১৪৭৫; ফ্লোরেন্স, ইতালি। সকালে ঘুম থেকে উঠে দৈনন্দিন অভ্যাস সেরে স্টুডিওতে ঢুকে পড়লেন ফ্লোরেন্স নগরীর বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ভেরোচিও। যিশুর ব্যাপ্টিজম বিষয়ে একটা ছবি আঁকছেন তিনি অনেকদিন ধরে। একদম শেষ করে এনেছেন প্রায়। যিশুর শরীরে সাধু জন পবিত্র পানি ঢেলে দিচ্ছেন আর দেবদূতেরা যিশুর কাপড় ধরে আছে, এমন একটা ছবি আঁকার ইচ্ছে তার। মাস্টারপিস হবে একদম!
জন আর যিশুর অংশের কাজ শেষ করে ফেলেছেন, বাকি আছে কেবল দেবদূত আর ব্যাকগ্রাউন্ডের কিছু আঁকাআঁকি, ওটা তেমন গুরুত্বপূর্ণ না। তরুণ শিক্ষানবিশ আছে তার, তাকেই দিয়েছেন কাজটা করতে, ও বেশ তাড়াতাড়ি করতে পারে। এ ক’দিন ফ্লোরেন্সে ছিলেন না ভেরোচিও।
স্টুডিওর মাটিতে পড়ে থাকা কিছু জিনিস কুড়িয়ে টেবিলে রাখলেন ভেরোচিও। এরপর তার প্রায় শেষ হয়ে আসা মাস্টারপিসটার সামনে এসে দাঁড়ালেন। কিন্তু তার চোখ চলে গেল দেবদূতের দিকে, মোটেও ছবির নায়ক যিশুর দিকে না!
শেষবার যখন দেখেছিলেন, ছবির বাঁ পাশের কাপড় ধরে রাখা এ দেবদূত ছিল না মোটেও। আর এখন দেবদূত থেকে চোখ সরছেই না তার। এ কী করে সম্ভব! এত নিখুঁত করেও আঁকা যায়? তার রীতিমত লজ্জা লাগতে লাগলো। এত বুড়ো হয়ে গেছেন তিনি, কিন্তু এত বছরের জীবনেও এত সুন্দর কিছু আঁকতে পারেননি।
চিৎকার করে স্টুডিওর সবাইকে জড়ো করে ফেললেন তিনি। এরপর তার শিক্ষানবিশ ২৩ বছরের তরুণকে ডাকলেন,
“লিওনার্দো!”
“জি।”
“তোমরা সবাই সাক্ষী থাকো, আমি আজকে থেকে আর কোনো দিন হাতে তুলি নেব না। কোনো ছবিও আর আঁকব না, শপথ করছি। আমার জীবন সার্থক যে আমি লিওনার্দোর মতো কারো শিক্ষক হতে পেরেছি। অনেক বড় হও তুমি, বৎস!”
