‘লিলিপুটরা বড় হবে’- একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক মঈনুল আহসান সাবেরের কিশোর উপন্যাসের নাম। রাকিবুল হাসানের চিত্রনাট্য এবং পরিচালনায় একই নাম দিয়ে চলচ্চিত্রটি মুক্তি দেয়া হয় ২০০৮ সালে। অভিনয় করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, আফসানা মিমি, আজাদ আবুল কালাম, খায়রুল আলম সবুজ, চিত্রলেখা গুহ প্রমুখ। ছবিটি এ পর্যন্ত বিশ্বের ৪২টি দেশে প্রদর্শিত হয়েছে।
শুরুতে এই কথাগুলো বলার কারণ ঐ সিনেমার শিরোনাম, কারণ এই লেখার বিষয়- ‘ছোট’দের নিয়ে ‘বড়’ সিনেমা। তাহলে বাচ্চাদের নিয়ে তৈরি হওয়া পাঁচটি ‘সাচ্চা’ সিনেমার কথা জেনে নেয়া যাক।
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ
ছোটবেলায় শোনা কৌতুকটি মনে আছে তো? ওই যে, বাচ্চা ট্যাবলেট খেতে চায় না বলে, মা রসগোল্লার ভেতর সেটা ভরে বাচ্চাকে খেতে দেয়। কিছুক্ষণ পর এসে মা বাচ্চাকে জিজ্ঞাসা করে, বাবু, রসগোল্লা খেয়েছ? বাচ্চার সরল উত্তর, হ্যাঁ মা, শুধু বীজটা ফেলে দিয়েছি।
এ কথা বলার উদ্দেশ্য হলো, আমাদের তালিকার সিনেমাগুলো ওই রসগোল্লার মতো- কাহিনীর আড়ালে সুন্দর বাস্তবতার উপস্থাপন। এখন প্রথমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমরা কী নেব– শুধুই ‘সিনেমাটিক প্লেজার’, নাকি তার সাথে ছোটদের অমিত সম্ভাবনার ‘সুন্দর বাস্তবতা’? আরেকটি বিষয় হচ্ছে, পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য। আমরা প্রকাশ্যে যে আচরণকে অশোভন বা অগ্রহণযোগ্য মনে করি, পাশ্চাত্য সেটাকে অত্যন্ত স্বাভাবিক মনে করে। সিনেমা দেখতে গিয়ে এই কথাটি মাথায় রাখা সমীচীন।
১) পে ইট ফরোয়ার্ড (২০০০) – প্রত্যাশাহীন সেবা সর্বোত্তম
ক্যাথেরিন রায়ান হাইডের লেখা একই নামের উপন্যাস থেকে তৈরি এ সিনেমার কাহিনী আবর্তিত হয় আমেরিকায় বসবাসকারী ১১ বছর বয়সী ট্রেভর (হ্যালি জোয়েল ওসমেন্ট) চরিত্রটিকে ঘিরে। তার বাসার অবস্থা ভালো না। বাবা (অভিনয়ে জন বন জোভি) তাদের ছেড়ে চলে গেছেন আর মা আর্লিন (হেলেন হান্ট) সংসার সামলাতে দুটো চাকরি করেন।
সপ্তম শ্রেণীতে পড়াকালীন ট্রেভরের স্কুলে সোশ্যাল স্টাডিজের নতুন শিক্ষক হিসেবে আসেন মিস্টার সিমোন (কেভিন স্পেসি); চেহারায় পুরনো ক্ষতের দাগ এবং অত্যন্ত অন্তর্মুখী ব্যক্তিত্ব তার। তিনি ক্লাসে একটা অদ্ভুত অ্যাসাইনমেন্ট দেন– চারপাশকে পরিবর্তন করার একটি বাস্তবসম্মত আইডিয়া দিতে হবে এবং সেটা করে দেখাতে হবে। তখন ট্রেভর ‘পে ইট ফরোয়ার্ড’ এর ধারণা সামনে নিয়ে আসে। ধারণাটা খুব সরল– তিনজন মানুষকে কোনো প্রতিদানের প্রত্যাশা ছাড়া উপকার করে, তাদেরকে একই অনুরোধ করা। তার মানে তারা যেন আরও তিনজন মানুষকে কোনো প্রতিদানের প্রত্যাশা ছাড়া উপকার করে।
