ষোড়শ শতকের মধ্যভাগে, খুব সম্ভবত ১৫৫২ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের ডেভনে জন্মগ্রহণ করেন বিখ্যাত ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ, অনুসন্ধানকারী এবং কবি স্যার ওয়াল্টারে র্যালি। তার বাবা ওয়াল্টার র্যালি অব ফারদেল এবং মা ক্যাথেরিন উভয়েই সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান হওয়াতে শৈশব থেকেই অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার মাঝে বড় হন র্যালি। তার নামের শেষাংশ নিয়ে রয়েছে বিস্তর মতপার্থক্য। ‘র্যালি’, ‘রেলেই’, ‘রালি’ কিংবা ‘রলি’, ভিন্ন ভিন্ন উৎসে ভিন্ন ভিন্ন ঢঙে লেখা হয় তার নামের উচ্চারণ। তবে আধুনিককালে র্যালিই গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। তার শৈশব এবং শিক্ষাজীবন সম্পর্কে প্রায় কোনো তথ্যই পাওয়া যায় না।
যা হোক, গোঁড়া প্রোটেস্ট্যান্ট পরিবারের সন্তান র্যালির লেখাপড়া যতটুকুই হয়েছিল, তা ছিল কঠোর ধর্মীয় লেখাপড়া। তার জীবনের প্রথম ২০ বছর সম্পর্কে খুব কম তথ্যই আমারা জানি, তাই নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারা যায় না। তারই গ্রন্থ ‘হিস্ট্রি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ থেকে জানা যায় যে তিনি অক্সফোর্ডের ওরিয়েল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু পড়ালেখা শেষ না করেই কলেজ ত্যাগ করে ফ্রান্সে পাড়ি জমান, সে সময় চলমান দাঙ্গায় হুগুয়েনটদের সহায়তা করার জন্য। এটা মোটামুটি নিশ্চিত যে তিনি প্যারিস সহ পুরো ফ্রান্সে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ‘সেন্ট বার্থেলোমেউ গণহত্যা’র সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনিও ছিলেন ফ্রান্সের ইতিহাসের সেই কালো অধ্যায়ের সাক্ষী।
এই ঘটনার সূত্রেই পরিবার থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন র্যালি। তার সৎভাই হামফ্রে গিলবার্ট ছিলেন ব্রিটিশ নৌবাহিনীর সদস্য যিনি পদত্যাগ করে বাণিজ্য শুরু করেন। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কাজের জন্য ছন্নছাড়ার মতো ঘুরতে থাকা র্যালি তার সৎভাইয়ের সাথে নৌ বাণিজ্যে যোগ দিলেন। স্প্যানিশদের বিরুদ্ধে একটি বিশেষ বাণিজ্যিক অভিযানে গিলবার্টের সঙ্গী হন র্যালিও। অভিযানটি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়, জাহাজটি মাঝ আটলান্টিকে ডুবে যায়। দু’ভাই কোনোক্রমে প্রাণ নিয়ে ফিরেছিলেন সেবার। কিন্তু দমে না গিয়ে আবারো অভিযানে বেরোলেন গিলবার্ট। এবারো সঙ্গী হলেন র্যালি এবং সঙ্গী হলো ব্যর্থতা।
পরপর দুটি অভিযানে ব্যর্থ হয়ে হঠাৎ করেই অর্থনৈতিক সংকট গ্রাস করলো গিলবার্টকে। ফলে র্যালির পক্ষে সেখানে আর কাজ করা সম্ভব হলো না। তিনি ভবঘুরে হয়ে ঘুরতে লাগলেন এবং লন্ডনের অলিগলিতে ‘ডুয়্যাল’ বা দ্বন্দ্বযুদ্ধে অংশ নিতে লাগলেন। এসব করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার জেলেও যেতে হয়েছে তাকে। কিন্তু জেলে গেলেও তার ভবিষ্যৎ জীবনে প্রতিষ্ঠিত হবার রাস্তাটা খুলেছিল এই দ্বন্দ্বযুদ্ধের কল্যাণেই। তিনি রানীর ডানহাত বলে পরিচিত আর্ল অব লিচেস্টার ডাডলির জন্য একটি দ্বন্দ্বযুদ্ধে লড়াই করেন এবং জেতেন। ফলে ডাডলির একজন প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠেন র্যালি। আর ডাডলির প্রিয়পাত্র মানেই তো রানীর প্রিয়!
