দক্ষিণ আমেরিকার বুক থেকে স্প্যানিশদের হটিয়ে দেওয়ার এক অবিস্মরণীয় সংগ্রামের সবে হলো শুরু। গত পর্বের আলোচনায় আমরা পরিচিত হয়েছি একজন সাইমন বলিভারের সাথে, যার বিপ্লবের ডাকে মুক্ত হয়েছে জন্মভূমি ভেনেজুয়েলা। তিনি গঠন করেছেন তার স্বপ্নের দেশ গ্রান কলম্বিয়া। কিন্তু তার সংগ্রাম তখনও শেষ হয়নি। তার স্বপ্ন তখনও পূরণ হয়নি। তখনও কয়েকটি দেশে স্প্যানিশদের রাজত্ব কায়েম ছিল। তার উপর দক্ষিণ আমেরিকাবাসী তখনও ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি। তাই ভেনেজুয়েলা বিজয়ের পর একদণ্ড বিশ্রাম নেননি বলিভার। তিনি যাত্রা করেছেন বাকি অঞ্চলের স্বাধীনতা অর্জনে মহৎ সংগ্রামের নেতৃত্ব দিতে।
গত পর্বের লিংক: সাইমন বলিভার: স্বাধীন দক্ষিণ আমেরিকার স্বপ্নদ্রষ্টা (১ম পর্ব)
সান মার্টিন এবং বলিভার
দক্ষিণ আমেরিকার উত্তরাংশে স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন সাইমন বলিভার। তেমনি দক্ষিণাংশে বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন আর্জেন্টাইন বিপ্লবী হোসে ডি সান মার্টিন। ইতোমধ্যে চিলি এবং আর্জেন্টিনা থেকে উপনিবেশিকদের বিতাড়িত করেছেন সান মার্টিন। সাইমন বলিভারের গল্পে এই ব্যক্তির আগমন ঘটে পেরু অভিযানের সময়ে। সান মার্টিন দক্ষিণ থেকে অভিযান চালিয়ে ইতোমধ্যে পেরুতে প্রবেশ করেছিলেন। তিনি রাজধানী লিমাতে ভাইসরয় হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। কিন্তু পেরুর উঁচু ভূমিতে তখনও স্প্যানিশ রাজত্ব চলছিল। সান মার্টিন বহু চেষ্টা করেও স্প্যানিশদের এখানে পরাজিত করতে পারছিলেন না।
ওদিকে সাইমন বলিভার গ্রান কলম্বিয়াকে স্বাধীন করার পর নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইতোমধ্যে স্বীকৃতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে দেশটি। এবার তিনি পেরু থেকে স্প্যানিশদের তাড়িয়ে দিতে ফৌজ গঠন করলেন। সাইমন বলিভারের নাম তখন পুরো মহাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সান মার্টিন বুঝতে পারলেন, পেরুর স্বাধীনতার জন্য বলিভারের সহযোগিতার বিকল্প নেই।
১৮২২ সালের ২৬ জুলাই ইকুয়েডরের বন্দর নগরী গুয়ায়কুইলে এই দুই কিংবদন্তির সাক্ষাৎ হয়। কী কথা হয়েছিল এই দুই সেনানায়কের মধ্যে? এর উত্তর কেউ জানে না। আশ্চর্যজনকভাবে তাদের মধ্যকার আলোচনার কোনো বিশদ রেকর্ড বা নথি নেই। কিন্তু আলোচনা শেষে সান মার্টিন পেরুতে ফিরে গিয়ে ভাইসরয় পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং নির্বাসনে চলে যান। ইতিহাসবিদরা মনে করেন, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন বলিভার বাহিনী সামরিক, রাজনৈতিক এবং মনস্তত্ত্বিকভাবে তার বাহিনী থেকে বহুগুণে এগিয়ে রয়েছে। পেরুর স্বাধীনতা লাভ করার জন্য বলিভার যথেষ্ট। তার উপস্থিতি উল্টো বলিভারের আদর্শের সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে। মূলত, বলিভারের সাথে বেশ কয়েকটি ব্যাপারে মতবিরোধ ছিল সান মার্টিনের। কিন্তু পেরুর স্বাধীনতার কথা ভেবে তিনি পিছু হটে গেলেন।
পেরুর স্বাধীনতা অর্জন
