সভ্যতার একদম শুরু থেকে দাসপ্রথা প্রচলিত ছিল না। মানুষ যখন শিকারী জীবন ত্যাগ করে কৃষিসমাজে প্রবেশ করলো, তখন তারা নিজেদের কাজ নিজেরা করতো। এরপর সভ্যতা আরো একধাপ এগিয়ে যাবার পর গ্রামের ক্ষেত-খামার ফেলে মানুষ শহরে পাড়ি জমালো। শহর মানেই কল-কারখানা আর শিল্প-বাণিজ্য। মানুষের কাজের পরিমাণ দিন দিন বাড়তে থাকে। বর্ধমান কাজের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে মানুষ ক্রীতদাস প্রথার প্রচলন করে। পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন সভ্যতায় অর্থনৈতিক অবস্থা ও বর্ণভেদে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষদের ক্রীতদাস হিসেবে ব্যবহার করা শুরু হয়।
ক্রীতদাসদের কোনো মানবিক অধিকার ছিল না। মালিকের আদেশ অনুযায়ী যেকোনো কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকতো তারা। তাদের জন্ম-মৃত্যু নিয়ে মালিকদের কোনো মাথাব্যথাও ছিল না। সাদামাটা জীবনযাপন করেও ইতিহাসের পাতায় কোনো ক্রীতদাস স্থান করে নিতে পারে, তা ভাবাও যেন অকল্পনীয়। কিন্তু ক্রীতদাসরাও ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। মনে মনে বলতে পারেন, এ আর এমন কী! দুয়েকজন ক্রীতদাস ইতিহাসের পাতায় স্থান পেতেই পারে। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, ইতিহাসে বিখ্যাত ক্রীতদাসের সংখ্যা নেহাত কম নয়। বরং সংখ্যাটি একশ’র চেয়েও বেশি! সেই বিখ্যাত ক্রীতদাসদের মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য কয়েকজনকে নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন।
মার্গারেট গার্নার
কেন্টাকির ক্রীতদাস মার্গারেটের জীবন আর বাকি দশজন সাধারণ ক্রীতদাসের মতোই দুর্বিষহ ছিল। কাজের ফাঁকে ফাঁকে খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে মার্গারেট স্বপ্ন দেখতো মুক্ত জীবনের। স্বামী রবার্ট গার্নার আর চার সন্তান নিয়ে মার্গারেট তার মালিক এ. কে. গেইনসের বাড়িতে দাস হিসেবে ছিল। সবকিছুই চলছিল মালিকের কথামতোই। কিন্তু একদিন হঠাৎ করেই মার্গারেট মুক্তির চিন্তায় অস্থির হয়ে উঠে। সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। তার স্বামীও তার মতো মুক্তিকামী। তাই তারা দুজন মিলে সুযোগ খুঁজতে থাকে পালিয়ে যাওয়ার।
তৎকালীন দাসদের বিভিন্ন সময়ে মালিকদের ইচ্ছায় মুক্তি দেওয়া হতো। মুক্ত দাসদের ট্রেনে করে বর্ডারের ওপারে কানাডায় পাঠিয়ে দেয়া হতো। সেখানে তারা মুক্ত জীবনযাপন করতে পারতো। ১৮৫৬ সালের জানুয়ারিতে এমন একটি ট্রেনের সন্ধান পান রবার্ট গার্নার। মার্গারেটকে ট্রেনের খবর জানানোর পর তারা দুজনেই সিদ্ধান্ত নেন এই ট্রেনে করে পালিয়ে যাবেন। যেই ভাবা সেই কাজ! ২৭ জানুয়ারি ভোরবেলা দুজনে পালিয়ে যান কানাডার ট্রেনে চেপে।
কেন্টাকিকে পেছনে ফেলে দ্রুতগতিতে ট্রেন ছুটে চলছিলো কানাডার দিকে। তারা নিরাপদে কানাডায় প্রবেশ করেন। সেখানে জোসেফ কাইট নামক এক ভদ্রলোকের বাড়িতে আশ্রয় নেন তারা। কিন্তু ওদিকে গার্নারের মালিক গেইনস পুরো ঘটনা জেনে যায়। স্থানীয় কয়েকজন পুলিশ সদস্যের সহায়তায় কানাডা পৌঁছে যায় সে। মার্গারেট তার মালিকের উপস্থিতি টের পায়। কিন্তু একবার মুক্তির স্বাদ পাওয়া মার্গারেট ফের বন্দি হতে নারাজ। কিন্তু পুলিশের হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব নয়। মার্গারেট অস্থিরভাবে পায়চারি করছিলো তার কক্ষে। তার কোলে দু’বছরের শিশু নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে। সে এক পলক তাকিয়ে থাকলো ঘুমন্ত শিশুর দিকে।
