Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বার্নিং: ৭১তম কান উৎসব কাঁপানো এক দক্ষিণ কোরিয়ান মাস্টারপিস

হলিউড ইন্ডাস্ট্রির সিনেমা অথবা ইংরেজি ভাষার সিনেমা ছাড়া যারা কম-বেশি অন্যান্য দেশের ও অন্যান্য ভাষার সিনেমার সাথে পরিচিত, তাদের কাছের সাউথ কোরিয়ান ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কথা অজানা থাকার কথা নয়। এই ইন্ডাস্ট্রি মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে তার হয়তো খুব বেশি দিন হয়নি। কিন্তু গত দেড় যুগের মধ্যে এই ইন্ডাস্ট্রি নিজেদের অনন্য ও দূরদর্শী শৈল্পিকতার বদৌলতে বিশ্ব দরবারে বেশ পাকাপোক্ত একটি স্থান গড়ে নিতে সক্ষম হয়েছে।

সাউথ কোরিয়ান ইন্ডাস্ট্রি এমন এক স্বাবলম্বী ও স্বতন্ত্র সিনেমা নির্মাণে পটু ইন্ডাস্ট্রি, যেটি নাকি সকল ঘরানার সিনেমাতে নিজেদের জাত চেনাতে ওস্তাদ। কোরিয়ানদের রিভেঞ্জ থ্রিলার ঘরানার সিনেমাগুলোর প্রতিশোধ গ্রহণের মাস্টারপ্ল্যানগুলো দেখলে যেমন দর্শকদের মাথা আউলিয়ে যাবার মতো অবস্থা হয়, তেমনি মিস্ট্রি থ্রিলারগুলোর দেখলে ঘটনার মারপ্যাঁচ বুঝতে গিয়ে নিজের চুল ছিঁড়তে ইচ্ছা করে। আবার অন্যদিকে, দর্শকদের রোমান্টিক ঘরানার ক্ষেত্রে কাঁদাতে ও কমেডির ক্ষেত্রে হাসাতে কোরিয়ানদের থেকে বেশি আর কোনো ইন্ডাস্ট্রি পারবে বলে মনে হয় না। আর সিরিয়াল কিলিং ও হরর ঘরানার ভয়াবহতা ও পাশবিকতার ব্যাপারে যত বলা যায় ততই কম হয়ে যায়। মাঝেমধ্যে, কোরিয়ান ফিল্ম দেখার পর, “কোরিয়ান পরিচালকেরা এই খেয়ে সিনেমা বানায়?” এই প্রশ্নটি মনে ভেতর জেগে উঠা অবান্তর তো নয়ই বরং খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। আর আজকে এই আয়োজনে এমনই একটি কোরিয়ান ফিল্মের রিভিউ তুলে ধরা হয়েছে।

হারুকি মুরাকামি একজন বিখ্যাত জাপানিজ লেখক। তার খ্যাতি শুধুই জাপানেই নয়, পুরো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে আছে তার অসামান্য লেখনশৈলী ও অনন্যসাধারণ সব গল্পের জন্য। তিনি এমন এক লেখক যার বই ৫০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে তো বটেই, তার উপর আবার বেস্ট সেলার হিসেবে পৃথিবীর কোণায় কোণায় অজস্র বইপ্রেমীর মনে জায়গা করে নিতে সক্ষমও হয়েছে। আর এই প্রসিদ্ধ লেখক মুরাকামি ১৯৯৩ সালের দিকে ‘বার্ন বার্নিং’ নামে একটি ছোট গল্প লিখেছিলেন। তার ছোটগল্প সংকলন ‘দ্য এলিফেন্ট ভ্যানিশেস’ বইয়ের ১৭টি গল্পের একটি ছিল ‘বার্ন বার্নিং’। কে জানতো, গল্পটি প্রকাশিত হবার ২৫ বছর পর কোনো এক ভিনদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা গল্পটি থেকে বানিয়ে ফেলবেন তার ইন্ডাস্ট্রির সেই বছরের অন্যতম সেরা সিনেমাটি। আর এভাবেই সূচনা হয়েছিল ‘বার্নিং’ সিনেমার গল্পগাথা।

