আপনি যদি সিনেমাপ্রেমী হয়ে থাকেন, তাহলে খুব সম্ভবত এই গানটির সাথে আপনি পরিচিত। আর যখনই আপনি গানটি শুনবেন, নিঃসন্দেহে সেটি আপনার মুখে হাসি ফোটাবে।
সিঙ্গিন ইন দ্য রেইন মুক্তি পেয়েছিল ১৯৫২ সালে, প্রায় ৬৭ বছর আগে। সর্বকালের সেরা মিউজিক্যাল হিসেবে খ্যাত এই মুভিটিতে সব কিছুই আছে যেগুলো একটি গোল্ডেন এজ মিউজিক্যালে থাকা উচিত, অসম্ভব সুন্দর আর নিখুঁত কোরিওগ্রাফি কিংবা একগাদা স্মরণীয় গান। যদিও আগের মতো বর্তমানে মিউজিক্যাল মুভি হলিউডে অতটা জনপ্রিয় না, তারপরেও জিন কেলি এবং স্ট্যানলি ডোনেনের পরিচালনায় এই সিনেমাটি এত বছরেও তার উজ্জ্বলতা হারায়নি। ডন লকউড এবং ক্যাথি সেলডনের রোমান্সের মধ্যে দিয়ে হলিউডে সবাক চলচ্চিত্রের আবির্ভাবের পর নির্বাক চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা এবং স্টুডিওগুলো কীভাবে সে পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নিয়েছে তা তুলে ধরা হয়েছে মুভিটিতে। সিনেমাটির কালজয়ী খেতাব পাওয়ার কারণ এটি হলিউডের সোনালী যুগে নির্মিত হলেও এটি আগের যুগের চলচ্চিত্রের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য।
অনেকেই এসব মুভি দেখে বেশ মজা পায়। কিন্তু পর্দায় থাকা চরিত্রগুলো আমাকে মুগ্ধ করতে পারে না। তারা কথা বলে না, তারা অভিনয় করে না। শুধু বোবার মতো কাজকর্ম করে যায়।
ক্যাথি সেলডন এবং ডন লকউডের প্রথম দেখাতেই ক্যাথি ডনকে নির্বাক যুগের সিনেমা সম্পর্কে এই নিদারুণ সত্য কথাগুলো বলে। ডন প্রথমে মিউজিশিয়ান, এরপর স্ট্যান্ট ম্যান হিসেবে সফলতা পাবার পরেই নায়ক হবার সুযোগ পায়। সেই সুযোগ কাজে লাগানোর মাধ্যমেই সে নির্বাক যুগের একজন সফল এবং একধারে জনপ্রিয় অভিনেতা হয়ে ওঠে। কিন্তু ক্যাথির মুখে এসব কথা শুনে তার আত্মবিশ্বাসের ভিত নড়ে যায়। সে আত্মবিশ্বাস ভেঙেই পড়ে যখন সে তার প্রথম সবাক চলচ্চিত্রে দারূনভাবে ব্যর্থ হয়।
এ বিষয়টিতেই উঠে এসেছে হলিউডের সবচাইতে বড় পরিবর্তনের একটি, সবাক চলচ্চিত্রের আবির্ভাব। ১৯১০ সালে হলিউডের গোড়াপত্তনের পর থেকে সেটি এগিয়ে চলে নির্বাক চলচ্চিত্রের মাধ্যমেই। তবে ১৯২০ সালে বেল ল্যাবরেটরির আবিষ্কার ভাইটাফোন প্রযুক্তির মাধ্যমে ১৯২৭ সালে ওয়ার্নার ব্রাদারসের জ্যাজ সিনগার প্রথম সবাক চলচ্চিত্র হিসেবে মুক্তি পাওয়ার পরে যে সাফল্য পেয়েছিল, তাতেই অন্যান্য স্টুডিওগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ে সবাক চলচ্চিত্র নির্মাণে। মুভিটিতেও একই কাজ করে মনুমেন্টাল পিকচারস। তারা তাদের সেরা জুটি লকউড-ল্যামন্টের আসন্ন মুভি ডুয়েলিং ক্যাভেলিয়ারকে সবাক চলচ্চিত্রে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নেয়। অনেক ঝামেলা ডিঙিয়ে নির্মাণের পরেও লিনার দুর্বল কন্ঠ, মাইক্রোফোন নিয়ে কাজ করায় ব্যর্থতা এবং শেষে কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে ডুয়েলিং ক্যাভেলিয়ার প্রিমিয়ারের দিন এক হাস্যকর বস্তুতে পরিণত হয়।
