দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে সোভিয়েত ইউনিয়ন জুড়ে উদ্ভিদবিদদের গবেষণার মূল লক্ষ্য ছিল তাদের মাতৃভূমিকে আসন্ন দূর্ভিক্ষের কবল থেকে রক্ষা করা। ১৯২১ সালে ঘটে যাওয়া দূর্ভিক্ষে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানীর পর তৎকালীন নেতা ভ্লাদিমির লেনিনের পরিকল্পনামতে উদ্ভিদবিদদের একত্রিত করে দূর্ভিক্ষ প্রতিরোধে এমন শস্য বীজ উদ্ভাবন করতে বলা হয়, যা সেই অঞ্চলের তীব্র শীত উপেক্ষা করে সারা বছর খাদ্যের যোগান দিতে পারবে। গবেষণায় নেমে পড়েন সোভিয়েতের উদ্ভিদবিদরা। তাদের নেতৃত্বে আসেন সেকালের সেরা বিজ্ঞানী নিকোলাই ভেভিলভ। সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনার বিজ্ঞানী ভেভিলভ এই দূর্ভিক্ষের দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যান। কিন্তু এরই মধ্যে সোভিয়েতে নতুন করে দূর্ভিক্ষের আশঙ্কা দেখা দিলে তার কাজের সমালোচনায় মেতে উঠেন অনেকে। সেই সমালোচনাকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন তারই শিষ্য বিজ্ঞানী ত্রফিম লাইসিঙ্কো। লাইসিঙ্কো সোভিয়েত বিজ্ঞানীদের সভায় দূর্ভিক্ষ মোকাবেলায় ভার্নালাইজেশন পদ্ধতি ব্যবহারের কথা বলেন। এই পদ্ধতিতে বীজ বপনের আগে সেগুলো বরফ পানিতে ভিজিয়ে শীতল করে নিতে হয়। লাইসিঙ্কোর মতে এই পদ্ধতি অনুসরণেই সোভিয়েতের দূর্ভিক্ষের আকাল দূর হবে।
প্রতিবেদন শেষ হওয়ামাত্র তুমুল করতালিতে লাইসিঙ্কোকে বরণ করে নেন সতীর্থরা। কিন্তু প্রতিবাদ করে বসেন নিকোলাই ভেভিলভ। তিনি সেদিন সভায় দাঁড়িয়ে দৃপ্ত কণ্ঠে জানান, ভার্নাইলাইজেশন হয়তো স্বল্পমেয়াদী সমাধান হতে পারে, কিন্তু দূর্ভিক্ষ প্রতিরোধে এই পদ্ধতি অক্ষম। একজন বিজ্ঞানী হিসেবে তিনি তার যৌক্তিক প্রতিবাদ জানালেও সেদিন তার পাশে কেউ দাঁড়াননি। কারণ, ভেভিলভের পাশে দাঁড়ানো মানে লাইসিঙ্কোর বিরুদ্ধে যাওয়া। আর বিজ্ঞানী লাইসিঙ্কো যে কমরেড স্তালিনের স্নেহভাজন, একথা কারো অজানা ছিল না। কপাল পুড়লো ভেভিলভের। তার ভাগ্যে জুটলো দেশদ্রোহিতার অপরাধে কারাবরণ। অথচ স্তালিনের রাজনৈতিক শুদ্ধি অভিযানের বলি এই বিজ্ঞানীর পুরো জীবন ছিল সম্ভাবনাময়। আজকের প্রবন্ধের আলোচনার কেন্দ্রে তাই এই বিজ্ঞানীর জীবনী।
নিকোলাই ইভানোভিচ ভেভিলভ
নিকোলাই ইভানোভিচ ভেভিলভ ছিলেন উদ্ভিদ জিনতত্ত্বের অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী। বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে তিনি রুশ বিজ্ঞানমহলে উদ্ভিদের জীববৈচিত্র্য এবং জিনগত বিশ্লেষণ নিয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেন। তিনি পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম সুবিন্যস্ত শস্য বীজ ভাণ্ডার গড়ে তোলেন। তার দেখানো পথ ধরে পরবর্তীতে পুরো পৃথিবীতে শস্য বীজ ভাণ্ডার গড়ে ওঠে।
এই মহান বিজ্ঞানীর জন্ম হয়েছিল ১৮৮৭ সালের ২৫ নভেম্বর বর্তমান রাশিয়ার মস্কোতে। তার পিতা ইভান ভেভিলভ এবং মাতা আলেকজান্দ্রা মিখাইলোভনা পেশায় ছিলেন বণিক। চার সন্তান নিয়ে মস্কোতে বেশ সাজানো সংসার ছিল তাদের। ব্যবসার ব্যস্ততার মাঝেও তারা সন্তানদের সর্বোচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত করতে সক্ষম হন। ভেভিলভের অন্য ভাই-বোনরাও সুশিক্ষিত ছিলেন। বড় বোন আলেকজান্দ্রা ছিলেন ডাক্তার। ছোট বোন লিডিয়া একজন অণুজীববিজ্ঞানী এবং ভাই সার্গেই একজন পদার্থবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।
