ফুরিয়ে এলো ২০২২ সালের আয়ু। পুরাতনকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নিতে সকলেই ব্যস্ত। ২০২২ সালে পৃথিবীতে ঘটে গেছে বহু ঘটনা, বিনোদন জগতে এসেছে নানাবিধ পরিবর্তন। বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতির দেশ ভারতের বিভিন্ন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও মুক্তি পেয়েছে অসংখ্য সিনেমা। করোনার পর হলব্যবসা বছরখানেক বন্ধ থাকলেও তা আবার আগের মতো চাঙা হয়ে উঠছে। দর্শকরাও পূর্ণোদ্যমে ফিরতে শুরু করেছে প্রেক্ষাগৃহে। ২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বক্স অফিসে সর্বোচ্চ আয় করা ১০টি ভারতীয় সিনেমা নিয়েই এই আয়োজন।
১. কেজিএফ: চ্যাপ্টার ২
২০১৮ সালে কন্নড় সুপারস্টার যশকে নিয়ে বাজিমাত করেছিলেন পরিচালক প্রশান্ত নীল, এনেছিলেন কেজিএফ সিনেমার প্রথম কিস্তি। গগনচুম্বী হাইপ, আর অসমাপ্ত কিছু প্রশ্ন রেখে যান দ্বিতীয় কিস্তির জন্য। প্রথম ছবির সাফল্যের পর থেকে দ্বিতীয়ভাগের জন্য দর্শকেরা কতটা উদগ্রীব ছিলেন, তার প্রমাণ পাওয়া গেল ছবি মুক্তি পেতেই। একাধিক ভাষায় মুক্তিপ্রাপ্ত এই প্যান ইন্ডিয়ান সিনেমা হিন্দি সিনেমা না হয়েও হিন্দি মার্কেটে অনেক সিনেমার রেকর্ড করেছে একাকার।
- পিংকভিলার তথ্যসূত্রে, পুরো ভারতে প্রায় ৯৯২ কোটি রুপির মতো ব্যবসা করেছে কেজিএফ ২। ভারত বাদে বিশ্বের অন্যান্য জায়গা থেকে ২৭ মিলিয়ন ডলার আয়ের ফলে মুক্তির মাত্র ৩৩ দিনেই ১,২০০ কোটির ল্যান্ডমার্ক ছুঁয়ে ফেলে সিনেমাটি। অপেক্ষা করতে হয় মাত্র ৫ সপ্তাহ।
- এপ্রিল মাসে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমা তৃতীয় মুভি হিসেবে ভারতে ১০০ কোটি রুপি ওপেনিং রেকর্ড গড়ে।
- প্রায় ৫ কোটি ২০ লক্ষ দর্শক ভারতের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে ভিড় জমিয়েছে এই সিনেমা দেখার জন্য, যা একবিংশ শতাব্দীর ক্ষেত্রে তৃতীয় সর্বোচ্চ। সব ভাষা মিলিয়ে প্রথম সপ্তাহে সিনেমাটি ঘরে তুলেছে ৭২০.৩১ কোটি রুপি।
হিন্দি বেল্টেও চরম সফলতার মুখ দেখে এই সিনেমা।
- মুক্তির দিনেই প্রায় ৫৪ কোটির ওপেনিং দেয় কেজিএফ ২, এক সপ্তাহ পর যা গিয়ে দাঁড়ায় ২৬৮.৬৩ কোটি রুপি। হিন্দি ভার্সনে এর লাইফটাইম বক্স অফিস কালেকশন ৪৩৪.৭০ কোটি।
