![](https://assets.roar.media/assets/tJS8vV9qhOKNJTWb_scientific-feature.jpg?w=1200)
কোনো এক রৌদ্রোজ্জ্বল সোনালী বিকেলে বনের পথ ধরে হাঁটছেন। দূর থেকে ভেসে আসছে পাখির কিচিরমিচির গান। আপনি মুগ্ধ হয়ে শুনছেন। কিছুদূর এগোতেই চোখে পড়ল বাহারি রঙের বুনোফুল। বুনোপুষ্পের অনির্বচনীয় সৌন্দর্যে আপনার চোখ জুড়িয়ে গেল। কিংবা কোনো এক সন্ধ্যায় আলো ঝলমলে শহরে রেস্টুরেন্টের এক কোণে বসে আছেন। কিছুক্ষণ পরই ওয়েটারের হাত ধরে চলে আসল গরম গরম এক কাপ কফি। কফির মন চনমনে মোহনীয় ঘ্রাণে আপনি চোখ বন্ধ করে ফেললেন। তারপর কফির সুমিষ্ট স্বাদ আপনার জিহ্বাকে ছুঁয়ে গেল। আপনি তখন বিমোহিত। কিংবা কর্মক্লান্ত দিনের শেষে বাসায় ফিরলেন, আপনার মা পরম মমতায় আপনার গায়ে হাত বুলিয়ে দিলেন। ক্লান্তি উধাও হয়ে আপনার মনে জায়গা করে নিল একরাশ ভালো লাগা আর প্রশান্তি।
এই যে শব্দ, দৃষ্টি, ঘ্রাণ, স্বাদ, স্পর্শ এই পঞ্চেন্দ্রিয়ের কারণে আমাদের জীবনটা এত রঙিন আর সুন্দর হয়ে ওঠে; পঞ্চেন্দ্রিয়ের বাইরেও ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলে একটি ব্যাপার আছে। জীববিজ্ঞানে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলে বোঝানো হয় দেহের অবস্থান ও গতি বোঝার ক্ষমতাকে (propioception)। এই ক্ষমতার কারণে আপনি চোখ বন্ধ করেও কীভাবে দাঁড়িয়ে আছেন তা বুঝতে পারেন, অন্ধকারে চোখ বন্ধ রেখেও দিক ঠিক করে হাঁটতে পারেন।
![](https://assets.roar.media/assets/cS8SDb80PcRKQ2ia_wwwww.jpg)
উল্লেখ্য, ইন্দ্রিয় বলতে বোঝানো হয় সেই অঙ্গকে যা পরিবেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এবং সেই তথ্য (সংবেদ) মস্তিষ্কে পৌঁছে দেয়। তাহলে মানুষের ইন্দ্রিয় কি কেবল ছয়টি?
আমরা এতদিন ধরে তেমনটি জেনে আসলেও, জীববিজ্ঞানের নতুন গবেষণা বলছে ভিন্ন কথা। নতুন এই গবেষণা অনুযায়ী, প্রচলিত ছয়টি ইন্দ্রিয়ের বাইরে অস্তিত্ব আছে সপ্তম ইন্দ্রিয়ের যাকে বলা হচ্ছে ‘দ্য সেভেন্থ সেন্স’। দারুণ বিস্ময়কর ব্যাপার, কী বলেন?
পরবর্তী তথ্যটি শুনে বিস্মিত হবেন নাকি ভ্যাবাচেকা খাবেন সেই ভার আপনার উপর রইল। তবে আমি আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, নতুন আবিষ্কৃত এই সপ্তম ইন্দ্রিয় হচ্ছে আমাদের চিরচেনা ইমিউন সিস্টেম বা অনাক্রম্য ব্যবস্থা বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
![](https://assets.roar.media/assets/D8O71dQGiZBWHTsQ_seventh-sense.jpg)
জীববিজ্ঞান নিয়ে জানাশোনা থাকলে আপনি এখন বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে তর্কের প্রস্ততি নিচ্ছেন। আপনার প্রথম প্রশ্ন, সারাজীবন জেনে আসলাম রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শরীরের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করে। সেই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কীভাবে সংবেদবাহী ইন্দ্রিয়ের কাজ করবে?
