গ্যাটাকা: জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে সতর্কবাণী রাখা দূরদর্শী এক সিনেমা

‘গ্যাটাকা’ সিনেমাটিকে জনরা বিচারে সুনির্দিষ্ট করতে গেলে বলতে হয়, এটি ‘বায়ো-পাংক’ জনরার সিনেমা। সায়েন্স ফিকশনের সাব জনরা ‘সাইবারপাংক’-এর সাথে অনেক দর্শক পরিচিত হলেও, এই বায়োপাংকের সাথে হয়তো স্বল্পই পরিচিত। অবশ্য সাব জনরা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার মতো অধিক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিতও নয় এই বায়োপাংক। বলা যায়, সাইবারপাংক জনরারই আরেক পিঠ। সবকিছুই সাইবারপাংক হতে উদ্ভূত। শুধুমাত্র তথ্যপ্রযুক্তির জায়গায়, জীবপ্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা করা হয় বায়োপাংকে। কৃত্রিম বায়োলজি নির্ভর গল্প থাকে। তাই, একরকম আলাদা করার অর্থেই বায়োপাংক সাব জনরার অধিভুক্ত করা হয় এই সিনেমাগুলোকে। তো সেদিক থেকে আলাদা করা যায় গ্যাটাকা সিনেমাটিকেও। 

গ্যাটাকা এমন এক সময় এবং পৃথিবীর গল্প বলে, যেখানে ‘ইউজেনিক্স’-এর চর্চা খুবই মামুলি ব্যাপার। এই ইউজেনিক্স হলো, জেনেটিক্সের জ্ঞান খাটিয়ে কোনো জীবগোষ্ঠীকে উন্নত করে তোলার প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ার সাহায্যে জিন নির্বাচন করা যায়। পিতামাতা চাইলেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে, তাদের দু’জনের শ্রেষ্ঠ জিন বাছাই করে দিতে পারেন। এতে করে পিতামাতার শ্রেষ্ঠ জিন হতে জন্ম নেওয়া সন্তান, অপার সম্ভাবনার অধিকারী হয়। সবধরনের উন্নত বৈশিষ্ট্যের বীজ প্রোথিত থাকে তার ভেতরে। চাইলেই জানা যায়, আগামীতে সে সন্তান কোনক্ষেত্রে কতটুকু বুদ্ধিদীপ্ততার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারে। গ্যাটাকার এ পৃথিবীতে ইউজেনিক্স প্রক্রিয়া যতটাই মামুলি, ঠিক ততটাই দুষ্কর আগের সেই সন্তান জন্মদান পদ্ধতি। প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে জন্ম নেওয়া সন্তানগুলোকে এখন অভিহিত করা হয়, ‘ঈশ্বরের সন্তান’ নামে। এবং সিনেমার নায়ক ‘ভিনসেন্ট ফ্রিম্যান’ ঈশ্বরেরই সন্তান, প্রযুক্তির নন। 

নায়ক ভিনসেন্ট; Image Source: Columbia Pictures

ভিনসেন্ট ফ্রিম্যানের মা-বাবা চেয়েছিলেন, জিন নির্বাচনের সেই প্রক্রিয়ায় না ঘেঁষে আবহমান প্রক্রিয়াতেই তারা তাদের প্রথম সন্তানকে পৃথিবীর আলোর ভাগীদার করবেন। কিন্তু সন্তান জন্মানোর পরপরই জেনেটিক প্রোফাইলে দেখা গেল, তার আয়ু মাত্র ৩০ বছর ২ মাস। উপরন্তু, হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা, এই রোগ-সেই রোগের সম্ভাবনাতে ঠাসা তার প্রোফাইল। বাবা-মা নাম ঠিক করেছিলেন, এন্টন। কিন্তু শেষমুহূর্তে বাবা ঠিক করেন, নাম হবে ভিনসেন্ট। এবং বলেন “এন্টন একটি ভালো নাম”। সূক্ষ্মভাবেই এখানটায়ই দর্শক বাবার মতের পরিবর্তন লক্ষ করে। জেনেটিক প্রোফাইল জানার পরমুহূর্তেই বাবা ঠিক করে ফেলেছেন, প্রযুক্তির দ্বারস্থ তাদের হতেই হবে। ‘উন্নত’ সন্তান জন্মদান করতেই হবে এবং পরে করেনও।