- হিন্দি ভার্সনে কেজিএফের প্রথম তিন দিনের আয় যথাক্রমে ৫৩.৯৫ কোটি, ৪৬.৭৯ কোটি, ৪২.৯০ কোটি, অর্থাৎ সর্বমোট ১৪৪ কোটি রুপি। শুধু হিন্দি ভার্সনের কোনো মুভিই নয়, বলিউডের কোনো হিন্দি ভাষার মুভিও মুক্তির প্রথম তিন দিনে এই পরিমাণ আয় করতে পারেনি, যা একটি রেকর্ড।
- ১,২০০ কোটির ক্লাবে যোগ দেওয়ার গৌরব অর্জন করেছে শুধু তিনটি ভারতীয় ফিল্ম; আমির খানের দংগল, প্রভাসের বাহুবালি ২, এবং যশের কেজিএফ ২।
১০০ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত সিনেমা পকেটে পুরেছে ১,২৫০ কোটি রুপিরও অধিক। তাই, সিনেমাটি সুপার-ডুপার ব্লকবাস্টার। ২০২২ সালে সর্বোচ্চ আয় করা ভারতীয় সিনেমার কৃতিত্ব দখল করে নিয়েছে কেজিএফ: চ্যাপ্টার ২।
২. আরআরআর
এস. এস. রাজামৌলি, দক্ষিণী সিনেমায় এক ভরসার নাম। ‘মাগাধিরা’ হোক কিংবা ‘বাহুবালি’, শুরু থেকেই সিনেমাগুলোর জনপ্রিয়তা ছিল সর্বজনবিদিত। বক্স অফিসে তুমুল ভাংচুর চালাতে যেমন পছন্দ করেন রাজামৌলি, ভাঙতে মজা পান পূর্বের সকল বক্স অফিস রেকর্ড। পূর্বের ধারা বজায় রেখে, ২০২২ সালে আবারও অভিনেতা রামচরণের সাথে জোট বেধে তিনি উপহার দিলেন তারকাবহুল প্যান ইন্ডিয়ান সিনেমা ‘আরআরআর’।
- ২৫ মার্চ মুক্তি পাওয়া এই ফিল্ম ওপেনিং ডে-তে ভারতে ১৩২.৩০ কোটি, এবং বিশ্বব্যাপী ৪৬৭ কোটি রুপির এক রেকর্ড ব্রেকিং ওপেনিং দেয়। উইকেন্ডে মোট আয় করে ৩৪১.২০ কোটি রুপি, যা প্রথম সপ্তাহ শেষে দাঁড়ায় ৪৭৭.৫ কোটি রুপিতে (ভারত)। বাহুবালি: দ্য কনক্লুসনকে (৩৯৪ কোটি) পেছনে ফেলে তেলেঙ্গানা রাজ্যে এটি হয়ে যায় সর্বোচ্চ আয় করা ফিল্ম।
- শুরুর দিনই ভারতে হিন্দি বেল্টে ২০ কোটি ৭ লক্ষ রুপির বাম্পার ওপেনিং দেয় সিনেমাটি। সকল ভাষা মিলিয়ে প্রথম দিনে ভারত থেকে নেট কালেকশন উঠে আসে ১৩২ কোটি রুপি।
- ভারতীয় বক্স অফিস থেকে নেট কালেকশন ৭৭২ কোটি রুপি।
- পুরো ভারত থেকে ১ম দিনের গ্রস কালেকশন ১৫৬ কোটি রুপি। ১ সপ্তাহ পর যা ৫৫৯.৮ কোটি রুপিতে পৌঁছে যায়।
- দেশের বাইরে থেকে ২০৯ কোটি আয় (শেয়ার ৯৪.৫০ কোটি রুপি)।
প্রায় ৪০০ কোটি বাজেটে নির্মিত এই সিনেমা পৃথিবীব্যাপী আয় করেছে ১,১৪৪ কোটি রুপি।
৩. ব্রহ্মাস্ত্র: পার্ট ওয়ান – শিভা
চলতি বছরে একাধিক প্রত্যাশিত বলিউড সিনেমা বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়লে এই সিনেমা নিয়েও অনেকের মনে শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু নিন্দুকদের মুখে ছাই দিয়ে বক্স অফিসে সমানে তাণ্ডব চালিয়ে গেছে ব্রহ্মাস্ত্র। রিপোর্ট অনুসারে, সিনেমার বাজেট প্রায় ৪১০ কোটি রুপি।