আপনার তর্কে যাওয়া খুব একটা অযৌক্তিক নয়। কারণ শত শত বছর ধরে অ্যানাটমি পাঠ্যপুস্তকগুলো শিখিয়ে আসছে – রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, সংবেদ গ্রহণকারী এবং তাতে সাড়াদানকারী মস্তিষ্ক (CNS) পুরোপুরি আলাদাভাবে কাজ করে। একটির সাথে আরেকটির কোনো রকম সম্পর্ক নাই। শরীরের মহাগুরুত্বপূর্ণ এই দুই সিস্টেমের স্বাভাবিক অবস্থায় কোনো রকম দেখা সাক্ষাৎই ঘটে না। তবে ব্যতিক্রম যে নেই তা নয়। শরীর রোগ-শোকের কবলে পড়লে মস্তিষ্ক ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা মুখোমুখি হয়। তখন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা মস্তিষ্কের সাথে যে খুব হৃদ্যতাপূর্ণ আচরণ করে তা কিন্তু নয়। বরং নির্দয়ভাবে মস্তিষ্কে আক্রমণ করে এবং রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী কোষগুলোকে সরিয়ে ফেলে।
কিন্তু সম্প্রতি বেশ কিছু নতুন গবেষণা আমাদের জানাচ্ছে যে, মস্তিষ্ক ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়মিতই একে অপরের সাথে যোগাযোগ রাখে। তাদের এই খাতির রোগাক্রান্ত বা স্বাভাবিক উভয় সময়েই বিদ্যমান থাকে। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত মস্তিষ্ককে বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে সহযোগিতা করে, তেমনি চাপ নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক আচরণেও সাহায্য করে। এছাড়া রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার নতুন আবিষ্কৃত যে কাজটি মস্তিষ্কের সাথে এর সম্পর্ককে জোরদার করেছে তা হচ্ছে পর্যবেক্ষণকারী অঙ্গ হিসেবে এর ভূমিকা।
রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শরীরের ভেতরের ও বাইরের জীবাণুদের উপস্থিতি সম্পর্কে মস্তিষ্কে তথ্য প্রেরণ করে যেমনটা আমাদের চোখ দর্শন সংক্রান্ত তথ্য মস্তিষ্কে পাঠায়, যেমনটা কান শ্রবণ সংক্রান্ত সিগন্যাল পাঠায়। সব মিলিয়ে, এই লেখাটি দুটি সিস্টেমের গল্প। মস্তিষ্ক ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার বিচ্ছিন্ন ও একীভূত হওয়ার গল্প। গল্পের শুরুতে মস্তিষ্ক ও ইমিউন সিস্টেমের গঠন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত একটি ধারণা নেয়া যাক।
আমাদের মস্তিষ্ক স্পাইনাল কর্ডকে সাথে নিয়ে গঠন করে CNS বা Central Nervous System। মস্তিষ্কের মৌলিক ও কার্যকরী একক হচ্ছে নিউরন বা স্নায়ুকোষ। মস্তিষ্কে ১০০ বিলিয়ন নিউরনের সমন্বয়ে গঠিত যারা আবার নিজেদের মধ্যে ১০০ ট্রিলিয়ন সিন্যাপস গঠন করে নিজেদের মধ্যে সংযোগ বজায় রাখে।
![](https://assets.roar.media/assets/g0F7IxiwHBrGyT2E_cns.jpg)
এছাড়া রয়েছে গ্লিয়াল সেল যারা নিউরনের সাথে মিলে তৈরি করে মস্তিষ্কের কার্যকরী কলা প্যারেনকাইমা। প্যারেনকাইমা, রক্তনালীর মতো এন্ডেথেলিয়াল কোষ যারা ব্লাড ব্রেইন ব্যারিয়ার তৈরী করে। আর এদেরকে আশ্রয় দেয় স্ট্রোমা।
অন্যদিকে, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার রয়েছে দুইটি অংশ; সহজাত অনাক্রম্যতা (innate immunity) ও অর্জিত অনাক্রম্যতা (adaptive immunity)। সহজাত অনাক্রম্যতা অত্যন্ত প্রাচীন একটি ব্যবস্থা। এটি অনুজীবদের বিরুদ্ধে শরীরের প্রথম স্তরের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করে। এর আওতায় রয়েছে অনুজীবদের হত্যা করা এবং তাদের বিস্তারে জৈবিক ও রাসায়নিকভাবে বাধা দেওয়া। সহজাত অনাক্রম্যতা নির্ভুলতার এত ধার ধারে না। অন্যদিকে, T লিম্ফোসাইট ও B লিম্ফোসাইট নিয়ে গঠিত অর্জিত অনাক্রম্যতা একেবারে নির্ভুলভাবে কোনো অনুজীবকে চিহ্নিত করে এবং তাকে নিঃশেষ করতে একদম সঠিক পদক্ষেপটি নিয়ে থাকে।
![](https://assets.roar.media/assets/z5p6SvNtTOCDnHJb_immune-s.jpg)
