এমিলি ডিকিনসনের একটি কবিতার “সাফল্য তাদের কাছে সবচেয়ে মিঠা” শিরোনামে কবি সুব্রত অগাস্টিন গোমেজকৃত অনুবাদে অমিতাভ প্রামাণিক ‘কভু’, ‘পরিষ্কার’ ও ‘কঠিন’ শব্দত্রয়ীর প্রয়োগ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। তার অভিমতে, কভু “গত শতাব্দীর প্রথমার্ধেই কবরস্থ” এবং পরিষ্কার ও কঠিন ব্যঞ্জনাহীন।
জবাবে সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ বলেছেন, “শব্দ তার ব্যঞ্জনা তার যথাযথ ব্যবহার থেকে লাভ করে, অভিধান থেকে নয়, লোকপ্রচল থেকেও নয়।”
কবি সুব্রত গোমেজ অত্যন্ত সুন্দর যুক্তি দিয়ে অমিতাভ প্রামাণিকের অভিমতের দুর্বলতা দেখিয়ে দিয়েছেন। আমি সুব্রত গোমেজের সাথে একমত পোষণ করে বলতে চাই বাঙালিদের এই শব্দসংস্কারের কারণে গত কয়েক দশকে বাংলা ভাষার উন্নতি তেমন দৃশ্যমান নয়। যেকোন শব্দই তার চারপাশে অবস্থিত অন্য সব শব্দের সাপেক্ষে ব্যঞ্জনা লাভ করে।
আর শব্দ কখনো কবরস্থ হয় নাকি? ব্যবহার করতে জানলে শক্তিমান ব্যবহারকারীর হাতে মরা শব্দও প্রাণ লাভ করতে পারে। আর নতুন করে শব্দ জন্মের হারের চেয়ে শব্দের মৃত্যুর হার বেশি হওয়া কোন ভাষার জন্য মঙ্গলকর নয়। অব্যবহৃত শব্দদেরকে যত ব্যবহার করা যায় (নতুন ব্যঞ্জনা দিয়ে হলেও) ভাষা ও সাহিত্যের জন্য তা তত মঙ্গলজনক।
শব্দ কীভাবে কবরস্থ হয়?
আজকাল বাংলায় কিছু লিখতে গেলেই মাথায় প্রাঞ্জলতার বাগজাল (discourse) চাঁড়া দিয়ে উঠে। দেশের জনতা, বিশেষত বর্তমান প্রজন্ম আজ এতটা বুদ্ধিবৃত্তিবিরোধী হয়ে উঠেছে যে তারা তিনচার বা ততোধিক অক্ষরের শব্দ দেখলেই যে কোন রচনা থেকে সরকে পরে। এই প্রাঞ্জলতার বাগজাল আমাদের এমন আষ্টেপিষ্ঠে বেধেছে যে আজ প্রচলিত লিখিত বাংলা তথা কথ্য বাংলা ভাষার দিকে তাকালে সবার লেখা বা মুখে মুষ্টিমেয় শব্দ ঘুরে ফিরে দেখতে পাই।
বাংলাদেশ আর বাংলা সাহিত্য ছাড়া অন্য কোথাও এই প্রাঞ্জলতার বাগজাল নিয়ে অযথা বাগবিস্তার দেখি নাই। এই প্রাঞ্জলতার বাগজালে আজ অনেক শব্দই বন্দী-কবরস্থ হয়ে আছে। যুক্তি হচ্ছে যে সহজ বিকল্প থাকতে কেন বহু অক্ষরবিশিষ্ট তৎসম বা আরবি-ফার্সি শব্দ ইস্তেমাল করবো। আমি মনে করি এটি একটি ভুল যুক্তি। এভাবে চলতে থাকলে বাংলা ভাষা অচিরে একটি পঙ্গু ভাষায় পরিনত হবে। কারণ একটি ভাষার সম্বল তার শব্দভাণ্ডার। আর শক্তিমান ব্যবহারকারীর হাতে যেকোন শব্দ যেকোন জায়গায় কাজে লেগে যেতে পারে, এতে ভাষায় বৈচিত্র্য বাড়ে এবং ভাষা প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। অবশ্য আমাদের এই ভাষিক দুর্দশার পিছনে রয়েছে উপনিবেশায়িত মন ও শিক্ষা ব্যবস্থাও। নিম্নে এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে।
রামধনু না রংধনু?
