Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

স্পাই স্টোরিজ (৩): এক অতি-আত্মবিশ্বাসী স্পাই যেভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে চেয়েছিল মার্কিন সরকারকে

এবারের একুশের বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে রোর বাংলার লেখক মোজাম্মেল হোসেন ত্বোহার বই ‘স্পাই স্টোরিজ: এসপিওনাজ জগতের অবিশ্বাস্য কিছু সত্য কাহিনি‘। বইটির একটি গল্প আমরা প্রকাশ করছি রোর বাংলার পাঠকদের জন্য। তিন পর্বে প্রকাশিত গল্পটির তৃতীয় পর্ব এটি। সবগুলো পর্ব পড়ুন এখান থেকে: ১ম পর্ব | ২য় পর্ব | ৩য় পর্ব

পাঁচ.

রিগ্যান যখন প্রথম গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তখন তিনি কোনো অপরাধই স্বীকার করতে রাজি হচ্ছিলেন না। কিন্তু এফবিআই যখন তার বাসার কম্পিউটার ঘেঁটে লিবিয়ান দূতাবাসে পাঠানো ডকুমেন্টগুলোর সফট কপি খুঁজে পায়, তখন তার আর অস্বীকার করার কোনো উপায় ছিল না।

এরকম হাতেনাতে ধরা পড়ে গেলে অধিকাংশ অপরাধীই সাধারণত নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেয় এবং কর্তৃপক্ষের সাথে সমঝোতায় যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু রিগ্যানের কথা ভিন্ন। তিনি সহযোগিতা না করে পাল্টা হুমকি দিতে শুরু করেন। তিনি দাবি করেন, তার কাছে মাটির নিচে লুকানো এমন সব তথ্য আছে, যেগুলো অন্য কোনো দেশের হাতে পড়লে যুদ্ধ বেঁধে যাবে! এই তথ্যগুলোর সন্ধান তিনি তখনই দিবেন, যখন সরকার তাকে লঘুতম শাস্তি দিয়ে ছেড়ে দিতে রাজি হবে।

এনআরও চাইছিল রিগ্যানের সাথে যেকোনো ধরনের সমঝোতায় গিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তথ্যগুলো উদ্ধার করে ফেলতে। কিন্তু জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট বেঁকে বসে। তাদের অবস্থান ছিল, একবার কারো চাপের কাছে নতি স্বীকার করলে এরপর অন্যান্য অপরাধীরাও সেই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে।

রাষ্ট্রপক্ষ বিভিন্নভাবে রিগ্যানকে বাগে আনতে চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। রিগ্যান আগের মতোই অনড় থাকেন। ফলে মামলা শেষপর্যন্ত আদালতে গড়ায় এবং ক্ষুব্ধ রাষ্ট্রপক্ষ রিগ্যানের মৃত্যুদণ্ডের জন্য আবেদন করে বসে। এটি ছিল ১৯৫৩ সালের রোজেনবার্গ কেসের পর থেকে আমেরিকার ৫০ বছরের ইতিহাসে এসপিওনাজের দায়ে কারো মৃত্যুদণ্ড চাওয়ার প্রথম ঘটনা।

বিচার শুরু হওয়ার প্রাক্কালে রিগ্যান আরেকটি দুঃসাহসী কাজ করে বসেন। তিনি জেল থেকে গোপনে তার স্ত্রীর কাছে সাংকেতিক ভাষায় একটি চিঠি লেখেন। সেখানে তিনি তাকে অনুরোধ করেন, সে যেন জঙ্গলে গিয়ে নির্দিষ্ট কিছু স্থানে কিছু খেলনা জিনিস লুকিয়ে রেখে আসে।

রিগ্যানের পরিকল্পনা ছিল, রাষ্ট্রপক্ষ যখন আদালতে অভিযোগ করবে যে, তিনি জঙ্গলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট লুকিয়ে রেখেছেন, তখন তিনি পুরো ব্যাপারটা অস্বীকার করবেন। তিনি দাবি করবেন, কোনো ডকুমেন্ট না, বরং সন্তানদের সাথে ট্রেজার হান্ট খেলার জন্যই তিনি জঙ্গলে বিভিন্ন খেলনা লুকিয়ে রেখেছিলেন। এফবিআই অনর্থক তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।

