অনুপ্রেরণাদায়ী গল্পের কথা শুনলেই মাথায় প্রথম যে ব্যক্তির নাম আসে, তিনি স্কটিশ বীর যোদ্ধা, রাজা রবার্ট ব্রুস। ছোটবেলায় সকলেই রবার্ট ব্রুসের কাহিনী পড়েছেন। প্রতিপক্ষ শত্রুর কাছে বারবার পরাজিত হচ্ছিলেন তিনি। শেষটায় একদম নিরাশ হয়ে, হারানো রাজ্য ফিরে পাবার আশা ছেড়ে দিয়ে এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নেন তিনি। এসময় হঠাৎ করে তিনি দেখতে পান, একটা মাকড়সা সুতা ধরে গুহার মুখ বেয়ে উপরে ওঠার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হচ্ছে। তবু হাল ছাড়ছে না। সাতবার নিষ্ফল চেষ্টার পর অবশেষে সফলতার মুখ দেখল সে। সুতা বেয়ে তরতর করে উপরে উঠে গেল। এই ঘটনা চাক্ষুষ করে বোধোদয় হলো রবার্ট ব্রুসের। তিনি বুঝতে পারলেন, অতীতে পারেননি বলে যে ভবিষ্যতেও পারবেন না, এমন তো কোনো কথা নেই। সুতরাং আরেকবার চেষ্টা করে দেখাই যায়। তাই আবারো শক্তি সঞ্চয় করে যুদ্ধে অবতীর্ণ হলেন তিনি। এবং এবার জয়লাভের মাধ্যমে নিজের প্রিয় রাজ্য ফিরেও পেলেন।
আসলে শুধু রবার্ট ব্রুসের গল্পই নয়, অধিকাংশ অনুপ্রেরণাদায়ী কাহিনীরই একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্ন থাকে: শুরুতে বারবার ব্যর্থ হবেন নায়ক। চলার পথে অসংখ্যবার হোঁচট খাবেন। কিন্তু তারপরও নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকবেন তিনি। ফের উঠে দাঁড়িয়ে সম্মুখপানে এগিয়ে যাবেন। এবং শেষমেষ অনেক সংগ্রাম, সাধনার পর তিনি সাফল্যের মুখ দেখবেন।
তার মানে দাঁড়াচ্ছে, অনুপ্রেরণাদায়ী কাহিনীতে দুইটি বিষয় অবশ্যম্ভাবী; প্রাথমিক ব্যর্থতা ও চূড়ান্ত সাফল্য। কেননা শেষ পর্যন্ত যদি নায়ক জয়ী হন, তাহলেই না তার শুরুর দিকের ব্যর্থতাগুলোকে তাৎপর্যপূর্ণ মনে হয়। কিন্তু তিনি যদি সবসময়ই শুধু ব্যর্থই হয়ে চলেন, তাহলে সেই কাহিনীতে আর অনুপ্রেরণাদায়ী কী আছে, যা পাঠক বা দর্শকের মনে আশা সঞ্চার করবে, তাদের মনে নতুন করে চেষ্টা করার উৎসাহ ও উদ্দীপনা জোগাবে?
কিন্তু আজ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব এমন একটি অনুপ্রেরণাদায়ী কাহিনী, যেটির নেই কোনো সাফল্যমণ্ডিত সমাপ্তি। প্রচলিত অর্থে আমরা যাকে ব্যর্থতা বলে অভিহিত করি, এই কাহিনীর নায়কের ভাগ্যেও শেষ পর্যন্ত তেমন ব্যর্থতাই জুটেছিল। কিন্তু তারপরও এই ব্যর্থতার কাহিনীই হতে পারে ভীষণ রকমের অনুপ্রেরণাদায়ী। ভাবছেন, কীভাবে সম্ভব? তাহলে আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।
প্রথমেই বলে রাখি, আমাদের এই কাহিনী কিন্তু এতটুকুও মনগড়া নয়। শুরু থেকে শেষ অবধি পুরোটাই বাস্তব সত্য। এবং আমাদের কাহিনীর নায়ক একজন জাপানি। তার নাম নোবুকাজু কুরিকি। জন্ম ১৯৮২ সালে, হোক্কাইডোতে। কলেজে পড়া অবস্থায়ই তিনি লক্ষ্য স্থির করেন, পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতচূড়াগুলোতে আরোহণ করবেন।
