যেকোনো চাকরির আবেদনের জন্য চাকরিপ্রার্থীদের রেজ্যুমে জমা দেওয়া আবশ্যকীয় একটি কাজ। এর উপর ভিত্তি করেই নিয়োগকর্তা আপনাকে পরবর্তী ধাপের জন্য নির্বাচন করবেন। তবে আমরা অনেকেই রেজ্যুমে তৈরির ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম মেনে চলি না, যার কারণে চাকরি পাওয়ার আগেই আমরা তা হারিয়ে ফেলি। তাই আমাদের উচিত এমন একটি রেজ্যুমে তৈরি করা, যা সহজে নিয়োগদাতার নজর কাড়ে।
একটি আকর্ষণীয় রেজ্যুমে আপনার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনাকে আরো বাড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে হয়ে উঠতে পারে সক্রিয় অনুঘটক। আমাদের দেশের বহু চাকরিপ্রার্থী একটি সাধারণ ভুল করেন— কম্পিউটার কম্পোজের দোকানে পাওয়া রেজ্যুমে চাকরির আবেদনের সময় জমা দিয়ে দেয়া। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব রেজ্যুমের মান ঠিক থাকে না। তাই এ ধরনের রেজ্যুমে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা বুদ্ধিমানের পরিচায়ক। বরং চেষ্টা করলে আপনি নিজেই নিজের জন্য মানসম্মত একটি রেজ্যুমে বানাতে পারবেন।
আজকের লেখায় আপনাদের জানানো হবে ঠিক কীভাবে এগোনো আপনার জন্য ভাল। পাশাপাশি, কোন কোন বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে আপনিও একটি সুন্দর রেজ্যুমে তৈরি করে নিজের যোগ্যতাগুলো তুলে ধরতে পারেন।
রেজ্যুমে কী?
রেজ্যুমে হলো জীবনবৃত্তান্ত সম্বলিত একটি আনুষ্ঠানিক নথি, যা চাকরির আবেদনকারীর যোগ্যতা উপস্থাপনের জন্য ব্যবহৃত হয়। রেজ্যুমে সাধারণত ইংরেজিতে লেখা হয়। এটি মূলত ১/২ পৃষ্ঠার একটি ডকুমেন্ট, যেখানে আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, নাম, ঠিকানাসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয় উল্লেখ থাকে। শুধু চাকরির জন্যই নয়, একাডেমিক বিষয়েও রেজ্যুমে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
নাম
শুরুতে অবশ্যই আপনার পুরো নাম লিখতে হবে। ডাকনাম বা ছদ্মনাম লেখা উচিত না। নামের বানান অবশ্যই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদপত্রে যেরকম আছে ঠিক সেরকমই লিখতে হবে। নামের আগে মিস্টার বা মিসেস ব্যবহার করা উচিত না।
ছবি
সম্প্রতি তোলা ছবিই রেজ্যুমেতে দেবেন। আমরা অনেকেই কয়েক বছর আগের ছবি দিয়ে দেই। তাই এমন কোনো ছবি দেবেন না, যেখানে আপনাকে দেখে চেনা না যায়, বা বালকসুলভ মনে হয়। ছবি তোলার সময় অবশ্যই নিজেকে পরিপাটি থাকতে হবে।
ঠিকানা ও যোগাযোগ
