কে এই জিপসি রোজ ব্ল্যাঞ্চার্ড
মাঞ্চুসেন সিনড্রোম বাই প্রক্সি সংবাদপত্রে প্রচুর উঠে আসে জিপসি রোজ ব্ল্যাঞ্চার্ডের বিচারের সময়। দুর্ভাগা এই মেয়ের জন্ম ১৯৯১ সালের ২৭ জুলাই, যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যে। জিপসির মাকে সবাই ডাকত ডি ডি বলে। ২৪ বছর বয়সে ডি ডি নিজের থেকে সাত বছরের ছোট রড ব্ল্যাঞ্চার্ডের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।
রড অন্তঃসত্ত্বা ডি ডিকে বিয়ে করেন। কিন্তু মুহূর্তের আবেগে গড়ে ওঠা সম্পর্ক টেকেনি। বাচ্চা জন্মের আগেই তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ফলে জিপসি ডি ডির কাছেই বেড়ে ওঠেন। রড পরবর্তীতে বিয়ে করেন ক্রিস্টি নামে আরেক নারীকে।
জিপসির নানা রোগ
মেয়ের তিন মাস বয়সে ডি ডি ছুটে যান চিকিৎসকদের কাছে, জানান- তার বাচ্চা ঘুমের সময় মাঝে মাঝে ঠিকমতো শ্বাস নিতে পারে না। তার কথার সত্যতা নিয়ে সন্দেহ না করে ডাক্তাররা জিপসিকে শ্বাস নেবার যন্ত্রের ব্যবস্থাপত্র দেন।
জিপসির বয়স যখন সাত বছর, তখন ডি ডি তাকে নিয়ে নিজ পরিবারের সাথে দেখা করতে গেলেন। সেখানে তিনি সবাইকে বলেন- জিপসি বিরল এক জেনেটিক রোগে ভুগছে, ফলে তার চলাফেরার সামর্থ্য ক্রমেই সীমিত হয়ে পড়বে। একসময় হুইলচেয়ার ছাড়া সে চলতে-ফিরতে পারবে না।
এরপর ধারাবাহিকভাবে ডি ডি জিপসির স্বাস্থ্য নিয়ে একের পর এক সমস্যা চিহ্নিত করেন। একবার মেয়েকে খাবার দেয়ার জন্য নল লাগিয়ে নেন। আরেকবার খিঁচুনি হয় বলে তার মৃগী রোগ সনাক্ত করান, যার জন্য দেয়া ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় জিপসির দাঁত পড়ে যায়।
সত্যি কথা বলতে, জিপসির সমস্যার কথা সবসময় তার মা-ই বলতেন, এমনকি কী রোগ থেকে এরকম হচ্ছে সেটাও তার মুখ থেকেই শোনা যেত।এসব ক্ষেত্রে অন্য কোনো সূত্র থেকে রোগীর ইতিহাস যাচাইয়ের সুযোগ ছিল না। তাই পরীক্ষানিরীক্ষার ফলাফল নেতিবাচক হলেও রোগীর লক্ষণ আছে এই কথা বিবেচনা করে ওষুধ দিতে হতো তাদের।
জিপসির নানা-নানী সন্দিহান হয়ে পড়েন যে এই মেয়ে কিশোর বয়স পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে কিনা! ডি ডি সারাক্ষণ জিপসিকে আগলে রাখত, মেয়ের কাছে আর কাউকে আসতে দিত না। এ কারণে ডি ডির পরিবারের সাথে তার বচসা হলে তিনি মেয়েকে নিয়ে লুইজিয়ান ত্যাগ করেন।
নতুন ঠিকানায়
ডি ডি আর জিপসি মিসৌরি অঙ্গরাজ্যে চলে এলেন। এখানে ২০০৫ সালে হারিকেন ক্যাটরিনা তাদের ছোট্ট অ্যাপার্টমেন্ট লণ্ডভণ্ড করে দেয়। এরপর অনেকবার ডি ডি ডাক্তারদের কাছে দাবি করেছেন- ঝড়ে তার মেয়ের অনেক কাগজপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। অগত্যা আবারও তার কথাতেই ডাক্তারদের চিকিৎসা দিতে হয়।