পশ্চিমবঙ্গের অনেকের মাঝেই বাংলাদেশে প্রচলিত আরবি-ফার্সি শব্দ নিয়ে অনাহক এলার্জি দেখা যায় এবং বাংলাদেশে তারই প্রতিক্রিয়া হিসেবে অনেকের মাঝে আবার তৎসম শব্দ নিয়ে এলার্জি দেখা যায় ইদানীং। আমি মনে করি এই দুইই আমাদের ভাষার বিকাশের পথে প্রতিবন্ধকতা। তসলিমা নাসরিন তার এক কলামে একদা শামসুর রহমানকে আরবি-ফার্সি শব্দ ব্যবহার নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন যা পড়ে আমি বিস্মিত হয়েছিলাম।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে সারিতা আহমেদ নামে একজন পাঠ্যবইয়ে আকাশীকে আসমানি আর রামধনুকে রংধনু করায় বাংলা ভাষাকে নাকি মুসলমানি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। এই ধরনের অনর্থক শুচিবায়ুগ্রস্ত সংস্কারাচ্ছন্ন গোত্রকেন্দ্রিক মানসিকতা ভাষার প্রগতির পথে অন্তরায়।
আসমানি মানলাম ফার্সি, কিন্তু রংধনু কি দোষ করলো? বরং রামধনুতে আছে রাম আর রাম হলেন হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর সপ্তম অবতার। আর রংধনুও তো সংস্কৃতজাত শব্দ ও অধিক প্রচলিত; ‘রং’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ ‘রঞ্জ’ থেকে। উপরন্তু রংধনু শব্দটি নির্দেশিত বিষয়বস্তুকে অর্থেই ধারণ করে কারণ দৃশ্যত রংধনু আসলেই রংয়ের ধনুক। রামধনুকে রংধনু করার সাথে সাম্প্রদায়িকতার কোন সম্পর্ক নেই। কেউ যদি প্রচলিত আরবি-ফার্সিজাত বাংলা শব্দে মুসলমানি গন্ধ পায় তাহলে অন্য কেউ যে তৎসম বা তদ্ভব শব্দে হিন্দুত্বের গন্ধ পাবে না তা কে বলবে। এই ধরনের শব্দসংস্কার নিয়ে পৃথিবীর কোন ভাষা বিকশিত হয়নি। ইংরেজদের দিকে খেয়াল করলে দেখতে পাবেন তারা পৃথিবীর সর্বপ্রান্ত থেকে নানা দেশের ও নানা জাতির শব্দ ইংরেজি ভাষায় আত্তীকরণ করে নিয়েছে।
এই আত্তীকরণের আরেক উদাহরণ হচ্ছে ভারতীয় হিন্দি ভাষা, যে ভাষাকে উনবিংশ শতকে বাঙালি সাহিত্যিকরা অমার্জিত ও অপরিশোধিত বলে উপেক্ষা করেছিল সেই হিন্দি আজ আরবি-ফার্সি থেকে শুরু করে নানা প্রদেশের নানান শব্দকে আত্তীকৃত করে কীভাবে দিন দিন প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে। অথচ আমাদের বাংলা তার আভিজত্যাভিমান নিয়ে দিন দিন মুষড়ে পড়ছে।
গুরুচণ্ডালী মিশ্রণ বনাম কোকাকলোনাইজেশন
অবশ্য এর শিকড় কিছুটা বাংলা ব্যাকরণেও রয়েছে। ‘গুরুচণ্ডালী’ শব্দটি একটি বর্ণবিদ্বেষী ও আধুনিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধবিরোধী শব্দ। এই শব্দে লুকিয়ে আছে হিন্দুত্বে বর্ণাশ্রম প্রথার ইতিহাস। বর্ণাশ্রমপ্রথা অনুযায়ী শুধু ব্রাহ্মণরাই গুরু হতে পারে আর চণ্ডাল বলতে নিম্নশ্রেণীর হিন্দু সম্প্রদায় বোঝায়, আর মুসলমানরা তো চণ্ডালেরও অধম, তাই বলতে হয় ‘গুরুচণ্ডালী’ শব্দটি সাম্প্রদায়িক ঘৃণার বিষবাষ্প ধারণ করে। কাজেই গুরুচণ্ডালী দোষ নামে খোদ ভাষার দোষ বলে কিছু নাই। ভাষায় গুরুচণ্ডালী দোষ খুঁজে পাওয়া এক ধরনের ধর্মীয় তথা সাংস্কৃতিক সংস্কার, যা সম্পূর্ণরূপে মানসিক ব্যাপার। কারণ যেকোন শব্দের ধ্বনিগত ব্যঞ্জনা সৃষ্টি হয় চারপাশে অবস্থিত অন্য শব্দের ধ্বনির সাপেক্ষে। এটি একটি ধ্বনিগত কেমিস্ট্রির ব্যাপার। আর ব্যঞ্জনাসৃষ্টি একটি চর্চা ও চর্যার ব্যাপারও বটে, সর্বোপরি দক্ষতার ব্যাপার।