‘বার্ন বার্নিং’ থেকে ‘বার্নিং’ রূপান্তরের জনক তিনি; Source: IONCINEMA.com

কোরিয়ান ইন্ডাস্ট্রিতে গুণী ও সব্যসাচী পরিচালকের আনাগোনা নিদারুণ কম নেই। তাদের মধ্যে লি চ্যাং ডংও একজন। সেই ১৯৯৩ সাল থেকে আজ অবধি দারুণ সব সিনেমা তিনি কোরিয়ান সিনে জগতকে উপহার দিয়ে এসেছেন। তার সিনেমাগুলো সম্পর্কে যদি কেউ একটু ঘাঁটাঘাঁটি করে অথবা তার পরিচালিত বেশ কয়েকটি সিনেমা দেখে থাকে, তাহলেই বুঝে ফেলার কথা, তার সৃষ্টিকর্মগুলো অন্যান্য সিনেমা থেকে যে বেশ ভিন্নধর্মী ও প্রাঞ্জল। তার সিনেমাগুলোতে যতটা মনস্তাত্ত্বিক বিষয়গুলোকে সূক্ষ্মতমভাবে চিত্রায়িত করা হয়, তা আসলেই অন্যান্য সিনেমার ক্ষেত্রে অপ্রতুল। আর তাই তো, ড্রামা জনরার মিশেলে খানিকটা সাইকোলজি, মিস্ট্রি অথবা ক্রাইমের বিন্যাস যারা দেখতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য লি’র নির্মিত সিনেমাগুলো একেকটি মাস্টারপিস। আর ‘বার্নিং’ সিনেমাটিও এর ব্যতিক্রম নয়।

আজ থেকে একমাস আগে ১৬ই মে তে ‘বিওনিং’ ( ইংরেজি নাম ‘বার্নিং’) সিনেমাটি ৭১ তম কান উৎসবে শুভ মুক্তি পেয়েছিল। সিনেমাটি কানের সমালোচকদের থেকে সর্বোচ্চ রেটিং ৩.৮/৪ পাবার পাশাপাশি ফিপ্রেসসি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিটিকস অ্যাওয়ার্ড জিতে নিয়েছিল। আর সেই থেকে মূলত শুধু কোরিয়াতেই নয়, পুরো দুনিয়া জুড়ে সকল সিনেপ্রেমীর মুখে মুখে বার্নিং এর জয়গানের দিন শুরু হয়েছিল। গত একমাস যাবত অন্যান্য দেশের কথা তো বাদই দিলাম, আমাদের দেশের সিনেবোদ্ধাদের চায়ের আড্ডায়, সিনেমা নিয়ে আলোচনায় বার্নিং সিনেমাটি মধ্যমণি হয়ে উঠেছিল।

‘বার্নিং’ সিনেমাটি মূলত ক্রাইম- ড্রামা ঘরানার সিনেমা। তবে মজার ব্যাপার হলো, সিনেমার প্রথমে আপনি বুঝেও উঠতে পারবেন না, কোনো ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড অথবা পাশবিক কর্মকাণ্ড এই সিনেমাতে যে দেখানো যেতে পারে। সিনেমাটি মূলত প্রধান তিনটি চরিত্র আছে। আসলে বলতে গেলে, এই তিনটি চরিত্র ছাড়া সিনেমাতে তেমন কোনো চরিত্রে তেমন কোনো ভূমিকাই নেই অথবা স্ক্রিনে তাদের ব্যপ্তিকালও নগণ্য। আর প্রধান চরিত্রগুলোর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও ব্যক্তিত্বের বিকাশ পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে সিনেমার কাহিনী থেকেও বেশি চিত্রনাট্যকার লি চ্যাং ডং গুরুত্বারোপ করেছেন। সিনেমার প্রথম থেকে শেষপর্যন্ত দর্শক প্রতিটি চরিত্রের হাবভাব, আকাঙ্ক্ষা ও একাকীত্বের চক্রে দোদুল্যমান অবস্থায় থাকতে বাধ্য হবে। আর কে জানে, নির্মাতা হয়তো দর্শকের মন- মস্তিষ্ক নিয়ে ছলে-বলে-কৌশলে একটু খেলা করার নিমিত্তেই বানিয়েছেন এমন এক সিনেমা, যা বাইরে থেকে ম্রিয়মান মনে হলেও, ভেতরে মানবিক চাহিদাগুলোর নানা ঘাত-প্রতিঘাতের আলোর বেগে ছুটতে থাকা গল্পের এক অতুলনীয় সিনেমা।