২০০১ সালে নিউ অর্লিয়েন্সের টুলানে ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে ডি ডির চাপাচাপিতে জিপসির মাস্কুলার ডিস্ট্রোফি নামে এক রোগের পরীক্ষা করা হয়। জেনেটিক এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মাংসপেশি শুকিয়ে যেতে থাকে।
তদন্তে প্রমাণ না পেলেও ডি ডি লুইজিয়ানা জুড়ে একের পর এক ডাক্তার দেখান মেয়েকে, মিসৌরি এসেও সেই কাজে বিরতি দিলেন না তিনি। জিপসির মাস্কুলার ডিস্ট্রোফি আছে বলে ডি ডি নিঃসন্দেহ। তার দৃঢ় মনোভাব দেখে কেউ কেউ জিপসির চিকিৎসাও দেন, কিছু ক্ষেত্রে সার্জারিও করা হয়।
ক্যাটরিনার পর ডি ডি স্প্রিংফিল্ডে বাসা বেধেছিলেন। প্রতিবেশীরা দেখত হুইলচেয়ারে বসা, নাকে-মুখে নল লাগানো প্রায় মুমূর্ষু এক মেয়ে আর তার সেবায় নিবেদিতপ্রাণ এক মাকে। স্বাভাবিকভাবেই ডি ডি তাদের থেকে সহমর্মিতা লাভ করেন। প্রতিবেশীরা তার মুখ থেকেই জানতে পারেন ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত মেয়েকে নিয়ে কী সংগ্রামটাই না করছেন তিনি!
ওদিকে বারে বারে ডি ডির মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে আসা, পরীক্ষানিরীক্ষার ফলাফল নেতিবাচক হলেও মেয়ের রোগের ব্যাপারে অনড় থাকা, মা ছাড়া আর কোনো সূত্র থেকে রোগীর ইতিহাস না থাকা ইত্যাদি রেড ফ্ল্যাগ সত্ত্বেও ডাক্তাররা কিছুই সন্দেহ করেননি। অবশ্য তাদের দোষও দেয়া কঠিন। মাঞ্চুসেন বাই প্রক্সি অত্যন্ত বিরল রোগ, অনেক চিকিৎসক জীবনে একটি কেসও দেখেননি।
জিপসির এক চিকিৎসক, রবার্ট বেকারম্যান তো মা-মেয়েকে নিয়ে নিজের হাসপাতালের পত্রিকায় প্রবন্ধই লিখে ফেলেছিলেন। এই জুটিকে তিনি তার দেখা সেরা মা-মেয়ে বলে দাবি করেন। তবে স্প্রিংফিল্ডের শিশু স্নায়ুবিদ, ড. বার্নার্ডো ফ্ল্যাস্টারস্টেইন ২০০৭ সালে জিপসিকে দেখতে গিয়ে অনুভব করেন কোথাও কিছু গড়বড় আছে।
ড. বার্নার্ডো স্বাভাবিকভাবেই ডি ডি’র কথায় অনেক টেস্ট দেন, যার কোনোটিতেই কোনো রোগের চিহ্নমাত্র দেখা গেল না। অথচ ডি ডি তা মানতে রাজি নন। এমনকি জিপসির হুইলচেয়ারের দরকার নেই বলেও তিনি মনে করতেন। ডি ডি দ্রুত তার কাছ থেকে সরে পড়েন।
হাসপাতালে সংরক্ষিত ফাইলে ড. বার্নার্ডো মাঞ্চুসেন বাই প্রক্সির সম্ভাবনা প্রশ্নবোধক দিয়ে রাখলেন। যদি তিনি নিশ্চিত হতেন, তাহলে সাথে সাথে পুলিশকে জানানোর বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু ডি ডি আর না আসায় ড. বার্নার্ডোর পক্ষে তার সন্দেহ সত্যি প্রমাণের সুযোগ ছিল না। কেবল সন্দেহের ভিত্তিতে রিপোর্ট করতে চাননি তিনি, যদিও পরে অনেকেই এজন্য তার সমালোচনা করেছেন।
