Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

মাস্ক ব্যবহার এবং সংরক্ষণের কিছু নিয়মাবলী

করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে পুরো পৃথিবী এখন সংকটের মুখে। এখন পর্যন্ত এর কোনো স্বীকৃত ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক আবিষ্কৃত না হওয়ায় অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং স্বাস্থ্যগত ক্ষয়ক্ষতি প্রতিনিয়তই বাড়ছে। প্রতিষেধক না থাকায় ভাইরোলজিস্টরা সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে আসছেন সবসময়।

গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বিভিন্ন দেশ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে লকডাউন কার্যকর করে। সেই সাথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করে প্রায় সব দেশের সরকার। আর এই স্বাস্থ্যবিধির মধ্যে মাস্ক ব্যবহার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। গবেষকরা বলছেন, বেশিরভাগ ভাইরাস বায়ুর মাধ্যমে ছড়ায়। করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রেও এমন বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা গেছে। তাই মাস্ক ব্যবহারের ফলে হাঁচি-কাশি থেকে ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমতে পারে বলে মনে করেন গবেষকরা।

২০১৬ সালে নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি গবেষণায় বলা হয়েছিল, মানুষ প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ২৩ বার হাত দিয়ে মুখে স্পর্শ করে। বার বার মুখে স্পর্শ করার এই প্রবণতা করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। ইতোমধ্যেই আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে গেলে তার হাঁচি-কাঁশির মাধ্যমে সুস্থ মানুষের দেহে প্রবেশ করতে পারে এই ভাইরাস। আর তাই নিয়মিত হাত পরিস্কার করার পাশাপাশি নিজেকে এবং অন্যকে সুরক্ষা দিতে মাস্ক ব্যবহারের বিকল্প দেখছেন না গবেষকরা। তবে বায়ুবাহিত সকল প্রকার ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে মাস্কের কার্যকারিতা নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রশ্ন তুলেছেন অনেক ভাইরোলজিস্ট। যদিও হাত থেকে মুখে সংক্রমণ ঠেকাতে এই মাস্ক ব্যবহার করে সুফল পাওয়ার সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে।

সার্জিক্যাল মাস্ক; Image Source: Hackensack Meridian health

অষ্টাদশ শতাব্দীতে সর্বপ্রথম সার্জিক্যাল মাস্কের ব্যবহার শুরু হলেও স্প্যানিশ ফ্লু সংক্রমণের আগঅবধি এর পরিচিতি একেবারেই ছিল না বলা যায়। ১৯১৯ সালের স্প্যানিশ ফ্লুয়ের তাণ্ডবে সারাবিশ্বে প্রায় ৫ কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। কোনো কোনো হিসেবে এই সংখ্যা আরও বেশি। বর্তমানে চলমান বৈশ্বিক মহামারিতে চিকিৎসকরা বার বার স্প্যানিশ ফ্লুয়ের সময়কে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। সেই সাথে তখনকার সার্জিক্যাল মাস্ক এবং গজ মাস্কের সুফল মানুষের উদ্দেশ্যে প্রচার করেন। মাস্ক যদি পরিধান করতেই হয় তবে সেক্ষেত্রে নিরাপত্তা নির্দেশিকাসমূহ অবশ্যই মানতে হবে। অন্যথায় উপকারের বদল ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন যে কেউ। আজ আমরা মাস্ক ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশাবলী নিয়ে আলোচনা করবো। আশা করি যে কেউ মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সুফল পাবেন।

কীভাবে পরিধান করবেন?