তবে, সদ্যভূমিষ্ঠ ভিনসেন্ট শিশুটি হতে আস্থা হারান না, মা। তিনি মনে করেন, একদিন বড় কিছুই হবে ভিনসেন্ট। এক ঝুলি প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্ম যে শিশুর, কতটুকু রাস্তাই বা আর হাঁটতে পারবে সে? কিন্তু ভিনসেন্ট স্বপ্ন দেখে আকাশ ছোঁয়ার। সত্যিকার অর্থে, শুধু স্বপ্নই দেখে না, বরং প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়  ভিনসেন্ট; নিজের প্রতিবন্ধকতা জেনেই। বাবা বলেন, মহাশূন্যে নয়, মহাশূন্যের ওই কর্পোরেশনে ঝাড়ুদার হতে পারবে বড়জোর। বাবা হেয় করে বললেও, ভিনসেন্ট আমলে নেয় কথাটা।

কারণ, আগে কর্পোরেশনে যোগদান তো করতে হবে। আর যেহেতু ইউজেনিক্স প্রক্রিয়ায় তার জন্ম হয়নি; তাই সে ‘ইন-ভ্যালিড’ (যাদের জন্ম হয়েছে, তারা পরিচিত ‘ভ্যালিড হিসেবে)। ভিনসেন্ট, গ্যাট্যাকা কর্পোরেশন থেকে বিশাল রকেটগুলো যখন শূন্যের উদ্দেশে পাড়ি দেয়, তখন খুব আগ্রহভরে দেখে আর দীর্ঘশ্বাস ফেলে। একজন ইন-ভ্যালিড তো আর মহাশূন্যে যেতে পারবে না। যদিও গ্যাট্যাকার দুনিয়াতে জিন বৈষম্য অনৈতিক এবং নিষিদ্ধ। কিন্তু এসকল বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে বৈষম্যটা চলেই আসে।

তবে সে বৈষম্য আটকাতে পারেনি ভিনসেন্টকে। স্বপ্নে দেখার মতো ভিনসেন্টের জীবনে সত্যিই মহাকাশে পাড়ি দেওয়ার সুযোগ আসে। সেই জীবপ্রযুক্তির সাহায্য নিয়েই। মধ্যস্থ এক ব্যক্তি ভিনসেন্টকে পরিচয় করিয়ে দেন তৃতীয় একজন ব্যক্তির সাথে। ভ্যালিড হওয়ার আশা দেখে ভিনসেন্ট। কিন্তু আদতেই কি ভিনসেন্টের পক্ষে জিন প্রযুক্তিতে এত ফাঁকফোকর আবিষ্কার করা সম্ভব? গল্পে আরো জটিলতা যোগ করতে মহাকাশে রকেট উৎক্ষেপণের হপ্তা পূর্বেই গ্যাট্যাকা কর্পোরেশনে খুন হয়ে যায় একজন, যার দায়ভার চাপে ভিনসেন্টের কাঁধে। উত্তেজনা আর কৌতূহলের বাতাবরণে বেঁধে, রকেটে চড়ে মহাশূন্যে যাত্রার মতোই দর্শককে নিয়ে চলে, গ্যাটাকা।

গ্যাটাকা’কে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে, ৩ ‘ডি’ দিয়ে। ৩ ‘ডি’কে নিয়েই এই গোটা সিনেমা। এবং এই ৩টি পরস্পরের সাথে নিবিড়ভাবে সংযুক্ত। এই ৩ ডি হলো: ডিএনএ, ড্রিম, ডেস্টিনি। ডিএনএ’র বিষয়টি তো ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত এই সিনেমার সাথে। এমনকি সিনেমার নামে জি,এ,টি,সি- এই আদ্যক্ষরগুলো যথাক্রমে: গুয়ানিন, অ্যাডেনিন, থাইমিন, সাইটোসিন এর সংক্ষেপণ, যেগুলো ডিএনএ’র নিউক্লিওব্যাসিস। এছাড়া, সিনেমার প্রারম্ভিক দৃশ্যেই চোখে পড়ে; চোখের পাঁপড়ি, মাথার একটি চুল, হাতের নখ, শেভ করে চেঁছে ফেলা দাড়িকে এক্সট্রিম ক্লোজ শটে দেখানো হচ্ছে।