ঠিকানা হতে হবে স্পষ্ট কিন্তু সংক্ষিপ্ত। চাকরিদাতা যাতে আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারে সেজন্য অবশ্যই একটি সচল মোবাইল নাম্বার দিতে হবে। নিজের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করাই উত্তম; তবে ২-৩টি মোবাইল নম্বর লেখা যাবে না। এরপর দিতে হবে আপনার ইমেইল অ্যাড্রেস। বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে ই-মেইল ঠিকানার ক্ষেত্রে। আমরা কেউ কেউ খেয়ালবশত nilpori@gmail.com, superboy@hotmail.com, dreamgirl@yahoomail.com, angelqueen@email.com এরকম কিছু ইমেইল অ্যাড্রেস তৈরি করি। কিন্তু চাকরির ক্ষেত্রে এরূপ উদ্ভট আর হাস্যকর ইমেইল অ্যাড্রেস ব্যবহার করা উচিত না। মনে রাখতে হবে, আপনার চাকরিদাতা এরূপ ইমেইল দেখলে তিনি আপনার প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করতে পারেন। তাই নিজের নামের সঙ্গে মিল রেখে সংক্ষিপ্ত আকারে ইমেইল অ্যাড্রেস তৈরি করে রেজ্যুমেতে ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে নামের সাথে কিছু সংখ্যা যোগ করে সুন্দর ইমেইল অ্যাড্রেস তৈরি করতে পারেন।
এছাড়া আপনি চাইলে লিংকডইন প্রোফাইলের আইডি ব্যবহার করতে পারেন। প্রয়োজন না হলে ফেসবুক আইডি যুক্ত না করাই ভালো। তবে ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটের নাম সংযুক্ত করতে পারেন।
পেশাগত লক্ষ্য
রেজ্যুমেতে অবশ্যই আপনার পেশাগত লক্ষ্য লিখবেন। তবে তা হবে সংক্ষিপ্ত ও গোছানো। যদি ইংরেজিতে লেখেন, তাহলে বানান বা ব্যাকরণের দিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখবেন। আপনি যে পদে আবেদন করছেন, অবশ্যই সেটির সাথে মিল রেখে লক্ষ্য লিখতে হবে। অপ্রাসঙ্গিক, আজগুবি কিংবা কাল্পনিক কোনো বাক্য লিখবেন না।
ফ্রেশার হিসেবে যখন পেশাগত লক্ষ্য বা ‘ক্যারিয়ার অবজেকটিভ’ লিখবেন, তখন আগামী পাঁচ বছরে আপনি কী করবেন, নিজেকে কতটা উন্নত করবেন বা কী ধরনের টার্গেট বাস্তবায়ন করবেন, অথবা আপনি উক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য কেন উপযুক্ত প্রার্থী সেটা লিখতে পারেন। তবে অতি উৎসাহে আর অতি আত্মবিশ্বাসে আকাশ-কুসুম কল্পনা করে কিছু না লেখাই ভালো। নিজের পরিকল্পনা মতো ভবিষ্যতে যেভাবে ক্যারিয়ার গড়তে চান, সেটাই তুলে ধরুন।
শিক্ষা
আপনার অর্জিত সাম্প্রতিক ডিগ্রি বা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দিয়ে শুরু করুন। সদ্য যে ডিগ্রি অর্জন করেছেন, সেটা লিখতে হবে প্রথমে। আপনি কোন বিষয়ে পড়েছেন, কোন অনুষদে পড়েছেন, কত সালে পরীক্ষা দিয়েছেন, গ্রেড পয়েন্ট বা ফলাফল কী ছিল- এসব উল্লেখ করতে পারেন। তবে এখনও পাস করে না থাকলে ‘পরীক্ষার্থী’ শব্দটি লিখুন এবং ইংরেজিতে লেখার ক্ষেত্রে আনুমানিক পাশের সাল (Anticipated passing year) লিখুন। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় থেকে ক্রমানুসারে মাধ্যমিক পরীক্ষা পর্যন্ত ফলাফলের তথ্য লিখবেন। তথ্যগুলো বুলেট পয়েন্ট দিয়ে লিখতে পারেন।
একাডেমিক প্রকাশনা বা প্রকল্প
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ে পড়াকালে আপনার কোনো গবেষণা বা রিপোর্ট প্রকাশিত হলে তা এই অংশে লিখতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন একাডেমিক প্রকল্পে অংশ নিয়ে থাকে। আপনি যদি এরকম কোনো কাজ করে থাকেন, তবে সেই প্রকল্পের নাম যুক্ত করতে পারেন। এছাড়া কেউ ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করলে সেই ব্যাপারে লিখতে পারেন।
