Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ডোরেমন: একটি আবেগের বৃত্তান্ত

ম্যাঙ্গা, অ্যানিমে ও চলচ্চিত্র দিয়ে বিশ্ব জুড়ে এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিলো যে, সেসবের কল্যাণে ‘ডোরেমন’ আজ জাপানের অন্যতম জাতীয় আইকনে পরিণত হয়েছে। গত শতাব্দীর সাতের দশকে জন্ম নেওয়া এই কমিক সিরিজটি বিবর্তনের নানা পথ ধরে আজও ম্যাঙ্গা বা অ্যানিমেপ্রেমীদের পছন্দের তালিকায় শুরুর দিকেই থাকে। অনেকের কাছে বিরক্তি উদ্রেকের কারণ হলেও এই ডোরেমনই তার ভক্তদের কাছে একটি আবেগের নাম। শৈশবকে তারা খুঁজে পান নোবিতা, শিজুকাদের ভেতর। আজ বলবো সেই ডোরেমনের কথা।

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

জাপানের বিখ্যাত দৈনিক আসাহি শিম্বুন-এ ২০১২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর একটি ফিচারের শিরোনাম ছিলো “শুভ জন্মদিন! ১০০ বছর পর এই দিনে জন্ম নেবে ডোরেমন”। ঠিকই পড়ছেন, একশ বছর ‘পর’ই, কেননা ডোরেমন হচ্ছে ভবিষ্যৎ (বাইশ শতক) থেকে আসা এক রোবট। ‘ডোরেমন’ মূলত ইংরেজি ‘Doraemon‘ এর প্রতিরূপ। কিন্তু জাপানী ভাষায়  শব্দটি ドラえもん এবং উচ্চারণ ‘দোরা-এমন’। পুরুষ বিড়াল বোঝাতে শব্দটিতে গৃহীত হয়েছিলো এবং আদতেও ডোরেমন হচ্ছে পুরুষ বিড়ালের আদলে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন উড়তে-বলতে পারা রোবট।

Source: todetele.com

এই ডোরেমন হলো টোকিওর নোবি পরিবারের ছেলে নোবিতা নোবির বন্ধু, যে কিনা অনেকটা ঐ পরিবারেরই আরেক সদস্যের মতো। মা-বাবার একমাত্র সন্তান নোবিতা পড়াশোনায় ফাঁকিবাজ, বাকি ক্ষেত্রেও অকর্মণ্য। তার কাছের তিন বন্ধু হলো বিশালবপু জিয়ান, ধনীর দুলাল সুনিও ও মিষ্টি বালিকা শিজুকা। এই কয়জনের বন্ধুত্ব, ঝগড়া, ভালোবাসার সাথে তাদের পারিবারিক জীবন, স্কুল জীবনের নানা টক-ঝাল-মিষ্টি অভিজ্ঞতা নিয়েই মূল গল্প। ডোরেমনের কাজ হলো প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে নোবিতার ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকা ও নানা গ্যাজেট দিয়ে নোবিতাকে সাহায্য করা।

কোথা থেকে এলো ডোরেমন?

ডোরেমন সর্বপ্রথম বাজারে এসেছিলো ম্যাঙ্গা (জাপানী কমিক) সিরিজ হিসেবে, যার জনক ছিলেন ফুজিকো এফ ফুজিও। ফুজিওর প্রকৃত নাম অবশ্য ছিলো হিরোশি ফুজিমতো। হিতোৎসুবাশি গ্রুপের শোগাকুকান প্রকাশনীর ৬টি শিশুতোষ ম্যাগাজিনে ১৯৬৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ডোরেমন ম্যাঙ্গা ছাপা হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় লেখা হয়েছিলো ১,৩৪৪টি গল্প, ‘৯৬ পর্যন্ত যা ৪৫টি খণ্ডে ছাপা হয়েছে।

Source: doraemon.mangawiki.org

১৯৭৩ সালের এপ্রিলে ম্যাঙ্গার গল্পগুলোকে আশ্রয় করেই অ্যানিমে বাজারে আসে। টিএমএস এন্টারটেইনমেন্টের প্রযোজনায় এই অ্যানিমে সিরিজের পরিচালক ছিলেন মিৎশুও কামিনাশি। তবে সে সিরিজ অতটা জনপ্রিয় হয়নি। দ্বিতীয় দফায় ১৯৭৯ সালে সুতোমু শিবায়ামা পরিচালিত শিন-এই অ্যানিমেশনের প্রযোজনায় আসা সিরিজটির তুমুল জনপ্রিয়তা ডোরেমনকে স্বতন্ত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে দাঁড় করিয়ে দেয়। ২০০৫ সালের মার্চ অবধি ১,৭৮৭ পর্ব নিয়ে যাত্রা শেষ করে সিরিজটি।