কিন্তু আমাদের অনেকেরই ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংস্কারের কারণে পাশাপাশি তৎসম-আরবি-ফার্সি শব্দ গ্রহণ করতে পারি না। অথচ ইদানীং ইংরেজি শব্দে সমস্যা হয় না। চলতে ফিরতে সর্বদা সর্বথা সহজ বাংলা বিকল্প থাকা সত্ত্বেও যখন বহু ছিলেবালবিশিষ্ট ইংরেজি শব্দ ইস্তেমাল করি কোন সমস্যা হয় না। কারণ ভাষার শ্রুতিমধুরতা কর্ণের বিষয় নয়, এটি একটি মানসিক বিষয়। আমাদের উপনিবেশায়িত মনে ইংরেজি শিট মানে বাংলায় গু-ও মধু মধু লাগে। কাজেই ধর্মীয়-সম্প্রদায়গত চুলকানির কারণে কারো তৎসম, কারো আরবি বা ফার্সি শব্দে বিকার জাগা আমাদের ধর্মীয় গোঁড়ামিরই ভাষিক সম্প্রসারণ।
ভাষিক ও সাংস্কৃতিক মিথস্ক্রিয়া একটি সাধারণ-স্বাভাবিক সংঘটন। রাতারাতি ম্যাকডোনাল্ডাইজেশন -কোকাকলোনাইজেশন এক জিনিস আর আকাশের সাথে আসমানের সহাবস্থান এক জিনিস। প্রতিরোধ করবেন তো ম্যাকডোনাল্ডাইজেশন ও কোকাকলোনাইজেশন প্রতিরোধ করেন। অযথা নিজেদের ভেতর কলহ করলে বাংলার আকাশও হারাবেন বাংলার আসমানও হারাবেন।
শিক্ষার বি-উপনিবেশায়ন অন্যথা আয় মারি বাংলা ভাষা
যেহেতু আমাদের উপনিবেশায়িত শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের বাংলা ভাষার কোন ব্যবহার উপযোগিতা দেখাতে পারে না, এবং আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থা সেই জন্যে উদ্যোগও নেয়নি, গোঁদের ওপর বিষফোড়ের ন্যায় বেড়েই চলেছে ইংরেজির মহামারী। তাই এখনকার বাঙালি শিশুরা ইংরেজি শিখতে শৈশব থেকে জান পানি করে ফেলে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা শেষে জিআরই শব্দভাণ্ডার নামের বাজারে বহুল বিক্রিত ইত্যাকার নানান পুঁথি কিনে প্রেক্ষিতজ্ঞান ব্যতিরেকে প্রচলিত-অপ্রচলিত ল্যাটিনেট গ্রিক ইংরেজি শব্দ মুখস্থ করা শুরু করা দেয়। অথচ আজ অবধি জীবনে এমন একটি মুহূর্ত পেলাম না যেখানে ইংরেজি ছাড়া চলা যেত না। এই ১৬ কোটি জনসংখ্যার দেশ থেকে কয় হাজার বা কয় লাখই বা বহির্দেশে যায়। আর তার জন্য ইংরেজি শেখার কি হিড়িক!
ফ্রেন্স-জার্মানরা তো বিদেশীদের কাছে ইংরেজিজ্ঞান জাহিরে সর্বদা অপারগ। ফ্রেন্স-জার্মান-পোলিশ-কোরীয়-জাপানী-চিনারা দুর্মূর্খ বাঙালির ন্যায় কস্মিনকালেও ভাবে না যে ইংরেজি না জানলে অন্তর্জালে সন্তরণ করা যাবে না। উন্নত দেশের জনতা মাইক্রোসফট উইন্ডোজ বলেন ফেসবুক বলেন গুগল বলেন উইকিপিডিয়া বলেন সবই মাতৃভাষায় ব্যবহার করে। পাঁচ কোটি কোরীয়দের, তিন কোটি পোলিশদের জন্যে বেস্টসেলিং গেমগুলোর জন্যেও তাদের ভাষায় সংস্করণ বের হয়। আর আমরা বাঙালিরা এমন এক বেজন্মা জাতি বাংলা সংস্করণ থাকা সত্ত্বেও গুগল ফেসবুক সব ইংরেজিতে ব্যবহার করি। আবারও বলছি সমস্যা আমাদের মনে, ভাষায় নয়। আমরা পৃথিবীর সপ্তম বৃহৎ ভাষাগোষ্ঠী। অথচ উইকিপিডিয়ার নানা ভাষার সংস্করণের মাঝে আর্টিকেলের সংখ্যা বিচারে বাংলার অবস্থান বিরাশিতম। ভাবতে অবাক লাগে! এহেন জাতীয় লজ্জা কই রাখি।
আমার পরিচিত অনেক বাংলাভাষী সাহিত্যিকের সন্ততি দেশে কিংবা বিদেশে ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছে বা করছে। বর্তমানে ঢাকা শহরে সামর্থ্যবান মাত্রই নিজ সন্তানকে ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে পাঠায়। একটি জাতির এলিট শ্রেণী যদি স্বজাত্যবোধ হারিয়ে ফেলে এবং তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মাতৃভাষাবিমুখ করে থাকে, তাহলে সেই জাতির ভবিষ্যৎ কী? কেননা, দেশের ক্ষমতাকাঠামোর নিয়ন্ত্রণক্ষমতা তো এদেরই হাতে। তাই এখনই ভাববার সময়।