সত্যিই ভেরোচিও আর কোনো ছবি আঁকেননি কোনোদিন। আর লিওনার্দো? হ্যাঁ, সেই ২৩ বছরের তরুণকে কোনোদিন পেছনে তাকাতে হয়নি আর। অর্ধ সহস্র বছর পরেও এই পৃথিবীর শিল্পের সামান্য জ্ঞান থাকা মানুষও তার নাম জানে।
অনেক বড় হয়ে গেলেও লিওনার্দো শৈশবের দুটো কাহিনী বারবার বলতেন, প্রথমটি তো রীতিমতো অবিশ্বাস্য। একদম শিশুকালে দোলনায় থাকা অবস্থার এক স্মৃতি নাকি তার মনে ছিল! আকাশ থেকে একটা ঘুড়ি সোজা গিয়ে পড়েছিল একদম তার মুখে। হাত দিয়ে সরাতে তো আর পারেন না। মুখে লাগা ঘুড়ির লেজের সেই পরশ তিনি কোনো দিন ভুলতে পারেননি।
আরেকবার, পাহাড়ি জঙ্গলে ঘুরতে ঘুরতে এক গুহার সামনে এসে পড়েছিলেন শিশু লিওনার্দো। কিন্তু প্রচণ্ড একটা ভয় চেপে ধরেছিল তাকে, ভিতরে কি কোনো রাক্ষস আছে, তাকে খেয়ে ফেলবে? কিন্তু ভয়ের চেয়ে প্রচণ্ড কৌতূহলের অনুভূতিটা বেশি মনে আছে তার- “আচ্ছা আসলেই কী আছে ভেতরে? দেখি গিয়ে!” তিনি আদৌ ঢুকেছিলেন কিনা, সেটা আর কোনোদিন বলেননি।
এমন ডানপিটেভাবেই বড় হয়েছিলেন লিও। আনন্দের জীবন বলতে যা বোঝায়, তা তার ছিল না শৈশবে। থাকবেই বা কী করে, তিনি যে বাবা পিয়েরে দা ভিঞ্চির জারজ সন্তান। জারজ সন্তানকে তো আর টাকা-পয়সা, আদর-সোহাগ দিয়ে বড় করবে না নীল রক্তের বাবা, কারণ লিওর রক্ত যে লাল।
১৪৫২ সালের এপ্রিলের ১৫ তারিখ জন্মেছিলেন লিওনার্দো। ফ্লোরেন্স থেকে ২৫ মাইল দূরে, ভিঞ্চি শহরে। সেই থেকে তার নাম ভিঞ্চি শহরের লিওনার্দো, লিওনার্দো দা ভিঞ্চি।
জন্মের পর প্রথম ৫ বছর লিওনার্দো তার মায়ের সাথে কাটালেন। কিন্তু এরপর তার মা তাকে ছেড়ে চলে যান। মা ক্যাটেরিনার আসল পরিচয় কেউ জানে না। কেউ কেউ বলে, তিনি নাকি স্থানীয় এক মহিলা ছিলেন। কিন্তু ভিন্ন তত্ত্বও আছে। ক্যাটেরিনা নামের একমাত্র যে নারীর খোঁজ পিয়েরে দা ভিঞ্চির জীবনে পাওয়া যায়, তিনি কোনো স্থানীয় মহিলা ছিলেন না। বরং তার ধনবান বন্ধু ভানি দি নিকোলোর বাসার দাসী ছিলেন। এটা হওয়াই বেশি যুক্তিসঙ্গত, কারণ লিওর জন্মের ১ বছর আগে সেই বন্ধু মারা যান এবং তার সহায় সম্পত্তি দিয়ে যান পিয়েরেকে। সম্ভবত সাথে দাসী ক্যাটেরিনাও ছিল। আর তারই এক বছর পর লিওনার্দোর জন্ম। তখনকার সময়ে ইতালি আর স্পেন পূবদেশীয় দাস-দাসীতে ভর্তি ছিল, তাই দাসীর কথা শুনে অবাক হবার কিছু নেই।
৫ বছর বয়সে মা উধাও হয়ে যাবার পর লিওনার্দো তাকে আর খুঁজে পাননি। সারা জীবনই তাকে খুঁজেছেন। বহু বছর পরে হয়ত তিনি তাকে খুঁজে পেয়েছিলেন, কিংবা পাননি। সে বিষয়ে আমরা আসব লেখার শেষে।
২০০৭ এর এক ইতালিয়ান গবেষণায় দেখা যায়, লিওনার্দোর একটি আঙুলের ছাপ পরীক্ষা করে যে বিন্যাস পাওয়া গেছে, সেটি ছিল যেমনটা আরবদের মধ্যে দেখা যায় তেমন। তাই ধারণা করা হয়, সেই দাসী হয়ত আরবের কেউ হবে। ভাগ্যের তাড়নায় যার ঠিকানা হয় ফ্লোরেন্সে দাসী হিসেবে, আর নাম হয় ক্যাটেরিনা।