ভারতে ৩৬ কোটির এক বাম্পার ওপেনিং দেয় ব্রহ্মাস্ত্র। ওপেনিং উইকেন্ডের শেষে ১২০.৭৫ কোটি রুপি পকেটে পুরে নেয় সিনেমাটি। প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে শেষে যথাক্রমে ১৬৯ কোটি এবং ২২২.৩০ কোটি রুপি আয় হয়। সাত সপ্তাহ শেষে ভারতে ব্রহ্মাস্ত্রের লাইফটাইম কালেকশন গিয়ে দাঁড়ায় ২৫৭.৪৪ কোটি রুপিতে। সিনেমাটি তার লাইফটাইমে সর্বোচ্চ আয় করে মুক্তির তৃতীয় দিনে, ৪৩.২৫ কোটি রুপি। অঞ্চলভিত্তিক কালেকশনে সর্বোচ্চ তিন আয় করা অঞ্চল হলো মুম্বাই (৫১.৮১ কোটি), দিল্লি (৪৭.৪৪ কোটি), এবং পাঞ্জাব (২০ কোটি)। ভারতের বক্স অফিসে গ্রস কালেকশন ছিল ৩০৬.৪৮ কোটি রুপি, এবং ওয়ার্ল্ডওয়াইড গ্রস কালেকশন ৪১৯ কোটি রুপি।
৪. পন্নিয়িন সেলভান: পার্ট ১
দক্ষিনী সিনেমার ইতিহাসে ‘মনি রত্নম’ এক রত্নের নাম। সাউথ ইন্ডাস্ট্রিতে আসা এপিক হিস্টোরিক্যাল একশন ড্রামাগুলো যখন বক্স অফিসে বাজিমাত করা শুরু করল, তখন তিনিও এমন করবেন বলে ভেবে রেখেছিলেন। ১৯৫৫ সালে কল্কি কৃষ্ণমূর্তির লেখা কাল্পনিক উপন্যাস ‘পন্নিয়িন সেলভান’ এর উপর ভিত্তি করেই তিনি এই সিনেমা নির্মাণ করেছেন, দুই পার্টে।
- ভারতের ৩২৭ কোটি রুপি গ্রস কালেকশন, এবং দেশের বাইরে ১৬৯ কোটি রুপির কালেকশন তুলে বিশ্বব্যাপী এর গ্লোবাল বক্স অফিস গ্রস কালেকশন দাঁড়ায় ৪৯৬ কোটি রুপিতে। পরবর্তীতে ৫০ তম দিনে এই সিনেমা ৫০০ কোটির ক্লাবে পৌঁছে যায়।
- রোবট ২.০ এর পর এটি দ্বিতীয় তামিল মুভি, যা ৫০০ কোটির মাইলফলক স্পর্শ করতে পেরেছে।
- পন্নিয়িন সেলভান বর্তমানে কলিউড ইন্ডাস্ট্রির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয় করা সিনেমা। এর সামনে শুধু আছে রোবট ২.০ (২০১৮), ভারত থেকে যা আয় করেছিল ৫০৮ কোটি রুপি, এবং পৃথিবীব্যাপী ৬৬৫ কোটি রুপি।
- শুধু তামিল ভাষার কথা বিবেচনা করলে এটা শুধু রোবট ২.০ সিনেমাই নয়, বরং কমল হাসানের সিনেমা বিক্রম (২০২২) থেকেও ৫০ কোটি রুপি বেশি আয় করেছে।
- বক্স অফিসে চলাকালে প্রথম সিনেমা হিসেবে তামিল নাড়ুতে ২০০ কোটির মাইলফলক অতিক্রম করে পন্নিয়িন সেলভান। ওই এলাকায় সিনেমার লাইফটাইম কালেকশন ২২২ কোটি রুপির কাছাকাছি।
- বহির্বিশ্বেও বেশ ব্যবসা করেছে এই সিনেমা। পূর্বে রোবট ২.০ মুভির ১৯ মিলিয়ন আয়ের রেকর্ডকে ছাপিয়ে এটি আয় করেছে ২১ মিলিয়ন ডলার। অস্ট্রেলিয়া থেকেও প্রথম ৬ মিলিয়ন ডলার আয়কারী সিনেমা এটিই।