খুব অল্প সময়ের মধ্যেই কুরিকি জাপানি টেলিভিশনে একজন পরিচিত মুখে পরিণত হন। তিনটি বইও লিখে ফেলেন তিনি। মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবে দারুণ সুনাম হয় তার। প্রতি বছর গড়ে ৮০টি করে লেকচার দিতে থাকেন। এছাড়া ভক্ত-অনুরাগী ও পৃষ্ঠপোষকদের মন জয় করে ফেলেন তিনি নিজের ব্যাপারে খুবই সাদামাটা কিছু বর্ণনার মাধ্যমে, “ছোটবেলায় আমি ছিলাম একজন উদ্দেশ্যহীন, বিচ্ছিন্ন মানুষ। পর্বতারোহণের মাধ্যমে আমি জীবনের নতুন অর্থ খুঁজে পেয়েছি।” সেই অর্থের পূর্ণাঙ্গ উদঘাটনে ব্রতী হন তিনি, এবং নিজের ২৬তম জন্মদিনের আগেই তিনি এশিয়া বাদে বাকি ছয় মহাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতচূড়াগূলো জয় করে ফেলেন।
২০০৪ সালে উত্তর আমেরিকার সর্বোচ্চ পর্বত মাউন্ট ম্যাককিনলি একাই জয় করেন তিনি। এরপর তিনি একে একে সফলভাবে আরোহণ করেন আর্জেন্টিনার মাউন্ট অ্যাকোনকাগুয়া, রাশিয়ার মাউন্ট এলব্রুস ও তানজানিয়ার মাউন্ট কিলিমানজারো (২০০৫), ইন্দোনেশিয়ার কার্স্টেনৎজ পিরামিড (২০০৬), অ্যান্টার্কটিকার মাউন্ট ভিনসন (২০০৭)।
বাকি সব মহাদেশের সর্বোচ্চ চূড়াগুলো জয় করে ফেললেও, এশিয়া ও গোটা পৃথিবীরই সর্বোচ্চ পর্বত যে মাউন্ট এভারেস্ট, সেটি কিছুতেই জয় করতে পারছিলেন না কুরিকি। এর পেছনে অবশ্য বিশেষ কারণ আছে। অন্যান্য বেশিরভাগ মানুষই যেখানে এভারেস্ট জয়ের জন্য দুইটি ‘স্ট্যান্ডার্ড’ রুটের মধ্যে একটি বেছে নেয়, কুরিকি ইচ্ছা করেই ‘ননস্ট্যান্ডার্ড’ রুট বেছে নিতেন, যেগুলোতে থেকে সাফল্য এসেছে মাত্র ৩ শতাংশ, কিন্তু মৃত্যু ঘটেছে ২৮ শতাংশ।
তাও আবার তিনি এভারেস্ট বিজয়ের চেষ্টা করতেন সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গভাবে, কোনো সাপ্লিমেন্টাল অক্সিজেন ছাড়াই, খুবই সীমিত রসদ নিয়ে। শুধু এটুকুই নয়। তিনি এভারেস্টে আরোহণের চেষ্টা করতেন ইন্টারনেটে তার অভিজ্ঞতার ধারাবিবরণী লাইভ স্ট্রিমিং করে। কেননা তিনি ছিলেন ‘অভিজ্ঞতা সবার সাথে ভাগ করে নেয়ায়’ বিশ্বাসী। আর সবচেয়ে বড় বিষয়, তিনি তার বেশিরভাগ চেষ্টাই করতেন শরৎকালে, যে সময়টা এভারেস্ট আরোহণের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর, এবং সেজন্য এভারেস্টের আশপাশ অনেকটাই জনমানবশূন্য হয়ে যায়।
কুরিকি ইচ্ছাকৃতভাবেই শরৎকালটিকে বেছে নিতেন, কারণ তিনি চাইতেন পর্বতের সাথে নির্ভেজাল, পবিত্রতম সংযোগ, যা আশেপাশে অন্য কোনো মানুষের উপস্থিতিতে সম্ভব ছিল না। সাথে অক্সিজেন না নেয়ার কারণও একই। অন্য কোথাও থেকে কৃত্রিম অক্সিজেন গ্রহণ করতে থাকলে যে তার পক্ষে পর্বতকে অনুভব করা সম্ভব নয়! এজন্য তিনি নিজেই বলতেন, “আমি যখন আরোহণ করব, তখন আমি পর্বতকে অনুভব করতে চাই।”
বাকি ছয় মহাদেশের সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহণ শেষ করে, ২০০৯ সালে কুরিকি লক্ষ্য স্থির করেন এভারেস্ট বিজয়ের। সে বছর সেপ্টেম্বর মাসে এভারেস্টের তিব্বত পার্শ্ব থেকে আরোহণের চেষ্টা করেন তিনি। এবং পরের বছর নেপালের দিক থেকে। কিন্তু দু’বারের কোনোবারই ৮,০০০ মিটারের বেশি উঠতে পারেন না। তৃতীয় প্রচেষ্টা চালান ২০১১ সালের আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত, নেপালের দিক থেকেই। কিন্তু এবার ৭,৯০০ মিটারও উঠতে পারেন না।