তবে শুধু দ্বন্দ্বযুদ্ধ জয় করার কথা বললে অবিচারই হবে বটে। নিজের যোগ্যতা দিয়েই উপরের দিকে ওঠেন র্যালি। ডেজমন্ড বিদ্রোহীদের শক্তহাতে দমন করায় তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য। ৫ শতাধিক ইতালিয়ান এবং স্প্যানিশ সৈন্যের মুণ্ডুচ্ছেদ করে তিনি বিদ্রোহকে চিরতরে মাটিচাপা দেন। এর পুরস্কারস্বরূপ তাকে তাকে ৪০ হাজার একর জমির ‘ল্যান্ডলর্ড’ (জমিদার) বানানো হয়! ফলে রাতারাতি জীবন পাল্টে গেল তার। আয়ারল্যান্ডে এই জমিদারিতে বছরে ২/৩ বার ভ্রমণ করতেন তিনি। তার জমির পাশাপাশিই জমি বরাদ্দ পেয়েছিলেন আরেক বিখ্যাত ব্রিটিশ কবি এডমান্ড স্পেন্সার। জমিদারি সূত্রেই এ দুজনের পরিচয় এবং বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। র্যালির কবিতা রচনায় স্পেন্সারের গভীর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
দিন দিন ক্ষমতা আর প্রতিপত্তি বেড়েই চললো র্যালির। তার প্রভাব সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে যায় যখন রানী তাকে রাজকীয় আদেশ জারি করে আমেরিকার যেকোনো স্থানে উপনিবেশ স্থাপন করার ক্ষমতা প্রদান করেন। এই আদেশ বলে যেকোনো নতুন দেশে, যেখানে খ্রিস্টানদের বসতি নেই, সেখানেই উপনিবেশ স্থাপন করে নিজের ইচ্ছামতো চালানোর ক্ষমতা লাভ করেন র্যালি। উপরন্তু সেসব স্থানের স্বর্ণ কিংবা রূপার খনি থেকে প্রাপ্ত সোনা-রূপার এক-পঞ্চমাংশের মালিক হবেন র্যালি নিজেই! তিনি এ সময় দক্ষিণ আমেরিকার বেশ কিছু অঞ্চলে উপনিবেশ স্থাপন করেন। এসব কাজের মাঝে তিনি রানীর অজ্ঞাতসারে পৌরাণিক স্বর্ণের শহর এল ডোরাডোর খোঁজে বেশ কিছু অভিযানও পরিচালনা করেন।
কোনো কারণে আয়ারল্যান্ডে র্যালির কোম্পানি ভেঙে দেয়া হয়। কিন্তু ইংল্যান্ডে ফিরবার পূর্বেই তিনি নিজের আখের গুছিয়ে ফেলেন। তিনি জানতেন যে রানী ধর্মানুরাগী। তাই আয়ারল্যান্ডে বসবাসকালীন সেখানে প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মমত ছড়িয়ে দিয়ে অসংখ্য চার্চ স্থাপন করেন র্যালি। তার কাজে সন্তুষ্ট হয়ে তাকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন রানী প্রথম এলিজাবেথ। পাশাপাশি ইংল্যান্ডের টিনের খনিগুলোর ওয়ার্ডেন হিসেবে নিযুক্ত করা হয় তাকে। নিজের জন্য একটি ব্যক্তিগত জাহাজ নির্মাণের কাজও শুরু করেন এ সময়। ‘আর্ক র্যালি’ নামক সে জাহাজটি রানী ৫ হাজার পাউন্ডে কিনে নিলে নাম হয় ‘আর্ক রয়্যাল’। মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় বর্তমান দাম ১১ লক্ষ পাউন্ডে গিয়ে ঠেকেছে!