সান মার্টিনের প্রস্থানের পর ১৮২৩ সালের সেপ্টেম্বরে লিমায় এসে পৌঁছান বলিভার। উঁচুভূমিতে থাকা স্প্যানিশদের আক্রমণ করা দুরূহ ছিল। তাই তিনি পর্যায়ক্রমে অস্ত্র, রসদ এবং লোকবল জড়ো করতে থাকেন। এক বছর ধরে পর্যবেক্ষণের পর ১৮২৪ সালে তিনি জুনিনের যুদ্ধে প্রথমবারের মতো স্প্যানিশদের মোকাবেলা করেন। যুদ্ধে উঁচুভূমিতে থাকা বাহিনীরা সাধারণত সুবিধা পেয়ে থাকে। কিন্তু বলিভারের সামনে দাঁড়াতেই পারলো না স্প্যানিশরা।
বলিভার যুদ্ধের বাকি অংশের ভার তার সেনাপতি সুক্রের হাতে ন্যস্ত করেন। তখন পেরুর ভাইসরয় ছিল লা সারনা। প্রায় ৯,৩০০ জনের সুসজ্জিত স্প্যানিশ বাহিনী সুক্রেকে আক্রমণ করে পিছু হটিয়ে দেয়। এরপর সুক্রেকে তাড়া করতে থাকেন লা সারনা। পেরুর আয়াকুচো উপত্যকায় সুক্রে বাহিনীকে অবরোধে ফেলতে সক্ষম হয় স্প্যানিশরা। স্প্যানিশ গোলন্দাজদের ২৪টি ভারী অস্ত্রের বিপরীতে বিপ্লবীদের ছিল মাত্র একটি ৪-পাউন্ডার বন্দুক। তাছাড়া সৈন্যবলেও এগিয়ে ছিল স্প্যানিশরা। এমতাবস্থায় পরাজয়ের তিক্ত ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়েছিল সুক্রে শিবিরে।
জেনারেল সুক্রে এই সময়ে তার সৈন্যদের উদ্দেশ্যে বলেন,
“তোমাদের প্রচেষ্টার উপর পুরো আমেরিকার (দক্ষিণ আমেরিকা) ভাগ্য জড়িয়ে আছে”।
সুক্রের এই কথা শুনে এক লেফটেন্যান্ট নিজের ঘোড়াকে হত্যা করেন। তারপর অনুসারীদের বলেন,
“দেখো আমাদের পালাবার কোনো পথ বা উপায় নেই। তাই আমাদের শুধু একটি পথ খোলা, একসাথে যুদ্ধ করা”।
দুই নেতার কথায় উজ্জীবিত সৈন্যরা নিজেদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লো স্প্যানিশদের উপর। গোলন্দাজদের বিরুদ্ধে বন্দুক আর বেয়োনেট দিয়ে আক্রমণ করে ২ হাজার স্প্যানিশ সেনাকে বধ করেছিল বিপ্লবীরা। ছিনিয়ে নিয়েছিল ১৫টি কামান। পরাজয়ের মুখে বিপ্লবীদের এমন ভয়াল আক্রমণের জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলনা স্প্যানিশরা। বড় বাহিনী নিয়েও শেষপর্যন্ত সুক্রের কাছে আত্মসমর্পণ করলো তারা। সেদিন পেরুর বুকেও নেমে আসলো স্বাধীনতার সুবাতাস।
নতুন দেশটি বলিভিয়া
পেরু এবং পেরুর উঁচুভূমি (যা আপার পেরু বা উঁচু পেরু নামে পরিচিত ছিল) স্বাধীনতা লাভ করলো। সাইমন বলিভারের নিকট পৌঁছে গেলো আরেকটি সফল বিপ্লবের সংবাদ। স্বাধীনতা লাভের পর আপার পেরু তাদের নাম বদলে ফেলতে চাইলো। নতুন নাম হবে তাদের মুক্তিদাতা মহানায়ক সাইমন বলিভারের নামের সাথে মিলিয়ে। সর্বজন সমর্থনে নাম হয়ে গেলো ‘বলিভিয়া’। নব্য রাষ্ট্রের সংবিধান প্রণয়ন করলেন বলিভার। এখানেও তিনি দেখালেন তার একনায়কোচিত মনোভাব। ঠিক যেমনটি তিনি দেখেছিলেন নেপোলিয়নের মাঝে।
বলিভিয়ার আমৃত্যু রাষ্ট্রপ্রধান হলেন সাইমন বলিভার। খ্যাতি ও ক্ষমতার চূড়ান্তে ছিলেন তিনি। ক্যারিবিয় দ্বীপপুঞ্জ থেকে আর্জেন্টিনা-বলিভিয়া সীমান্ত পর্যন্ত তার নাম উচ্চারিত হতে থাকে সম্মানের সাথে। সাইমন বলিভার যে বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন, তা অনেকটাই পূরণ হয়ে গেছে। তিনি মহাদেশ থেকে স্পেনের ঝাণ্ডা উপড়ে ফেলেছেন। কিন্তু তার ঐক্যবদ্ধ আমেরিকার স্বপ্ন পূরণ তখনও বাকি ছিল।