আদর সোহাগে বড় না হলেও, লিওর বাবা তাকে ‘Recognition’ দিয়েছিলেন ঠিকই। ১৫ বছর বয়সে তাকে ভেরোচিওর কাছে কাজ শিখতে পাঠান, শিক্ষানবিশ হিসেবে। অন্যান্য ছেলের মতো তার কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না মোটেও। তবে ঘরে বসে পড়ালেখা শিখেছিলেন। বড় হয়ে অবশ্য ঠিকই বাবার সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন লিওনার্দো। বাবা যখন মারা গিয়েছিলেন, তখন খুবই শোকার্ত ছিলেন তিনি।
ভেরোচিওর কাছে শিক্ষানবিশ থাকাকালীন কাহিনী তো উপরেই বলা হলো, তখনই তার তুখোড় মেধার পরিচয় ফুটে ওঠে।
২৪ বছর বয়সে লিওনার্দোর জীবনে কিছু আঘাত আসে। তাকে আরও কয়েকজন সঙ্গীর সাথে সমকামিতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। এটা তার জন্য খুবই মর্মান্তিক একটা ঘটনা ছিল। তার খ্যাতির কারণে অনেকে তার শত্রু হয়ে ওঠে, যারা তার ধ্বংস সাধনে উঠে পড়ে লাগে। তবে কোনো সাক্ষী যোগাড় করা যায়নি তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগের।
২৬ বছর বয়সে লিওনার্দো নিজের স্টুডিও দিয়ে বসেন। ৩ বছর পর চার্চের কাছ থেকে প্রথম বড় কাজ পান তিনি- ‘Adoration of the Magi’; কিন্তু ভয়ংকর রকমের অলস ছিলেন লিওনার্দো। কোনো কাজ শুরু করলে তিনি সেটা শেষ করার তাগাদা পেতেন না। তার এই প্রথম বড় কাজটি তিনি সারা জীবনেও শেষ করেননি। এমনভাবে তার বহু কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় রয়ে গেছে। যদি তিনি সেগুলো শেষ করতেন, তবে পৃথিবী তার কাছ থেকে আরও অনেকগুলো উপহার পেত।
অবশ্য ‘অ্যাডোরেশন অফ দ্য ম্যাজাই’ শেষ না করার জন্য মনে হয় লিওকে দোষটা দেওয়া যায় না। কারণ তিনি মিলানের ডিউকের কাছ থেকে এর চেয়েও বড় প্রস্তাব পেয়েছিলেন। আর ততদিনে সাক্ষীর অভাবে সমকামিতার মামলা প্রত্যাহার হয়ে যায়। কেইস ড্রপ করার সাথে সাথেই তিনি ফ্লোরেন্স ত্যাগ করেন। মিলানে চলে যান কাজ করতে। এটা তখনকার সময় শিল্পীদের অভ্যাস ছিল। ফ্লোরেন্স ত্যাগ করে তারা ভেনিস আর রোমে কাজ করতেন।
যা-ই হোক, লিওনার্দো মিলানে গিয়ে পেইন্টিং নয়, বরং উদ্ভাবকের কাজ করতে লাগলেন। তাকে দায়িত্ব দেয়া হলো মিলিটারি কাজকর্মের, বিশাল বিশাল নিত্যনতুন অস্ত্র বানানোর কাজের। ডিউক লুদোভিকো স্ফোরজার অধীনে কাজ ভালই এগুতে লাগলো।
মিলানে থাকা বছরগুলোতে তিনি দু-দুটো বিখ্যাত ছবি আঁকেন। একটি ছিল ‘Virgin of the Rocks’, আর অন্যটি ভুবনবিখ্যাত ‘The Last Supper’।
১৫০০ সালে যখন লিওনার্দো ফিরে আসলেন নিজের শহর ফ্লোরেন্সে, তখন তিনি রীতিমত বিখ্যাত। সবাই তাকে চেনে। আর মজার ব্যাপার হলো, সেখানে তাকে মানুষ চেনে তার শেষ না করা সেই পেইন্টিং দিয়ে- ম্যাজাই। তার নতুন স্টাইলে আঁকা সবাইকে মুগ্ধ করে দিয়েছিল।