নির্বাক চলচ্চিত্র নির্ভর করতো অভিনেতাদের মুখের অঙ্গভঙ্গি এবং অভিনয়ে অতিমাত্রায় ঢং প্রদর্শনের উপর। কিন্তু অভিনয়ের সাথে যখনই কথা যোগ করার প্রয়োজন হলো তখনই বোঝা গেল অনেক অভিনেতাই এটার উপযুক্ত নয়। উচ্চারণে দুর্বলতা এবং কন্ঠশৈলীর অভাবে জনপ্রিয় অনেক অভিনেতাই সব খুইয়ে বসেন। যেমনটা হয়েছিল ভিলমা ব্যাঙ্কি, মায় মারে এবং নরমা ট্যালমাজের সাথে। আর মুভিতে লিনা ল্যামন্টের সাথে।
আবার নতুন এই প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিতেও ঘাম ঝরাতে হয়েছে নির্মাতা-প্রযোজকদের। সম্পুর্ণ নতুন একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি সিনেমা বানানো চাট্টিখানি কথা নয়। নির্বাক চলচ্চিত্র নির্মাণে পরিচালক এবং তার সহযোগীরা সবসময় চিৎকার চেঁচামেচি করত। কারণ তখন তাদের প্রয়োজন ছিল কেবল দৃশ্যের। কিন্তু সবাক যুগের আগমনের সাথেই সে দৃশ্য বদলে যায়। কারণ তখন তাদের পুরোপুরি শান্ত পরিবেশে শ্যুট করতে হতো যাতে বাইরের কোনো শব্দ নয়, কেবল অভিনেতার কথাই রেকর্ড করতে পারে। কিন্তু তারপরেও তাদের কম ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়নি। অভিনেতারা সবসময় মাইক্রোফোনের দিকে কথা বলতে পারেনি এবং মাইক্রোফোনে অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দও চলে আসছিল। এসব বিষয় খুবই নিখুঁতভাবে সিঙ্গিন ইন দ্য রেইনে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
এছাড়াও মুভির শুরুতে ডন লকউড যখন তার সফলতার গল্প বলছিল, সে গল্পেও সিনেমা জগতের অনেক নির্মম সত্য উঠে এসেছিল। যেমন একইসাথে এই ইন্ড্রাস্ট্রিতে প্রবেশ করলেও তার বন্ধু কসমোর কোনো খ্যাতি না পাওয়া, লিনার প্রতি তার কোনো আকর্ষণ না থাকলেও জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে লিনা আর তাকে নিয়ে চলা গুজবকে মিথ্যা না বলা ইত্যাদি। আবার নিজের মনের কথা খুলে বলতে ডন ক্যাথিকে একটি খালি সাউন্ডস্টেজে নিয়ে আসে। সেখানে লকউড তখনকার সময়ের বেশ কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেই সাউন্ডস্টেজটিতে রোমান্টিকতার ছোঁয়া এনে দেয়। বিশাল ফ্যান, নানা রঙের আলো বা ধোয়া ব্যবহার সবগুলোই সিনেমাতে এখনো প্রায় সময়ই ব্যবহার করা হয়।