টাইটেলের মাঝ দিয়েই ডিএনএ চিহ্নিত করতে পারার সেই উপাদানগুলো; Image Sourceঃ Columbia Pictures

 

এই সূক্ষ্ম জিনিসগুলো প্রারম্ভিক দৃশ্যেই সিনেমার পৃষ্ঠতলের মূল বিষয়ের অবতারণা ঘটায়। এগুলোর যেকোনো একটি দিয়েই একজন ব্যক্তির ডিএনএ নির্ণয় সম্ভব। প্রধান চরিত্র ভিনসেন্টের ড্রিম বা স্বপ্নকে ঘিরেই এত আয়োজন। তার সেই স্বপ্ন মুহূর্তেই ভাঙা কাঁচের অজস্র টুকরোয় বিলীন হয়ে যেতে পারে একটি চুল কিংবা পাঁপড়ি ভুল হাতে স্থানান্তরে। নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থেকেও দেখা স্বপ্ন, এক দুর্বার আকাঙ্ক্ষার জন্ম দেয় তার মাঝে। আর সে আকাঙ্ক্ষার গতিপথ নির্ধারণ করে দিতে পারে- একমাত্র তার নিয়তি। আর সেভাবেই সিনেমায় চলে আসে ডেস্টিনি বা নিয়তির বিষয়টি, পৃষ্ঠতলের নিচে যেটি সিনেমার কেন্দ্রীয় একটি বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। 

গ্যাটাকা একইসাথে উত্তেজক এবং বুদ্ধিদীপ্ত একটি সিনেমা। সিনেমার মাঝের অংশে গল্পের রথ ‘মার্ডার মিস্ট্রি’ ঘরানার দিকে এগুতে দেখা যায়। তবে সেটি শুধুমাত্র একটি সাবপ্লট। মূল গল্পের ডালপালা বিস্তৃতকরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং চলমান অংশ হয়েই থেকেছে সেটি। এখানেই সিনেমার উত্তেজক প্রকৃতিটা উঠে আসে। গ্যাটাকা এখনকার মূলধারার বহুলাংশে ফাঁপা সায়েন্স ফিকশন সিনেমাগুলোর মতো নয়। তা বলে আবার, আর্টহাউস ঘরানার সিনেমাও নয়। মার্ডার মিস্ট্রি সাবপ্লট দিয়ে মূলধারার উপাদান রাখলেও, সে উপাদানকে যে উপায়ে গ্যাটাকা ব্যবহার করেছে, তাতেই এ সিনেমার বুদ্ধিদীপ্ততা লুকিয়ে আছে।

বুদ্ধিদীপ্ত একটি সিন ব্লকিং, যেখানে সিঁড়িটি ডিএনএ’র আকৃতি প্রদর্শন করছে এবং ভিনসেন্টের কাছে এর গুরুত্ব বোঝাতে তাকে সিঁড়ির মাঝে রাখা হয়েছে; Image Source: Columbia Pictures

সায়েন্স ফিকশন জনরার ক্লাসিক সিনেমাগুলোর মতোই, অনেক মূল্যবান ধারণা এবং গূঢ় দার্শনিক তত্ত্বে ভরপুর গ্যাটাকা। মুক্তিকাল বিবেচনায় আনলে দেখা যায়, ওই সময়ে জিন প্রকৌশল পদ্ধতিতে শিশু জন্মদানের সেই প্রক্রিয়া খুব একটা নিখুঁতরূপে তখনো আত্মপ্রকাশ করেনি। তাই গ্যাটাকা শুধু একটি সায়েন্স-ফিকশন সিনেমাই নয়, বরং যে প্রযুক্তি নিয়ে গ্যাটাকা কথা বলছে, সে প্রযুক্তির অপর পিঠ নিয়ে একটি সতর্কবার্তাও বটে। সে সতর্কবার্তা দিতে গিয়েই স্বাধীন ইচ্ছা, দৃঢ়তার দার্শনিক তত্ত্বের পাশাপাশি নৈতিকতার প্রশ্নও তুলেছে গ্যাটাকা।