দুই বছর পর তিনি কাজ করলেন চেজারে বরজিয়ার মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। চেজারে বরজিয়ার কাহিনী এত বিশাল আর আকর্ষণীয় যে, সেটি নিয়ে লিখতে গেলে গোটা একটা বই হয়ে যাবে, তাই সেদিকে আজ না যাই আমরা।
ফ্লোরেন্সে থাকাকালীন তিনি আঁকা শুরু করেন মানুষের পোরট্রেইট। এ সময়ই তিনি আঁকেন তার সবচেয়ে বিখ্যাত আর রহস্যময় ছবি, মোনালিসা। মোনালিসার প্রসঙ্গে আমরা একটু পরে আসছি।
১৫০৬ সালে তার ডাক পড়ে আবার মিলানে। সেখানে ফ্রেঞ্চ গভর্নর তাকে একটা বিশাল ঘোড়ার ভাস্কর্য বানিয়ে দিতে বলেন। ঘোড়ার পিঠে সেনাপতি বসে আছেন এমন ভাস্কর্য। তিনি সেটি নির্মাণ করতে শুরু করলেও সেই সময় ইতালি আক্রমণ করে বসে ফ্রান্স, তাই সেই প্রজেক্ট পরিত্যক্ত হয়।
মিলানে থাকাকালীন তার মন ঘুরে যায় বিজ্ঞান নিয়ে কাজকর্মে। আর মানবদেহ নিয়েও কাজ শুরু করেন তিনি। ছোটবেলা থেকে পাখি নিয়ে তার একটা অবসেশন ছিল। মানুষ কীভাবে উড়তে পারে সেটা নিয়ে প্রোটোটাইপ যন্ত্র বানানোও শুরু করেন তিনি। তবে লিওনার্দোর কোনো প্রোটোটাইপ বাস্তবের মুখ দেখেনি।
তার নোটবই ভর্তি ছিল অনেক অনেক নোট দিয়ে। মারা যাবার সময় তার ৬,০০০ পাতার বেশি নোট ছিল। তবে একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ধর্ম, ইতিহাস আর সাহিত্য নিয়ে তার বিন্দুমাত্র আগ্রহ ছিল না।
১৫১৩ সালে লিও চলে যান রোমে। সেখানে তিনি ছিলেন ৩ বছর। তাকে অনেক আশা নিয়ে সম্মান দিয়ে সেখানে রাখা হয়, কিন্তু এই ৩ বছর ছিল তার অকর্মণ্য জীবন। তাদের আশানুরূপ কিছুই করেননি তিনি, কেবল নোটবুকে বিজ্ঞান নিয়ে লিখে গেছেন।
এরপর ফ্রান্সের রাজা ফ্রান্সিস দা ফার্স্ট লিওনার্দোকে তার রাজকীয় চিত্রকর ও স্থপতি বানিয়ে দিয়ে তাকে রাজসভায় আহবান করেন। তাকে Cloux-এ একটি বাগান বাড়িও উপহার দেন রাজা। ১৫১৯ সালে ফ্রান্সের সেই বাগানবাড়িতেই মারা যান লিওনার্দো দা ভিঞ্চি।
‘মিরর রাইটিং’ জিনিসটা প্রথম করেছিলেন দা ভিঞ্চি। তিনি তার সকল নোট লিখে রাখতেন মিরর (আয়না) রাইটিংয়ে। কেন, কেউ জানে না। এমন নয় যে, এটা পড়া খুব কষ্ট; আয়নায় ধরলেই এই উল্টো লেখা সোজা হয়ে যেতো। তবুও এমনটা করতেন তিনি। আরেকটি তথ্য, লিওনার্দো দা ভিঞ্চি কিন্তু ছিলেন বাঁ-হাতি।
লিওনার্দো খুব মেধাবী হলেও, কিছু কিছু জিনিস আছে যেগুলো আসলেই তিনি আবিষ্কার করেননি, অথচ তার নাম দিয়ে চালিয়ে দেয়া হয়। যেমন, ড্যান ব্রাউন তার ‘দ্য দা ভিঞ্চি কোড’ বইতে ক্রিপ্টেক্স নামক একটি যন্ত্রের কথা বলেছেন। সেটি মোটেও লিওনার্দোর উদ্ভাবন নয়।
এবার আসা যাক মোনালিসার কথায়। নিঃসন্দেহে পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত চিত্রকর্ম মোনালিসা। একে নিয়ে বলা হয়-
“The best known, the most visited, the most written about, the most sung about, the most parodied work of art in the world.”