সরল, কিন্তু অসাধারণ ধারণাকে বাস্তবে করে দেখানোর জন্যে ট্রেভর নিজে তিনটি কাজের উদ্যোগ নেয়। প্রথমত, জেরি নামের এক মাদকাসক্ত, ঘরহারা মানুষকে বাসায় এনে রাখতে থাকে। দ্বিতীয়ত, তার মা ও মি. সিমোনকে মিলিয়ে দিতে চেষ্টা শুরু করে– এতে নাকি দুজনেই ভালো থাকবে। এটিই সিনেমার সবচেয়ে দুর্বল দিক, কেননা এখানে প্রেমের উপাদানটি জোর করে না ঢোকালেও হতো। তৃতীয়ত, স্কুলের এক সহপাঠীকে সে অন্যদের অত্যাচার থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। এভাবে চলতে থাকে কাহিনী। চিত্রনাট্যের দুর্বলতা কাহিনীর মূলভাবকে কখনো কখনো আড়াল করে ফেলেছে। সিনেমাটির আই.এম.ডি.বি. রেটিং ৭.২, রটেন টোম্যাটো রেটিং ৩৯% এবং এর মূল বক্তব্য নিয়ে সমাজবিজ্ঞানী ওয়েন বেকারের টেড টক দেখা যেতে পারে।
২) হোয়েল রাইডার (২০০২) – আদিবাসী কন্যার অদম্য যাত্রা
নিউজিল্যান্ডের মাওরি আদিবাসীদের জীবনদর্শনের প্রেক্ষাপটে সিনেমার কাহিনী। পুরুষতান্ত্রিক হোয়াংগারা গোত্রে ছেলেরাই পারে গোত্রনেতার দায়িত্ব নিতে। সুপ্রাচীন এ প্রথা ধাক্কা খায়, যখন জন্মসূত্রে নির্ধারিত পুত্রসন্তানটি মারা যায়। মৃত বাচ্চার যমজ বোন ‘পাই’ (অভিনয়ে কেইশা ক্যাসল হিউজ) বেঁচে থাকে। ১২ বছর বয়সে দাদী ও চাচার সাহায্য নিয়ে সে গোত্রনেতার দায়িত্ব নেবার জন্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। কিন্তু প্রচলিত প্রথার বিপরীতে গিয়ে সাফল্য পেতে হলে পাই’কে অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখাতে হবে– ঐতিহ্য ও প্রথার অন্ধ অনুসারী দাদাকে প্রভাবিত করা। কিন্তু কীভাবে?
হোয়াংগারাদের হাজার বছরের পুরনো মিথ, তাদের প্রথম আদিপুরুষ ‘পাইকিয়া’ সমুদ্রে নৌকা উল্টে গেলেও তিমির পিঠে চড়ে তীরে বেঁচে ফেরেন। আজকের ‘পাই’ কি সেই আদিপিতার মতো কোনো অসাধারণ কাজ করতে পারবে? শত শত বছরের পুরনো প্রথা ভাঙতে প্রকৃতি ‘পাই’কে কীভাবে সাহায্য করবে, সে নিয়েই ছবির মূল কাহিনী। সিনেমাটির আই.এম.ডি.বি. রেটিং ৭.৫, রটেন টোম্যাটো রেটিং ৯১%।
৩) তারে জমিন পর (২০০৭) – মালী যেমন, বাগান তেমন
আট বছরের ঈশান (অভিনয়ে দার্শিল সাফারি) একজন ‘প্রবলেম চাইল্ড’। স্কুল তার কাছে পুরোপুরি ধাঁধা, ক্লাস তার কাছে কারাগার, লেখাপড়া তার কাছে দুঃস্বপ্ন। বাবা-মা বোঝে না, এবং স্বাভাবিকভাবেই তার উপর তারা যারপরনাই বিরক্ত। তারা সবসময় ঈশানের তুলনা করে তার বড় ভাই ইয়োহানের সাথে। বাধ্য হয়ে তারা অধিক অনুশাসনের বোর্ডিং স্কুলে পাঠিয়ে দেয় ঈশানকে; তার অমত ছিল সাংঘাতিক, কিন্তু কেউ তার কথায় কান দেয় না। নিয়ম-রীতির চাপে পড়ে সে তার সর্বাধিক প্রিয় সৃজনশীল কাজ- ছবি আঁকা ছেড়ে দেয়। নিজের ভেতর গুমরে মরতে থাকে দিন-রাত।
এমন অবস্থায় ঈশানদের ক্লাসে আসেন আর্টের শিক্ষক রাম কুমার নিকুম্ভ (অভিনয়ে আমির খান)। এমনিতে নিকুম্ভ ‘স্পেশালি এনাবল্ড’ বাচ্চাদের স্কুলে পড়ান। খাতা দেখে তিনি বোঝেন, ঈশান ডিসলেক্সিয়ায় আক্রান্ত। কিন্তু জিজ্ঞাসা করলে সে কিছুই বলে না। ব্যাপারটা ভালোমতো বোঝার জন্যে তিনি মুম্বাইতে ঈশানের বাড়ি যান। সেখানে ঈশানের আঁকা ছবি ও অন্যান্য কাজ দেখে তিনি বোঝেন, শুধুমাত্র সামান্য যত্ন আর মমতার অভাবে একটি অসামান্য প্রতিভা প্রকাশের রাস্তা খুঁজে পাচ্ছে না। তিনি বিষয়টি ঈশানের বাবা-মাকে বুঝিয়ে বলেন। এরপর শুরু হয় এক প্রজাপতির পাখা মেলার প্রক্রিয়া।
