বর্তমান বাংলাদেশে ট্রেন্ডিং একটি সাবজেক্ট হলো সিএসই (কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং)। যুগের সাথে তাল মেলাতে গিয়ে সবাই একাধারে এই বিষয়টি নিয়ে পড়ছে বা পড়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অবস্থান প্রথমের দিকে? তাহলে সিএসই নিয়েই পড়ব- এমন চিন্তাধারার শিক্ষার্থীর অভাব নেই। বাবা-মায়েরও এমন একটি ধারণা তৈরি হয়ে যাচ্ছে।
ধরা-বাধা কাঠামোগত সিলেবাস পড়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয়কেও মুখস্থবিদ্যার জায়গা মনে করেন অনেকেই। কিন্তু কোনো পূর্ব-ধারণা না নিয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া একজনের জন্য কতটুকু যুক্তিযুক্ত? এই লেখনীতে সিএসই কেন পড়বো এবং কেন পড়বো না উভয় বিষয় নিয়েই আলোচনা করা হবে। কিছু সাধারণ ভুল ধারণাও তুলে ধরা হবে। আশা করা যায় জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে লেখাটি পাঠক-পাঠিকাদের সাহায্য করবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে কিছু কথা
আমাদের দেশে তথ্য-প্রযুক্তির জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পূর্বের তুলনায় এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় এ নিয়ে ভালই আলোচনা হয়। চাকরিতে ভালো বেতন পাওয়া যায়, গুগল-মাইক্রোসফটে যাওয়া, আরও অন্যান্য ভালো সুযোগও আছে- এমন কারণবশত অনেকেরই এই বিষয়ে আগ্রহ তৈরি হচ্ছে।
আগ্রহ তৈরি হওয়াটা মন্দ নয়, এবং এর মাঝেও রয়েছে যারা স্বেচ্ছায় কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়তে চায়। আর ট্রেন্ডের কারণে আজকাল দেশের প্রায় সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই বিভাগটি রয়েছে। কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, আইটি, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং- সবগুলোরই মোটামুটি সিলেবাস কাছাকাছি। তো, পড়তে চাইলে পছন্দ এবং সুযোগের অভাব হবে না। কিন্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে একটু জেনে নেয়া ভালো।
চাকরির দিক থেকে দেখলে অনেক ভালো চাকরিই রয়েছে, আবার এই বিষয়ে পড়েই অনেকে বসেও থাকে। কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েও বিসিএস জেনারেল ক্যাডারের জন্য পড়াশোনা করে। বসে থাকার কারণ হিসেবে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার অভাবকে দায়ী করা যায়। এত গ্র্যাজুয়েটের মাঝে কোম্পানি চাইবে সেরাকে নিতে। গড়ে হাজারেরও বেশি আবেদন পড়ে একটি চাকরির জন্য। সদ্য গ্র্যাজুয়েটরা চায় কাজ শেখার একটি সুযোগ। কিন্তু সেটি দেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির পক্ষে সেভাবে সম্ভব হয়ে ওঠে না। এজন্য নিজেরই তৈরি করে নিতে হবে নিজেকে।
সিএসই পড়তে হলে
সিএসই পড়তে হলে প্রোগ্রামিং ভালো লাগতে হবে, ম্যাথ ভালো জানতে হবে- এসব সবাই বলে। তবে সেই সাথে প্রযুক্তিকেও ভালবাসতে হবে। এই ভালোবাসাটা সবার মাঝে কতটুকু থাকে বা কীভাবে আসে এটা বলা দুষ্কর। একটা বয়স থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই এই ভালোবাসাটা তৈরি হয়।
মাইক্রোসফট বা গুগল ভাল লাগে? তাহলে কি তাদের নিত্যনতুন প্রজেক্টগুলো সম্পর্কে আপনি জানেন? ইউটিউবের ফিডে কি লাইনাসের ভিডিও ঘুরে বেড়ায়? ইন্টেল বা এএমডির প্রসেসরের যাবতীয় বিষয়াদি নিয়ে ফেসবুকে তর্ক-বিতর্কে লেগে পড়েন? কোন দামে কোন ল্যাপটপ কিংবা স্মার্টফোন ভালো হবে- এসবের পরামর্শ দিয়ে থাকেন? গুগল নিউজ ফিড টেক-সংক্রান্ত খবরাখবর দিয়ে ভরা? কিংবা রোর বাংলার টেক আর্টিকেলগুলো সবই আপনার পড়া? এমনটা হলে সিএসই আপনাকে সাদর আমন্ত্রণ জানাবে!