কিন্তু তার স্ত্রী কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই এফবিআই চিঠিটি উদ্ধার করে ফেলে। এবার তারা রিগ্যানকে নির্জন প্রকোষ্ঠে প্রেরণ করার এবং তার স্ত্রীকে আটক করার হুমকি দেয়। স্ত্রীকে বাঁচানোর জন্য শেষপর্যন্ত রিগ্যান হার স্বীকার করেন। গ্রেপ্তার হওয়ার প্রায় দেড় বছর পর রিগ্যান প্রথমবারের মতো এফবিআই এর সাথে সহযোগিতা করতে রাজি হন। এই দেড় বছরে হাজার চেষ্টা করেও এফবিআই এবং এনএসএর ক্রিপ্টোলজিস্টরা ঐ চার পৃষ্ঠার তিন অঙ্কের সংখ্যাগুলো ডিকোড করতে পারেনি।

রিগ্যান জানান, সবগুলো ডকুমেন্ট তিনি মোট ১৯টি স্থানে লুকিয়ে রেখেছেন। এর মধ্যে ১২টি প্যাকেজ রেখেছেন ভার্জিনিয়ার পোকাহন্টাস স্টেট পার্কে এবং বাকি ৭টি প্যাকেজ রেখেছেন ম্যারিল্যান্ডের পাটাপস্কো ভ্যালি স্টেট পার্কে। এফবিআই যে চার পৃষ্ঠার তিন অঙ্কের সংখ্যাগুলো ডিসাইফার করতে চাইছে, সেগুলো হচ্ছে ভার্জিনিয়ার ১২টি সাইটের কোর্ডিনেট। সেগুলো তিনি এনসাইফার করেছেন বুক কোড (Book Code) ব্যবহার করে। অর্থাৎ সেগুলো ডিসাইফার করতে নির্দিষ্ট একটি বইয়ের প্রয়োজন হবে।

স্পাই স্টোরিজ: যে বই থেকে নেওয়া হয়েছে এই গল্পটি। অর্ডার করুন এখানে

কিন্তু রিগ্যান এফবিআইকে আশ্বস্ত করেন, এত কষ্ট করে সংখ্যাগুলো ডিকোড করার আসলে কোনো দরকার নেই। তিনি তাদেরকে ভার্জিনিয়ার একটি রাস্তার নির্দিষ্ট একটি সাইনবোর্ডের ঠিকানা দিয়ে বলেন, সেখানে মাটির নিচে একটি প্লাস্টিকের টুথব্রাশ কন্টেইনার লুকানো আছে, যার ভেতরে একটি কাগজে প্লেইনটেক্সটেই ঐ ১২টি সাইটের কোর্ডিনেট লেখা আছে! এফবিআই তার কথামতো গিয়ে ঠিকই এক সপ্তার মধ্যে সবগুলো প্যাকেজ উদ্ধার করে আনে।

কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় ম্যারিল্যান্ডের ৭টি সাইটের ঠিকানা নিয়ে, যেখানে সবচেয়ে স্পর্শকাতর ডকুমেন্টগুলো রাখা ছিল। এর কোর্ডিনেটগুলো লেখা ছিল ভার্জিনিয়ার টুথব্রাশ কন্টেইনারের ভেতরেই আরেকটি কাগজে। কিন্তু প্লেইনটেক্সটের পরিবর্তে এগুলো লেখা ছিল সাইফারটেক্সট তথা সাংকেতিক ভাষায়। পুরো পৃষ্ঠা জুড়ে ছিল অনেকগুলো ট্রাইনোম তথা তিন অঙ্কের সংখ্যা। এর ফাঁকে ফাঁকে ছিল একটি ইংরেজি বর্ণের সাথে দুই অঙ্কের একটি সংখ্যার কয়েকটি মিশ্রণ। অনেকটা এরকম: … 413 958 431 13A 11A 40A 775 167 102।

