সেই প্রাচীনকাল থেকেই অর্থ ছিল বিনিময়ের এমন এক মাধ্যম যা স্পর্শ করা যেত। অর্থাৎ সব সময় অর্থ বলতে মানুষ নগদ অর্থকেই বুঝে এসেছে। কিন্তু প্রযুক্তির সয়লাবের যুগে ভেঙেছে সেই প্রাচীন ধারণা। গত এক দশকে বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল লেনদেনের জয়জয়কার দেখা যাচ্ছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, হয়তো কিছুদিন পর নগদ অর্থের জায়গা হবে জাদুঘরে!
ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড, বর্তমান বিশ্বে বহুল প্রচলিত শব্দ। শুরুর দিকে এসব কার্ডের ব্যবহার ও চাহিদা সীমিত থাকলেও ডিজিটালাইজেশনের সাথে পাল্লা দিয়ে কার্ডগুলোর জনপ্রিয়তা ক্রমশ বেড়েই চলছে। ফলে নগদ অর্থ লেনদেন প্রক্রিয়ার খোলস ভেঙে পৃথিবী ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে ক্যাশলেস ইকোনমি অর্থাৎ নগদহীন অর্থনীতি সিস্টেমের দিকে। একসময় ক্রেডিট/ডেবিট কার্ডকে আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হলেও বর্তমানে এগুলো হয়ে উঠেছে জীবনযাত্রার প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। চলে এসেছে সাধারণের নাগালের মধ্যে। ফলে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে চাকরিজীবী ও নানা পেশার মানুষ ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড ব্যবহার করছেন।
একটুখানি ইতিহাস
কার্ড দিয়ে অর্থ পরিশোধের চিত্রকল্প সবার সামনে সর্বপ্রথম তুলে ধরেন এডওয়ার্ড বেল্যামি, তার ইউটোপিয়ান উপন্যাস ‘Looking Backward’ এ, ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে। ওই উপন্যাসে তিনি ক্রেডিট কার্ড শব্দটি মোট ১১ বার ব্যবহার করেন। ক্রেডিট কার্ডের যাত্রা শুরু ১৯২৮ সালের দিকে। তখন বর্তমানের আধুনিক ক্রেডিট কার্ডের পূর্বসূরি হিসেবে ‘দ্য চারগা প্লেট’ নামে এক আয়তাকার ধাতব পাত বানানো হয়। এগুলো তখনকার বড় বড় ব্যবসায়ীরা তাদের সুপরিচিত ও বিশ্বস্ত খদ্দেরদের প্রদান করত। কার্ডগুলো দেখতে বর্তমান সময়ের ডিপার্টমেন্টাল স্টোর কার্ডের মতোই ছিল। ১৯৩৪ সালে ‘আমেরিকান এয়ার লাইন্স’ এবং ‘এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন’ কাস্টমারদের বিমানের টিকিট ক্রয় সহজলভ্য করতে ‘Buy Now & Pay Later’ সুবিধার মাধ্যমে এয়ার বিশ্ববাসীর সামনে ট্রাভেল কার্ডের পরিচয় করিয়ে দেয়।
১৯৫০ সালে ঘটে যায় এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। ‘ডাইনার্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল’ এর দুই প্রতিষ্ঠাতা রালফ স্নাইডার এবং ফ্রাঙ্ক ম্যাকনামারা বিশ্বকে প্রথমবারের মতো চার্জ কার্ড নামে নতুন এক কার্ডের সাথে প্রথমবারের মতো পরিচয় করান, যা যেকোনো জায়গায় অর্থ পরিশোধের জন্য ব্যবহার করা যেত। ১৯৫৮ সালে ব্যাংক অব আমেরিকা ‘BankAmericard’ নামে একটি মডার্ন ক্রেডিট কার্ড লঞ্চ করে, যার গ্রহণযোগ্যতা ছিল সকল জায়গায়। ১৯৬৬ সালে ‘BankAmericard’-কে টেক্কা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ‘Master Charge’ নামে একটি কার্ড বাজারে ছাড়া হয়, বর্তমানে যা ‘Mastercard’ নামে পরিচিত। ১৯৭৬ সালে ‘BankAmericard’ এর নাম পরিবর্তন করে ‘Visa’ রাখা হয়। আশির দশকে এসে ক্রেডিট কার্ডে ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ এবং নব্বই দশকে কার্ডে ইএমবি চিপ টেকনোলজি যোগ করা হয়। এভাবেই ধীরে ধীরে প্রযুক্তিগত বিবর্তনের মাধ্যমে আজকে ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড এই পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে।