সত্যিকার অর্থেই উন্নত সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা প্রযুক্তি পেয়ে গেলে নৈতিকতার অবস্থান কেমন হবে (?), গোঁড়ামি ও বৈষম্যের চিত্র কেমন হবে (?)- এ যাবতীয় প্রশ্নগুলো রেখেছে গ্যাটাকা। ধর্ম, বর্ণ, জাতের বৈষম্যহীন এক পৃথিবী দেখায় গ্যাটাকা। কিন্তু বিদ্রূপাত্মক ভাবে, ঐ প্রযুক্তিতেই এই বৈষম্যের বীজ নিহিত হিসেবে দেখা যায়। এক পর্যায়ে বিদ্বেষ আর নৈতিক দ্বন্দ্বে জড়ানোর মাঠ হয়ে উঠতে দেখা যায় সেই গ্যাটাকা কর্পোরেশনকে। প্রযুক্তিনির্ভর ভবিষ্যৎ দুনিয়ার গল্পে যে বিদ্রূপ গ্যাটাকা তার পৃষ্ঠতলের নিচে লুকিয়ে রেখেছে, তা অনেকটা, জর্জ অরওয়েলের বিদ্রূপাত্মক বক্তব্যের ধারাতেই প্রবাহিত হয়েছে। 

গ্যাটাকার ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে বর্ণ এবং লিঙ্গের বৈষম্যের ভেতর দিয়ে অ্যান্ড্রু নিকল যে সমাজ ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার চিত্র দাঁড় করাতে চেয়েছেন, সে চেষ্টা চোখে পড়ে তার পরবর্তী কাজগুলোতেও (‘সিমোন’, ‘ইন টাইম’, ‘আনন’)। এসবের সাথে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যোগও তিনি, তার কাজগুলোতে সচরাচরই করে থাকেন। তবে সর্বাপেক্ষা সফলভাবে তিনি, তার এ অভিষেক এই সিনেমাতেই করতে পেরেছেন। আর তেমনটি সম্ভব হয়েছে গ্যাটাকার বুদ্ধিদীপ্ত ও সৎ চিত্রনাট্যের জন্য। বিষয়াদিতে সমৃদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি সংলাপে ক্ষিপ্রতা এবং চরিত্রবিন্যাসে প্রগাঢ়তা উপহার দিয়েছে গ্যাটাকা।

ভিনসেন্ট চরিত্রটির মতোই, এ চরিত্রে দৃঢ়তাসম্পন্ন অভিনয় উপহার দিয়েছেন ইথান হ্যক। জেরোম, সিনেমার সর্বাপেক্ষা জটিল এই চরিত্রটিতে হঠকারী অভিনয় করেছেন জুড ল্য। নিজের প্রতিবন্ধকতা এবং সেটিকে ব্যবহার করে অন্যের সাফল্যের পথ স্বেচ্ছায় তৈরি করার মাঝ দিয়ে নিজের দ্বিখণ্ডিত সত্ত্বার পরিচয় বহন করে চরিত্রটি এবং ততখানিই করে জুড ল্য’র প্রতিটি অভিব্যক্তি। উমা থার্মানের চরিত্রটি ভিনসেন্টের প্রেমিকার অংশ রূপায়নের পাশাপাশি ভবিষ্যতের কর্পোরেট পৃথিবীর নিজস্ব ধারায় রচিত একটি মডেল হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে। তবে সবচেয়ে উচ্ছ্বসিত, জীবন্ত অভিনয় দিয়েছেন অ্যালান আর্কিন, সেটা যতটা না চরিত্রের সক্ষমতায়, তার চেয়েও বেশি নিজস্ব বোঝাপড়ায়। 