সিনেমাটির সেই প্রধান তিন জটিল চরিত্র; Source: YouTube

সিনেমার প্লট নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলে নেওয়া ভালো, এই সিনেমাটি বিশেষ কোনো ঘটনা, বিশেষ কিছুকে ঘিরে অথবা বিশেষ কোনো মানুষের জীবনের কোনো এক বিশেষ অধ্যায়কে তুলে ধরে গড়ে ওঠা সিনেমা নয়। সিনেমার গল্পের শুরু হয় জং-সু নামের একজন তরুণের জীবনের হুট করে কোনো এক সাধারণ দিনকে ঘিরে। দারিদ্রকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকা এই বেকার তরুণ কোনোমতে পেট চালানোর দায়ে সাউথ কোরিয়ার পাজু নামক শহরে যেকোনো ছোটখাটো কাজই করতো। আর এভাবেই তার জীবনের হতাশায় ঘেরা প্রতিটি দিনের মতো একটি দিনে তার পূর্বপরিচিত এক মেয়ের সাথে দেখা হয়ে যায়। হাই-মিন নামের মেয়েটি মূলত ছোটকালে তার প্রতিবেশী ছিল।

এতদিন পর দুজনের দেখা হবার ফলে তারা দুজন একসাথে বেশ কিছু সময় কাটাতে লাগলো ও পরস্পরের কাছে নিজেদের জীবনের নানা স্বপ্ন, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির গল্প ও নানা আবেগ-অনুভূতি মেলে ধরতে শুরু করলো। আর তারপর, সেই ঘনিষ্ঠতা শারীরিক সম্পর্কের দিকেও গড়ালো। যদিওবা তাদের চরিত্রে মিল থেকে অমিলই বেশি ছিল। খানিককালের জন্য জং-সু ও হাই-মিন নিজেদের দুটি জগতকে মিলেমিশে একাকার করার ঘোরে মত্ত হয়ে উঠলে হুট করে অন্য এক ঘটনার মধ্যদিয়ে হাই-মিনের পরিচয় হয় বেন নামের এক পুরুষের সাথে।

বেন ছিল জং-সু’র ঠিক বিপরীত। দুজনের মধ্যে শুধু আত্মকেন্দ্রিক ও চাপা স্বভাবের এ দুটো বৈশিষ্ট্য মিললেও সামাজিক মর্যাদা, অর্থ-বিত্তের দিক থেকে বেন জং-সু’র থেকে অনেক বেশি এগিয়ে ছিল। আর যখন জং-সু, হাই-মিন ও বেন তিনজনই একই গল্পে প্রবেশ করলো, তখনই শুরু হলো ত্রিভূজ প্রেমের গল্প। তবে সত্যিই কি ত্রিভূজ প্রেম নিয়ে সিনেমার গল্প আবর্তিত হয়েছিল? নাকি ‘শাঁক দিয়ে মাছ ঢাকা’র মতো আমিও সিনেমার গল্পে অন্তর্নিহিত কোনো করুণ বাস্তবতাকে চাপা দিয়ে পাঠকদের সাথে লুকোচুরি খেলছি? তা জানতে হলে, অবশ্যই আপনাকে সিনেমাটির প্রত্যক্ষদর্শী হতে হবে।