২০১২ সালের অক্টোবরে চতুর্থ প্রচেষ্টাটি ছিল সবচেয়ে ভয়ংকর। সেবার চূড়ার প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে যান তিনি। ইন্টারনেটে লাইভ স্ট্রিমিংয়ে ঘোষণাও দিয়ে দেন যে সফলতার দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছেন। কিন্তু এরপরই শুরু হয় ঝড়ো হাওয়া। সেই হাওয়ার তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, পা পিছলে অনেকটা নিচে পড়ে যান তিনি। তবে ভাগ্যক্রমে পেয়ে যান একটি পাথর। সেটির পেছনে যে গর্ত রয়েছে, পর্বতারোহীদের কাছে সেটি একটি ইমার্জেন্সি শেলটার, যার নাম তারা রেখেছে ‘স্নো-হোল’। দুইদিন সেই স্নো-হোলে পড়ে থেকে উদ্ধারকারীদের অপেক্ষা করতে থাকেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তাকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয় বটে, কিন্তু দুইদিন -২০° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় অবস্থান করার ফলে তিনি ফ্রস্টবাইটের শিকার হন, হাতের দশটি আঙ্গুলের মধ্যে নয়টিই হারান।
পরবর্তী কিছুদিন হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে সাম্প্রতিক ব্যর্থতার কথা চিন্তা করে পুনরায় পর্বতারোহণের ইচ্ছাও হারিয়ে ফেলেন কুরিকি। তবে বাবার সাথে ফোনে কথা বলার পর আবার মানসিক শক্তি ফিরে পান তিনি। ফোন ধরার পর প্রথম যে কথাটি বাবা বলেছিলেন, তা হলো- “অভিনন্দন!” তিনি জানতে চান, “কীসের জন্য?” তখন বাবা বলেন, “কারণ তুমি বেঁচে ফিরে এসেছ।” বাবার মুখে এ কথা যেন টনিকের মতো কাজ করে। কুরিকি বুঝতে পারেন, এভারেস্ট জয় তো তার প্রধান স্বপ্ন নয়। বরং তার মূল লক্ষ্য হলো সকল নেতিবাচকতার বাধা অতিক্রম করা। ব্যর্থ হয়ে হাল ছেড়ে দিলে সেই লক্ষ্য অতিক্রম হবে কীভাবে!
দুই বছর পর, ২০১৪ সালে তাই প্রবল বিক্রমে ফিরে আসেন কুরিকি। এবার তিনি জয় করেন হিমালয়ের ব্রড পিক। এটি বিশ্বের ১২তম সর্বোচ্চ পর্বত। এটি জয়ের পর নতুন করে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করতে থাকেন তিনি। আবারো শুরু করেন এভারেস্ট বিজয়ের প্রচেষ্টা। ২০১৫ সালে, এভারেস্ট বেজ ক্যাম্পে ধ্বস নেমে ১৮ জনের মৃত্যুর কয়েক মাস পরে, তিনি আরোহণ শুরু করেন, এবং এবারও চূড়ার প্রায় কাছাকাছিই পৌঁছে যান। কিন্তু এরপর ঘন তুষারের কারণে তাকে পিছু হটতে হয়। পরের দুই বছর, অর্থাৎ ২০১৬ ও ২০১৭ সালেও আবহাওয়াজনিত কারণে মাঝপথেই থেমে যেতে হয় তাকে। এবং ২০১৮ সালের বসন্তে তিনি শুরু করেন তার সর্বশেষ প্রচেষ্টা।
শেষবারের প্রচেষ্টাটি অনেকের মতে একটু বেশিই হঠকারী ছিল। কারণ এবার কুরিকি সিদ্ধান্ত নেন এভারেস্টের দক্ষিণ-পশ্চিম মুখ বরাবর সরাসরি আরোহণের। এই রুট ধরে অক্সিজেন ছাড়া ইতিপূর্বে কেবল একজন মানুষই চূড়ায় পৌঁছাতে পেরেছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তার তিন সঙ্গী সমেত মারা যান। এদিকে কুরিকি মাত্র কিছুদিন আগেই প্রচণ্ড জ্বরে ভুগেছেন। এখনও তার গায়ে সেই জ্বরের রেশ রয়ে গেছে।
তাহলে কেন তিনি এমন হঠকারী পরিকল্পনা আঁটলেন? তার স্বদেশী পর্বতারোহী কেন নোগুচির মতে, “একটা পর্যায়ে গিয়ে, পর্বতের চূড়ায় পা রাখা আর তার লক্ষ্য ছিল না। তিনি কেবল চাইছিলেন কঠিনতম পরিস্থিতিতে নিজেকে উন্মুক্ত করতে, এবং সেই অভিজ্ঞতা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে।”
কুরিকি নিজেও জানতেন, তিনি কী ভীষণ ঝুঁকি নিতে চলেছেন। আর সে কথা তিনি ফেসবুকে একটি পোস্টে শেয়ারও করেন। তিনি লেখেন,