২০০৯ সালে বেনামি ফোন কল পেয়ে পুলিশ ডি ডির বাসায় যায়। তারা জিপসি সম্পর্কে জানতে চাইলে ডি ডি স্বভাবসুলভভাবে মেয়ের শারীরিক অবস্থার বয়ান দেন। সন্দেহ করার মতো কিছু না পেয়ে পুলিশ ফিরে আসে।
প্রতিবেশীদের চোখে মা-মেয়ে
প্রতিবেশীদের সাথে বাড়ির বাইরে মাঝে মাঝে দেখা হতো মা-মেয়ের। সবসময়েই জিপসি থাকত হুইলচেয়ার, চোখে বড় চশমা। শীর্ণ দেহের জিপসির নড়বড়ে দাঁত আর নাকে দেয়া খাবারের নল যেকোনো প্রত্যক্ষদর্শীর করুণা উদ্রেকের জন্যে যথেষ্ট। কখনো কখনো অক্সিজেনের সিলিন্ডার টানতে টানতে মেয়ের সাথে ঘুরতেন ডি ডি।
কেউ জিপসির কী হয়েছে জিজ্ঞেস করলে তো আর রক্ষে নেই। বিশাল তালিকা খুলে বসতেন ডি ডি। জেনেটিক সমস্যা, মৃগী রোগ, হাঁপানি, ঘুমের সমস্যা, দৃষ্টিশক্তির ক্ষীণতা আরো কত কী! দুর্ভাগা মেয়েটা জন্মের পর থেকে একবিন্দু সুখ পায়নি, ডি ডি আফসোস করতেন। এমনকি পেট থেকে বের হবার পরেই তাকে আইসিইউ-তে রাখতে হয়েছিল। ছোটবেলায় মেয়ের লিউকেমিয়া বা ব্লাড ক্যান্সার ছিল- এমন কথাও ডি ডি বলে বেড়াতেন।
ডি ডি কখনোই জিপসিকে কারো সাথে ছাড়তেন না। তিনি দাবি করতেন- তার মেয়ের মস্তিষ্কের গঠন পরিপূর্ণ বিকশিত নয়, ফলে তার কথা অসংলগ্ন, এবং কেবল তিনিই জানেন কিভাবে জিপসির প্রয়োজন মেটাতে হয়। জিপসিকে স্কুলেও যেতে দিতেন না তিনি। কারণ হিসেবে বলতেন- বুদ্ধিবৃত্তি ঠিকভাবে বিকশিত না হওয়ায় সমবয়সী ছেলেমেয়েদের সাথে মানিয়ে চলতে পারবে না সে।
একই পাড়ার কয়েকজনের সাথে ডি ডি’র বেশ সখ্য গড়ে উঠেছিল। এদের একজন অ্যামি পিনেজার, যার মেয়ে আলিয়াহর সাথে জিপসির বেশ বন্ধুত্ব হয়ে যায়। অ্যামি নিজেও লুইজিয়ানার আদি বাসিন্দা। তার কাছে ডি ডি ফেঁদে বসেন লুইজিয়ানা ছাড়ার কাহিনী। তার পরিবার জিপসিকে মানতে চায়নি, উল্টো জিপসির নানা সিগারেট দিয়ে তার গায়ে ছ্যাকা দেন। এরপরেই ডি ডি পালিয়ে আসতে বাধ্য হন।
কিশোরী জিপসি ও ভয়াবহ এক পরিকল্পনা
দেখতে দেখতে তথাকথিত মুমূর্ষু জিপসি দিব্যি কিশোর বয়সে পা দেয়। ২০১৩ সালে অনলাইনে তার সাথে পরিচয় হয় নিকোলাস গুডেজনের। ২০১৫ সালে দুজন দেখা করে। এই কথা জানতে পেরে ডি ডি প্রচণ্ড রেগে যান, তিনি নিকোলাসের সাথে মেলামেশা নিষিদ্ধ করে দেন। জিপসি কিন্তু ততদিনে নিকোলাসকে নিয়ে কল্পনার জগত সাজিয়ে ফেলেছে। ফলে ভয়াবহ এক পরিকল্পনা তার মাথায় উঁকি দেয়।