হলিউড এখনো সেসব চলচ্চিত্রকেই পছন্দ করে যেগুলোতে হলিউড এবং সিনেমা নির্মাণের গল্প তুলে ধরা হয়। সিঙ্গিন ইন দ্য রেইন শুধু সেই গল্পই তুলে ধরেনি, সাথে অভিনেতা/অভিনেত্রীদের দুর্দান্ত অভিনয় এবং অসম্ভব সুন্দর কিছু গান সাথে নিখুঁত কোরিওগ্রাফি পুরো মুভিটিকেই প্রাণবন্ত করে রেখেছিল।
মুভিটিকে ঘিরে বেশ কিছু গুজব প্রচলিত আছে। যেমন- সিঙ্গিন ইন দ্য রেইন নাচটির শ্যুটিংয়ের সময় পানিতে দুধ মেশানো হয়েছিল হয়েছিল যাতে ক্যামেরায় বৃষ্টির ফোঁটাগুলো ভালোভাবে ধরা পড়ে। কিন্তু এটি ভুল একটি তথ্য। পানিতে কিছুই মেশানো হয়নি। সিনেম্যাটোগ্রাফার হ্যারল্ড রউসন স্টেজের পেছনের অংশও সমানভাবে আলোকিত করেছিলেন যাতে বৃষ্টির ফোঁটা বোঝা যায়। আর গানটির শ্যুটিং দিনের বেলাতেই করা হয়েছিল।
তবে যে গুজবটি ভুল নয় সেটি হলো গানটির নাচের শ্যুটিংয়ের সময় আসলেই জিন কেলির ১০৩ ডিগ্রি জ্বর ছিল এবং পুরো গানটি শ্যুট করতে ২-৩ দিন সময় লেগেছিল। জিন কেলি হলিউডে পরিচিত ছিলেন একজন কঠোর পরিশ্রমী হিসেবে। তিনি যে দৃশ্য যেভাবে চেয়েছিলেন মুভিতে সব কিছু সেভাবেই হয়েছে। যার মধ্যে ক্যাথির প্রেমে রোমাঞ্চিত হয়ে বৃষ্টির মধ্যে নেচে বেড়ানো এই দৃশ্যটি ছিল। গানটি নিঃসন্দেহে এখন পর্যন্ত হলিউডের সেরা গানগুলোর মধ্যে একটি। গানটির কথা আমাদের জানাচ্ছে আবহাওয়া যতই ঝড়ো বা বিষণ্ন হোক না কেন, ডন এখন আনন্দিত, কারণ কোনো উদ্বেগ তাকে তাড়া করছে না। এই অনবরত বৃষ্টির মাঝেও ছাতাটিকে তার নাচের সঙ্গী বানিয়ে সে নেচে গেয়ে বেড়াচ্ছে, কারণ সে এখন জানে তার ভালোবাসার মানুষটিও তাকে ভালোবাসে। এই বৃষ্টি যেন তার জীবনের কঠিন সে মুহুর্ত যা সে একটু আগেই পেছনে ফেলে এসেছে। গানটিতে জিন কেলির নৃত্য এবং উল্লাস এতটাই প্রাণবন্ত ছিল যে এর পরে এবং এখনো বেশ কিছু মুভি এবং টিভি সিরিজে এই গানটি উল্লেখ করা হয়। যেমন: আ ক্লকওয়ার্ক অরেঞ্জ , গডজিলা, লিওন: দ্য প্রফেশনাল, দ্য সিম্পসন্স, সাংহাই নাইটস সহ আরো অনেক। আর আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউট এই গানটিকে সর্বকালের সেরা ১০০ মুভির গানের মধ্যে ৩ নং স্থান দিয়েছে।
মুভিতে ডনের ভালোবাসার মানুষটি ছিল ক্যাথি সেলডন, যে চরিত্রটিতে অভিনয় করেছিলেন ডেবি রেনল্ডস। ১৯৫০ সালে ‘টু উইকস উইথ লাভ’ মুভিতে আবা ডাবা হানিমুন গানটিতে দূর্দান্ত অভিনয়ের পর প্রযোজক আর্থার ফ্রেডের নজরে আসেন এবং জিন কেলির বিপরীতে সিঙ্গিন ইন দ্য রেইনে কাজ করার সূযোগ পান। মুভিতে কাজ করার সময়ে তার বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর। অবাক করা বিষয়, এর আগে তার নাচ কিংবা গানের কোন অভিজ্ঞতাই ছিল না, তিনি ছিলেন একজন জিমনিস্ট। তার হাতে মাত্র তিন মাস সময় ছিল নাচ শিখতে। তাকে সাহায্য করেন ক্যারল হেইনি এবং জিনি কয়েন। (