হঠাৎ তার মাথায় এক অদ্ভুত খেয়াল চাপলো। টেবিলের উপর রাখা ধারালো ছুরিখানা হাতে নিলো সে। যে জীবনে মুক্তি নেই, সে জীবন রেখে কী লাভ? মার্গারেট ঠিক করলেন, সন্তান সহ এই পৃথিবী ত্যাগ করবেন। শক্ত হাতে ছুরি দিয়ে দু’বছরের শিশুর গলা কেটে ফেললেন তিনি। একটুও হাত কাঁপলো না তার। ঘুমন্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলো শিশুটি। এই দৃশ্য দেখে তার আরেক সন্তান ভয়ে চিৎকার করে উঠলো। ততক্ষণে পুলিশ মার্গারেটদের বাড়িতে পৌঁছে গেছে। মার্গারেটের হাতে একদম সময় নেই। তিনি দ্রুত ঘরের কোণায় লুকিয়ে থাকা সন্তানকে টেনে হিঁচড়ে বের করে আনলেন।
কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে ততক্ষণে পুলিশ দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। নিহত শিশু আর আহত একজন সহ মার্গারেটকে উদ্ধার করে তারা। কেন্টাকি পুলিশ মার্গারেটকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার করে। যুক্তরাষ্ট্রে দাসদের ইতিহাসে সবচেয়ে বিতর্কিত মামলা হিসেবে পরিচিত এটি। মামলা চলাকালীন মার্গারেট পুনরায় দাসত্বে ফিরে আসে। মালিক গেইনস মার্গারেটকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়। ফলে হত্যা মামলায় মার্গারেটের বিচার সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি।
স্বাধীনচেতা মার্গারেটের এই গল্পকে পুঁজি করে টনি মরিসন ‘Beloved‘ নামক কালজয়ী উপন্যাস রচনা করেন। এর মাধ্যমে মার্গারেটের নাম পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা মানুষকে কেমন অস্থিরচিত্ত করে তুলতে পারে, তারই এক ঐতিহাসিক উদাহরণ মার্গারেট।
আব্রাম পেট্রোভিচ হ্যানিবল
হ্যানিবলের জন্ম আফ্রিকার দেশ ইরিত্রিয়ায়। ১৬৯৭ সালে এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেন তিনি। তখন ইরিত্রিয়ায় শিশুদের অপহরণের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করে দেওয়ার মতো জঘন্য অপরাধ চক্র গড়ে উঠেছিলো। তেমন এক অপরাধ চক্রের হাতে ধরা পড়ে শিশু হ্যানিবল। বলিষ্ঠ গঠনের হ্যানিবলকে সুদূর তুরস্কে পাচার করে দেওয়া হয়। সেখানে এক ধনী পরিবারের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয় তাকে। শুরু হয় হ্যানিবলের দাসজীবন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই ফের অপহৃত হয় শিশু হ্যানিবল। এবার তাকে পাচার করে দেওয়া হয় সোজা মস্কোতে। হতভাগা হ্যানিবলকে মস্কোর রাজপ্রাসাদের দাস হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
কিন্তু পুরো ঘটনা তার কাছে শাপে বর হয়ে আসে। তাকে স্বয়ং জার ‘পিটার দ্য গ্রেট’র সেবায় নিয়োজিত করা হয়। জার হ্যানিবলের সাথে কথা বলে মুগ্ধ হন। হ্যানিবলকে বিভিন্ন দিক থেকে পরীক্ষা করেন তিনি। শিশু হ্যানিবলের কর্মকাণ্ডে তিনি অভিভূত হয়ে পড়েন। কারণ, হ্যানিবল ছিল সবার চেয়ে একটু আলাদা আর প্রচণ্ড মেধাবী। তাকে স্কুলে ভর্তি করে দেন জার। সেখানে তার গণিত প্রতিভার বিকাশ ঘটে। জার তার প্রতি খুশি হয়ে তার নতুন নামকরণ করেন। হ্যানিবল হয়ে উঠেন ‘আব্রাম পেট্রোভিচ হ্যানিবল’। হ্যানিবলকে অনেক ক্ষেত্রে ‘গ্যানিবল‘ নামেও ডাকা হয়।