বিজ্ঞানী হয়ে উঠা
ভাইবোনদের অনুপ্রেরণায় ভেভিলভ নিজেও ছোট থেকে বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। তার পছন্দের বিষয় ছিল কৃষি এবং উদ্ভিদ। স্বপ্নকে সত্য করার সঙ্কল্প নিয়ে তিনি ১৯০৮ সালে ভর্তি হন মস্কো কৃষি ইনস্টিটিউটে। সেখানে তিনি উদ্যানবিদ্যা এবং জিনতত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। এখানে অধ্যায়নরত তিনি চার্লস ডারউইনের কালজয়ী বিবর্তনবাদ নিয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তবে মস্কোতে ভেভিলভের শিক্ষকদের প্রায় সবাই তখন লেমার্কের বিবর্তনবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। লেমার্কের তত্ত্ব অনুযায়ী, একটি প্রাণী তার জন্মের পর যেসব বৈশিষ্ট্য অর্জন করে তা বংশ পরম্পরায় সেই প্রজাতির মাঝে নিহিত থাকে। বিপরীত মতবাদে বিশ্বাসী ভেভিলভ কঠোর পরিশ্রম করে স্নাতকে গবেষণা শেষ করেন এবং সফলভাবে নিবন্ধ জমা দেন। স্নাতকে তার গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন বিখ্যাত মৃত্তিকা বিজ্ঞানী দিমিত্রি প্রিয়ানিশনিকভ। স্নাতক শেষে প্রিয়ানিশনিকভের অধীনে সহকারী গবেষক হিসেবে প্রথম কর্মস্থলে যোগ দেন তিনি।
দুই বছর পর তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য বিলেতে পাড়ি জমান। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি জিনতত্ত্বে স্নাতকোত্তর অর্জনের পর লন্ডনের জন ইনস ইনস্টিটিউটে উইলিয়াম বেটসনের অধীনে গবেষণা করেন। উইলিয়াম বেটসন ছিলেন প্রথম বিজ্ঞানী যিনি ‘জেনেটিক্স’ শব্দের ব্যবহার করেছিলেন। গ্রেগর জোহান মেন্ডেলের ঐতিহাসিক তত্ত্বগুলো নিয়ে কাজ করা বিজ্ঞানীদের অগ্রদূত ছিলেন তিনি। ভেভিলভের কৌতূহলী মনে বেটসন আলোর দিশারী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তার পরবর্তী জীবনের গবেষণায় আমরা সেই প্রভাব দেখতে পাই। এখানে তিনি গমের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ইউরোপে অবস্থানকালে তিনি ডারউইন ব্যক্তিগত পাঠাগারে অধ্যায়ন করেন। ফ্রান্সে এবং জার্মানিতে আর্নেস্ট হেকেল, রেজিনাল্ড পানেটসহ বিভিন্ন গবেষকদের সাথে মতবিনিময় করে তিনি প্রচুর জ্ঞান আহরণ করেন। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং সোভিয়েতেই স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
বীজ সংগ্রহের দূরদর্শী নেশা
যুদ্ধের পর রাশিয়াতে ১৯২১ সালে আঘাত হানে দূর্ভিক্ষ। অন্নের অভাব, খরা এবং প্রচণ্ড শীতে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছিল সেবারের দূর্ভিক্ষে। রাশিয়ায় দূর্ভিক্ষকালীন গমের উৎপাদন ছিল অন্যান্য বছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। এই তথ্য তৎকালীন নেতা ভ্লাদিমির লেনিনকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছিল। তিনি এই ক্রান্তিকাল থেকে পরিত্রাণের জন্য শস্য উৎপাদন বৃদ্ধির বিকল্প নেই দেখে বিজ্ঞানীদের দায়িত্ব দিলেন সমাধান বের করার। লেনিন ভেভিলভের বেশ কিছু কাজের সাথে পরিচিত ছিলেন। তিনি তাই নিকোলাই ভেভিলভকে ব্যবহারিক উদ্ভিদবিজ্ঞান ব্যুরোর পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দিলেন। ভেভিলভের নেতৃত্বে শুরু হলো দূর্ভিক্ষ বধের অভিযান। ভেভিলভ তখন ৩৪ বছর বয়সী অভিজ্ঞ গবেষক। তিনি চিন্তা করলেন, স্বল্পমেয়াদী সমাধান দিয়ে হয়তো আসন্ন দূর্ভিক্ষে শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা যাবে, কিন্তু ভবিষ্যতে বিকল্প পন্থা খোঁজার জন্য ফের বিজ্ঞানীদের ঘুম হারাম হবে। তাই তিনি দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের দিকে মনোযোগী হন।
ভেভিলভ বিশ্বাস করতেন, রাশিয়ার শীতে অঙ্কুরোদগমের উপযোগী বীজ প্রস্তুত করতে হলে প্রথমে সেই বীজের বিবর্তন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিতে হবে। এজন্য অনুসন্ধান করতে হবে প্রতিটি শস্যের আদি প্রজন্মকে। এজন্য আদিম পৃথিবীতে সেসব শস্যের সর্বপ্রথম চাষস্থান থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে। ভেভিলভ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য, আফগানিস্তান, উত্তর আফ্রিকা, ইথিওপিয়া প্রভৃতি অঞ্চলে ভ্রমণ করে সেসব আদি বীজ অনুসন্ধান করতে লাগলেন। মাত্র ২ বছরের মাথায় তিনি প্রায় ৬০ হাজার আদি বীজ সংগ্রহ করতে সক্ষম হন। এদের মধ্যে প্রায় ৭ হাজার বীজ আফগানিস্তান থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। সংগৃহীত বীজগুলো দিয়ে লেনিনগ্রাডে গড়ে উঠে সুবিশাল বীজ ভাণ্ডার। এই বীজগুলো নিয়ে গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন বৈশিষ্ট্যযুক্ত বীজ প্রস্তুত করতে থাকেন। ভেভিলভের হাত ধরে দূর্ভিক্ষ, খরার বিরুদ্ধে লড়াই করার নতুন রসদ পায় সোভিয়েত।
লাইসিঙ্কোর আগ্রাসন
ভেভিলভের মতো সুদূরপ্রসারী বিজ্ঞানী তখন কমই ছিলেন। তাই তারা কয়দিন পরেই ভেভিলভকে ভুল বুঝতে শুরু করেন। অনেকের নিকট ভেভিলভের দীর্ঘ গবেষণা এবং বীজ সংগ্রহ যাত্রা স্রেফ সময় এবং অর্থ অপচয় হিসেবে ঠেকে। এই ‘অনেক’-এর তালিকায় ছিলেন স্বয়ং জোসেফ স্তালিন। রাশিয়ায় ফের দূর্ভিক্ষের ঘনঘটা দেখে তিনি শরণাপন্ন হন ভেভিলভের এক শিষ্য ত্রফিম লাইসিঙ্কোর। লাইসিঙ্কো ছিলেন ভেভিলভের মতবাদ ও আধুনিক জিনতত্ত্বের কট্টর সমালোচক। তিনি তার ‘ভার্নালাইজেশন’ পদ্ধতির মাধ্যমে দেশের শস্য সঙ্কট দূর করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন স্তালিনকে।
কিন্তু দমে যাওয়ার পাত্র নন ভেভিলভ। তিনি শত শত বিজ্ঞানীদের সামনে লাইসিঙ্কোর সাথে বিতর্কে লিপ্ত হন। এর পরিণতি শুভ হলো না। ১৯৪২ সালে ইউক্রেন সফর শেষে মস্কো ফিরে এসে তিনি বেশ কয়েকজন সেনা সদস্যের হাতে গ্রেপ্তার হন। ভেভিলভের গ্রেপ্তার হওয়ার মুহূর্তকে বেশ সুচারুভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে প্রামাণ্যচিত্র ‘কসমস: পসিবল ওয়ার্ল্ডস’-এর একটি পর্বে। ভেভিলভ তখন তার গ্রামের ক্ষেতে গমের চারা নিয়ে গবেষণা করছিলেন। সেনা সদস্যরা যখন তাকে গ্রেপ্তার করতে উপস্থিত হন, তখন পশ্চিম আকাশে সূর্য হেলে পড়েছে। ভেভিলভ তাদের অনুরোধ করেন যেন তাকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কাজ করতে অনুমতি দেওয়া হয়। তার সেই অনুরোধ রাখা হয়নি। হয়তো গ্রেপ্তার হওয়ার পূর্বে তিনি তার স্বপ্নের গবেষণাকে শেষবারের মতো অনুভব করতে চেয়েছিলেন। তাকে সেই সুযোগ না দিয়ে দেশদ্রোহিতার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়।