ব্যাংক কার্ডগুলো সাধারণত প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা হয়। নির্দিষ্ট কতগুলো ব্যাংক এই কার্ড ইস্যু করে থাকে। তবে নির্দিষ্ট ব্যাংক ছাড়াও কিছু কোম্পানি তাদের ক্লায়েন্টদের অর্থনৈতিক লেনদেন সম্পর্কিত নানাবিধ সেবা প্রদানের জন্য কার্ড ইস্যু করে থাকে। ব্যাংক কার্ডে তথ্যসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ক্লায়েন্টের নাম, ইস্যুয়ারের নাম, ইউনিক কার্ড নাম্বারসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। কার্ডের অপরপাশে একধরনের ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ বা ইলেকট্রনিক চিপ সংযুক্ত থাকে, যা থেকে মেশিনগুলো ডাটা গ্রহণ করে।
এবার আলোচনা করা যাক, ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ডের পার্থক্য নিয়ে। ডেবিট কার্ড একজন ক্লায়েন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সাথে সরাসরি যুক্ত থাকে। ফলে সেই ক্লায়েন্ট কোনো কিছু কিনলে, এর অর্থ পরিশোধ তিনি তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমাকৃত টাকা থেকেই করতে পারবেন। এছাড়াও তিনি এটিএম (অটোমেটেড টেলার মেশিন) থেকে ক্যাশ উইথড্র-র সুবিধাও পাবেন। অপরদিকে, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে একজন ক্লায়েন্ট খরচের জন্য ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করতে পারবেন। এই ধার করা টাকার পরিমাণকেই মূলত ‘ক্রেডিট অ্যামাউন্ট’ বলা হয়ে থাকে। সাধারণত একজন ব্যক্তির মাসিক আয়ের উপর ভিত্তি করে ব্যাংক এই ক্রেডিট অ্যামাউন্ট দিয়ে থাকে। যখন একজন ক্লায়েন্ট তার অর্থ পরিশোধের মাধ্যম হিসেবে ক্রেডিট কার্ড বেছে নেন, তখন তার নিজ অ্যাকাউন্ট থেকে কোনো অর্থ কমে না। তখন কার্ড ইস্যুয়ার বা ব্যাংক থেকে তাকে একটি ‘কুইক লোন’ দেওয়া হয়, যা পরবর্তীতে ওই ক্লায়েন্টকে আবার পরিশোধ করে দিতে হবে। একজন ক্লায়েন্ট সারা মাসে যত অ্যামাউন্টের পেমেন্ট করবেন, সেই অ্যামাউন্ট ব্যাংক থেকে একটি বিল হিসেবে ইস্যু করা হবে। তবে, অ্যামাউন্ট একটি নির্দিষ্ট অংকে সীমাবদ্ধ থাকে। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই বিলটি ব্যাংকে পরিশোধ করতে হয়। এই বিল পরিশোধ করলেই এর পরের মাসের ক্রেডিট লিমিট দেওয়া হবে।
অনেক ক্রেডিট কার্ড তাদের গ্রাহকদের জন্য ‘প্রি-ইনস্টলড ইনস্যুরেন্স ফ্যাসিলিটি’ অন্তর্ভুক্ত করে থাকেন। ব্যবহারকারী যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তার ক্রেডিট কার্ডের লোন পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন, তখন তার লোন এর উপর সুদ যুক্ত করা হয়। ‘creditcards.com‘ এর তথ্যমতে, ২০২২ সালের মার্চ মাসে গ্লোবাল এভারেজ ক্রেডিট কার্ড সুদের হার হলো ১৬.২৫%। একজন গ্রাহক যথাসময়ে তার লোন পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে পরবর্তীতে অতিরিক্ত সুদসহ সেই অর্থ পরিশোধ করতে হবে। যতবার সেই ব্যক্তি অর্থ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হবেন, ততবারই চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ যোগ হতে থাকবে ওই লোনে।