১৯৫১ সালের ২৩ জুন শুরু হয় মুভির শ্যুটিং। সেদিন শ্যুট করা হয় আরেক জনপ্রিয় গান গুড মর্নিং। সেদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত টানা কাজ করতে হয়েছিল ডেবি রেনল্ডসকে। যার ফলে তার পা রক্তাক্ত হয়ে গিয়েছিল। তিনি হাঁটাচলাই করতে পারছিলেন না। এছাড়াও পুরো মুভিতে তাকে যে পরিমাণ শারীরিক পরিশ্রম করতে হয়েছিল তিনি জিমনাস্ট হওয়া সত্ত্বেও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। শেষে একদিন নিজেকে সামলে নিতে না পেরে যখন পিয়ানোর আড়ালে বসে কান্না করছিলেন, তখন তাকে উদ্ধার করেন ফ্রেড অ্যাস্টায়ার এবং উৎসাহ দিয়ে বলেন, “নাচ শেখা অন্যতম কঠিন কাজগুলোর মধ্যে একটি। কিন্তু তোমার হাল ছেড়ে দিলে চলবে না।” এক সাক্ষাতকারে ডেবি রেনল্ডস জানিয়েছিলেন, সিঙ্গিন’ ইন দ্য রেইন এ অভিনয় এবং সন্তান জন্মদান তাঁর জীবনের সবচেয়ে কষ্টকর অভিজ্ঞতা।
একজন পুরোদস্তুর ড্যান্সার হওয়া সত্ত্বেও শারীরিক ধকলের শিকার হয়েছিলেন ডোনাল্ড ও’কনর। তিনি ছিলেন প্রচন্ড ধূমপায়ী। কিন্তু মেক’এম লাফ নাম্বারটি তাকে একদিনে শেষ করতে হয়েছিল। কনক্রিটের দেয়ালে ক্রমাগত দেয়ালে ডিগবাজি খেয়ে নাচ করতে করতে এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন যে তাকে সেদিন হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছিল। কিন্তু ফিরে এসেই তাকে আবার সেই নাম্বারটি করতে হয়েছিল কারণ আগের ফুটেজগুলো নষ্ট হয়েছিল। এত ধকল সত্ত্বেও ডন লকউডের বন্ধু হিসেবে পুরো মুভিতেই তার অভিনয় সবার মন কেড়ে নিয়েছে, যা তাকে এনে দিয়েছে গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডস।
তবে মুভিটিতে অভিনয় অস্কারে পার্শ্ব অভিনেত্রীর মনোনয়ন এনে দিয়েছিল লিনা ল্যামন্ট চরিত্রে অভিনয় করা জিন হ্যাগানকে। তিনি চরিত্রটিকে বেশ হাস্যকর এবং কিছুটা বোকা হিসেবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছিলেন। আবার যখন সে বুঝতে পারলো ক্যাথি তার ক্যারিয়ারের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে তখন সেই চরিত্রটিকে তিনি কিছু খলনায়কের রুপ দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিছুটা কর্কশ কন্ঠে নির্বাক যুগে ঝরে পড়া অভিনেতাদের প্রতিনিধিত্ব করলেও বাস্তবে তিনি খুবই সুন্দর কন্ঠের অধিকারিনী। এমনকি সিনেমার যে দৃশ্যে ক্যাথিকে লিনার কন্ঠের ডাব করতে দেখা যাচ্ছিল সেটা ডেবি রেনল্ডসের কন্ঠ নয়, বরং জিন হ্যাগেনেরই কণ্ঠ।