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই প্রশ্নের উত্তর জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাস্তবতা একটু লক্ষ্য করুন। খুব অল্প সংখ্যক মানুষ জানেন মাস্ক ব্যবহারের সঠিক নিয়মকানুন। আর গ্রামাঞ্চলের মানুষ কখনোই হয়তো এই বিষয় নিয়ে ভেবে দেখেনি। কারণ আরও আট-দশজনের মতোই মাস্ক পরে নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন তারা। ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, মাস্ক পরিধানের পূর্বে অবশ্যই দুই হাত জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। কারণ ব্যক্তিগতজীবনে যেকোনো কাজই হাত দিয়ে করতে হয়। শিশু, ছাত্র কিংবা পেশাজীবী সবার জন্যই এই নিয়ম প্রযোজ্য। হাত পরিষ্কার করে মাস্কটি এমনভাবে পরতে হবে যাতে নাক ও মুখ পুরোপুরি ঢেকে দেয়া যায়।

মাস্ক পরার নিয়ম; Image Source: Hackensack Meridian health

এখানে আরও একটি বিষয়ের উপর জোর দিয়েছেন ভাইরোলজিস্টরা। তাদের পরামর্শ মাস্ক এমনভাবে পরতে হবে যাতে ত্বকের সঙ্গে একেবারে লেগে থাকে। কোনো কারণেই মাস্ক এবং ত্বকের মাঝে কোনো ফাঁক রাখা যাবে না। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাস্ক আপনার মুখে পুরোপুরি ফিট না-ও হতে পারে। সেক্ষেত্রে সুবিধাজনকভাবে কিছুক্ষণ পর পর ঠিক করে নিতে হবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে মাস্কের উপরের অংশ ব্যবহারকারীর নাকের উপর থাকে। অর্থাৎ এটি নাক এবং মুখকে সার্বক্ষণিক ঢেকে রাখবে। আর যদি মাস্ক ত্বকের সাথে পুরোপুরি ফিট হয়েও নাক অথবা মুখ ঢাকা না যায় তবে এটি ব্যবহারে কোনো উপকার পাওয়া যাবে না। তাই মাস্ক ব্যবহারের প্রথম এবং প্রধান শর্ত হিসেবে ভাইরোলজিস্টরা বলছেন ‘নো গ্যাপ’। আর এটি আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে।

মাস্ক যাচাই-বাছাই

আপনাকে প্রথমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কোন মাস্কটি কিনবেন। এখানে অবশ্যই আপনার স্বাচ্ছন্দ্যবোধের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। প্রায় সব দেশেই সরকারের পক্ষ থেকে সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য মজুদ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মাস্ক ব্যবহার না করলে জেল-জরিমানারও ব্যবস্থা করেছে অনেক দেশ। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ব্যবহারের বাইরে বাড়তি মাস্ক মজুদ রাখা প্রয়োজন। কারণ বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত মানুষদের জন্য মাস্ক ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এসব জায়গায় শত শত শ্রমিক একসঙ্গে কাজ করেন।

কয়েক প্রকার মাস্ক; Image Source: Yahoo

তবে কেউ চাইলে নন-মেডিকেল ডিসপোজেবল মাস্কও ব্যবহার করতে পারেন। নন-মেডিকেলের মধ্যে কাপড়ের তৈরি এমন কিছু মাস্ক রয়েছে যেগুলো পরিষ্কার করে পুনরায় ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে বড় বড় শপিংমলে কাপড়ের তৈরি নানা ধরনের মাস্ক পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে ব্যবহারকারী যদি সারাদিন বাইরে থেকে কাজ করেন তবে কাপড়ের তৈরি মাস্কগুলো অবশ্যই কার্যকারিতা হারাবে। অনেকে আবার বিভিন্ন জীবজন্তুর চিত্র সম্বলিত মাস্ক পছন্দ করেন। তাদের জন্য দারুণ দারুণ সব মাস্কের সমাহার রয়েছে সুপারশপ এবং অনলাইন শপগুলোতে। আর সার্জিক্যাল মাস্ক নিকটস্থ যেকোনো ফার্মেসিতেই পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞরা চান মাস্কের দাম এবং প্রাপ্তি সহজ হোক।

