসরায়েলি দ্বন্দ্বকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তুরস্কের নিকট ড্রোন বিক্রি করতে অস্বীকৃতি জানায়। এমতাবস্থায় তুরস্ক বিদেশের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস করার উদ্দেশ্যে নিজস্ব প্রযুক্তিতে ড্রোন নির্মাণের প্রকল্পের ওপর জোর দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, এবং তুর্কি প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেন। এটি বায়রাকতারের জন্য সম্ভাবনার দুয়ার উন্মুক্ত করে দেয়, কারণ সামরিক ড্রোন উৎপাদনের ক্ষেত্রে তার উৎসাহ ও যোগ্যতা ছিল সবচেয়ে বেশি।
বায়রাকতার বরাবরই ড্রোন প্রযুক্তির জন্য বিদেশের ওপর তুর্কিদের নির্ভরশীলতার বিপক্ষে ছিলেন, এবং এই বিষয়ে তার বক্তব্যগুলো তাকে তুর্কি জনসাধারণের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলে। ২০১৫ সালে বায়রাকতার একটি বিরাট সাফল্য অর্জন করেন। একটি প্রদর্শনীতে তার কোম্পানির তৈরি ‘বায়রাকতার টিবি২’ ড্রোন ভূমি থেকে ১৬,০০০ ফুট উচ্চতায় থেকে পরীক্ষামূলকভাবে একটি রকেট নিক্ষেপে সক্ষম হয়। এটি ছিল তুরস্কের ইতিহাসে প্রথম সশস্ত্র ড্রোনের উড্ডয়ন, এবং স্বভাবতই তুর্কি প্রচারমাধ্যম ও সশস্ত্রবাহিনীর কাছ থেকে এটি ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে। বায়রাকতার রাতারাতি তুর্কি ‘জাতীয় বীরে’ পরিণত হন।
২০১৬ সালের মে মাসে বায়রাকতার তুর্কি রাষ্ট্রপতি এরদোয়ানের মেয়ে সুমেইয়ে এরদোয়ানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে তাদের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে, যার নাম জানান আইবুকে বায়রাকতার। এ বিয়ে তুর্কি অভিজাত শ্রেণিতে বায়রাকতারের অবস্থানকে সুদৃঢ় করে, এবং তার ভাগ্য বর্তমান তুর্কি সরকারের ভাগ্যের সঙ্গে জড়িয়ে যায়।
বায়রাকতারের তৈরি ড্রোন বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে বিস্তর সাফল্য অর্জন করেছে। এই ড্রোনটি তুর্কি–ইরাকি ও তুর্কি–সিরীয় সীমান্ত বরাবর সক্রিয় পিকেকে সদস্যদের বিরুদ্ধে সাফল্যের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে এবং বহু পিকেকে মিলিট্যান্ট এর ফলে নিহত হয়েছে। এই ড্রোনটির ব্যবহার শুরু হওয়ার পর থেকে পিকেকে সদস্যদের পক্ষে বড় কোনো দলে চলাফেরা করা বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে তুর্কি ড্রোন আক্রমণে সীমান্ত অঞ্চলে বসবাসকারী বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানিরও অভিযোগ উঠেছে। বস্তুত, তুরস্ক বর্তমানে বিশ্বের একমাত্র রাষ্ট্র, যেটি নিজের সীমানার অভ্যন্তরে নিয়মিত ড্রোন হামলা চালায়।
তুর্কি–নির্মিত ড্রোন অন্যান্য যুদ্ধক্ষেত্রেও বিশেষ সাফল্যের পরিচয় রেখেছে। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে তুর্কি সৈন্যরা লিবিয়ায় স্বঘোষিত ফিল্ড মার্শাল খলিফা হাফতারের ‘লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি’র (এলএনএ) বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে এই ড্রোন ব্যবহার করেছে, এবং ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি–মার্চে সিরিয়ার ইদলিবে সিরীয় সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণের ক্ষেত্রেও এই ড্রোন ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। উভয় ক্ষেত্রেই বায়রাকতারের নির্মিত ড্রোনের কারণে প্রতিপক্ষের প্রভূত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বর্তমানে চলমান আর্মেনীয়–আজারবাইজানি যুদ্ধেও আজারবাইজানি ও তুর্কি অপারেটররা সাফল্যের সঙ্গে আর্মেনীয়দের বিরুদ্ধে এই ড্রোন ব্যবহার করেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এলএনএ, সিরিয়া ও আর্মেনিয়া এদের সকলেই প্রধানত রুশ–নির্মিত সামরিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে, এবং রুশ–নির্মিত ভারী অস্ত্রশস্ত্রের বিরুদ্ধে তুর্কি ড্রোনের সাফল্য যে মস্কোতে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে, সেটি বলাই বাহুল্য।
অবশ্য, বায়রাকতারের ড্রোন যে একচ্ছত্র সাফল্য অর্জন করেছে এটা বলা যায় না। কারণ, সিরীয় ও আর্মেনীয় সৈন্যরা বেশকিছু ‘বায়রাকতার টিবি২’ ড্রোন ভূপাতিত করেছে, এবং এ থেকে ধারণা করা যায়, আধুনিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমগুলোকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা হলে সেগুলো ড্রোন কর্তৃক সৃষ্ট হুমকি মোকাবেলা করতে বহুলাংশে সক্ষম। কিন্তু এখন পর্যন্ত বায়রাকতারের ড্রোনগুলো উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সাফল্য দেখিয়েছে, ফলে তার কোম্পানির তৈরি ড্রোনগুলোর বিশ্বজুড়ে বিরাট চাহিদা সৃষ্টির সম্ভাবনা হয়েছে। কিছু কিছু বিশ্লেষকের মতে, তুলনামূলকভাবে সস্তা তুর্কি ড্রোন ক্রয়ের মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র রাষ্ট্রগুলো কম খরচে তাদের বিমানশক্তির ঘাটতি অন্তত আংশিকভাবে হলেও পূরণ করতে পারবে।
সামগ্রিকভাবে, তুরস্কে একটি ‘ড্রোন বিপ্লব’ সংঘটিত হয়েছে, এবং সেলজুক বায়রাকতার এই বিপ্লবের অগ্রদূত হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন। ‘বায়কার ডিফেন্সে’র চিফ টেকনোলজি অফিসার এবং ‘টার্কি টেকনোলজি টিম ফাউন্ডেশনে’র বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে বায়রাকতার ‘উচ্চ প্রযুক্তি’র উন্নয়নে তুর্কি তরুণদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে কাজ করছেন। ‘বায়রাকতার টিবি২’–এর সাফল্যের প্রেক্ষাপটে তার কোম্পানি আরো উন্নত ‘বায়রাকতার আকিন্সি’ কমব্যাট ড্রোন নির্মাণের কাজে ব্যস্ত। সম্প্রতি তুরস্ক পররাষ্ট্রনীতিতে বেশকিছু বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যার পেছনে তুর্কি সামরিক শক্তির (এবং তুর্কি ড্রোনের) ভূমিকা সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ। আর তুর্কি ড্রোন বিপ্লবের অগ্রদূত হিসেবে সেলজুক বায়রাকতারের ভূমিকা যে এক্ষেত্রে অপরিহার্য, সেই বিষয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।