আরো স্পষ্ট করে বলতে গেলে, অর্জিত অনাক্রম্যতা কখনোই অনধিকার প্রবেশকৃত অনুজীব ছাড়া শরীরের নিজস্ব কোনো কোষকে আক্রমণ করার দুঃসাহস দেখায় না। এক শতাংশ মানুষে অর্জিত অনাক্রম্যতা বিগড়ে যেতে পারে। তখন শরীরের নিজস্ব কোষকে আক্রমণ করে রোগ সৃষ্টি করে যাকে বলা হয় অটোইমিউন ডিজিজ। এর উদাহরণ হিসেবে বলা যায় মাল্টপল স্ক্লোরোসিস বা আর্থ্রাইটিসের নাম।
মস্তিষ্ক ও ইমিউন সিস্টেমের বেশ কিছু মিলও আছে। দুটি সিস্টেমই উদ্দীপনায় সাড়া দেয়, দুজনই স্মৃতি জমা রাখে। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে দুটি সিস্টেমই জরুরি। অতীতে ভাবা হতো, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কাজ শুধু অনুজীব শনাক্তকরণ আর তা দূরীকরণ। কিন্তু ১৯৯০ এর দশকে ইমিউনোলজিস্ট পলি ম্যাটজিংগার প্রস্তাব করেন যে, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শুধু বাইরে থেকে আসা অনুজীব নির্মূল করে তা নয়, শরীরের নিজস্ব টিস্যুর ক্ষতি করতেও সক্ষম।
পরবর্তী গবেষণাগুলোতে এই মতবাদের সত্যতা মিলেছিল। পরবর্তী গবেষণাগুলোতে দেখা গেল, ক্ষতিগ্রস্থ টিস্যু থেকে কিছু রাসায়নিক পদার্থ ক্ষরিত হচ্ছে। ফলে বেশ কিছু ঘটনা ঘটছে যা ইমিউন সিস্টেমের সক্রিয়করণে ভূমিকা রাখছে। ফলে ইমিউন সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্থ টিস্যুর সংস্পর্শে আসে এবং টিস্যুগুলোর তিরোধানে ভূমিকা রাখে। অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, অবদমিত অর্জিত অনাক্রম্যতার কারণে টিউমারের বৃদ্ধি ত্বরাণ্বিত হচ্ছে।
![](https://assets.roar.media/assets/e66TsvGkcV7sMB7J_tumor.png)
এই গবেষণাগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে, অনুজীবের আক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষার চেয়েও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা অনেক বড় ও মহান কাজ করে থাকে। কিন্তু হলে কী হবে, বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার এই মহতী ভূমিকা বুঝি মস্তিষ্কের বেলায় সত্য নয়।
আমরা এবার আরেকটু অতীতে যাই। ১৯২০ এর দশকের দিকে, বিজ্ঞানীরা দেখলেন যে, CNS এর নিজস্ব রোগ প্রতিরোধক কোষ মাইক্রোগ্লিয়া সুস্থ মস্তিষ্কে বাস করে। যদিও প্রান্তীয় ইমিউন সেলের মস্তিষ্কে প্রবেশাধিকার নেই। ব্লাড ব্রেইন ব্যারিয়ার তাদের তাড়িয়ে দেয়। কিন্তু ১৯৪০ এর দশকে নোবেলজয়ী জীববিজ্ঞানী পিটার মেদাওয়ার দেখালেন যে, মস্তিষ্কে প্রতিস্থাপিত কোনো টিস্যু অন্যান্য অঙ্গের চেয়ে দেরিতে প্রত্যাখাত হয়। মেদাওয়ারের মতে, মস্তিষ্কের প্যারেনকাইমায় প্রান্তীয় ইমিউন সেলের দেখা মেলে। এবং তা প্যারালাইসিসের গতি রুদ্ধ করে।
এই পরীক্ষাগুলো থেকে বিজ্ঞানীদের ধারণা হয়েছিল, শুধুমাত্র মস্তিষ্কে রোগবালাই হলেই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সেখানে কাজ করার অনুমতি পায়। এই ঘটনাগুলোই মূলত স্বাভাবিক অবস্থায় মস্তিষ্ক ও ইমিউন সিস্টেমকে আলাদা করার জন্য দায়ী। পরবর্তীতে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মস্তিষ্কে ইমিউন সিস্টেমের বিচিত্র কাজকারবার ধরা পড়লে বিজ্ঞানীরা ঘটানগুলোকে পুর্ননিরীক্ষা করতে বাধ্য হন। সেরকমই কয়েকটা ঘটনার কথা এখন আমরা জানবো।
১৯৯০ এর দশকে বিজ্ঞানী মিশেল শওয়ার্টজ দেখান যে, ক্ষতিগ্রস্থ CNS থেকে ইমিউন কোষ সরিয়ে ফেললে নিউরন দ্রুত মরে যায়। সম্প্রতি Houston Meyhodist Hospital এর বিজ্ঞানী স্ট্যানলি অ্যাপলের নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব ইঁদুরে অর্জিত অনাক্রম্যতা দুর্বল, তারা দ্রুত আলঝেইমারে আক্রান্ত হয়। অন্য আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, অর্জিত অনাক্রম্যতাহীন ইঁদুরে PTSD দ্রুত বিকাশ লাভ করে। এই প্রমাণগুলো আমাদেরকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় যে, মস্তিষ্ক ও ইমিউন সিস্টেম পরস্পর সম্পর্কিত। সেটা রোগবালাই হলেই হোক আর স্বাভাবিক অবস্থাতেই হোক। তো এই ঘটনাগুলোর সাথে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ইন্দ্রিয় হওয়ার সম্পর্ক কী?