- ২০১০ সালের পর তামিল নাড়ুতে ১ কোটি+ ফুটফলসের রেকর্ড গড়েছে মোট তিনটি সিনেমা। এগুলো হলো পন্নিয়িন সেলভান, বিক্রম, এবং বাহুবালি ২।
- তবে হিন্দি ভার্সনে তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। বলিউড হাঙ্গামার তথ্যসূত্রে, হিন্দি বেল্টে এর লাইফটাইম কালেকশন ২৫.১২ কোটি রুপি।
প্রায় ২৫০ কোটি বাজেটের এই সিনেমা বিশ্বব্যাপী আয় করে দ্বিগুণ পরিমাণ। সিনেমাটি হিট।
৫. বিক্রম
২০২২ সালে এসে ইন্ডাস্ট্রি হিট তকমার দেখা পায় লোকেশ কানগারাজের মাল্টিস্টারার একশন থ্রিলার সিনেমা বিক্রম। কমল হাসান, সুরিয়া, বিজয় সেথুপতি, ফাহাদ ফাসিলের মতো দুর্দান্ত অভিনেতারা অভিনয় করেছেন এই ছবিতে।
জুনে সিনেমাটি মুক্তির কয়েক সপ্তাহ পরেই এটি কলিউড ইন্ডাস্ট্রির বহু বক্স অফিস রেকর্ড দুমড়েমুচড়ে দেয়। তামিল নাড়ুতে সর্বোচ্চ আয়ের রেকর্ড থাকা বাহুবালি ২ এর ভেঙে দেয় সিনেমাটি, তা-ও কোটির মার্জিনে।
- ২০১০ সালে তামিল সিনেমা এন্থিরান (রোবট) ১কোটি+ ফুটফলস দিতে সক্ষম হয়েছিল। ফুটফলস হলো একটি সিনেমার জন্য সিনেমাহলে বিক্রিত মোট টিকেট সংখ্যা। দীর্ঘ ১ যুগ পর সেই রেকর্ড ভাঙে বিক্রম। রোবট ২.০ এর ২৮৮ কোটির রেকর্ড ভেঙে দিয়ে বিশ্বব্যাপী ৩৭২ কোটি রুপি আয় করে সর্বোচ্চ আয়কারী তামিল সিনেমা হয়ে দাঁড়ায় বিক্রম।
- মুক্তির প্রথম দিনে বিশ্বব্যাপী ৫৬.৬৮ কোটির এক বাম্পার ওপেনিং দেয়। এর মধ্যে তামিল নাড়ু থেকেই আসে ২০.৬১ কোটি।
- হিন্দি বেল্টে তেমন সুবিধা করতে পারেনি মুভিটি। হিন্দিতে লাইফটাইম কালেকশন সাড়ে ছয় কোটি রুপির মতো।
- ভারত থেকে ৩০৭ কোটি, এবং ভারতের বাইরে থেকে ১২৩.৫০ কোটি রুপি আয় করে সিনেমার মোট কালেকশন দাঁড়ায় ৪৩০ কোটি রুপিতে।
সিনেমার বাজেট ছিল ১২০ কোটি। তাই, সিনেমাটি সুপারহিট।
৬. কান্তারা
২০২২ সালে বক্স অফিসে সবচেয়ে বড় চমক নিঃসন্দেহে কন্নড় মুভি কান্তারাই দিয়েছে। কারণ, সিনেমা মুক্তির আগে এত ঢাক-ঢোল পেটানো হয়নি, হাইপও ছিল না অন্যান্য সিনেমার মতো। কিন্তু বক্স অফিসে মুক্তির কিছুদিন পরই বাজিমাত করতে শুরু করে রিশাব শেট্টির সিনেমা। এরপর বক্স অফিসে যত দিন গড়িয়েছে, ততই সে ভেঙেছে রেকর্ড। শুরুটা ধীরগতির হলেও আড়াই মাসে ৪০০ কোটির ক্লাবে পৌঁছেছে সিনেমাটি।
- কন্নড় ফিল্ম ‘কান্তারা’ তাদের নিজস্ব এলাকা কর্ণাটকের বক্স অফিসে কেজিএফ ২ এর থেকেও বেশি আয় করেছে। এটিই বর্তমান কর্ণাটকের বক্স অফিসে সর্বোচ্চ আয় করা সিনেমা। ৮ম সপ্তাহে এটি কর্ণাটকের ৩০০টি প্রেক্ষাগৃহে চলেছে, যা কর্ণাটকের ইতিহাসে প্রথম।