এসব জানার আগ্রহ থাকা অতি প্রয়োজন। আজকের যুগের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে ইনফরমেশন বা তথ্য। যার কাছে যত আছে সে তত ক্ষমতাধর এবং এগিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য রাখে। আগ্রহ যদি না থেকে থাকে তাহলে আগ্রহ তৈরি করার চেষ্টা করুন। আগ্রহটা প্রচুর কাজে দেবে। হাজার হাজার লাইন কোড করতে যখন একঘেয়েমি লাগবে, তখন এই আগ্রহটাই আবার লেখার শক্তি জাগিয়ে তুলবে।
সিজিপিএ কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
একজন সিএসই পড়তে আগ্রহী শিক্ষার্থী প্রায় সময়ই শুনে থাকবেন যে, “ভাই, সিজিপিএ ম্যাটার না! তোমার দক্ষতাটাই আসল।“
কথা সত্য, কিন্তু ভালো মানের সিজিপিএ চাকরির ক্ষেত্রে আপনাকে কয়েকগুণ এগিয়ে রাখবে। ধরুন, একটি চাকরিতে ৫০০ জন আবেদন করলো। এর মাঝে যাদের সিজিপিএ কম তারা আগেই বাদ পড়ে যাবে। ইন্টারভিউয়ে আগে ডাক পেতে হবে। নাহলে ঐ ‘একটা কাজ করার সুযোগই’ তারা পাবে না। আবার কোনো ৩.৯ পাওয়া গ্র্যাজুয়েট যদি শুধু মুখস্থ করেই তার শিক্ষাজীবন পার করে দেয়, পড়াশোনার বাইরে তার জানাশোনা বিস্তৃত না হয়, তাহলেও সে বাদ পড়ে যাবে।
কোম্পানিগুলো খোঁজে সৃজনশীল এবং দক্ষতাসম্পন্ন মানুষ। যদি কম সিজিপিএ নিয়ে ইন্টারভিউয়ে ভালো করতে পারে কেউ, তাহলেই বাজিমাত। আর ৪-৫ বছরের কারিকুলামে হয়তো অনেক তাত্ত্বিক বিষয় শেখানো হয়, কিন্তু সেগুলোও কাজে লাগবে।
কম্পিউটার চালাতে প্রসেসর, গ্রাফিক্স কীভাবে কাজ করে না জানলেও চলে, কিন্তু জানা থাকলে কোনো সমস্যায় পড়লে যেমন দ্রুত সমাধান করা যায়, তেমনই দীর্ঘদিন রক্ষণাবেক্ষণও করা যায় ভালোভাবে। ম্যাথে কোনো ফাঁক রাখা চলবে না। কোনো ম্যাথমেটিক্যাল প্রবলেম না পারলে বারবার চেষ্টা করে যেতে হবে। প্রোগ্রামিংয়ে ম্যাথ লাগে। আর সিএস কোর্সে ইন্টিগ্রেশন-ডিফারেন্সিয়েশন লাগবে বেশিই।
পারিপার্শ্বিক যেসব বিষয়ে দক্ষতা থাকতে হবে
ভালোভাবে ইংরেজি জানা: আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এমনভাবে তৈরি যে ইংলিশ মিডিয়াম/ভার্সনের শিক্ষার্থীরা বাদে বাংলাতেই সব পড়ে আসি আমরা। কিন্তু সমস্যাটা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠে। এখানে আর বাংলা খুঁজে পাওয়া যায় না। রেফারেন্স বই তো আছেই, শিক্ষকেরাও ইংরেজিতে লেকচার দেবেন অনেক সময়। যোগাযোগের দক্ষতা বাড়াতে হবে, আর শিক্ষকদের লেকচার বোঝার মতো ইংলিশ আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে। এজন্য ইংলিশ মুভি বা সিরিজ দেখা, ইংলিশ বই পড়া কাজে দেয়। এ দেশে একই বই অনেক লেখক অনুবাদ করে থাকেন, সেসব মনমতো না-ও হতে পারে। তাই যদি আসল বইটা পড়তে পারেন, তাহলে নিজের মতো করে বোঝাও হলো, আবার জানাও হলো। এছাড়া আজকাল ইংরেজি ভালো করার জন্য অনেক অ্যাপ রয়েছে। চাইলে সেগুলোও দেখে নিতে পারেন।