সিনেমাটির প্রধান তিনটি চরিত্রকে বিশ্লেষণ করলে সিনেমাতে আসলে কী তুলে ধরতে পরিচালক চেষ্টা করেছেন তা আরও একটু গভীরভাবে উপলব্ধি করা যাবে। কারণ, ‘বার্নিং’ সিনেমাটি এমন এক ধাঁচের সিনেমা, যাতে গল্প অথবা আনুষঙ্গিক উপাদানগুলো থেকেও চরিত্রগুলোকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

চরিত্রগুলোর কথা বলতে গেলে, প্রথমে আসবে জং-সু চরিত্রটি। জং-সু নামের এই যুবকটি শিক্ষিত হলেও বেকারত্বে জর্জরিত। চোখ দুটো তার লেখক হবার স্বপ্নে বিভোর থাকলে, পেটের ক্ষুধার তাড়নায় সে যেকোনো ধরনের অসম্মানজনক কাজকর্ম করতেও দ্বিধাবোধ করে না।

শান্ত, চুপচাপ গোছের এই যুবকের পারিবারিক জীবনেও সুখের ছিটেফোঁটা ছিল না। তার বাবা ছিল জেলে আর মা সে ছোট থাকতেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পুরো দুনিয়াতে এত মানুষ থাকলেও, সে ছিল নিঃস্ব ও নিঃসঙ্গ। তার অন্তরেও কাউকে নিজের করে পাবার বাসনা জাগে, কাউকে ‘আপন’ করে পাবার ইচ্ছা বাসা বাঁধে। কিন্তু পারিপার্শ্বিক অবস্থা তার সেসব ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষার ঘোর বিরোধিতা করে। জং-সু’র চরিত্রের মধ্যে ঈর্ষাপরায়ণতার উপস্থিতিও টের পাওয়া গিয়েছিল হঠাৎ করে হাই-মিনের জীবনে বেনের আগমনে। বেনের এত বিলাসী জীবনযাপন ও অর্থের প্রতিপাত্ত জং-সুকে হাই-মিনের জীবনে নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে সন্দিহান করে তুলেছিল। আর সিনেমার গল্প আগানোর সাথে সাথে জং-সু’র প্রতিশোধ ভাবাপন্ন মনের ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেও দেখা যায়।

এই দৃশ্যের কথা কি ভোলা যায়? Source: The Playlist

এরপর আসা যাক হাই-মিন চরিত্রটির কথায়। হাই-মিন নামের মেয়েটি ছিল অদ্ভুত এক চরিত্রের অধিকারিণী। সে চারপাশের সবাইকে ছলনার বেড়াজালে তো আটকে রাখতোই, এমনকি নিজেকেও রেহাই দিতো না। সে এমন এক কল্পবিলাসী জগতে নিজেকে ডুবিয়ে রাখতে চাইতো, যেখানে কি না কঠোর বাস্তবতার আনাগোনা নেই বললেই চলে। পারিবারিক জীবনে সে-ও তেমন সুখী কেউ ছিল না। আর তাই মিথ্যা ঘোরে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে ভালোবাসতো সে। তার জীবনে জং-সু আর বেনের ভূমিকা ঠিক কতটুকু ছিল তা পুরোপুরি বুঝে ওঠাও দায় ছিল। সে সবার সামনে নিজেকে নিজের ছোট জীবন নিয়ে খুশি প্রমাণ করতে উঠেপড়ে লাগলেও ভেতরে ভেতরে একাকীত্ব ও অবহেলায় তিলে তিলে মরছিল। হাই-মিন চরিত্রের শেষ পরিণতি দর্শকদের হৃদয়ে বেশ নাড়া দেবে।