- পঞ্চম সপ্তাহের কালেকশন হিসেবে এটি বাহুবালি ২ মুভিকেও পেছনে ফেলেছে।
- ষষ্ঠ সপ্তাহে এসেও বক্স অফিসে যে পরিমাণ ভাঙচুর চালিয়েছে কান্তারা, যা কোনো ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এই প্রথম।
- হিন্দি বেল্টের ওপেনিংয়ে এসেছে ১.২৭ কোটি রুপি। প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে আয় বেড়েছে হয়েছে যথাক্রমে ১৫ কোটি, এবং ৩১.৭০ কোটি রুপি। হিন্দিতে লাইফটাইম কালেকশন ৮০ কোটি।
মাত্র ১৬ কোটি রুপি বাজেটে নির্মিত এই সিনেমা এর মধ্যে শুধু ভারত থেকেই আয় করেছে (সকল ভাষা মিলিয়ে) ৩১১ কোটি রুপি; গ্রসের হিসেবে যা ৩৬৭ কোটি। দেশের বাইরে ৪৪.১০ কোটির গ্রস যোগ করলে কালেকশন গিয়ে দাঁড়ায় ৪১১.০৮ কোটি রুপি। কাগজ-কলমের হিসেবে মুভিটি অল-টাইম ব্লকবাস্টার।
৭. দ্য কাশ্মির ফাইলস
মুক্তির পর থেকে দ্য কাশ্মীর ফাইলস সিনেমা নিয়ে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক ও সমালোচনা। পর্দায়
কোনো মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা বা বড় কোনো তারকা কাস্ট না করার পরেও সিনেমাটি হয়েছে সুপারহিট।
কচ্ছপ গতির ওপেনিং (৩.৫৫ কোটি) পেলেও সময়ের সাথে বাড়তে থাকে বক্স অফিস কালেকশন। ফলে, প্রথম সপ্তাহ শেষে মুভিটি ৯৭.৩০ কোটি রুপি আয় করলেও দ্বিতীয় সপ্তাহে তা এক লাফে গিয়ে পৌঁছায় ৯৭ কোটি এবং তৃতীয় সপ্তাহ শেষে ২০৭.৩৩ কোটি রুপি। লাইফটাইম ২৫৩ কোটি রুপি আয় করে বক্স অফিসে এর দৌড় থামে। করোনা-পরবর্তী সময়ে এটিই প্রথম বলিউড সিনেমা হিসেবে ২৫০ কোটির ক্লাবে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। মাত্র ১৫ কোটি বাজেটে নির্মিত এই সিনেমার পৃথিবীব্যাপী গ্রস কালেকশন ৩৪০.৯২ কোটি।
৮. দৃশ্যম ২
ভারতের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে থ্রিলার মুভি নিয়ে আলোচনায় প্রথম সারিতেই অবধারিতভাবেই উঠে আসবে দৃশ্যমের নাম। মোহনলালের দৃশ্যম কিংবা অজয় দেবগণের দৃশ্যম, দুটোই দর্শকমহলে সমাদৃত। বলিউডের ‘দৃশ্যম ২’ প্রথম পার্টের মতোই হলমালিকদের মুখে হাসি ফোটাতে সক্ষম হয়েছে।
- ১৫.৩৮ কোটি রুপির ওপেনিং দেয় দৃশ্যম ২। ওপেনিং উইকেন্ডে ৬৪.১৪ কোটি রুপি আয়ের পর, এক সপ্তাহ শেষেই বলিউডের ১৯ তম সিনেমা হিসেবে ১০০ কোটির ক্লাবে নাম লেখায় দৃশ্যমের এই সিকুয়েল।