কাগজটি হাতে পাওয়ার পর স্টিভেন কার সেটি রিগ্যানের দিকে এগিয়ে দেন। কিন্তু রিগ্যান শূন্যদৃষ্টিতে সেদিকে চেয়ে থাকেন। এমনিতেই তিনি ডিসলেক্সিয়ায় আক্রান্ত। তথ্য মনে রাখতে তার কষ্ট হয়। তার উপর কোডগুলো তিনি লিখেছিলেন প্রায় তিন বছর আগে। এর মধ্যে কত কিছু ঘটে গেছে! কোন পদ্ধতিতে যে তিনি এই পৃষ্ঠাটি এনসাইফার করেছিলেন, সেটি তিনি এখন নিজেই আর মনে করতে পারছেন না!

রিগ্যানের ট্রাইনোম কোডগুলো; Image Source: FBI

কয়েক সপ্তাহ পর এক সকালে রিগ্যানকে সাথে নিয়ে স্টিভেন কার, ড্যানিয়েল ওলসন এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা ব্রেইনস্টর্মিং সেশনে বসলেন। সবাই মিলে একসাথে কোডগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন, যদি কারো মাথা থেকে নতুন কোনো সূত্র বেরিয়ে আসে, এই আশায়।

রিগ্যান জানালেন, তিনি শুধু মনে করতে পারছেন, পৃষ্ঠাটি এনক্রিপ্ট করার জন্য কোড বুক হিসেবে তিনি তার হাই স্কুলের ইয়ারবুক ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু কীভাবে ব্যবহার করেছিলেন, তা তার মনে নেই। এনক্রিপ্ট করা পৃষ্ঠাটির একেবারে উপরে Number 1 লেখা ছিল। রিগ্যান জানালেন, এটি হচ্ছে ইয়ারবুকে তার নিজের নামের রেফারেন্স। কিন্তু অন্য সংখ্যাগুলোর সাথে এটি কীভাবে সম্পর্কিত, সে ব্যাপারে তিনি কোনো ধারণা দিতে পারলেন না।

লাঞ্চের কিছুক্ষণ আগে ওলসন হঠাৎ লক্ষ্য করলেন, 13A সংখ্যাটিকে পুরো পৃষ্ঠা জুড়ে বেশ কয়েকবার দেখা যাচ্ছে। তিনি গুণে দেখলেন, কিছু দূর পর পর করে সংখ্যাটি মোট সাত বার লেখা হয়েছে। তার মনে পড়ল, ম্যারিল্যান্ডে মোট প্যাকেজের সংখ্যাও সাত। এমন কি হতে পারে, প্রতিটি প্যাকেজের জন্য একবার করে 13A সংখ্যাটি উল্লেখ করা হয়েছে?

ওলসনের কিছু একটা সন্দেহ হলো। তিনি ইয়ারবুকে রিগ্যানের ছবি থেকে গুণে গুণে ১৩তম ছবিটার দিকে তাকালেন। এই ছবিটা অন্য সবগুলো ছবি থেকে ভিন্ন। এখানে ছাত্রটির আসল নামের পরিবর্তে লেখা ছিল Mystery Man। আর সেই নামটি কেটে দিয়ে কলম দিয়ে লেখা ছিল Frank। পুরো ইয়ারবুকে অন্য কোনো নামের প্রথম অক্ষর F ছিল না।

ওলসনের সন্দেহ হলো, এটাই হয়তো মূল চাবি। সম্ভবত F হচ্ছে প্রতিটি প্যাকেজের অবস্থান বর্ণনা করার জন্য প্রয়োজনীয় সাধারণ একটি শব্দের প্রথম অক্ষর। কী হতে পারে সেটা? ওলসোনের একটা শব্দই মনে পড়ল: দূরত্বের একক, ফিট (Feet)!