হ্যানিবল সুদক্ষ প্রকৌশলী হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলেন। ক্রনস্টাড নগরীর বিভিন্ন নদীবন্দরের আধুনিক নকশা তৈরি করেন তিনি, যা রাশিয়ার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে। পিটারের নির্দেশে তিনি ফ্রান্সে পাড়ি জমান। সেখানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পর সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি রুশ সামরিক বাহিনীতে ভর্তি হন। পিটার দ্য গ্রেটের মৃত্যুর পর নতুন জার তাকে সেনাবাহিনীতে পদোন্নতি প্রদান করেন। নিজ গুণে হ্যানিবল মেজর জেনারেল পদে উত্তীর্ণ হন। রাশিয়ার হয়ে বিভিন্ন যুদ্ধে তিনি প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করেন।
নিপীড়িত এক আফ্রিকান ক্রীতদাস থেকে হ্যানিবল হয়ে যান রুশ সেনাবাহিনীর জেনারেল। তবে ইতিহাস হ্যানিবলকে আরো একটি কারণে মনে রাখবে। রুশ সাহিত্যের দিকপাল এবং মহান কবি আলেকজান্ডার পুশকিন ছিলেন আব্রাম পেট্রোভিচ হ্যানিবলের বংশধর। হ্যানিবলের এক নাতনীর গর্ভে জন্ম নেন এই সাহিত্যিক।
হযরত বিলাল (রা)
হযরত বিলাল (রা) ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাহাবী। সুদূর ইথিওপিয়ায় (তৎকালীন আবিসিনিয়া) জন্মগ্রহণ করা বিলালকে ‘বিলাল-আল-হাবশি’ নামে ডাকা হতো। লম্বাটে গড়নের বিলাল (রা)-র গায়ের রঙ ছিল কালো। তিনি ‘সাইয়িদ-আল-মুয়াজ্জিন’ বা ‘মুয়াজ্জিনদের নেতা’ উপাধি লাভ করেন।
আরবের বুকে যখন হযরত মুহাম্মদ (সা) ইসলামের বাণী প্রচার শুরু করেন, তখন হযরত বিলাল (রা) ক্রীতদাসদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন। কিন্তু বিলাল (রা) এর মালিক উমাইয়াহ এই ঘটনা মেনে নিতে পারেননি। তিনি বিলালকে কঠিন শাস্তি প্রদানের হুমকি দেন। তারপরও বিলাল ইসলাম ত্যাগ না করায়, তিনি তাকে বন্দি করেন। তারপর তাকে উত্তপ্ত মরুতে উপুড় করে বেঁধে রাখেন।
তারপরও বিলাল (রা) আত্মসমর্পণ না করলে তিনি তার বুকের উপর উত্তপ্ত পাথর খণ্ড বেঁধে দেন। কিন্তু বিলাল (রা) এক মুহূর্তের জন্যও আত্মসমর্পণ করেননি। পরবর্তীতে সাহাবী হযরত আবু বকর (রা) বিলালকে ক্রয় করেন এবং মুক্ত করে দেন।
মুক্ত বিলাল হযরত মুহাম্মদ (সা) এর সাহচর্যে ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাহাবী হয়ে উঠেন। তিনি ছিলেন সুমধুর কণ্ঠস্বরের অধিকারী। মুসলিমদের প্রার্থনার ডাক হিসেবে আজানের নির্দেশ জারি হলে, বিলাল (রা) সর্বপ্রথম আজান দেওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন।
গল্পকার ঈশপ
ছোটবেলায় ঈশপের গল্প শোনেনি, এমন মানুষ পাওয়া মুশকিল। শিয়াল, কচ্ছপ, ভালুক, সারস, সোয়ালো পাখিদের নিয়ে ছোট ছোট গল্প ফেঁদে জীবনদর্শন শিক্ষার মাধ্যমে ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন ঈশপ। গল্পের শেষে ছোট উপদেশ বাক্যের উপলব্ধির মাঝে বেঁচে থাকা মানুষ ঈশপ তার ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন একজন ক্রীতদাস।
তার জন্মস্থান নিয়ে ইতিহাসবিদদের মাঝে মতভেদ বিদ্যমান। তবে এতটুকু নিশ্চিত করে বলা যায় যে, প্রাচীন গ্রিস এবং তুরস্কের কোনো এক অঞ্চলে তার জন্ম। জন্মের সাল আনুমানিক ৬২০ খ্রিস্টপূর্ব। অনেকের মতে, তিনি জন্মান্ধ ছিলেন। গল্প বলতে ভালোবাসা এই ক্রীতদাসের জীবন নিয়েও অনেক গল্প প্রচলিত আছে। মালিক লোডম্যানের অধীনে কাজ করার সময় তিনি বেশ হাস্যরসাত্মক গল্পে আসর মাতিয়ে রাখতে পারতেন। তার এই গুণে মুগ্ধ হয়ে যান লোডম্যান। তিনি উপহারস্বরূপ ঈশপকে মুক্তি প্রদান করেন।