র্যালির প্রতি রানীর ভালোবাসা প্রতিদিনই বাড়তে থাকলো। আর তার ভাগ্যাকাশ প্রসারিত হতে লাগলো আলোর বেগে! আয়ারল্যান্ডে জমিদারি, নাইট উপাধি, ওয়ার্ডেন কিংবা আমেরিকায় উপনিবেশ স্থাপনের ক্ষমতা দিয়েও রানীর প্রশস্ত হাত খাটো হয়ে যায়নি। রানীর কাছে অন্তত ৫টি প্রাসাদতুল্য বাড়িও উপহার পেয়েছেন তিনি। তবে যা তিনি সবচেয়ে বেশি চাইতেন তার নাগাল যে পাওয়া হচ্ছিল না। রানীর ব্যক্তিগত সহযোগীদের মধ্যে একজন এলিজাবেথ বেসকে মনে ধরেছিল র্যালির। কিন্তু নানা কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে এবং রানীর বিরাগভাজন হবার ভয়ে কিছু করতে পারছিলেন না। তবে দুজনের মধ্যে শুরু হয় গোপন প্রণয় এবং বিবাহপূর্ব শারীরিক সম্পর্ক।
এক বছরের মধ্যেই বেসের গর্ভে র্যালির সন্তান চলে আসে। একদিকে অবৈধ সম্পর্কের কথা প্রচার করতে চান না, অন্যদিকে রানীর সহযোগী হিসেবে প্রতিদিন কাজে যোগ দিতে গিয়ে বেস পড়লেন মহা ফাপরে। ক্রমাগত স্ফীত হতে থাকা উদর তিনি কী করে ঢাকবেন? এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হলে সম্ভাব্য পরিণতির কথা মাথায় রেখে গোপনে বেসকে বিয়ে করলেন র্যালি। কিন্তু শেষ রক্ষা তাতে হলো কই? ঘটনা জানাজানি হতেই লন্ডন টাওয়ারে উভয়কে গৃহবন্দী করলেন রানী।
বন্দীদশা অবশ্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। আটলান্টিক মহাসাগরে একটি ব্রিটিশ সরকারি বাণিজ্য জাহাজ লুট করে স্প্যানিশরা। এর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য নৌবাহিনীকে আদেশ করলেন রানী। কিন্তু স্প্যানিশ বণিকদের বিরুদ্ধে পূর্বেও বহুবার অভিযান পরিচালনার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন র্যালি তো বন্দী। তাহলে নেতৃত্ব দেবে কে? অগত্যা র্যালিকে মুক্ত করে দিলেন রানী। সফলভাবে অভিযান পরিচালনা করে রাণীর আনুগত্যও ফিরে পান র্যালি। যদিও পুনরায় তাকে লন্ডন টাওয়ারে প্রেরণ করা হয়েছিল, কিন্তু সেটা ছিল আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। শীঘ্রই তাকে মুক্ত করে আইনসভার সদস্য করা হয়।
আঠারো শতকের শেষভাগে এসে আরো একটি বড় সাফল্যের পালক যুক্ত হয় ওয়াল্টার র্যালির মুকুটে। তিনি স্বর্ণের খনিতে সমৃদ্ধ একটি শহর আবিষ্কার করেন, যা বর্তমানে গায়ানার অন্তর্গত। গায়ানা থেকে ফিরেই তিনি ‘দ্য ডিসকাভারি অব গায়ানা’ বইটি প্রকাশ করেন যা সমালোচকদের মতে র্যালির সবচেয়ে বাজে বইয়ের একটি। এই বইয়ে তিনি যতটা না সাফল্য পেয়েছেন, তার চেয়ে দশগুণ বাড়িয়ে লিখেছেন এবং নিজের গায়ানা অভিযানকে সম্ভাব্য সকল উপায়ে মহিমান্বিত করেছেন! তাছাড়া এল ডোরাডো সংক্রান্ত অনেক বানোয়াট তথ্যও এই বইয়ে আছে।
ইতিহাসখ্যাত কাদিজ যুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছিলেন র্যালি। ব্রিটিশ এবং ডাচদের সমন্বয়ে গঠিত নৌবহরে রিয়ার অ্যাডমিরাল হিসেবে সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। যুদ্ধ থেকে ফিরেই তিনি ডোরসেটের আইনসভার সদস্য মনোনীত হন। পরবর্তী দুই বছর তিনি ব্রিটিশ উপনিবেশিক দ্বীপপুঞ্জ জার্সির গভর্নরের দায়িত্ব পালন করেন। এ দায়িত্ব পালন কালে তিনি এই দ্বীপপুঞ্জের প্রতিরক্ষা, নিত্যনতুন আবিষ্কার ও কৌশলের মাধ্যমে এতটা শক্তিশালী করে তোলেন যে, স্বয়ং ব্রিটিশ নৌবাহিনীরও এই দ্বীপ দখল করতে ঘাম ঝরে যেত!