পৃথিবীর তাবৎ উন্নত দেশে শিক্ষার মাধ্যম মাতৃভাষা। আর বঙ্গে তা পরদেশী ভিন্নভাষাঃ আরবি ইংরেজি। উন্নত দেশ হিসেবে পরিচিত ইউরোপে রাশিয়া, ফ্রান্স, পোল্যান্ড, স্পেন, ইতালি, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, জার্মানিতে এবং এশিয়ার উন্নত দেশ জাপান, চীন, কোরিয়ায় শিক্ষার মাধ্যম মাতৃভাষা। আর পৃথিবীর যেসব দেশে শিক্ষার মাধ্যম মাতৃভাষা নয়, সেসব দেশ কোনটিই এখনও উন্নত হতে পারেনি, দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেনি। প্রমাণ চান ভারতীয় উপমহাদেশের দেশগুলোর দিকে তাকান। দেশকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চান, সবার আগে শিক্ষার মাধ্যম বাংলা করেন, অবিলম্বে রাষ্ট্রীয় কার্যকলাপের সর্বক্ষেত্রে বাংলার প্রচলন করেন।
বাংলা একাডেমীতে হে ফেস্ট- লিট ফেস্টের নামে হে মানে খড় জড়ো না করে- ঘাস না কেটে জ্ঞানবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার সকল ধ্রুপদী বইয়ের বাংলায় অনুবাদ করার ব্যবস্থা করেন। (অনুবাদের জন্য আমাদের বহু বহুভাষাবিদ দরকার তা বলে আমাদের গোটা জাতিকে বহুভাষাবিদ হিসেবে তৈরির করার চেষ্টা অযথা শক্তি ও সামর্থ্যের অপচয়)।
কাজেই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিপরীক্ষা, সিভিল সার্ভিসের পরীক্ষায় বাংলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন যাতে করে তরুণ তরুণীরা জিআরই শব্দভাণ্ডার না নিয়ে বাংলা শব্দভাণ্ডার নিয়ে অধ্যয়ন করে। আর অযথা বিসিএস পরীক্ষায় ইংরেজিকে বাংলার চেয়ে গুরুত্ব আরোপ করা বন্ধ করেন। স্কুল কলেজে ইংরেজির ইলেম দরকার নাই, বাংলাটাই ভালো করে হৃদয়ঙ্গম করুক কারণ ভাষাকে মূল্যায়ন করাও একটা শিক্ষার ব্যাপার। তালিম নেয়ার আগে আপনার উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের মর্মানুধাবন আর তালিম নেয়ার পড়ে আপনার উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের মর্মানুধাবন কখনো এক হবে না। বাংলাভাষী সবাই শিক্ষার মাধ্যমে মাতৃভাষাকে হৃদয়ঙ্গম করলেই আমাদের মাতৃভাষা আরো প্রাণবন্ত ও বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠবে। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সব মূর্খ শঠ বিশ্বাসঘাতক মীরজাফর রাজাকারদের কারণে স্বাধীনতার পর ছেচল্লিশ বছর চলে গেলেও আজও আমাদের সোনার বাংলা উপনিবেশি বেড়াকলের শিকল ভাঙতে পারলো না, আজও আমাদের সোনার বাংলা শ্মশানই রয়ে গেলো।
পুনশ্চ সকল সাহিত্যমোদীর উদ্দেশ্যে
বাস্তব জীবনে কোন ভাষার প্রায়োগিক উপযোগিতা না বাড়লে শুধু সাহিত্য কোন একটি ভাষাকে জিয়ে রাখতে পারে না। আজতক বাংলাদেশে আইন আদালতের ভাষা ইংরেজি রয়ে গেল। অন্যসব ক্ষেত্রও শুধু ইংরেজিময়। এহেন অবস্থা বিরাজমান থাকলে আজ তো আপনাদের শয়েক বই বিক্রি হচ্ছে কিছু দিন পড়ে কয়েক বইও বিক্রি হবে না। তাই সময় থাকতে সর্বক্ষেত্রে বাংলা প্রচলনের পক্ষে জোর দাবি জানান এবং সর্বথা বাংলার মর্যাদা সুপ্রতিষ্ঠিত করুন।