অনাহারে করুণ জীবনাবসান
ভেভিলভের গ্রেপ্তারের পর তার ব্যুরোর বাকি বিজ্ঞানীদের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেন জোসেফ স্তালিন। এর মাধ্যমে সোভিয়েতের বিজ্ঞানীদের মধ্যে উদ্ভিদ জিনতত্ত্ব গবেষণা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। বিশেষ করে, ১৯৩২ সালে ঘটে যাওয়া দূর্ভিক্ষ ছিল জিনতত্ত্বের কফিনে শেষ পেরেক। বিজ্ঞানীরা এর জন্য ভেভিলভের অধিনস্ত বিজ্ঞানীদের দায়ী করে আসছিলেন বেশ কয়েক বছর ধরে। ওদিকে সারাটোভ কারাগারে বন্দী ভেভিলভের উপর অমানুষিক নির্যাতন চালাচ্ছিলো স্তালিন বাহিনী। দূর্ভিক্ষের জন্য তাকে আসামি বানিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়া করানো হয়।
ভেভিলভের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়। সরকার থেকে অপবাদ দেওয়া হয় যে, ভেভিলভ গোপনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করছিলেন। তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ২০ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। কারাগারে অত্যাচারের অংশ হিসেবে তাকে খাবার দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। সোভিয়েতের অনাহার ঘুচানোর স্বপ্ন দেখা ভেভিলভের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ হয় ক্ষুধায় জর্জরিত অবস্থায়। ১৯৪৩ সালের ২৬ জানুয়ারি তাকে কারাগারে মৃত অবস্থায় আবিষ্কার করে কারারক্ষীরা।
মরেও অমর ভেভিলভ
ভেভিলভের করুণ পরিণতির পর তিনি ফের জেগে উঠেন আরও ১২ বছর পর। ১৯৫৫ সালে তৎকালীন সোভিয়েত প্রিমিয়ার নিকিতা ক্রুশ্চেভের উদ্যোগে ভেভিলভের কাজগুলো ফের সোভিয়েতের বিজ্ঞানমহলে আলোচিত হতে থাকে। এর আগে ভেভিলভের নাম উচ্চারণ করতেও ভয় পেতেন বিজ্ঞানীরা। অলিখিত ট্যাবু ছিল তার গবেষণাপত্র। ক্রুশ্চেভের উদ্যোগের পর সোভিয়েতের বুকে নতুন করে যাত্রা শুরু করে উদ্ভিদ জিনতত্ত্ব। বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন ভেভিলভের কাজের উদ্দেশ্য। কয়েক বছরের মাথায় রাশিয়ার বুকে তার নামে বিভিন্ন সৌধ, ইনস্টিটিউট এবং ভাস্কর্য নির্মিত হতে থাকে। এমনকি তার জন্মদিনে বিভিন্ন প্রান্তের বিজ্ঞানীরা শ্রদ্ধাভরে তার নাম স্মরণ করতে থাকেন।
ভেভিলভের সুবিশাল বীজ ভাণ্ডারের আদলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বীজ ভাণ্ডার গড়ে উঠতে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, সুইডেনসহ বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক দেশগুলো তাদের নিজস্ব ভাণ্ডার উদ্বোধন করে।
ভেভিলভ নিজের শেষ সময়টুকু অনাহারে কারাগারের অন্ধকারে কাটিয়েছেন। শিকার হয়েছেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং চক্রান্তের। কিন্তু তার এই ত্যাগ বৃথা যায়নি। এর প্রমাণ এই বীজ ভাণ্ডারগুলো। আজ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, খরা, বন্যা প্রতিরোধ সক্ষম বীজ প্রস্তুত করা হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। উদ্ভিদ জিনতত্ত্ব নিয়ে বিজ্ঞানীরা ব্যাপক গবেষণা করছেন। আর এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে হাজার বছর ধরে বেঁচে থাকবেন বিজ্ঞানী নিকোলাই ইভানোভিচ ভেভিলভ।