দক্ষতা ও অর্জন
আপনি যে চাকরির জন্য আবেদন করছেন, তার সাথে সম্পর্কিত কোনো দক্ষতা থাকলে এ অংশে লিখবেন। ধরুন, আপনি যে পদের জন্য আবেদন করবেন সেখানে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা চেয়েছে। আর আপনার এই বিষয়ে অভিজ্ঞতা আছে। হতে পারে আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালে কোনো গ্রুপকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আপনি সেটা উল্লেখ করতে পারেন। এছাড়া প্রাসঙ্গিক হলে কোনো পুরস্কার, সম্মাননা বা প্রকাশনার কথাও উল্লেখ করতে পারেন।
এখানে একটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়। স্নাতক পাশ করা প্রায় সবাই ফ্রেশার হয়ে থাকে। আর এই ফ্রেশারদের রেজ্যুমে তৈরি করা সবচেয়ে কঠিন। কারণ তাদের কর্মক্ষেত্রের কোনো অভিজ্ঞতা থাকে না। তবে আমরা চাইলেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্জিত কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের রেজ্যুমেতে তুলে ধরতে পারি; যেমন: টিমওয়ার্ক বা গ্রুপওয়ার্ক। আমরা অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রুপ প্রেজেন্টেশন দিয়ে থাকি। এটাও একপ্রকার অভিজ্ঞতা। এছাড়া ডিবেট বা বিতর্ক করার দক্ষতাও একটি অভিজ্ঞতা। অনেকেই বিভিন্ন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকি। রেজ্যুমেতে এটি উল্লেখ করা যেতে পারে। আবার অনেকের যোগাযোগ দক্ষতা খুব ভালো হয়ে থাকে; যেমন: তাদের কথাবার্তা বা মানুষকে মুগ্ধ করার ক্ষমতা। চাইলে তা-ও অন্তর্ভুক্ত করা যায়। এছাড়া ইন্টার্নশিপের অভিজ্ঞতা, একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন কোর্স করে সার্টিফিকেট অর্জনও এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আপনি যেসব কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন বা প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন তার তালিকা যুক্ত করতে পারেন। তবে চাকরির পদের সঙ্গে গুরুত্ব বুঝে কর্মশালা ও প্রশিক্ষণের তথ্য যোগ করবেন। ধরুন, আপনি বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে চাকরির জন্য রেজ্যুমে তৈরি করছেন, তাহলে বিক্রয় ও বিপণন-সম্পর্কিত তথ্য যোগ করুন। এছাড়া অনেকে এখন অনলাইনের মাধ্যমে কোনো ডিগ্রি বা প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন। আপনি যদি তেমন কোনো ডিগ্রি বা প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন তবে তা-ও রেজ্যুমেতে যুক্ত করতে পারেন।
ভাষা দক্ষতা
সাধারণত বাংলাদেশে চাকরির আবেদনের জন্য ভাষা হিসেবে বাংলা ও ইংরেজি জানা আবশ্যিক। এছাড়া আপনি যদি ইংরেজি ভাষার দক্ষতা-সংশ্লিষ্ট কোনো পরীক্ষা, যেমন: আইইএলটিএস বা টোয়েফলে অংশ নিয়ে থাকেন, তবে সেটির স্কোর দিন। তাছাড়া অন্য কোনো ভাষা জানলে সেটিও উল্লেখ করতে পারেন।