২০১৫ সালের ৯ জুন। নিকোলাস জিপসিদের বাসার কাছে এক মোটেলে এসে ওঠে। জিপসি ফোনে তাকে মেসেজ করা জানায়- মা ঘুমিয়ে পড়েছে। এরপর নিকোলাস বাসায় এলে দরজা খুলে তাকে ঢুকিয়ে নেয় জিপসি।
নিকোলাস প্রবেশ করল ডি ডির শোবার ঘরে। তার হাতে জিপসির দেয়া ছুরি। এই ছুরির সাহায্যেই সে হত্যা করে ডি ডিকে। জিপসি তখন বাথরুমে, কানে হাতচাপা দিয়ে রেখেছে যাতে কোনো চিৎকার শুনতে না হয়।
পলায়ন ও গ্রেফতার
নিকোলাসের বাবা-মায়ের বাড়ি উইসকনসিনে। হত্যাকান্ডের পর সেখানেই পালিয়ে গেল দুজন। মায়ের মৃতদেহ পড়ে পড়ে পচুক এটা চায়নি জিপসি। ফলে বেনামে মায়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটা পোস্ট করে ডি ডি মারা গেছে জানিয়ে দেয় সে। তার আশা ছিল- পুলিশ ধরে নেবে কোনো দুর্বৃত্ত বাসায় ঢুকে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। খুব ভাবনা-চিন্তা করে যে কাজ করছিল না তারা সেটা বোঝাই যাচ্ছিল।
জিপসিদের বাসার কাছেই থাকত কিম নামে এক ভদ্রমহিলা। তিনি ফেসবুক পোস্ট দেখে ডি ডিকে ফোন করেন। কয়েকবার রিং বাজার পরও কোনো উত্তর না পেলে স্বামী ডেভিডকে নিয়ে দরজা ধাক্কাধাক্কি করলেন কতক্ষণ। তারা খেয়াল করলেন- ডি ডির গাড়ি তখনও বাইরে পার্ক করা, তার মানে তিনি ভেতরেই থাকার কথা। কালবিলম্ব না করে পুলিশে খবর দেয়া হলো।
পুলিশ এসে ডি ডির মৃতদেহ উদ্ধার করলে প্রতিবেশীরা হতবিহবল হয়ে পড়ে। মমতাময়ী এমন একজন মাকে খুন করল কোন পাষণ্ড? হতভাগা জিপসিই বা কোথায়, মাকে ছাড়া একমুহূর্তও তো চলতে পারে না মেয়েটা!
পরদিন কিম ডি ডির জন্য এলাকায় শোক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। তার শেষকৃত্যের জন্য চাঁদা তুলতে অনলাইনে আবেদন জানানো হয়। পুলিশ তখনও অন্ধকারে। এমন সময় এগিয়ে এলেন অ্যামি পিনেজারের মেয়ে, জিপসির সেই বান্ধবী আলিয়াহ। তার কাছে নিকোলাসের গল্প করেছিলেন জিপসি। পুলিশকে সেটা জানিয়ে দেন তিনি।
পুলিশ ওদিকে ফেসবুকে কে ডি ডির মারা যাবার কথা লিখেছে সেটাও ট্রেস করছিল। তারা দেখতে পায়- যে আই পি অ্যাড্রেস থেকে পোস্ট করা হয়েছে, তা উইসকনসিনের নিকোলাস গুডেজনের নামে রেজিস্টার করা। দুয়ে দুয়ে চার মিলিয়ে সেখানকার পুলিশকে জানানো হয়। তারা হানা দেয় নিকোলাসের বাসায়।
কিন্তু নিকোলাসকে গ্রেফতার করতে গিয়েই সব হিসেব ওলটপালট হয়ে গেল। যে জিপসি হুইলচেয়ার ছাড়া নড়তে পারত না, নল ছাড়া খেতে পারত না, সেই জিপসিকেই অফিসাররা দেখতে পেলেন দিব্যি স্বাভাবিক মানুষের মতো চলাফেরা করতে। তার অক্সিজেন, ঔষধ কোনো কিছুরই প্রয়োজন নেই, আদতে মায়ের বর্ণিত কোনো রোগের লক্ষণ আর তার মধ্যে দেখা যাচ্ছে না।