‘ক্রেডিট কার্ড ইস্যুকারী’ এবং ‘ক্রেডিট কার্ড নেটওয়ার্ক প্রোভাইডার’ এর মধ্যে কিছু তফাত বিদ্যমান। বেশিরভাগ ক্রেডিট কার্ডই ইস্যু হয় ব্যাংক থেকে। তবে ব্যাংক ছাড়াও এমন কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে থাকে। ক্রেডিট কার্ড নেটওয়ার্ক প্রোভাইডাররা সাধারণত ব্যাংক বা কার্ড ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আলাদা হয়। তারা প্রধানত লেনদেনের জন্য ক্রেডিট কার্ডে নেটওয়ার্ক পরিকাঠামো প্রদান করে থাকে। Visa, Master Card, Discover এবং American Express হলো চারটি প্রধান আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড নেটওয়ার্ক, যারা বিশ্বব্যাপী ক্রেডিট কার্ড নেটওয়ার্কের সিংহভাগ নিজেদের করায়ত্তে রেখেছে।
সুইডেনে ব্যক্তিপ্রতি নগদ অর্থের লেনদেনের পরিমাণ গত ১০ বছরে কমেছে প্রায় ৮০ শতাংশ। অবাক করেছে নরওয়ে। মোট কেনাবেচার মাত্র ৬ শতাংশ হয় নগদে, বাকিটুকু ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে। ই-কমার্স সিস্টেমে সবার চেয়ে এগিয়ে আছে নরডিক অঞ্চলের দেশগুলো। তাদের তুলনায় চার থেকে ছয় বছর যুক্তরাজ্য, এবং দশ বছরের মতো পিছিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রযুক্তির চারণভূমি যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে প্রায় ১.০৬ বিলিয়ন ক্রেডিট কার্ড সচল রয়েছে। Shift processing এর তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ৭০% মানুষ অন্তত একটি, ৩৪% মানুষ অন্তত তিনটি এবং ১৪% মানুষ অন্তত দশটি করে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের আধিক্যের প্রধান কারণ হলো, ওই দেশের অধিকাংশ মানুষই বেতন পাওয়ার আগেই অনেক জিনিস ক্রয় করার দিকে ঝুঁকে পড়েন। হাতে অর্থকড়ি না থাকলেও ক্রেডিট কার্ড কেনাকাটার সুযোগ দিচ্ছে বলে সেখানে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। তবে চীন বা অন্য অনেক দেশের চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো। চীনের মানুষ আয়ের পর সেই অনুযায়ী ব্যয় করতে পছন্দ করে। তারা মিতব্যয়ী স্বভাবে সিদ্ধহস্ত। এই ব্যাপারে চীনা ধনকুবের জ্যাক মা বলেছেন,
“You Americans love to spend tomorrow’s money, and other people’s money maybe. We Chinese love to save money.”
বাংলাদেশ ও ক্রেডিট কার্ড
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের শেষে বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ছিল ১৮ লাখ ৩ হাজার ১২৩। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে তা ছিল ১৫ লাখ ৩৭ হাজার ২০২। ১ বছর ৯ মাসে ক্রেডিট কার্ড বেড়েছে প্রায় ৩ লাখ।
ডিজিটালাইজেশনের কারণে দিন দিন বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ডের জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত দেশে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ১১% বৃদ্ধি পেয়ে সাড়ে সতের লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। আবার গাণিতিক হিসাবে ২০২০ সালের তুলনায় বর্তমানে ক্রেডিট কার্ডে ট্রাঞ্জেকশন ১১৫% বৃদ্ধি পেয়েছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশে ‘অ্যামাউন্ট লিমিট’ নির্ধারণের ক্ষেত্রে ব্যাংক গ্রাহকের মাসিক বা বাৎসরিক আয়ের হিসাব কষে অ্যামাউন্ট লিমিট নির্ধারণ করে। এছাড়াও গ্রাহকের ক্রেডিট বা লোনের পরিমাণ কতটুকু, তা দেখার জন্য ‘Debt Burden Ratio’ রেশিও বা ‘DBR’ এর পরিমাণ বের করা হয়।
এর পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে গ্রাহকের Credit Information bureau বা CIB রিপোর্টও সংগ্রহ করা হয়। এ সকল তথ্যের হিসাব-নিকাশ শেষে ব্যাংক গ্রাহককে একটি ক্রেডিট স্কোর প্রদান করে, যার ভিত্তিতে ‘ক্রেডিট লিমিট’ নির্ধারণ করা হয়। যথাসময়ে অর্থ পরিশোধ করতে পারলে এই ক্রেডিট স্কোরও পরিবর্তন হয়। যার স্কোর বেশি, তার ক্রেডিট লিমিটও বেশি। একইভাবে যার স্কোর কম, তার লিমিটও কম। এমনকি স্কোর কম থাকলে কোনো কোনো ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডই প্রদান করে না।