মুক্ত ঈশপ গ্রাম থেকে গ্রাম, শহর থেকে শহর ঘুরে বেড়াতেন আর গল্প শোনাতেন। তার গল্পে মুগ্ধ হতো শ্রোতারা। চারদিকে নাম ছড়িয়ে পড়ে ঈশপের। তার গুণে মুগ্ধ হয়ে লাইডিয়া রাজ্যের রাজা ক্রোসাস ঈশপকে তার সভায় মর্যাদাপূর্ণ পদে নিযুক্ত করেন। কিন্তু ঈশপের সুখের জীবন দীর্ঘস্থায়ী হলো না। রাজ্যের অন্যান্য সভাসদরা ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে ঈশপকে চুরির দায়ে অভিযুক্ত করে।
একদল ইতিহাসবিদদের মতে, ঈশপকে চুরির দায়ে পাহাড় থেকে নিক্ষেপ করে হত্যা করা হয়। এরই মাধ্যমে জীবনাবসান ঘটে পৃথিবীর অন্যতম সেরা গল্পকারের। দুঃখের বিষয়, ঈশপের গল্পগুলো কোথাও লিখিতরূপে সংকলিত ছিল না। তাই কালক্রমে অনেক গল্পই ঈশপের সাথে হারিয়ে গেছে কালের অতল গহ্বরে।
স্পার্টাকাস
স্পার্টাকাস স্রেফ একজন ক্রীতদাসের নাম নয়, এটি একটি অনুপ্রেরণার নাম। সেসময় শক্তিশালী রোমানদের বিরুদ্ধে বড় বড় সাম্রাজ্যের সৈনিকরাও লড়াই করতে সাহস পেতো না। সেখানে স্পার্টাকাস রোমের দাসদের একত্রিত করে রোমানদের ভিত কাঁপিয়ে দেন ‘দাস বিপ্লব’ এর মাধ্যমে।
স্পার্টাকাসকে রোমানরা আটক করে, শক্তিশালী গড়নের হওয়ায় তাকে চড়া মূল্যে দাস হিসেবে বিক্রয় করে দেওয়া হয়। সেখান থেকে ভাগ্যক্রমে গ্ল্যাডিয়েটর স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হয় তাকে। পরিশ্রমলদ্ধ গ্ল্যাডিয়েটরদের জীবনে অল্পেই হাঁপিয়ে উঠলেন তিনি। একদিন সুযোগ বুঝে সহকর্মী গ্ল্যাডিয়েটরদের নিয়ে বিদ্রোহ করে বসেন তিনি। তারা সবাই স্কুল থেকে পালিয়ে মাউন্ট ভিসুভিয়াসে গিয়ে আত্মগোপন করেন। বিভিন্ন অঞ্চলে দাসরা স্পার্টাকাসের বিদ্রোহের কথা জানতে পারে। দাসদের বড় একটি অংশ এতে অনুপ্রাণিত হয়ে পালিয়ে স্পার্টাকাসের সাথে যোগ দেয়।
যথেষ্ট লোকবল জড়ো হলে স্পার্টাকাস কয়েক দফায় রোমানদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হন এবং জয়লাভ করেন। স্পার্টাকাস দাসদের নিয়ে রোম থেকে পালিয়ে অন্যদ্বীপে গিয়ে নতুনভাবে জীবন শুরু করার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন। অন্য কোনো উপায় না দেখে দাসরা রোমানদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার শপথ নেয়। কিন্তু রোমান এবং পোম্পেই এর সম্মিলিত বাহিনীর হাতে দাসদের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে।
যুদ্ধে আহত অবস্থায় বন্দি স্পার্টাকাস সহ প্রায় ছয় হাজার দাসকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়। স্পার্টাকাসের বীরত্বগাঁথা নিয়ে বিভিন্ন সাহিত্যিকরা উপন্যাস রচনা করেছেন। হলিউডে ডাল্টন ট্রাম্বো’র চিত্রনাট্য এবং স্ট্যানলি কুব্রিকের পরিচালনায় ‘স্পার্টাকাস’ নামক একটি কালজয়ী সিনেমা তৈরি হয়।
এছাড়াও আরও অনেক ক্রীতদাসই বিভিন্ন সময়ে তাদের কীর্তির মাধ্যমে ইতিহাসে নিজেদের নাম লিখিয়েছেন। দুর্বল দাস হয়ে প্রতিকূল পরিবেশে অন্যায়ের প্রতিবাদ এবং দৃষ্টান্তমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত এই দাসদের জীবন থেকে পাওয়া অনুপ্রেরণা আমাদের সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক।
ফিচার ইমেজ: Pinterest