পুলিশ আরো দেখতে পায়- ডি ডি মেয়ের জন্মসনদ আর নামের বানান নিয়েও বেশ কয়েকবার জালিয়াতি করেছেন। সব মিলিয়ে পুরো বিষয়টি প্রচণ্ড এক বিস্ময় হয়ে দেখা দেয় সবার জন্য। প্রতিবেশীরা বুঝতেই পারলেন না কীভাবে একজন মা তার মেয়েকে বছরে পর বছর রোগী সাজিয়ে রাখলেন, তা-ও সকলের চোখে ধুলো দিয়ে! জিপসির বাবা রডও হতভম্ব। তার সাথে মেয়েকে দেখা করতে দিতেন না ডি ডি। মেয়ে যে হাঁটতে পারে তা তিনি প্রথম দেখতে পান আদালতে।
বিচারকাজ
পুরো ঘটনা বিশ্লেষণ করলে ডি ডি যে মাঞ্চুসেন বাই প্রক্সিতে আক্রান্ত ছিলেন সেটা বোঝা খুব কঠিন নয়। সমস্যা হলো তিনি মারা গেছেন, ফলে তার মানসিক অবস্থা পর্যালোচনা করে কোনো স্থির সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব নয়। তবে জিপসির সব রেকর্ড পত্র দেখে তার উকিলেরা বুঝতে পারলেন- এই কেস সাদামাটা হত্যাকাণ্ড নয়।
বিবাদী উকিলেরা যখন সব প্রমাণ সরকারি উকিলকে দেখান, তিনি নিজেও বিচলিত হয়ে পড়লেন। কারণ আইনত জিপসি শিশু নির্যাতনের শিকার। মিডিয়াতেও পুরো ঘটনা প্রকাশ পেলে জিপসিই সবার সহানুভূতি পেতে থাকেন। লুইজিয়ানা থেকে ডি ডির পরিবার জানিয়ে দেয়- মেয়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার খরচ বহন করবে না তারা।
সরকারি উকিলের সাথে সমঝোতা অনুযায়ী জিপসির জন্য লঘুদণ্ড নির্ধারিত হয়। সর্বনিম্ন শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় তাকে। নিকোলাস পান যাবজ্জীবন।
এ সময় বাবা ও সৎমার সাথে সম্পর্ক স্থাপিত হয় জিপসির। নিয়মিত তাদের সাথে দেখা করে সে। কয়েকবার মিডিয়াতে সাক্ষাৎকারও দেয়। জিপসির মতে, ডি ডির কাছে যখন সে ছিল, তার থেকে বরং জেলেই বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে সে। এমনকি তার স্বাস্থ্যেরও অনেক উন্নতি হয়।
২০২৪ সালে জিপসি প্যারোলের উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবেন। এটা মোটামুটি নিশ্চিত যে তাকে প্যারোলে ছেড়ে দেয়া হবে। রড জানিয়েছেন, তিনি মেয়েকে মুক্তি পাওয়ামাত্রই বাসায় নিয়ে যাবেন। জেলে জিপসির চিকিৎসা করতে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আছেন, সম্ভবত তাকে আজীবনই এই চিকিৎসা নিয়ে যেতে হবে।
জিপসির ঘটনা নিয়ে প্রচুর লেখালেখি হয়েছে। স্ট্রিমিং সার্ভিস হুলু তাকে নিয়ে তৈরি করেছে ‘দ্য অ্যাক্ট’ নামে চলচিত্র। তবে জিপসি নিজে বলেছেন, ছাড়া পাবার পর তিনি নিজেই সবাইকে তার কাহিনী জানাতে চান।