‘অদ্ভুত সেই মেয়েটি’; Source: HanCinema

সবশেষে আসা যাক, বেন চরিত্রটির দিকে। বেন প্রথম থেকেই কেমন যেন রহস্যে ঘেরা এক ব্যক্তি ছিল। তার অতীত সম্পর্কে জং-সু অথবা হাই-মিনের তেমন কোনো ধারণা ছিল। হাই-মিনের মতো বেনও ভ্রমণপিপাসু ছিল, তবে দুজনের মধ্যে সবথেকে বড় পার্থক্য ছিল, তাদের একজনের হাতে শখগুলো নিজেরাই এসে ধরা দিতো এবং অন্যজনের বেশ কাঠখড় পুড়িয়ে সেসবের সন্ধান মিলতে হতো।

আপাতদৃষ্টিতে দেখলে, বেনের জীবন আলিশান বাড়ি, দামি গাড়ি ও উচ্চ শ্রেণীর বন্ধুবান্ধবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু আসলেই কি তাই? জং-সু যেমন প্রথমদিকে বেন ও হাই-মিনের মধ্যেকার সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বুঝে উঠতে হিমশিম খাচ্ছিল, ঠিক তেমনি শেষের দিকে বেনের আসল রূপ বুঝে উঠতে খাবি খাচ্ছিল। কারণ বেনের ভেতরে অন্য এক সত্ত্বা লুকিয়ে ছিল, যা কিনা একদম সিনেমার শেষের দিকে জং-সু’র সামনে উন্মোচিত হয়। তবে বেনের এমন বিকৃত মানসিকতা সৃষ্টির পেছনের গল্পটা নিতান্তই আনন্দের নাকি আরও কোনো কঠিন সত্য, সেটা সঠিকভাবে দেখানো হয়নি।

স্টিভেনের ইয়নের অভিনয় ছিল ‘বার্নিং’ এর সেরা প্রাপ্তি; Source: HanCinema

‘বার্নিং’ নাম রাখার পেছনের কতটা সার্থকতা নিরূপিত হয়েছে তা নাহয় দর্শকদের নিজস্ব মতামতের উপর ছেড়ে দিলাম। তবে ব্যক্তিগতভাবে বলতে গেলে, প্রতিটি চরিত্রের নিজের সাথে নিজে প্রতিনিয়ত অল্প অল্প করে পুড়ে নিঃশেষিত হবার গল্পের কারণেই হয়তো পরিচালক রূপক অর্থে এই নাম বেছে নিয়েছেন।

সিনেমাটি কেন দেখবেন? মনমাতানো ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, চোখজুড়ানো সিনেমাটোগ্রাফি ও চরিত্রের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের এমন অভিরূপ সমন্বয় খুব কমই একসাথে পাবেন। সিনেমাটি যে সবার ভালো লাগবে তা কিন্তু নয়। অনেকের কাছে সিনেমাটিতে বেশ ধীরগতি সম্পন্ন ও কাহিনীকে সাদামাটা মনে হতেই পারে। কিন্তু যারা সব ধরনের সিনেমা দেখে অভ্যস্ত ও সিনেমার ভেতর শৈল্পিকতার ছাপ খুঁজে বেড়ান, তাদের জন্য সিনেমাটি বেশ ভালোই লাগার কথা। সিনেমাতে প্রাকৃতিক কিছু দারুণ দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে। আকাশের লালচে রঙ আপনার মনকেও আলতো করে ছুঁয়ে যাবে। আর হাই-মিনের ১ ঘন্টা ৮ মিনিটের দিকেই সেই মনকে উত্তাল করে দেওয়া নাচ তো আছেই। সেই কয়েক মিনিটের জন্য হাই-মিনের সাথে আপনিও হারিয়ে যাবেন অন্য এক জগতে।

কোরিয়ান সিনেমাপ্রেমীদের জন্য ‘বার্নিং’ সিনেমাটি একটি রত্ন সদৃশ। আর অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রির সিনেপ্রেমীদের জন্য ‘বার্নিং’ হতে পারে কোরিয়ান সিনেমার মানকে বোঝার ভালো এক মাপকাঠি, যদি নাকি তিনি সিনেমাকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে সক্ষম হন।

ফিচার ইমেজ: HanCinema

Related Articles