রিগ্যান সাথে সাথে সায় দিলেন। হ্যাঁ, তার মনে পড়েছে। বর্ণযুক্ত তিন অক্ষরের অন্য সংখ্যাগুলোও এই পদ্ধতিতেই ডিকোড করতে হবে। ওলসন পরের সংখ্যা দুটির দিকে তাকালেন: 11A এবং 40A। রিগ্যানের ছবি থেকে ১১তম এবং ৪০তম ছবির নাম পাওয়া গেল Cindy এবং Donna। পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী এদের প্রথম অক্ষর নিলে হয় C এবং D। রিগ্যান জানালেন, এটা হচ্ছে CD তথা কমপ্যাক্ট ডিস্ক। অর্থাৎ এখানেই তিনি সিডিগুলো লুকিয়ে রেখেছেন!

পরবর্তী শব্দগুলো ডিকোড করার পর দেখা গেল, সেগুলো হচ্ছে SP তথা Small Package এবং LP তথা Large Package। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই CD, LP কিংবা SP ঠিক কোথায় লুকানো আছে? ওলসন বুঝতে পারছিলেন, এগুলোর প্রতিটির আগে যে একসারি বর্ণবিহীন তিন অঙ্কের সংখ্যা আছে, সেগুলো ডিকোড করতে পারলেই এদের কোঅর্ডিনেটগুলো পাওয়া যাবে। কিন্তু সেগুলো ডিকোড করার পদ্ধতি তখনও কেউ জানে না।

রিগ্যানের লুকিয়ে রাখা বিভিন্ন সিক্রেট ডকুমেন্ট, সিডি, লার্জ প্যাকেজ, স্মল প্যাকেজ; Image Source: FBI

ওলসন হঠাৎ আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করলেন। শুরুর দিকে কিছুক্ষণ পর পর বর্ণযুক্ত শব্দ থাকলেও শেষ তিন লাইনে কোনো বর্ণযুক্ত শব্দ নেই। সেখানে পরপর অনেকগুলো তিন অঙ্কের সংখ্যা। কেন হঠাৎ এই পরিবর্তন? শেষ তিন লাইনের বিশেষত্ব কী? রিগ্যানও ভাবতে লাগলেন, কিন্তু মনে করতে পারলেন না।

এক সপ্তাহ পর হঠাৎ একদিন স্টিভেন কারের ফোন বেজে উঠল। রিগ্যান যে জেলে ছিলেন, সেই আলেক্সান্দ্রিয়া জেলের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ফোন করেছেন। তিনি জানালেন, রিগ্যান তাকে অনুরোধ করেছেন তিনি যেন স্পেশাল এজেন্ট কারকে একটি জরুরি মেসেজ পৌঁছে দেন। মেসেজটি হচ্ছে, রিগ্যান কাজটি সমাধান করে ফেলেছেন!

পরদিনই কার ছুটে গেলেন রিগ্যানের সাথে দেখা করার জন্য। রিগ্যান তাকে জানালেন, ট্রাইনোমগুলো কীভাবে ডিকোড করতে হবে, সেটা তার মনে পড়ে গেছে। কিন্তু তার আসলে কোনো দরকার ছিল না। কারণ শেষ তিন লাইনে যে সংখ্যাগুলো লেখা ছিল, সেখানেই সব সমাধান দেওয়া ছিল। সেগুলো কোনো এনক্রিপ্টেড কোড ছিল না, সেগুলো ছিল একেবারে প্লেইন টেক্সটে লেখা সাতটি সাইটের অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশ!

রিগ্যানের আশঙ্কা ছিল, তিনি হয়তো এনক্রিপশন পদ্ধতি ভুলে যেতে পারেন। সেজন্যই পৃষ্ঠার নিচে সরাসরি কোঅর্ডিনেটগুলো লিখে রেখেছিলেন। কিন্তু এই কথাও যে তিনি ভুলে যাবেন, সেটা কে জানত?