১০৩ মিনিট দৈর্ঘ্যের সিনেমাটিতে মোট ১৩টি গান ছিল, যার মধ্যে ১১টি গানই প্রযোজক আর্থার ফ্রিড এবং নেসিও হার্ব ব্রাউনের লেখা। এসব গান আগে কিছু সিনেমাতে ব্যবহার করা হয়েছিল। এটি বর্তমানে পরিচিত জুকবক্স মিউজিক্যাল হিসেবে। বাকি দুটো গানের (Moses supposes এবং Make ‘em laugh) মধ্যে মেক’এম লাফ ছিল ‘দ্য পাইরেট’ মুভির গান বি আ ক্লাউন এর নকল। প্রথমে এক্সেস ব্যাগেজ মুভির উপর ভিত্তি করে বানাতে চাইলেও আর্থার পরবর্তীতে বুঝতে পারেন একটি মৌলিক গল্প বেশ ভালোভাবেই গানগুলো ধারণ করতে পারবে। তাই স্ক্রিপ্টের ভার দেয়া হয় বেথি কমডেন এবং এডলফ গ্রিনের উপর। যদিও তাদের লেখা স্ক্রিপ্ট বেশ কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়, বিশেষ করে গানগুলো। যেমন- প্রথমে স্ক্রিপ্টে Would You গানে ডন-কেথির ভালোবাসা প্রকাশ করার কথা ছিল, পরে সেটা পরিবর্তন করে দেয়া হয় You Were meant for me। আবার স্ক্রিপ্টে সিঙ্গিন ইন দ্য রেইন গানটি ডন-কেথি-কসমোর প্রিমিয়ারের দিন একসাথে গেয়ে বাড়ি ফিরার সময়ে ছিল। যেটা পরবর্তীতে গুড মর্নিং গানটিতে স্থানান্তর করে জীন কেলিকে একক গান হিসেবে সিঙ্গিন ইন দ্য রেইন দেয়া হয়। সবগুলো গানের একটি সাধারণ বিষয় হলো অসম্ভব সুন্দর আর অনবদ্য কোরিওগ্রাফি। নাচগুলো খুবই সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে এবং অত্যন্ত নিখুঁতভাবে পারফর্ম করা হয়েছে। মোজেজ সাপোজেজ গানটির দিকে লক্ষ্য করলেই সেটা বোঝা যাবে বেশ ভালোভাবেই। অন্যসব গানের চাইতে এই গানটির নাচ পারফর্ম করাই ছিল সবচাইতে কষ্টকর।
মুভিতে সবগুলো গানই কাহিনীর সাথে সামাঞ্জস্য রেখে গল্পকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। শুধু ড্যান্সিং ক্যাভেলিয়ার মুভিতে ব্যবহার করা ব্রডওয়ে মিলডি কিছুটা গল্পের বাইরে ছিল। তারপরেও জিন কেলির সাথে সিড সেরিজের অসম্ভব সুন্দর নাচের জন্য বিষয়টি চোখেই পড়ে না। গানটির জন্য পুরো একমাস অনুশীলন করতে হয়েছে, আর শ্যুট করতে সময় লেগেছে পুরো দুই সপ্তাহ। গানটির মাধ্যমে একজন নৃত্যশিল্পীর ভালোবাসার একটি সুন্দর গল্পও তুলে ধরা হয়েছে।
আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউড (AFI) এই মুভিটিকে তাদের সেরা ১০০ মিউজিক্যাল মুভির শীর্ষে স্থান দিয়েছে। মুভিটি মিউজিক্যাল হওয়া সত্ত্বেও বড় কোনো পুরষ্কার করে তুলতে পারেনি। কিন্তু হলিউডের অতীত ধারণ করে এবং সাথে কিছু অসাধারণ গান উপহার দিয়ে সিনেমাজগতে নিজের স্থান পাকাপোক্ত করে নিয়েছে। তাই যতই সময় গড়াক, সিঙ্গিন ইন দ্য রেইন আমাদের মনে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।
প্রিয় পাঠক, রোর বাংলার ‘বই ও সিনেমা’ বিভাগে এখন থেকে লিখতে পারবেন আপনিও। সমৃদ্ধ করে তুলতে পারবেন রোর বাংলাকে আপনার সৃজনশীল ও বুদ্ধিদীপ্ত লেখনীর মাধ্যমে। আমাদের সাথে লিখতে চাইলে আপনার পূর্বে অপ্রকাশিত লেখাটি সাবমিট করুন এই লিঙ্কে: roar.media/contribute/