ভিনসেন্ট এবং তার প্রেমিকা; Image Source: Columbia Pictures

পরিচালক অ্যান্ড্রু নিকলের সিনেমাগুলো ভিজ্যুয়াল ল্যাঙ্গুয়েজের দিক থেকে বরাবরই চিত্তাকর্ষক হয়। গ্যাটাকার ভবিষ্যৎ দুনিয়া প্রতিষ্ঠায় তিনি ‘রেট্রো-ফিউচারিজম’ স্টাইলের (ওল্ড ফ্যাশনয়েড স্টাইলকে ফিউচারিস্টিক প্রযুক্তিতে বাঁধার পদ্ধতি) ব্যবহার করেছেন। ইতোপূর্বের সাইফাই সিনেমাগুলো হতে অনেককিছুই ধার করেছে গ্যাটাকা। বিশেষত প্রোডাকশন ডিজাইনে, যা খুবই বিচ্ছিন্ন ভাব জাগায় সিনেমার পৃথিবীটার সাথে সামঞ্জস্য রাখতে। সে কারণে রেট্রো ভাবটা প্রবল এরমাঝে। ভিনসেন্ট চরিত্রটির ছেলেবেলায় সমুদ্রে সাঁতরানোর দৃশ্য ভবিষ্যতের হলেও, সামগ্রিক বাতাবরণের কারণে ৫০ দশকের অনুভূতি জাগায় দৃশ্যটি।

দৃশ্যটিকে সিনেমার ‘প্রতিষ্ঠা দৃশ্য’ হিসেবেও ধরা যেতে পারে। এ দৃশ্যে বার্ডস আই ভিউ শটে প্রকৃতির সামগ্রিকতার সামনে ভিনসেন্টের ক্ষুদ্রতা; আবার পয়েন্ট অফ ভিউ শটে তার স্থিরচিত্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়। সিনেমাটোগ্রাফার ‘স্লাওমির ইজিয়াক’ (‘থ্রি কালার্স-ব্লু, ‘ডাবল লাইফ অফ ভেরোনিকা’) তার ট্রেডমার্ক ধারার নীল, ধূসর, সোনালি ফিল্টারগুলো ব্যবহার করে গ্যাটাকার বাইরের ওয়ার্ম লাইটিংয়ের জগত আর ভেতরের জগতটাকে ভিন্ন করেছেন এবং গোটা সিনেমায় ঐশ্বর্যময় একটা আউটলুকও দিয়েছেন। 

গ্যাটাকার বাইরের জগতকে আলাদা করা হয়েছে এমন ওয়ার্ম কালার দিয়ে; Image Source: Columbia Pictures

গ্যাটাকা তুলনামূলক পিছিয়ে পড়েছে ন্যারেটিভে, জিন প্রকৌশলের মাধ্যমে ভিন্ন পরিচিতি তৈরির অংশটিতে এবং তা প্রকাশ হওয়া নিয়ে দু’টি চরিত্রের দ্বন্দ্বের নাটকীয় উপস্থাপনে। এছাড়া সিনেমায় রাজনৈতিক বক্তব্যের চিত্র স্পষ্টভাবে পাওয়া যায় না, যা গ্যাটাকার পৃথিবীর সম্পূর্ণতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ক্ষমতা রাখে। তবে সেসবকে পাশে রেখেই, প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান উন্নতির চিত্রে নৈতিকতার প্রশ্ন উত্থাপন করে এবং দার্শনিক তত্ত্ব স্থাপন করে গুরুত্ববহ হয়ে উঠে গ্যাটাকা। একইভাবে পরিচালক অ্যান্ড্রু নিকলের ক্যারিয়ারেও আজো সর্বোচ্চ অর্জন হিসেবে অটল রয়েছে গ্যাটাকা।

This is a review of the film 'Gattaca' (1997). Directed by Andrew Niccol. It was his debut film. It's a cautionary tale about Genetic Engineering. By far, it's the best work from director Andrew Niccol.

Featured Image: Inverse

Related Articles

Exit mobile version