ডোরেমনের পরিচিতি

ডোরেমন ম্যাঙ্গা বা অ্যানিমের প্রারম্ভে এটি বলা হয় না যে, ডোরেমনের জন্ম ও ভবিষ্যৎ থেকে নোবি পরিবারে আগমন কীভাবে। ১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘2112: Doraemon’s Birthচলচ্চিত্রটিতে এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়, কেননা সেটি ছিলো অনেকটা গোটা সিরিজের প্রিক্যুয়েলের মতো। ২১১২ সালে মাৎসুশিবা রোবট ফ্যাক্টরিতে ডোরেমনের জন্ম। নোবিতার উত্তরসুরী সিবাশির সাথে তার পরিচয় কীভাবে এবং ডোরেমন ইঁদুর রোবটের কামড়ে তার কান কীভাবে হারায়, কান হারাবার পর ডোরেমনের গার্লফ্রেন্ড কীভাবে তাকে ছেড়ে চলে যায়, সবই দেখানো হয় তাতে। হলুদরঙা ডোরেমন বিষণ্ণতায় ‘স্যাডনেস’ নামক সুধা পান করে ফেলে। তার অনর্গল অশ্রুতে ভিজে দেহের হলুদ রঙ ধুয়ে গিয়ে নীল হয়ে যায়।

‘ডোরেমনস বার্থ’ সিনেমার দৃশ্যে কানওয়ালা হলুদ ডোরেমন; Source:youtube.com

উত্তরসূরীরা তাদের পূর্বপুরুষ নোবিতার নির্বুদ্ধিতায় নানাভাবে ভুক্তভোগী হচ্ছিলো। এটা দেখে সিবাশির জন্য ডোরেমন টাইম মেশিনে চড়ে চলে আসে বিংশ শতাব্দীতে। উদ্দেশ্য- নোবিতাকে সাহায্য করে তার ভবিষ্যতকে সুন্দর করা, যাতে পরবর্তী প্রজন্মের বর্তমান ভালো হয়। ডোরেমনের রয়েছে চতুর্মাত্রিক পকেট, যেখান থেকে সে বিচিত্র সব অত্যাধুনিক গ্যাজেট বের করে। এসব গ্যাজেট নোবিতাকে উপকারের জন্য দেওয়া হলেও নোবিতা বেশিরভাগ সময়েই হিতে বিপরীত ঘটায় সেসব দিয়ে।

চরিত্র ও গল্প পরিচিতি

গল্পের অন্যতম প্রধান চরিত্র নোবিতা হলো টোকিওর নেরিমা ওয়ার্ডের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। ইয়া বড় এক গোল চশমা ছাড়া সে চোখে ভালো দেখে না। একটি বালকের যতরকম ত্রুটি থাকতে পারে, তার সবটাই আছে নোবিতার ভেতরে। সে অলস, অগোছালো, অপ্রত্যুৎপন্নমতী, রোগা-পলকা, খেলায় অপটু। শুধু তা-ই নয়, ভাগ্যটাও কেন যেন সহায় হয় না তার কোনো সময়েই। রোজ দেরি করে ক্লাসে যাওয়া, ক্লাস টেস্টে শূন্য পাওয়া, শিক্ষকের ধমক খাওয়া আর হোমওয়ার্ক নিয়ে মায়ের সাথে তর্ক করা তার প্রাত্যহিক রুটিন।

এই নোবিতার জীবনে সবচেয়ে বড় ভোগান্তির নাম দুই বন্ধু জিয়ান ও সুনিও। কুকুরের তাড়া আর জিয়ান-সুনিওর মার খাওয়া ছাড়া নোবিতার দিন-গুজরান দুর্লভ! মোটা জিয়ান সবসময় গায়ের জোর খাটিয়ে নিজেকে মারামারি ও খেলার মাঠে নেতা প্রমাণে ব্যস্ত এবং তার সবচেয়ে বড় তোয়াজকারী হলো সুনিও, যার রয়েছে টাকার গরম! হেঁড়ে গলায় গান গাইতে জিয়ানের জুড়ি মেলা ভার! জিয়ানের নয়নমণি ছোটবোন জাইকোর সাথে নোবিতার বিয়ে হওয়ার কথা থাকলেও ডোরেমন তার ভবিষ্যৎ পাল্টে দেয় শিজুকার মাধ্যমে।