চশমা ঘোলাটে হওয়া থেকে মুক্ত রাখা

ধূলাবালি থেকে রক্ষা পেতে আজকাল অনেকেই বিভিন্ন রকম চশমা ব্যবহার করেন। আবার চোখের নানাবিধ সমস্যার কারণেও লেন্স বিশিষ্ট চশমা পরেন অনেকে। বাস্তবিক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষ চশমা এবং মাস্ক একসঙ্গে ব্যবহার করেন তারা একটি মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। মাস্ক পরার কারণে নিঃশ্বাসের বাতাস স্বাভাবিক গতিতে বের হতে পারে না। তখন ত্বক এবং মাস্কের মধ্যখানে যেকোনো একটি ফাঁক খুঁজে নিয়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে এই উষ্ণ বাতাসগুলো। আর তখনই ঘটে আসল বিপদ। মাস্ক পরিহিত প্রায় বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে নাকের কারণে মাস্ক ত্বকের সাথে লেগে থাকে না। ফলে নিঃশ্বাসের উষ্ণ বাতাসগুলো সরাসরি উপরের দিকে ধাবিত হয় এবং চশমার শীতল লেন্স সরাসরি ঘোলাটে হয়ে যায়।

চশমা ব্যবহারকারীরা যেভাবে মাস্ক পরিধান করবেন; Image Source: Hackensack Meridian health

ফলশ্রুতিতে ব্যবহারকারী প্রায় প্রতি মিনিটেই চশমা মুছতে হয়। এই সমস্যার কারণে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। চিকিৎসকরা এর সমাধান দিতে গিয়ে দুটো পদ্ধতির কথা বলেছেন। প্রথমত, এমন সব মাস্ক ব্যবহার করা যেগুলোতে নাকের কারণে ত্বকের সাথে কোনো ফাঁক সৃষ্টি হবে না। আর যদি বেশি ফাঁকা জায়গা থাকে তবে সেখানে কিছু নরম টিস্যু গুঁজে দিতে হবে। আর দ্বিতীয় পদ্ধতিটি হলো মাস্ককে একটু উপর করে পরা এবং চশমা স্বাভাবিকের তুলনায় একটু নিচুতে রাখা। এতে করে চশমার ফ্রেম মাস্কের উপরে থাকবে। আর এই দুই পদ্ধতির কোনোটাই যদি সম্ভব না হয় তবে একটি সার্জিক্যাল ট্যাপ দিয়ে মাস্কটিকে নাকের সঙ্গে এমনভাবে জুড়ে দিতে হবে যাতে কোনো ফাঁকা জায়গা না থাকে। এসব পন্থা অবলম্বন করে সম্ভব হলে ব্যবহৃত চশমাটি দিনে অন্ততপক্ষে একবার সাবান পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।

মাস্ক ফেলতে গিয়ে বাড়তি সতর্কতা

গবেষকদের মতে, সকল মাস্ক পুনরায় ব্যবহার করা যায় না। কয়েক প্রকার মাস্ক রয়েছে যেগুলো একবার ব্যবহারের পর সরাসরি ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হয়। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক সংকট এখন একটি বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। আর তাই অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য মাস্ক বাজারে এনেছে অনেক প্রতিষ্ঠান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ডিসপোজেবল মাস্কগুলো একবার ব্যবহারের পর স্যাঁতস্যাঁতে কিংবা একেবারে নরম হয়ে পড়লে সেগুলোকে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দিতে হবে।

সামুদ্রিক ঢেউয়ে ভেসে আসা মাস্ক; Image Source: Shutterstock

কিন্তু এত এত ডিসপোজেবল মাস্ক কয়েকটি দেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নতুন সমস্যার সৃষ্টি করেছে। ব্রিটেনের একটি সমুদ্রবন্দরে বর্জ্যের সাথে বিভিন্ন রকম মাস্ক খুঁজে পান এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী। আর এতে করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন পরিবেশবিদরা। তাদের আশঙ্কা- বিভিন্ন বর্জ্যের সাথে আরও অনেক দেশেই মাস্ক সমুদ্রে ফেলা হচ্ছে। এতে করে সামুদ্রিক প্রাণীরাও হুমকির মুখে পড়তে পারে। এই ঘটনার পর ব্রিটিশ সরকার ব্যবহৃত সকল প্রকার মাস্ক বাসায় নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার করে সংরক্ষণের নির্দেশ দেয়। আর তাই আমাদের উচিত মাস্ক ব্যবহারের পর সেটি উন্মুক্ত স্থানে যত্রতত্র ফেলে না দিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা। আর এটাও যদি সম্ভব না হয় তবে মাস্ক পরিষ্কার করে নিজের কাছে সংরক্ষণ করা।