“পর্বতের একটি নিজস্ব যুক্তি থাকে। সাধারণ মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হয়তো কোনোদিন সেটি বুযঝতে পারবে না। পর্বতারোহণের জগৎটি খুবই পাগলাটে। আপনি যদি পাগল না হন, তাহলে পর্বত আপনার জন্য না। এবং আরেকটি কথা আমি সবাইকে বলে যেতে চাই: দয়া করে ওই পাগলামিটাকে যত্ন করে লালন করুন, যেটি আমাদের সকলের ভিতরেই আছে।”
সবাইকে যে পাগলামির আহ্বান জানিয়েছেন, সেই পাগলামিটা কুরিকি নিজেও করলেন। পা বাড়ালেন অসম্ভবের পথে। উদ্দেশ্য কেবল একাকী সাফল্য লাভ নয়, নিজের ব্যর্থতা সবার সাথে ভাগ করে নেয়াও। এভারেস্ট বিজয়ে নিজের অষ্টম প্রচেষ্টার এক পর্যায়ে, ২১ মে নিজের টিমকে জানালেন, অসুস্থ বোধ করছেন তিনি, এবং এবারো এভারেস্ট জয় না করেই নেমে আসছেন। কিন্তু এই বার্তা পাঠানোর কিছুক্ষণের তার সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল তার টিমের। পরবর্তীতে ওইদিনই উদ্ধার করা হলো তার দেহ। প্রাণের অস্তিত্ব নেই সেই দেহে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যা বোঝা গেল, অন্তত ১০০ মিটার উপর থেকে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। এবং এভাবেই সমাপ্তি ঘটল হার-না মানা, অকুতোভয় বীর যোদ্ধা কুরিকির অবিশ্বাস্য যাত্রার।
কিন্তু সবকিছুর কি এত সহজেই সমাপ্তি ঘটে? এই যে ৩৬ বছরের জীবনে এত এত চ্যালেঞ্জ নিলেন কুরিকি, সেগুলো কি নিছকই অর্থহীন? শেষ পর্যন্ত মানবসৃষ্ট তথাকথিত সফলতার দেখা না পাওয়ায় তার লড়াই কি অর্থহীন হয়ে গেছে? মোটেই না। সাধারণের চোখে কুরিকির সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে ঠিকই, কিন্তু জীবনযুদ্ধে তাকে বিজিত বলার কোনো উপায় নেই। এভারেস্ট বিজয় সম্ভব হয়নি তার পক্ষে, এ কথা সর্বৈব সত্য; কিন্তু তিনি যে আট-আটবার এভারেস্টে আরোহণের মানসিক দৃঢ়তা সাহস দেখিয়েছেন, প্রতিবার বিফল হওয়ার পরও ভেঙে না পড়ে নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, এজন্য তাকে কুর্নিশ জানাতেই হবে!
কুরিকির জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়তো দু’-তিনবার ব্যর্থ হয়েই হার মেনে নিত। কিন্তু তিনি যে সম্পূর্ণ অন্য ধাতুতে গড়া। তার অভিধানে হার বলে কোনো শব্দের অস্তিত্ব ছিল না। তাই তিনি শেষ পর্যন্ত মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু হেরে যাননি। উইলিয়াম শেক্সপিয়ার সম্ভবত কুরিকির মতো মানুষদের কথা চিন্তা করেই জুলিয়াস সিজারের মুখ দিয়ে বলিয়েছিলেন,
“কাপুরুষেরা মৃত্যুর পূর্বে বহুবার মৃত্যুবরণ করে, তবে সাহসীরা একবার ব্যতীত আর কখনো মৃত্যুর স্বাদ পায় না।”
সত্যিই তাই, কুরিকি ভীরু-কাপুরুষ ছিলেন না। কেউ কেউ তাকে খ্যাপাটে, উন্মাদ বলে মনে করতে পারেন, কিন্তু মূলত তিনি ছিলেন সাহসিকতার অনন্য প্রতীক। আর সেজন্যই, কুরিকির জীবনের বিয়োগান্তক সমাপ্তির পরও, তার জীবনকাহিনী অমর দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে সেইসব মানুষদের কাছে, যারা কখনো ফলাফল কী হবে, তা ভেবে মাথা কুটে মরে না, বরং শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যায়। কারণ দিনশেষে জীবনে গন্তব্য নয়, যাত্রাটাই মুখ্য। আর সেই যাত্রার অন্যতম সেরা যাত্রী কুরিকি।
চমৎকার সব বিষয়ে রোর বাংলায় লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কে: roar.media/contribute/