হিস্পানিক আমেরিকান রাষ্ট্রগুলোকে এক করতে এক মিত্রচুক্তি প্রণয়ন করলেন সাইমন বলিভার। কলম্বিয়া, পেরু, মেক্সিকো, মধ্য আমেরিকা এবং রিও ডি লা প্লাটার সংযুক্ত প্রদেশ থেকে প্রতিনিধিরা এই ঐক্যচুক্তি স্বাক্ষর করেন। ১৮২৬ সালে একটি সাধারণ কংগ্রেস গঠন করা হয় এবং পানামাকে বলিভিয়ার এখতিয়ারভুক্ত করা হয়। কিন্তু একটি সংযুক্ত মহাদেশের ধারণার জন্য পৃথিবী তখনও প্রস্তুত ছিল না। তাই তার ধারণার সাথে সমর্থন দিল মাত্র ৪টি দেশ– কলম্বিয়া, পেরু, মধ্য আমেরিকা এবং মেক্সিকো।
পুরো মহাদেশের জন্য একটি কেন্দ্রীয় সেনা এবং নৌবাহিনী গঠনের প্রস্তাবও করা হয়েছিল। কিন্তু নীতিগত বিরোধ থেকে বলিভারের এই স্বপ্ন যেন অধরাই রয়ে যায়। পরিস্থিতি এমন হয়ে যায় যে, ঐক্যের বদলে পুরো মহাদেশে প্রকট বিরোধ সৃষ্টি হয়।
গৃহযুদ্ধের কবলে বলিভারের স্বপ্ন
বলিভারের গ্রান কলম্বিয়াতে তখন বিরাজ করছে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। ভেনেজুয়েলার শাসক ছিলেন হোসে আন্তোনিও পায়েজ এবং নিউ গ্রানাডা অংশে ছিলেন ফ্রান্সিসকো ডি পাউলা সান্তান্দার। এই দুজনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। বিরোধের চূড়ান্ত পর্যায়ে দুই অঞ্চলের মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে যায়। এর ফলে পুরো গ্রান কলম্বিয়ার উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে লিমা থেকে ছুটে আসলেন সাইমন বলিভার। তিনি বোগোতায় পৌঁছে সান্তান্দারের সাথে দেখা করেন।
সান্তান্দার তখন সংবিধান স্থগিত করে দিয়েছিলেন এবং তিনি বলিভারকে অনুরোধ করলেন যেন পায়েজকে বিদ্রোহী হিসেবে শাস্তি দেওয়া হয়। কিন্তু বলিভার কোনোভাবেই গ্রান কলম্বিয়ার ঐক্য নষ্ট করতে আগ্রহী ছিলে না। তিনি পায়েজের সাথে সমঝোতা করার উপর জোর দিয়েছিলেন। ১৮২৭ সালে পায়েজের সাথে দেখা করেন তিনি। মহানায়কের সামনে নিজেকে সোপর্দ করে দিয়ে আনুগত্য প্রকাশ করেন পায়েজ।
অবস্থা স্থিতিশীল করতে বলিভার নতুন করে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভেনেজুয়েলানদের দাবি পূরণ করার আশ্বাস দেন। তিনি নিজেকে গ্রান কলম্বিয়ার একনায়ক ঘোষণা করেন এবং নির্বাচনের ডাক দেন। নির্বাচনে সান্তান্দার সমর্থিত দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। এই কোন্দলের মধ্যে দিয়ে গ্রান কলম্বিয়া থেকে আলাদা হয়ে পড়ে পেরু।
সাইমন বলিভার আশা করেছিলেন সংবিধান সংস্কারের পর তিনি তার রাষ্ট্রপতি পদমর্যাদা আরও শক্তিশালী করতে সক্ষম হবেন। কিন্তু লিবারেলদের সাথে তার মতবিরোধ হয়। ২৫ সেপ্টেম্বর একদল লিবারেল ঘাতক সাইমন বলিভারের রাষ্ট্রীয় কার্যালয়ে আক্রমণ করে বসে। আততায়ীর ছোরা থেকে সেদিন বলিভারকে বাঁচিয়েছিলেন ম্যানুয়েলা সাইয়েঞ্জ। সেদিন তার উপস্থিত বুদ্ধিতে প্রাণে বেঁচে গেলেও তার স্বপ্নের যেন মৃত্যু ঘটলো। তিনি মানসিক এবং শারীরিকভাবে ভেঙে পড়লেন। এর মধ্যে খবর এলো ইকুয়েডর আক্রমণ করেছে পেরু।
তখন ইকুয়েডরের শাসক ছিলেন সুক্রে। তার সমর কৌশলের কাছে পেরুভিয়ানরা বধ হওয়ায় ইকুয়েডরের স্বাধীনতা রক্ষা পায়। এর কিছুদিন পর বলিভারের অন্যতম বিশ্বস্ত জেনারেল হোসে মারিয়া করডোবা তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসে। বলিভার শক্ত হাতে এই বিদ্রোহ দমন করেন। এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ভেঙে যায় গ্রান কলম্বিয়া। ১৮২৯ সালে গ্রান কলম্বিয়া থেকে আলাদা হয়ে যায় ভেনেজুয়েলা।