হতে হবে সামাজিক: সারাদিন শুধু ঘরে বসে থাকলেই চলবে না, দৌড়াদৌড়ি করা শিখতে হবে। যদি কোনো টেক-সেমিনার হয় সেখানে যেতে হবে। ডেভেলপার্স যেসব গ্রুপ আছে সেখানে নিজের আগ্রহ প্রকাশ করতে হবে। আরও যারা আপনার মতো প্রোগ্রামিং বা টেকনোলজিতে আগ্রহী তাদের সাথে করতে হবে আলোচনা। বন্ধুবান্ধবের আড্ডায় শুধু প্রেম-ভালবাসা নিয়ে কথা বললেই হবে না। কে কোথায় কী করলো এসব বিষয় আপনার খুব একটা কাজে দেবে না। শুধু সময় নষ্ট করবে। একটা ভালো সার্কেল তৈরি করতে পারলে আপনার মাঝে ভালো জিনিস এমনিই চলে আসবে।
ক্ষেত্র নির্বাচন: কম্পিউটার সায়েন্স পড়ার আগে একটা আগ্রহের ক্ষেত্র করে নিলে ভালো হয়। এটা পরেও করে নেয়া যায়, তবে আগে নেয়া থাকলে শেখার জন্য আলাদা একটা টান কাজ করে। কম্পিউটার সায়েন্স বলতে আমরা শুধু প্রোগ্রামিংকেই বুঝি। কিন্তু এর বাইরেও ক্ষেত্র রয়েছে। যেমন: গ্রাফিক্স ডিজাইনার (UI/UX), টেস্টার, ফ্রন্ট এন্ড বা ব্যাক এন্ড, নাকি মোবাইল অ্যাপস- এসব ক্ষেত্রে একটা আগ্রহ তৈরি করতে পারলে নিজে ভবিষ্যতে কোন রাস্তায় যাবো এই প্রশ্ন কাউকে করতে হবে না।
কেন পড়বেন না সিএসই!
এই বিষয় নিয়ে তেমন বলা হবে না, কারণ একজনের আগ্রহ কখন তৈরি হবে এটি কেউ বলতে পারে না। তবে কিছু সাধারণ কথা বলে রাখা প্রয়োজন।
হাজার হাজার লাইন লিখতে হবে বসে বসে। যদি ধৈর্য কম থাকে আর অল্পতেই ছেড়ে দেয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে এখানে এসে বিপদে পড়তে হবে। একদিন পিছিয়ে পড়লে সেটি পুষিয়ে নেয়ার জন্য অনেক অনেক বেশি খাটনি করতে হবে। তাই ফাঁকিবাজি করলে নিজেরই বিপদ। সারাদিন ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে বসে থাকলে বা এগুলোর স্ক্রিন যদি আপনার শারীরিক কোনো ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে তাহলে না আসাই ভালো হবে। কারণ, এমনও দিন যেতে পারে যখন দুদিন ঘর থেকে বের হওয়া নেই। সেক্ষেত্রে ধৈর্যের সাথে শরীরের পরীক্ষাও হবে।
ভর্তি হওয়ার পর এবং কর্মক্ষেত্র
ধরা যাক, আপনি ভর্তি হয়ে গেছেন। শুরু থেকে যদি কিছু বিষয় আপনি মাথায় রাখতে পারেন বা করতে পারেন তাহলে চাকরিক্ষেত্রে পথ অনেকটাই প্রশস্ত হয়ে যাবে। কোনো চাকরিই আপনাকে শুরু থেকে সব শেখাবে না। এসব আপনার নিজেরই শিখতে হবে। শেখার জায়গা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রোগ্রাম সলভিং: এইচএসসিতেই ‘সি প্রোগ্রামিং’ অধ্যায়ে অনেক বেসিক প্রোগ্রাম রয়েছে। সেগুলো বাদ দিয়ে আসলে হবে না। যদি সমস্যাগুলো সমাধান করতে অনেক সময় লেগে যায় তাহলে হাল ছেড়ে দিলে হবে না। মনে রাখতে হবে, এটি দক্ষতার জায়গা। ভার্সিটির জুনিয়রও আপনার চেয়ে কোনো প্রোগ্রাম দ্রুত সমাধান করতে পারার ক্ষমতা রাখে। কোডিং কন্টেস্টে অংশগ্রহণ করতে হবে। দক্ষতা বাড়ানোর জন্য এর চেয়ে আর ভালো উপায় নেই।
অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং: OOP ঠিকমতো না বুঝলে বিপদে পড়তে হবে। কারণ আজকাল সব জায়গায় এর ব্যবহার রয়েছে। চাকরির ক্ষেত্রে এই বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। তাই যদি কোনো বিষয়ে ধারণা পরিপূর্ণ না থাকে, তাহলে অনলাইন কোর্স করে হলেও সেটি ঠিক করে নিতে হবে। প্রোগ্রামিং করার সময় কোড গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করতে হবে। অগোছালো ঘরের যেমন সমাদর নেই, তেমনি নেই অগোছালো কোডেরও।
বেছে নিতে হবে একটি নিজের ভাষা: গ্র্যাজুয়েটদের মাঝে সবারই একাধিক প্রোগ্রামিং ভাষায় অল্প-বিস্তর জ্ঞান থাকে। কিন্তু একটি ভাষা বেছে নিতে হবে যেটিকে লালন করতে হবে নিজের মতো করে। ভাষাটি অবশ্যই অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড হতে হবে। এর ফলে কাজের গতি যেমন বাড়বে, তেমনি নিজে কিছু করতে চাইলে সেটিও সম্ভব।
ওয়েব এবং ডাটাবেজ: বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ‘এইচটিএমএল’ থাকার ফলে বেসিক ওয়েবের ধারণাটা প্রায় সবারই রয়েছে। তবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর প্রধান ৩টি বিষয় হচ্ছে HTML, CSS ও JavaScript। বাকি দুটি বিষয়ে যদি পারদর্শী হয়ে ওঠা যায়, তাহলে এটি ভবিষ্যতে প্রচুর কাজে দেবে। আজকাল ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ছাড়া গতি নেই। আর এর পাশাপাশি ডাটাবেজ ল্যাঙ্গুয়েজ SQL জেনে রাখা উত্তম। দক্ষতা যত বাড়বে, চাকরির ক্ষেত্রে সম্ভবনা তত জোরালো হবে।
ব্যক্তিগত প্রজেক্ট: চাকরির ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত প্রজেক্ট অনেক সাহায্য করে। প্রার্থীর ব্যক্তিগত প্রজেক্ট রয়েছে কি না গুগল, মাইক্রোসফটও এটি দেখে। প্রোগ্রামিং যদি প্যাশন হয়ে থাকে, তাহলে প্রজেক্ট বানানো তেমন কষ্টকর হওয়ার কথা না। মাথায় যেসব ছোটখাট আইডিয়া আসে সেগুলোই তৈরিতে লেগে পড়তে হবে। আইডিয়ার বয়স বাড়ানো যাবে না। একবার শুরু করলে সমস্যা তৈরি হলেও তার সমাধান পাওয়া যাবে। বরং তাতে দক্ষতা আরও বাড়বে। প্রজেক্টকে যে ইউনিক হতে হবে এমন না। বিদেশি অনেক কিছুই আছে যেগুলো দেখে আমরা ভাবি যে যদি আমাদের এমন থাকতো, এমনই কিছু করে ফেলতে হবে। বর্তমানে নতুন আইডিয়ার চেয়ে পুরোনো আইডিয়া ডিবাগ (ত্রুটিমুক্তকরণ) করে চালানো ভালো।
সর্বোপরি, পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেললে হবে না। বা অনেক শিখলাম, আর দরকার নাই- এমন চিন্তা আনলেও চলবে না। প্রযুক্তির স্রোতের বেগ প্রচুর। এই বেগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে প্রতিনিয়ত জানতে হবে, শিখতে হবে। যারা বড় বড় প্রতিষ্ঠানে যায় তাদের পেছনের গল্প শুনলে একটি শব্দই খুঁজে পাওয়া যাবে- অধ্যবসায়। পরিশ্রম এবং চর্চাই একজন সিএসই শিক্ষার্থীর সাফল্যের চাবিকাঠি।