রানীর সাথে সদ্ভাব র্যালির ভাগ্য যেমন ফিরিয়েছিল, আবার তার জীবনকে বিষিয়েও তুলেছিল একদিক থেকে। ক্রমাগত রানীর আনুকূল্য পেয়ে যাওয়া র্যালি একে একে বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষী হারিয়ে সকলের চক্ষুশূলে পরিণত হন। তার প্রতি জমতে থাকা বিষেদাগার আগুন হয়ে বিস্ফোরিত হয় রানীর মৃত্যুর পর। জনশ্রুতিকে কেন্দ্র করে তাকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় ফাঁসানো হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, তিনি এলিজাবেথের উত্তরসূরি প্রথম জেমসের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন। ভাগ্যক্রমে জেমস তাকে ফাঁসিতে ঝোলাননি। তাকে লন্ডন টাওয়ারে বন্দী করা হয়। এই বন্দীত্ব আগেরবারের মতো সংক্ষিপ্ত ছিল না। প্রায় ১৪ বছর লন্ডন টাওয়ারে বন্দী ছিলেন তিনি।
ওয়াল্টার র্যালি কেবল একজন দুঃসাহসী অনুসন্ধানকারীই ছিলেন না, তিনি একজন চমৎকার লেখকও ছিলেন। লন্ডন টাওয়ারে দীর্ঘ বন্দী জীবন বরং তার ভেতরে সুপ্ত থাকা লেখার প্রতিভা প্রকাশ করতে সহায়তা করেছিল। এই বন্দী জীবনেই র্যালি তার বিখ্যাত ‘হিস্ট্রি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ রচনা করেন। পৃথিবীর ইতিহাস, বিশেষ করে প্রাচীন পৃথিবীর ভৌগোলিক ইতিহাসের জন্য এই গ্রন্থটি অনন্য। অন্যদিকে, তার কবিতা লেখার হাতও ছিল চমৎকার। অনেক সাহিত্য সমালোচক তাকে তার সময়ের অন্যতম সেরা একজন কবি বলে অভিহিত করেছেন। তার লেখা কমবেশি ৩১টি কবিতা পাওয়া যায়। খুব সম্ভবত তিনি প্রায় অর্ধশতাধিক কবিতা লিখেছিলেন, যদিও সবগুলো পাওয়া যায় না।
যা হোক, বন্দীদশা থেকে ১৬১৭ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পান র্যালি। রাজা জেমস তাকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। অবশ্য এখানে রাজার মহত্ব খোঁজার আগে আপনাকে জানতে হবে র্যালি কেন ক্ষমা পেয়েছিলেন। গায়ানা নিয়ে র্যালির লেখায় এল ডোরাডো সম্পর্কিত তথ্যাদি রাজা বিশ্বাস করেছিলেন! তাই তিনি র্যালিকে মুক্ত করেন এবং গায়ানায় পুনরায় এল ডোরাডো খুঁজে বের করার অভিযানে প্রেরণ করেন। শর্ত ছিল একটাই, স্প্যানিশদের সাথে কোনোরূপ বিবাদে জড়ানো যাবে না। আর এই শর্ত শুনেই র্যালির গোপন শত্রুদের চোখ চকচক করে উঠলো। রাজার প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠার আগেই র্যালিকে সরানোর এটাই ছিল মোক্ষম সুযোগ।
“এটি একটি ধারালো ওষুধ, যা যাবতীয় দুর্দশা ও ব্যাধির নিরাময় করতে সক্ষম!”- জল্লাদের হাতের কুঠার দেখে মৃত্যু পূর্ব মুহূর্তে এই উক্তি করেছিলেন র্যালি
দ্বিতীয়বার গায়ানা অভিযান যে র্যালির জন্য সুইসাইড মিশন ছিল, তা তিনি ঘুণাক্ষরেও টের পাননি। এই অভিযানে র্যালির অনুমতি ছাড়া একদল সৈন্য স্প্যানিশ ফাঁড়িগুলোতে হামলা করে। ফলে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে, র্যালির ছেলে ওয়াল্টার জুনিয়র গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। হতভম্ভ র্যালি যখন সব বুঝতে পারেন তখন তিনি নিজেই জীবনের আশা ত্যাগ করেন। পালাবার অনেক পথ থাকা সত্ত্বেও তিনি লন্ডনে ফিরে আসেন, মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও। জেমস তার প্রতি কিছুটা সদয় হলেও এক্ষেত্রে তারও কিছু করার ছিল না। ১৬১৮ সালের ২৯ অক্টোবর ছিল র্যালির ঘটনাবহুল জীবনের শেষদিন। জল্লাদকে তিনি অনুরোধ করেছিলেন তার চোখে যেন কাল কাপড়া বাঁধা না হয়। কারণ, তিনি চাননি তার শত্রুরা ভাবুক যে তিনি মৃত্যুকে ভয় পাচ্ছেন! দেহ থেকে মস্তক বিচ্ছিন্ন হবার পূর্ব মুহূর্তে তিনি চিৎকার করে জল্লাদকে বলেছিলেন-
“স্ট্রাইক ম্যান, স্ট্রাইক!”
ফিচার ছবি: youtube.com