Source: doraemon.wikia.com

এই শিজুকা মিনামোতো হলো নোবিতার হেরো-শ্রান্ত জীবনে এক চিলতে প্রশান্তির নাম। মিষ্টি এই মেয়েটি নোবিতা, জিয়ান, সুনিওরই সহপাঠী ও প্রতিবেশী। নোবিতার ঠিক উল্টো হলো শিজুকা, যতটা সম্ভব ‘নিখুঁত’ লক্ষ্মী একটা মেয়ে সে। নোবিতা তাকে অনেক পছন্দ করে, এই শিজুকার কাছে ভালো সাজতে গিয়ে হতভাগা নোবিতা প্রায়শ বিদঘুটে পরিস্থিতির জন্ম দেয়। কিন্তু তারপরও সহজ-সরল পরোপকারী নোবিতার জন্য একটা জায়গা শিজুকার মনেও রয়েছে, যদিও তা নোবিতার মতো প্রবল নয়।

তাদের বাইরে রয়েছে নোবিতার আনমনা বাবা ও চিন্তিত মা, সুনিওর গয়না ও আত্মপ্রেমী মা, জিয়ানের মুদি দোকানদার মা, গানারি নামক অন্তঃপ্রাণ স্কুলশিক্ষক, আজন্ম ‘ফার্স্টবয়’ ডেগিজুকি প্রমুখ।

ডোরেমনের আজকাল

২০০৫ সালে শোগাকুকানের পরিবেশনায় ‘ডোরেমন প্লাস’ শিরোনামে এসেছিলো ম্যাঙ্গার নতুন ৬টি খণ্ড। এরপর একই বছরের এপ্রিল থেকে আসাহি টিভিতে কজো কুসুবার পরিচালনাতেই নতুন রূপে ডোরেমন অ্যানিমে সিরিজ শুরু হয়, যা এখন পর্যন্ত চলছে। ২০১৩ সালে শোগাকুকান ও ফুজিকো ফুজিও প্রোডাকশন মিলে এই ম্যাঙ্গার ইংরেজি সংস্করণ বাজারে এনেছে, যা কিন্ডল ই-বুকেও আপনি পেতে পারেন! আনিমেগুলোর ইংরেজি সংস্করণ সত্ত্ব কিনে নিয়ে তা প্রচার করছে ডিজনি এক্সডি। ম্যাঙ্গা, আনিমের পাশাপাশি ডোরেমনের ৩৭টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে এখন অবধি। জাপানী, ইংরেজির পর একে একে এসেছে ডোরেমনের ইতালিয়ান, হিন্দি, ইন্দোনেশীয়, কোরীয় ও মালয় সংস্করণ। এমনকি ২০১৪ সালের এপ্রিল হতে দেশীয় স্যাটেলাইট চ্যানেল ‘এশিয়ান টিভি‘তে প্রচারিত হচ্ছে ডোরেমনের বাংলা ডাবকৃত সংস্করণ।

ডোরেমন কেন এত জনপ্রিয়?

জেকে রোলিং-এর হ্যারি পটার যখন বাজারে এলো, তখন মানুষ সেটিকে লুফে নিয়েছিলো একটি কারণেই! সেটি হলো, শহুরে ইঁদুর দৌড়ে ধুঁকতে থাকা মানুষের জীবনে রুচিবদল হিসেবে দু’দণ্ড স্বস্তি দিয়েছিলো হগওয়ার্টস স্কুল অব উইচক্র্যাফট এন্ড উইজার্ড্রির অদ্ভুত লোকেদের অধিবাস্তব সব কার্যকলাপ। ওদিকে কল্পনাপ্রবণ শিশুদের হাঁপিয়ে ওঠা স্কুলজীবনে গ্যাজেটের থলিওয়ালা ডোরেমন তেমন প্রশান্তিই দিয়েছিলো। মন চাইলো তো মাথায় ব্যাম্বো কপ্টার লাগিয়ে উড়ে গেলাম, মন চাইলো তো টাইম মেশিনে করে দেখে এলাম ডাইনোসরের যুগ, মন চাইলো তো এনিহোয়্যার ডোরে ডুব দিয়ে চলে গেলাম মাউন্ট ফুজির দৃষ্টিনন্দন প্রান্তরে কিংবা অন্য কোথাও! শুধু শিশু কেন, এমনটি কল্পনা করতে কে না ভালোবাসবে? ভালোবাসার এই দুর্বলতম স্থানটিতে নাড়া দেয় ডোরেমন।