কিংবদন্তির মহাপ্রয়াণ
একের পর এক বিদ্রোহ এবং যুদ্ধ দেখে সাইমন বলিভার বুঝতে পেরেছিলেন, তার আদর্শ এবং ক্ষমতাই আমেরিকা ভাঙনের অন্যতম কারণ। তাই তিনি ১৮৩০ সালের ৮ মে বোগোতা ত্যাগ করে ইউরোপের দিকে পাড়ি জমান। আটলান্টিকের তীরে পৌঁছে তিনি জানতে পারেন, তার উত্তরসূরি সুক্রে কিছুক্ষণ আগে আততায়ীর হাতে প্রাণ হারিয়েছেন। তাৎক্ষণিক শোকে মূহ্যমান বলিভার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যান। তার ইউরোপ যাত্রা বাতিল করা হয়। তখন এক স্প্যানিশ ভক্ত তাকে সান্তা মারিয়া অঞ্চলে আমন্ত্রণ জানান। ভক্তের আমন্ত্রণে সারা দিয়ে সেখানে যাত্রা করেন তিনি। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, যে স্প্যানিশদের তাড়িয়ে তিনি মহাদেশের বুকে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছেন, তার জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ হয়েছিল এক স্প্যানিশের নিবাসে। যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে ১৮৩০ সালের ১০ ডিসেম্বর তিনি সান্তা মারিয়াতে মৃত্যুবরণ করেন।
ধন-সম্পদের প্রাচুর্যে জন্ম নেওয়া সাইমন বলিভারের মৃত্যু হলো নিঃস্ব অবস্থায়। তাকে প্রথমে সান্তা মারিয়ায় সমাধিস্ত করা হয়। ১৮৪২ সালে তার মরদেহ জন্মভূমি কারাকাসে সরিয়ে নেওয়া হয়। ১৮৭৬ সালে পুনরায় তাকে ভেনেজুয়েলার একটি সমাধিসৌধে দাফন করা হয়। প্রায় ১০০ বছরের বেশি সময় এখানে শায়িত ছিলেন তিনি। তারপর ২০১০ সালে তার মরদেহ পুনরায় খনন করে তোলা হয়। উদ্দেশ্য ছিল তার দেহে বিষক্রিয়ার আলামত সংগ্রহ করা। কিন্তু কোনো আলামত না পাওয়ার পর তাকে ফের দাফন করা হয়।
সাইমন বলিভার তার জীবদ্দশায় মোট ৬৯৬টি যুদ্ধ করেছেন। প্রতিটি যুদ্ধে দুই পক্ষে গড়ে প্রায় ১,৪০০ সৈনিক যুদ্ধ করেছিল। যুদ্ধেক্ষেত্রে সৈনিকদের উজ্জীবিত রাখা, অস্ত্রের সঠিক ব্যবহার করা এবং ভৌগোলিক অবস্থার পূর্ণ সুযোগ নেওয়ার জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন। তাছাড়া বিপদের মুখে উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে প্রাণে বেঁচে আসার মতো নজির রয়েছে তার। একবার তাকে ১৫ জন সৈনিক ঘিরে ফেলেছিল। নিশ্চিত মৃত্যু জেনে তিনি চিৎকার করে তার সৈনিকদের চারপাশ থেকে আক্রমণ করতে বলেন। আসলে তখন আশেপাশে কোনো সৈনিক ছিল না। কিন্তু স্প্যানিশরা তার হুঙ্কারে এবং সৈনিকদের আক্রমণের ভয়ে পিছু হটে যায়।
অসামান্য নেতৃত্বের জন্য তাকে দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে প্রতিভাবান ব্যক্তিত্ব ধরা হয়। তার মতো বহুগুণধারী নেতা ইতিহাসে খুব কম দেখা যায়। তার আদর্শ, সুদূরপ্রসারী চিন্তা এবং নিজ মাতৃভূমিকে স্বাধীন করার স্পৃহা দেখে জর্জ ওয়াশিংটন পরিবারের পক্ষ থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছিল। সেখানে তাকে ‘নতুন বিশ্বের ২য় ওয়াশিংটন’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। বলিভারের কলেবরের একজন নেতাকে নিয়ে বর্তমানে তেমন একটা আলোচনা হয় না। কিন্তু যতবার মুক্তিকামী বিপ্লবীদের গণজোয়ারে ভেঙে যাবে পরাধীনতার শেকল, ততবার বেঁচে উঠবেন সাইমন বলিভার। ততদিন তিনি বিরাজ করবেন স্বাধীনতাকামীদের চেতনায়।