![](https://assets.roar.media/assets/DiUFI89SWkXxbu3c_jjjjj.jpg)
২০১৮ সালের আগস্ট মাসে প্রকাশিত সায়েন্টিফিক আমেরিকান ম্যাগাজিনের একটি নিবন্ধে স্নায়ুবিজ্ঞানী জোনাথন কিপনিস এই ঘটনাগুলো ব্যাখা করার জন্য একটি অনুসিদ্ধান্ত দাঁড় করান। তার মতে, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা মস্তিষ্ককে শুধু প্রতিরক্ষাই দেয় না, পুরো শরীরের ভেতরের ও বাইরের জীবাণুদের উপস্থিতি শনাক্ত করে সেই তথ্য মস্তিষ্ককে জানিয়ে দেয়। যখন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে মস্তিষ্কে অবস্থিত এবং মস্তিষ্কের একটি অংশ বলে ধরা হচ্ছে তখনই ইমিউন সিস্টেমকে বলা হচ্ছে ‘দ্য সেভেন্থ সেন্স’।
কিছু উদাহরণ দেয়া যাক। কোলাহলমুখর স্থানে আমরা ভালো শুনতে পাই না। আবার অসুস্থ হলে খাবারের একই খাবারের স্বাদ ভিন্ন লাগে। এগুলোর কারণ হচ্ছে ইন্দ্রিয়গুলো মস্তিষ্কের সাথে আন্তঃসম্পর্কিত। কোনো ইন্দ্রিয় ভুল সিগন্যাল দিলে মস্তিষ্ক সেই ভুল তথ্যকে প্রক্রিয়াজাত করে স্বাভাবিকের চেয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়। তেমনি রোগাক্রান্ত অবস্থায়
কোনো একটি জীবাণুর আক্রমণে শরীর আক্রান্ত হলে অসুস্থতার সময় ঘুম, ক্ষুধা ও অন্যান্য অভ্যাসে পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তনটা একেক মানুষে একেকরকম হয়।
একই রোগে শিশুদের ক্ষেত্রে এই পরিবর্তন একরকম, আবার বয়স্কদের ক্ষেত্রে অন্যরকম। এই ভিন্ন আচরণের কারণ হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার দেওয়া ভিন্ন ভিন্ন ইনপুট। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যদি বিগড়ে যায় বা দুর্বল হয়ে যায়, তাহলে ইনপুটও ভিন্নরকম হবে, আচরণও ভিন্নরকম হবে। জোনাথন সেজন্যই বলেছেন, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা অন্যান্য ইন্দ্রিয়ের মতো মস্তিষ্কের অংশ হিসেবে কাজ করে। এজন্যই একে তিনি বলেন ‘দ্য সেভেন্থ সেন্স’।
মস্তিষ্ক ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সম্পর্ক সংক্রান্ত গবেষণা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ঠিক কীভাবে এরা পরস্পর সম্পর্কিত তার পুরো স্বরুপ জানতে আরো বিস্তর গবেষণা প্রয়োজন। আগামী দিনে এই বিষয়ের গবেষণা হয়তো এই দুটি সিস্টেম সম্পর্কে আমাদের অনেক নতুন তথ্য দেবে যা নিউরোলজিক্যাল ও মানসিক রোগের চিকিৎসায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।