একজন প্রকৃত শিক্ষক কীভাবে একজন শিক্ষার্থীর জীবন ঘুরিয়ে দিতে পারেন, তার অসামান্য কাহিনীচিত্র এই ছবিটি। সিনেমাটি বক্স অফিস সাফল্যের পাশাপাশি সমালোচকদের অকুণ্ঠ প্রশংসা কুড়ায়। সিনেমাটির আই.এম.ডি.বি. রেটিং ৮.৪, রটেন টোম্যাটো রেটিং ৯১%।
৪) দ্য ক্যারাটে কিড (২০১০) – ‘গুরু মিলে লাখ, তো চেলা মিলে এক’
১২ বছর বয়সী ড্রে পার্কার (জ্যাডেন স্মিথ) এর সমস্যা তার মাকে নিয়ে। ঠিক মাকে নিয়ে নয় আসলে, মায়ের কাজ নিয়ে। ড্রের বাবা নেই, মার উপার্জনই ভরসা। কাজের সূত্রে মাকে ডেট্রয়েট ছেড়ে যেতে হবে বেইজিং। অপরিচিত পরিবেশে যেতে একাবারেই নারাজ ড্রে। কিন্তু উপায়ও নেই। অগত্যা সম্পূর্ণ নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা।
চারপাশের সবই নতুন। স্কুলে ভালো-মন্দ দুই অভিজ্ঞতারই মুখোমুখি হলো ড্রে। বন্ধুত্ব গড়ে উঠল মিষ্টি মেয়ে মেই ইয়াঙ-এর সাথে। ঝগড়া লেগে গেল স্থানীয় মাসল চেঙ-এর সাথে। চেঙ কুংফুতে পারদর্শী, আবার সাথে দলবল নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। ড্রে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হতে লাগল। এরকম একবারের কোনঠাসা অবস্থায় অপ্রত্যাশিত সাহায্য এলো রক্ষণাবেক্ষণকারী মি. হান (জ্যাকি চ্যান) এর কাছ থেকে।
ঘটনাক্রমে ড্রে জানতে পারল, মি. হান একজন কুংফু প্রশিক্ষক। ব্যস, আর যায় কোথায়! কুংফু শেখার জন্যে মি. হান-এর পেছনে লেগে গেল। কিন্তু শিখতে গিয়েও বিপত্তি। একটানা একঘেয়ে প্রশিক্ষণে ড্রে বিরক্ত। সেটা চূড়ান্ত মাত্রায় পৌঁছানোর আগেই মি. হান চোখে আঙুল দিয়ে কুংফুর অন্তর্নিহিত সৌন্দর্যও বুঝিয়ে দেন। সব বুঝে ড্রে মন-প্রাণ ঢেলে শিখতে লাগল। বাকি গল্প শুধু কুংফুর নয়– মানবিক সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উন্নত হবার, আন্তরিক অনুসারী হয়ে গুরুর প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে যাবার, শত্রুকে হারিয়েও জিতে নেয়ার অনুপম কাহিনীর। সিনেমাটির আই.এম.ডি.বি. রেটিং ৬.২, রটেন টোম্যাটো রেটিং ৬৬%।
৫) দ্য বয় হু হার্নেসড দ্য উইন্ড (২০১৯) – মানবিক ইচ্ছাপূরণে বিজ্ঞানের উপায়
উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার দেশ মালাওয়ি। সেখানকার ভূমিপুত্র উইলিয়াম কামকোয়াম্বা রচিত একই নামের আত্মজীবনীমূলক বই থেকে সিনেমাটি নির্মিত। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন ‘টুয়েলভ ইয়ার্স আ স্লেভ’ (২০১৩) ও ‘দ্য মার্শিয়ান’ (২০১৫) খ্যাত চিওয়েতেল এজিফোর।
সিনেমার মূল শক্তি এর ন্যারেটিভ, গল্প বলার মেজাজ। এদিক দিয়ে সিনেমাটি সার্থক। কীভাবে মালাওয়ি দেশটা একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর আন্তর্জাতিক ঘটনার প্রভাবে দুর্ভিক্ষ ও অস্থিতিশীল অবস্থায় পড়ে, তার খুব নিখুঁত চিত্রায়ণ হয়েছে। বিশেষত ৯/১১ এর ঘটনা, মালাওয়িতে তার আন্তর্জাতিক প্রভাবে খাবারের দাম বেড়ে যাওয়া– কাহিনীর প্রেক্ষাপট নির্মাণে এসব খুব প্রাসঙ্গিকতা এসেছে। একদিকে দুর্ভিক্ষ সব শেষ করে দিচ্ছে। অন্যদিকে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা– আন্তর্জাতিক অস্থিতিশীলতা।