একজন ব্যক্তি চাইলে ব্যাংকে রাখা তার স্থায়ী আমানত দেখিয়েও ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে ব্যাংক কোনো ধরনের ক্রেডিট স্কোর দেবে না। কার্ডটি ব্যবহারের সময় কার্ডের তথ্য কার্ড নেটওয়ার্ক প্রোভাইডারের মাধ্যমে ব্যাংকে পাঠানো হয়। সেই ট্রাঞ্জেকশন অনুমোদিত হয়েছে নাকি বাতিল হয়েছে, তা ব্যাংক থেকে জানানো হয়। ট্রাঞ্জেকশন অনুমোদিত হলে ব্যাংক কার্ডের গ্রাহককে পেমেন্ট করে, আর কার্ডের অবশিষ্ট ক্রেডিট থেকে সমপরিমাণ অর্থ কমিয়ে দেয়। আর এই সম্পূর্ণ ট্রাঞ্জেকশনের জন্য নেটওয়ার্ক ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রদান করে Visa, Master Card, Discover, American Express এবং মতো কোম্পানিগুলো।
প্রতিটি ব্যাংকেরই নির্দিষ্ট বিলিং সাইকেল পিরিয়ড থাকে। প্রতিটি বিলিং সাইকেল পিরিয়ড শেষে ব্যাংক কার্ড হোল্ডারকে একটি ‘ট্রাঞ্জেকশন হিস্ট্রি’ পাঠায়, এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তার ব্যবহৃত ক্রেডিট অ্যামাউন্ট পরিশোধ করতে বলে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অর্থ পরিশোধ করাকে গ্রেস পিরিয়ড বলা হয়। এই অর্থ পরিশোধের সময়সীমা সাধারণত ২১-২৫ দিনের মধ্যে হয়ে থাকে। তবে কিছু ব্যাংক এর থেকে বেশি সময়ও দিয়ে থাকে। এই গ্রেস পিরিয়ডের মধ্যে যদি গ্রাহক সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দিতে পারে, তবে ব্যাংক ইউজারকে কোনো ইন্টারেস্ট চার্জ করে না।
কার্ডের বিল থেকে ‘Statement Balance’, ‘Current Balance’ ‘Minimum Due’ এই তিনটির যেকোনো একটি পরিশোধ করা যায়। স্টেটমেন্ট ব্যালেন্স হলো কার্ড ব্যবহার করে খরচ করা সম্পূর্ণ অর্থের পরিমাণ। কারেন্ট ব্যালেন্স হলো, শুধুমাত্র শেষ বিলিং সাইকেলেই ব্যবহারকারীর ব্যয় করা অর্থের পরিমাণ। আর মিনিমাম ডিউ হলো, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ থেকে নির্ধারণ করা সর্বনিম্ন অর্থের পরিমাণ, যা সাধারণত স্টেটমেন্ট ব্যালান্সের এক থেকে তিন শতাংশ হয়। খেলাপি এড়াতে, গ্রাহককে অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই সর্বনিম্ন পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হয়, আর অবশিষ্ট বিল পরবর্তী বিলিং সাইকেলের সাথে যোগ করে দেয়া হয়। তবে এক্ষেত্রে গ্রাহকে অবশিষ্ট অ্যামাউন্টের জন্য সুদ গুণতে হয়। সুদের ঝামেলা এড়াতে চাইলে বিলের গ্রেস পিরিয়ডের মধ্যেই সম্পূর্ণ স্টেটমেন্ট ব্যাল্যান্স অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। অন্যান্য লোনের তুলনায় ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার অনেকটাই বেশি, কারণ ক্রেডিট কার্ড কোনোপ্রকার জামানত ছাড়াই গ্রাহককে লোন প্রদান করে।
কোনো গ্রাহক যদি ক্রেডিট কার্ডের সম্পূর্ণ পেমেন্ট প্রতি মাসেই করে দেন, তাহলে ব্যাংক গ্রাহকের থেকে শুধু এই বাৎসরিক চার্জই লাভ করতে পারে। এছাড়াও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে ব্যাংক বিভিন্নভাবে রাজস্ব আয় করে থাকে। যেমন: দোকান বা বিক্রেতাদের থেকে কমিশন ফি, লিমিট এক্সিট করার চার্জ, নগদ বা ATM থেকে টাকা তোলার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ চার্জ ইত্যাদি।