Source:dnaindia.com

এর চেয়েও রয়েছে আরেকটি আবেগঘন দিক, সোনালী শৈশবকে খুব কাছ থেকে দেখতে পাবেন আপনি ডোরেমনে। সবাই ‘প্রথম’ হতে পারে না, এই উপপাদ্যকে মেনে নিয়ে এই আর্টিকেলেরও অনেক পাঠকই হয়তো পড়াশোনার দিক দিয়ে তুখোড় ছিলেন না ছোটবেলায়। নোবিতার মতো অত ‘ভোঁতা’ না হলেও নিজের যোগ্যতা নিয়ে হয়তো ছিলেন না সন্তুষ্ট, ফ্রয়েডীয় শারীর-ব্যাকরণ মেনে হয়তো ঐ বয়সে ভুগতেন প্রচণ্ড হীনম্মন্যতায়। যদি আপনি সেই ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ’র অংশ হন, তবে গানারি সেনসাইয়ের প্রতিটি ধমকে, ক্লাস টেস্টের শূন্যে, মায়ের বকুনিতে নিজের হারানো দিনগুলো খুঁজে পাবেন। ক্রমাগত মিথ্যা বলে নোবিতার পার পাবার চেষ্টাও তখন আপনাকে তার জন্য সহানুভূতিই প্রদান করবে। আর সেই সঙ্গে লেখকের মতো রোগা-পলকা হয়ে শৈশবে নিয়মিত বুলিং বা ‘দুষ্ট’দের মার খাওয়ার অভিজ্ঞতা থাকলে, অথবা খেলাধুলায় হেরোমার্কা হলে তো ‘নোবিতা’ চরিত্রটি আপনারই জন্য! অর্থবিত্তের মাঝে বড় হওয়া একটু ননীর পুতুলেরা অবশ্য সুনিওর সাথে নিজের মিল খুঁজতে চাইবে না, সেটাই স্বাভাবিক। তবে যারা ছোটবেলায় ‘হৃষ্টপুষ্ট’ শিশু ছিলেন, তারা না চাইলেও নিজেকে জিয়ানের প্রতিরূপ হিসেবে মেনে নেবেন।

যদি ঘটনাক্রমে আপনার শৈশবজীবনে থেকে থাকে কোনো ‘না-বলা ভালোবাসা’, তবে তো কথাই নেই, অঞ্জন দত্তের ‘ম্যারি অ্যান’ গানের মতো আপনি সেই হারিয়ে যাওয়া রাজকন্যাকে খুঁজে পাবেন শিজুকার মাঝে। ডেগিজুকির কাছে প্রিয়তমার নোট আনতে যাওয়ায় নোবিতার ‘ইনসিকিউরিটি’র মাঝেও নিজের ‘লুজার’ সত্ত্বাকে আপনি খুঁজে পেতে পারেন! তবে আজন্ম হতভাগা নোবিতা কিন্তু অতটাও হতভাগা নয়, ডোরেমনের কল্যাণে শিজুকাকেই বিয়ে করেছিলো সে, নোবিসুকি নামে এক সন্তানও হয় তাদের। সুতরাং যারা শৈশবের ভালোবাসাকে আজ অবধি ধরে রেখেছেন, তারাও নিতে পারেন অনুপ্রেরণা। হেঁড়ে গলায় গান যে শুধু জিয়ানরাই গায়, তা তো নয়। বরং হয়তো আপনার জীবনের ‘শিজুকা’ও তেমন গানই গাইতো এবং আপনিও জোর করে তার মন রাখতে প্রশংসা করতেন। হতেই পারে এমন, পারে না?

Source:flikr.com

অন্য গল্পের নায়কেরা হয় আদর্শ চরিত্র, ওদিকে ডোরেমনের নায়ক নোবিতা কিন্তু খুঁতে ভরা। ডোরেমনের কৃতিত্বটা এখানেই, বাস্তবের সাথে এজন্যই এত মেলানো যায়, কেননা বাস্তবের নায়কেরা খুঁতের ঊর্ধ্বে নন। তেমন হয়তো শিক্ষণীয় কিছুই এই ডোরেমনে নেই, বরং মিথ্যা বলা, চুরি করে-গ্যাজেট দিয়ে জেতা ইত্যাদি নেতিবাচক বার্তা আছে। কিন্তু কল্পনাশক্তির কল্যাণে ও শৈশব রোমন্থনের প্রশান্তির দ্বারা যেটুকু প্রাণশক্তি পেয়েছেন বা পাবেন ডোরেমন থেকে, সেজন্য কি অন্তত কৃতজ্ঞ থাকবেন না এর প্রতি?

ফিচার ইমেজ: imgnaly.com

Related Articles