নিজেই নিজের জন্য মাস্ক তৈরি করার পদ্ধতি

সারাবিশ্বে কয়েকমাস ধরেই করোনাভাইরাস তাণ্ডবলীলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে থমকে দাঁড়িয়েছে প্রায় সবরকম কার্যক্রম। কোনো কোনো দেশে এখনও লকডাউন চালু রয়েছে। আবার লকডাউন তুলে নিলেও অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছলতায় ভুগছেন অনেকে। এমতাবস্থায় পরিবারের সবার জন্য মাস্ক ক্রয় করার সামর্থ্য না থাকলে কিংবা ফার্মেসিতে গিয়ে মাস্ক সংগ্রহ করা ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলে নিজেই মাস্ক তৈরি করে নিতে পারেন। এতে করে দূরবর্তী স্থানে গিয়ে মাস্ক সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এড়ানোও সম্ভব হবে। সেই সাথে টাকাও বাঁচবে।

নিজেই তৈরি করুন নিজের মাস্ক; Image Source: AlpahGreen

নিজে মাস্ক তৈরি করতে হলে পুরোনো জামাকাপড় প্রথমে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন ডিজাইনে কাপড়গুলো কেটে সেলাই মেশিনের সাহায্যে মাস্ক তৈরি করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মাস্কে যত বেশি লেয়ার থাকবে এটি তত বেশি কার্যকরী হবে। আর কাপড়ের ক্ষেত্রে যেকোনো কাপড় ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করছে সংস্থাটি। মাস্ক তৈরিতে সম্ভব হলে গজ কাপড় ব্যবহারের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যথায়, শক্তভাবে বুনন করা কটন, ন্যাচারাল সিল্ক অথবা উপরিভাগ সুতির এমন কাপড় ব্যবহার করতে হবে।

মাস্ক পরিষ্কারের নিয়মাবলী

আপনি যদি পুনরায় ব্যবহারোপযোগী মাস্ক পরিধান করেন তবে অবশ্যই সেটি নিয়মানুসারে পরিষ্কার করতে হবে। আমরা জানি, স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে গেলে ডিসপোজেবল মাস্ক ফেলে দিতে হয়। তবে এই ধরনের মাস্কগুলো স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে গেলে সরাসরি ওয়াশিং মেশিনে দিতে হবে। অন্যথায় ভাইরাসজনিত সমস্যা ছাড়াও নাকে, মুখে অন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেহেতু পুনরায় ব্যবহারোপযোগী বেশিরভাগ মাস্ক কাপড়ের তৈরি, সেহেতু এগুলো পরিষ্কার করতে তেমন সমস্যা হয় না। জন্স হপকিন্স মেডিসিন বলছে- ব্যান্ডানা, মুখের স্কার্ফ ও কাপড়, কটনের তৈরি মাস্ক ওয়াশিং মেশিনে পরিষ্কার করার জন্য নিরাপদ। যদিও আগে ভাবা হতো এগুলো এই প্রক্রিয়ায় পরিষ্কার করা যায় না।

মাস্ক রোদে শুকানো হচ্ছে; Image Source: Lei7/Getty Images

এক্ষেত্রে কাপড়ের প্রকৃতি অনুসারে ওয়াশিং মেশিনের তাপমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। কারণ কিছু কিছু কাপড় অতিরিক্ত তাপমাত্রায় নষ্ট হয়ে যায়। যাদের পক্ষে ওয়াশিং মেশিনে মাস্ক পরিষ্কার করা সম্ভব না তারা হাল্কা গরম সাবান পানিতে ২০ সেকেন্ড মাস্ক ডুবিয়ে রাখতে পারেন। তারপর সেগুলোকে হাতেই পরিষ্কার করা যাবে। উল্লেখিত যেকোনো একভাবে পরিষ্কারের পর মাস্কগুলোকে উচ্চ তাপমাত্রায় শুকাতে হবে। বেশি বেশি রোদ পড়ে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গায় মাস্ক শুকানো উত্তম। যারা সুগন্ধি সংবেদনশীল, তাদেরকে সুগন্ধহীন ডিটারজেন্ট কিংবা সাবান ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে জন্স হপকিন্স মেডিসিন।