ছবির মহিলার নাম Lisa Gherardini। তার স্বামী ফ্রাঞ্চেস্কো লিওকে দিয়ে তার এই ছবিটি আঁকিয়ে নেন। Mona ইতালীয় ভাষায় একটি ভদ্র সম্ভাষণ, Ma Donna (My Lady) এর শর্ট ফর্ম। আর লিসা তো তার নাম। সহজভাবে বলতে গেলে, ছবিটার নাম, ম্যাডাম লিসা।
এ ছবিটির ব্যাকগ্রাউন্ডে কী কী দেখা যায়, সেটি ব্যাপক গবেষণার বিষয়। তবে মোনালিসা সম্পর্কে অন্য কথাও বলা হয়, এটা নাকি লিওনার্দোর ছদ্ম সেলফ পোর্ট্রেইট; আবার এমন কথাও শোনা যায় যে, এটা নাকি তার মায়ের ছবি!
শুরুর দিকে বলা হয়েছে লিওনার্দোর মায়ের কথা। তার ৫ বছর বয়সে মা তাকে ছেড়ে চলে যান। এরপর তিনি বড় হয়ে অনেক খুঁজেছেন মাকে। তিনি কি পেয়েছিলেন তাকে? তার নোটগুলো নিয়ে গবেষণা করতে গেলে ৪ বার ক্যাটেরিনার নাম দেখা যায়।
প্রথম গুরুত্বপূর্ণ নোটটা অনুবাদ করলে দাঁড়ায় এমন-
“16 July/Caterina came, 16 July 1493”
লিওনার্দো কেবল ‘ক্যাটেরিনা এসেছে’ এটুকুই লিখেছেন। ‘মা এসেছেন’ লিখেননি। হতে কি পারে যে, এটা তার মা ছিল? দু’বার কেন ‘১৬ জুলাই’ লিখলেন?
১৪৮২ থেকে ১৫০০ সাল পর্যন্ত লিওনার্দো ছিলেন মিলানে। সুতরাং ১৪৯৩ সালের ঐ তারিখে তিনি মিলানেই ছিলেন। অর্থাৎ মিলানেই তিনি এই ক্যাটেরিনা নামের নারীকে খুঁজে পান।
সর্বশেষ যে ক্যাটেরিনার উল্লেখ পাওয়া যায় তার নোটে, সেটা হলো ক্যাটেরিনার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার খরচের কাগজে। এই ক্যাটেরিনার শেষকৃত্য করতে কত খরচ করেছেন লিওনার্দো, সেটার হিসেব ছিল সেখানে।
লিওনার্দোর নিজের হাতে Mirror Writing এ দেখুন সে হিসেব–
এখানে যেটা লেখা আছে, তার অনুবাদ করলে দাঁড়ায়-
স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি খরচ এখানে করা হয়েছে। বোঝা যাচ্ছে, এ নারীর ব্যাপারে লিও খুবই যত্ন করতেন। এ কারণেই ধারণা করা যায়, সম্ভবত তিনিই তার মা ছিলেন। তবে সেই ‘সম্ভবত’ কথাটা রেখে দিতেই হচ্ছে।
রহস্যের আড়ালেই রয়ে গিয়েছিলেন ইতালির রেনেসাঁর এই অগ্রপুরুষ। তার কোনো স্ত্রী কিংবা সন্তানও ছিল না, যে তার সম্পর্কে বিশেষ কোনো তথ্য দেবে।
তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রহস্য থেকে যাওয়াই ভাল। সব রহস্যের সমাধান হয়ে গেলে রহস্যের আর আকর্ষণ থাকবে কোথায়? মানুষ তাই রহস্য ভালোবাসে, খুব ভালোবাসে!