এরকম প্রাকৃতিক ও মানব-সৃষ্ট দুর্যোগের মুখে উইলিয়াম কামকোয়াম্বার (অভিনয়ে ম্যাক্সওইয়েল সিম্বা) বাবা চাষী হিসেবে অসহায় হয়ে পড়ে। পরিবার হিসেবে তারা আরও অনেকের মতোই নানারকম দুর্ভোগ পোহাতে থাকে। ভালো ফসলের ওপর নির্ভরশীল এই পরিবারটির বেঁচে থাকা তখন দায়। চারদিকে খাবারের আকাল। উইলিয়ামের বোন তার স্কুল শিক্ষকের সাথে পালিয়ে যায়, কারণ পরিবারে একজনও খাবারের লোক কমে যাওয়া মানে বিরাট স্বস্তি।
মালাওয়িতে জাদুটোনা স্বাভাবিক আর বিজ্ঞান রহস্যে মোড়ানো। এমন অবস্থায় ছোট্ট উইলিয়াম একটি উইন্ডমিল বানানোর পরিকল্পনা করে। উদ্দেশ্য মোটর পাম্পে পানি তুলে গ্রামটিকে বাঁচানো। স্বপ্ন যত বড়ই হোক, সে তো বাচ্চা মানুষ। তাই বড় উইন্ডমিল বানাতে বাবার সাহায্য চাই। কারণ উইন্ডমিল বানাতে পরিবারের শেষ সম্পদ সাইকেলটিকে ভেঙে পার্টস নিতে হবে। উইলিয়ামের বাবা (অভিনয়ে চিওয়েতেল এজিফোর) প্রথমে রেগে যান, তাকে জোর করে ক্ষেতের কাজে লাগান। একসময় উইলিয়ামের মায়ের হস্তক্ষেপে বাবা রাজি হন। উইন্ডমিল বানানো হয় এবং গ্রামে সুন্দরভাবে চাষাবাদ শুরু হয়। গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে উইলিয়ামের উইন্ডমিলের গল্প। পরে বৃত্তি পেয়ে উইলিয়াম পড়তে যায় ডার্টমাউথ কলেজে। অপূর্ব অভিনয় আর বাস্তবানুগ চিত্রায়ণ সিনেমাটিকে অসাধারণ ডকু-ড্রামা হিসেবে অনন্য স্থান এনে দিয়েছে। সিনেমাটির আই.এম.ডি.বি. রেটিং ৭.৬, রটেন টোম্যাটো রেটিং ৮৬%।
শেষের আগে
কবি গোলাম মোস্তফা রচিত ‘কিশোর’ কবিতার সুবিখ্যাত চরণগুলো আমরা জানি,
“ভবিষ্যতের লক্ষ আশা মোদের মাঝে সন্তরে,
ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে।”
আমাদের মাঝে অনেকে ছোটবেলায় এর ভাবসম্প্রসারণ করেছি। কথাটির মূলভাব, আজকের শিশুর মাঝে ভবিষ্যতের দায়িত্বশীল মানুষ লুকিয়ে আছে। কথাটি সুন্দর মানবিক বাস্তবতা। কিন্তু ওপরের সিনেমাগুলোতে বাচ্চাদের আরও উচ্চতর ভূমিকা দেখানো হয়েছে। সেখানে বাচ্চা মানে নেহায়েত বাচ্চা নয়, বরং ওই ছোট্ট বয়সেই তারা যেন হয়ে উঠেছে দায়িত্বশীল মানুষ। নিজের ইতিবাচক আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত করার মাধ্যমে তারা চারপাশের সবাইকে উদ্বুদ্ধ করে তুলেছে। অন্ততঃ এসব ক্ষেত্রে ছোটরা আর ‘লিলিপুট’ নেই, ‘বড়’ হয়ে গেছে। আলোচ্য পাঁচটি সিনেমার ভৌগোলিক ব্যাপ্তিও বিস্তৃত- পে ইট ফরোয়ার্ড (২০০০) আমেরিকার, হোয়েল রাইডার (২০০২) নিউজিল্যান্ডের, তারে জমিন পর (২০০৭) ভারতের, দ্য ক্যারাটে কিড (২০১০) চীনের, আর দ্য বয় হু হার্নেসড দ্য উইন্ড (২০১৯) আফ্রিকার প্রেক্ষাপটে বানানো। তাই চিরকালীন মানবিকতার বিকাশে আছে সার্বজনীনতার ছোঁয়াও। দেশ-জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ‘লিলিপুট’রা এভাবেই ‘বড়’ হয়ে উঠুক।