কম্পিউটার দক্ষতা
আপনি যে পদের জন্য রেজ্যুমে তৈরি করছেন, সেই পদের কথা মাথায় রেখে কম্পিউটারে দক্ষতা নিয়ে লিখতে হবে। তবে বর্তমানে সব পর্যায়ের চাকরির জন্য মাইক্রোসফট অফিস (ওয়ার্ড, এক্সেল ও পাওয়ারপয়েন্ট) জানাকে সাধারণ দক্ষতা হিসেবে ভাবা হয়। তাই আপনি যদি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল বা পাওয়ারপয়েন্টের কাজ খুব ভালো জানেন, তা অবশ্যই রেজ্যুমেতে যুক্ত করবেন। এছাড়া টেকনিক্যাল সফটওয়্যার, যেমন- ম্যাটল্যাব বা এসপিএসএস শেখা থাকলে সেটাও উল্লেখ করতে পারেন।
শখ ও আগ্রহ
আপনি চাইলে এই অংশে নিজের দু-একটি আগ্রহ ও শখের কথা লিখতে পারেন।
রেফারেন্স
আপনি যদি সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেন তবে আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে রেফারেন্স হিসেবে দিতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষককে জানিয়ে তার নাম ও পদবি ব্যবহার করবেন। কিছু ক্ষেত্রে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান থেকে রেফারেন্সে যার নাম থাকে, তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাই সঠিক পদ ও পরিচয় ব্যবহার করবেন। তবে আপনি চাইলে অন্য যেকোনো পেশার পরিচিত কোনো পেশাজীবীর নাম ও পদবি যুক্ত করতে পারেন।
রেজ্যুমে ফরম্যাট কেমন হওয়া দরকার?
অধিকাংশ চাকরির জন্য ১-২ পৃষ্ঠার রেজ্যুমে বানানো যথেষ্ট। রেজ্যুমের জন্য ‘A4’ সাইজের পাতা ব্যবহার করুন। ফন্ট হিসেবে ‘Arial’, ‘Times New Roman’ বা ‘Calibri’ নিতে পারেন। তবে পুরো রেজ্যুমে কেবল একটি নির্দিষ্ট ফন্ট ব্যবহার করবেন। বেশি সৌন্দর্য আনতে গিয়ে ২-৩টি ফন্ট ব্যবহার করবেন না। এতে রেজ্যুমে দৃষ্টিকটু মনে হতে পারে।
ফন্টের সাইজ ১১/১২ রাখুন। সাধারণত কালো রংয়ের ফন্টে লেখা ভালো। তবে চাইলে শিরোনামের জন্য অন্য রঙের ফন্ট ব্যবহার করতে পারেন। রেজ্যুমের অংশগুলো পরিষ্কারভাবে তুলে ধরতে ১৪-১৬ ফন্ট সাইজের সাবহেডিং ব্যবহার করতে পারেন।
চাকরিদাতার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে বুলেট পয়েন্ট ব্যবহার করতে পারেন। দুই লাইনের মধ্যে যথেষ্ট স্পেস রাখুন। বিশেষ কোনো দরকার ছাড়া রেজ্যুমের ডিজাইনে বৈচিত্র্য আনার দরকার নেই। কারণ, নিয়োগদাতার কাছে ডিজাইন দৃষ্টিকটু লাগলে, হিতে বিপরীত হবার সম্ভাবনা বেশি।
যেসব বিষয় মনে রাখা জরুরি
- নিজের রেজ্যুমে নিজেই তৈরি করা উচিত। এতে নিজে পছন্দমতো গুছিয়ে সুন্দরভাবে তা তৈরি করতে পারবেন। অনেকেই আছেন যারা অন্যের রেজ্যুমে প্রায় হুবহু নকল করে নিজের রেজ্যুমে তৈরি করেন, যা একেবারেই অনুচিত। আর ইন্টারনেটে তো রেজ্যুমের বহু নমুনা পাওয়াই যায়। তাছাড়া বন্ধুদেরও হয়তো রেজ্যুমে তৈরি করা আছে। ধারণা নেয়ার জন্য সেগুলোও দেখতে পারেন চাইলে। তবে মনে রাখতে হবে, সেগুলো নকল করা যাবে না।