বাচ্চাদের জন্য মাস্ক

এখন অবধি প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে বলা যায়, করোনাভাইরাসের কারণে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুরা বেশি নিরাপদ। তবে যেসকল শিশু খুব ছোটবেলা থেকেই শ্বাসকষ্টে ভুগছে তারা অন্যদের মতোই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আর যেহেতু করোনাভাইরাস যে কারো ক্ষেত্রে সংক্রমিত হতে পারে ,সেহেতু ঘর থেকে বের হলে বাচ্চাদের মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তবে সবচেয়ে ভালো খবর হলো, এখন অবধি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলেনি বেশিরভাগ দেশ। বাচ্চারা সাধারণত তাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি চুষতে পছন্দ করে। এটি তাদের শিশু-বয়সের অভ্যাস। আর তাই মাস্ক পরিয়ে তাদের এই অভ্যাস দূর করা যেতে পারে। করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থেকে মুক্ত রাখতে সবাইকে হাত দিয়ে মুখে স্পর্শ না করার পরামর্শ দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সেক্ষেত্রে বাচ্চাদেরও এই অভ্যাস থেকে বিরত রাখা অভিভাবকদের জন্য নতুন একটি দায়িত্ব।

মাস্ক পরে কথা বলা এবং নিয়মিত নতুন মাস্ক ব্যবহার

বর্তমানে প্রায় সকল দেশেই কর্মক্ষেত্রে সবাইকে মাস্ক পরতে বাধ্য করা হচ্ছে। অনেক সময় একে অপরের সাথে কথা বলার প্রয়োজন হয়। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে মাস্ক খুলে কথা বলা যাবে কি না? বিশেষজ্ঞরা এর উত্তর দিয়েছেন ভিন্নভাবে। প্রথমত, করোনাভাইরাস শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে কারো দেহে প্রবেশ করে এবং অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। ফলশ্রুতিতে মাস্ক খুলে একে অপরের সাথে কথা বললে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তাই সবাইকে সরাসরি কথা না বলার পরামর্শ দেন গবেষকরা। সেক্ষেত্রে মোবাইল ফোনে অথবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ করার পদ্ধতি হতে পারে সবচেয়ে বেশি সহায়ক।

অনেকেই প্রতিদিন একটি করে মাস্ক ব্যবহারের কথা বলছেন। অনেক চিকিৎসক এতে সম্মতিও দিয়েছেন। এর মানে এই নয় যে আপনাকে প্রতিদিন নতুন নতুন মাস্ক কেনার জন্য ফার্মেসি অথবা সুপারশপে ছোটাছুটি করতে হবে। বরঞ্চ একাধিক মাস্ক সংরক্ষণের সুবাদে সংকটে পড়তে হবে না। একটি পরিষ্কার করতে দিয়ে অন্যটি ব্যবহার করা যাবে। তবে ডিসপোজেবল মাস্কের বাজারমূল্য সবার সাধ্যের মধ্যে নেই। বাংলাদেশে ৫০ পিসের এক বক্স সার্জিক্যাল মাস্কের বাজারমূল্য প্রায় ৮০০ টাকা। আর এই পরিমাণ টাকায় একটি নিম্নবিত্ত পরিবারের এক সপ্তাহের খাবার যোগান দেয়া সম্ভব। আর তাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ব্যয় কমাতে চাইলে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী একাধিক মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। এতে করে এই বৈশ্বিক মহামারিতে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যবিধি মানতে গিয়ে অন্য দিক দিয়ে আর্থিক সংকটে পড়তে হবে না।

This article written about some guide to wearing a face mask for all. wherever you live, it's going to be hard to avoid covering up your mouth and nose. That's why everyone should know about the right way of using a mask.

Features Image: VOX/Rob Kim/Getty Images

Related Articles