- ভারতে ২৬৭.৪৮ কোটি এবং বহির্বিশ্বে ৫৫ কোটির গ্রস কালেকশন আনে এই সিনেমা।
- এ বছর দ্য কাশ্মির ফাইলস এবং ব্রহ্মাস্ত্রের পর এটি ২০০ কোটির ক্লাবে এন্ট্রি নেওয়া তৃতীয় বলিউড সিনেমা।
৯০ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত এই সিনেমার ভারতীয় বক্স অফিসের লাইফটাইম কালেকশন ২২৪.৬৮ কোটি রুপি, যা নিশ্চিতভাবেই ক্লিন হিট।
৯. ভুল ভুলাইয়া ২
প্রথম কিস্তিতে অক্ষয় কুমার থাকলেও এই পার্টে তার বদলে ছিলেন হালের বলিউড স্টার কার্তিক আরিয়ান।
- ১৪.১১ কোটির ভালো ওপেনিং দিয়ে, ওপেনিং উইকেন্ডে মোট ৫৬ কোটি আয় করে নেয় মুভিটি। ২ সপ্তাহ শেষে মোট ১৪১.৭৫ কোটি ঘরে তোলে ভুল ভুলাইয়া ২।
- ভারত আর আন্তর্জাতিক মিলিয়ে ওয়ার্ল্ডওয়াইড গ্রস কালেকশন ছিল ২৬৬.৮৮ কোটি।
- ৭০ কোটি বাজেটের এই সিনেমার প্রচারণার পেছনে খরচ করা হয় ১৫ কোটি, অর্থাৎ এর মোট বিনিয়োগ গিয়ে দাঁড়ায় ৮৫ কোটিতে। ভারতের বক্স অফিস থেকে ৮৫ কোটি রুপির শেয়ার, ওভারসীসে ১২ কোটি রুপির শেয়ার, ডিজিটাল রাইটস, স্যাটেলাইট রাইটস, এবং মিউজিক রাইটস মিলিয়ে ৬৫ কোটি রিকোভারি হয়ে যায়। এতে মোট রিকভারি ১৬২ কোটিতে গিয়ে ঠেকে, ফলে মুভি থেকে লাভ হয় ৮২ কোটি রুপি।
১০. বিস্ট
কলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে সুপারস্টার থালাপতি বিজয়ের বর্তমান ক্রেজ আকাশছোঁয়া। এই বছর মুক্তিপ্রাপ্ত বিজয়ের বিস্ট সিনেমা ভারতের বক্স অফিস থেকে ১৬৯ কোটি এবং বিশ্বব্যাপী ২৩৭ কোটি রুপি আয় করে নিয়েছে। কলিউডের জন্য ফিগারটা বেশ ভালো হলেও বিজয়ের ব্লকবাস্টার মুভি মেরসালের (২০১৭) তুলনায় তা সাদামাটা।
- ১৩ এপ্রিলে মুক্তি পেয়ে তামিল নাড়ুর ওপেনিং ডে রেকর্ড ভেঙে দেয় এই সিনেমা, যা বিগত ৪ বছর ধরে বিজয়েরই সিনেমা ‘সরকার’ এর অধীনে ছিল।
- প্রথম উইকেন্ডে মোটামুটি ভালো ব্যবসা করলেও ১৪ এপ্রিল কেজিএফ মুক্তি পেলে ক্ল্যাশে কুলিয়ে উঠতে পারেনি বিস্ট। তামিল নাড়ুতে ১২০ কোটি রুপি আয় করে ওই অঞ্চলে সপ্তম সর্বোচ্চ আয়কারী মুভি হয়ে উঠে সেটি।
- অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ২০ কোটি এবং কর্ণাটক থেকে উঠে আসে ১৫ কোটি রুপির কালেকশন।
হিন্দি বেল্টে এই সিনেমা মেরুদণ্ড সোজা করেই দাঁড়াতে পারেনি। ওপেনিং ডে-তে মাত্র ৫৫ লক্ষ আয় করে, লাইফটাইম কালেকশনে ২.৩০ কোটি রুপিতেই থেমে যায় বিস্টের চলন্ত গাড়ির চাকা।