- আপনি যে রেজ্যুমে ফরম্যাট বাছাই করে লিখবেন তা যেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই থাকে। লেখার মাঝে যেন অন্য কোনো ফরম্যাটের অংশ না আসে।
- চাকরির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী রেজ্যুমেতে পরিবর্তন আনা দরকার। আপনি যে প্রতিষ্ঠানে আবেদন করছেন, সেই প্রতিষ্ঠানের কাজের সাথে মিল রেখে কাজের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করুন।
- ইন্টারভিউয়ের সময় নিয়োগদাতারা রেজ্যুমের তথ্যগুলো থেকে প্রশ্ন করতে পারেন। তাই রেজ্যুমেতে আপনি কী লিখছেন সেই ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। সহজ ও ছোট বাক্য ব্যবহার করুন। অহেতুক কঠিন শব্দ আর জটিল ভাষার ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। এছাড়া অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক কিছু লিখবেন না।
- অনুচ্ছেদ বা প্যারাগ্রাফের বদলে বুলেট পয়েন্ট ব্যবহার রেজ্যুমেকে আকর্ষণীয় করে তোলে। কখনোই ‘প্রথম পুরুষে’ রেজ্যুমে লিখা যাবে না। যেমন: ‘২০১৯ সালে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট এক্সিবিশন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছি’ এভাবে না লিখে বুলেট পয়েন্ট দিয়ে লিখতে হবে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট এক্সিবিশন প্রতিযোগিতায় প্রথম, ২০১৯’। স্পষ্ট ও সংক্ষিপ্ত করে তথ্য যুক্ত করতে হবে।
- প্রথম রেজ্যুমে তৈরির পর তা অভিজ্ঞ দুই-একজনকে দেখিয়ে নিলে ভালো হয়। এক্ষেত্রে শিক্ষক বা নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভাগের কোনো সিনিয়রের মতামত নেওয়া যেতে পারে।
- বানানের দিকে সতর্ক হতে হবে। কয়েকবার মনোযোগ দিয়ে পড়ে ভুলগুলো সম্পাদন করতে হবে। ফ্রেশারদের ক্ষেত্রে মনে রাখা জরুরি রেজ্যুমে যেন কোনোভাবেই ২ পৃষ্ঠার বেশি না হয়। এক পৃষ্ঠায় শেষ করতে পারলে আরও ভালো। তবে যাদের অভিজ্ঞতা বেশি, তারা চাহিদানুযায়ী পৃষ্ঠাসংখ্যা বৃদ্ধি করতেও পারেন।
- অনেকেই আছেন একই রেজ্যুমে অনেক জায়গায় জমা দেন, যা মোটেই ঠিক না। চাকরি ও পদভেদে রেজ্যুমে পরিবর্তন হবে। তাছাড়া পেশাগত লক্ষ্য একেক পদের জন্য একেকরকম, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
- শুধু রেজ্যুমে কোথাও জমা দেবেন না বা ইমেইল করবেন না। এর সঙ্গে ‘কভার লেটার’ যুক্ত করতে হবে। আপনি কেন চাকরির জন্য আবেদন করছেন, আপনি কেন যোগ্য, সেসব সংক্ষিপ্ত আকারে কভার লেটারে লিখতে হবে।
- ইমেইলে রেজ্যুমে পাঠানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখবেন তা যেন পিডিএফ ফরম্যাটে হয়। কোনোভাবেই ওয়ার্ড ডকুমেন্টে রেজ্যুমে পাঠাবেন না।
- অবসরে আপনার রেজ্যুমে রিভিউ করুন। আপনার নতুন কোনো দক্ষতা অর্জিত হলেই তা লিখে ফেলুন।
পরিশেষে একটি কথা, সময়ের সাথে সাথে সব কিছুই পাল্টায়। তাই নিজেকে সবসময় আপডেটেড রাখুন আর যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করুন।