এফবিআইর ক্রিপ্ট্যানালাইসিস্ট ড্যানিয়েল ওলসন; Image Source: Daniel Olson

পরবর্তী কয়েক সপ্তাহ স্টিভেন কার এবং তার সহকর্মীরা ব্যস্ত সময় কাটান। তারা কোঅর্ডিনেট অনুযায়ী ম্যারিল্যান্ডের পার্কে গিয়ে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেন ঠিকই, কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই বুঝতে পারেন ব্যাপারটা খুব একটা সহজ না। কারণ, ভার্জিনিয়ার মতো রিগ্যান এখানে সরাসরি কোর্ডিনেটের স্থানেই প্যাকেজগুলো লুকিয়ে রাখেননি। অধিকতর নিরাপত্তার জন্য তিনি এখানে প্যাকেজগুলো লুকিয়েছিলেন নির্দিষ্ট কোঅর্ডিনেটের বিপরীত দিকের গাছটি থেকে নির্দিষ্ট ফিট দূরে।

একদিন স্টিভেন কার জেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে রিগ্যানকে জঙ্গলের ভেতর নিয়ে যান তাদেরকে সঠিক স্থান খুঁজে বের করতে সাহায্য করার জন্য। অবশ্য কার নিজেও সন্দিহান ছিলেন। যে লোক সাধারণ বানান মনে রাখতে পারে না, তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা কীভাবে এনক্রিপ্ট করেছিল সেটা মনে রাখতে পারে না, সে কি তিন বছর আগে লুকানো জায়গার কথা মনে রাখতে পারবে?

কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে রিগ্যান ঠিকই খালি চোখে জঙ্গলের গাছপালার দিকে এক নজর তাকিয়েই দেখিয়ে দিতে পেরেছিলেন, ঠিক কোথায় কোথায় তিনি প্যাকেজগুলো লুকিয়ে রেখেছিলেন! বানান এবং সংখ্যা মনে রাখতে না পারলেও ডিসলেক্সিকরা যে দৃশ্য খুব ভালো মনে রাখতে পারে, সবাইকে যেন সেটাই আরেকবার মনে করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

আদালতে ব্রায়ান রিগ্যান; Image Source: FBI

২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে আদালতে রিগ্যানের বিচার শুরু হয়। বিচার শেষ হয় ফেব্রুয়ারি মাসে। বিচার শেষে আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। এই রায় জামিন-অযোগ্য। ফলে রিগ্যানকে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত বাকি জীবন কারাগারের ভেতরেই কাটাতে হবে।

ব্রায়ান রিগ্যানকে সারা জীবন অন্যরা অবমূল্যায়ন করেছে। তিনি বাস্তবিকই অন্যদের ধারণার চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান ছিলেন। কিন্তু নিজের প্রতি তার আত্মবিশ্বাসটা সম্ভবত বাস্তবের চেয়ে একটু বেশিই ছিল। এবং পরিহাসমূলকভাবে সেটাই তার জন্য কাল হয়েছে।

লিবিয়া, ইরাক, ইরান, সুদান এবং চীনের কাছে তথ্য বিক্রি করার চেষ্টা করলেও শেষপর্যন্ত কোনো ক্ষেত্রেই তিনি সফল হননি। ধরা পড়ার পরেও অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারণেই তিনি এফবিআইকে ব্ল্যাকমেইল করতে চেয়েছিলেন। যদি এফবিআইকে অবমূল্যায়ন না করে শুরুতেই নিজের অপরাধ স্বীকার করে তাদেরকে সাহায্য করতেন, তাহলে তার শাস্তি নিশ্চিতভাবেই আরো অনেক কম হতো!

যদি সত্য ঘটনা অবলম্বনে এরকম আরো গোয়েন্দাকাহিনি জানতে চান, তাহলে পড়তে পারেন এই লেখকের “স্পাই স্টোরিজ” বইটি। বইটি পাওয়া যাচ্ছে বইমেলায় ঐতিহ্যের (১৪ নম্বর) স্টলে। রকমারি ডট কম থেকে বইটি সংগ্রহ করতে চাইলে ক্লিক করুন এখানে

This is a true spy story from the book "Spy Stories" by Mozammel Hossain Toha, one of the staff writers of Roar Bangla. This is the 3rd part of a three-part series.

Related Articles