Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

About

Brand Partnerships

Content Policy

Contact

English

EN

Sinhala

SIN

Tamil

TA

Bangla

BAN

ইস্টার্ন সলোমন: জাপান অধিকৃত প্যাসিফিক পুনরুদ্ধারের প্রথম ধাপ | পর্ব-১

Abdullah Al Masud ইতিহাস এপ্রিল 23, 2022
article

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দুই দেশের যুদ্ধজাহাজ পরস্পরের দৃষ্টিসীমায় না এসেই যুদ্ধ করার যে নতুন রেওয়াজ শুরু হয়েছিল, তা ব্যাটল অব ইস্টার্ন সলোমনে এসে নতুন মাত্রা পায়। এই লড়াইয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যতের নৌযুদ্ধগুলো কেমন হবে সেটি সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা পাওয়া যায়। প্যাসিফিক অঞ্চলের নৌযুদ্ধগুলো নিয়ে ইতিপূর্বে রোর বাংলায় প্রকাশিত ধারাবাহিক সিরিজে কোরাল সাগর এবং মিডওয়ে যুদ্ধের ঘটনা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ঐ দুটি যুদ্ধের পর ইস্টার্ন সলোমন যুদ্ধটি তৃতীয় বৃহত্তম, যেখানে দুই দেশের এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। জাপানি সোর্সগুলোতে একে Battle of Stewart Islands এবং Second Battle of the Solomon Sea নামেও আখ্যায়িত করা হয়। তাই বরাবরের মতো, যুদ্ধের বর্ণনায় উভয় দেশের সোর্সকে প্রাধান্য দিলেও পাঠকের সুবিধার্থে স্থান-কালের বর্ণনার ক্ষেত্রে মার্কিন সোর্সকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে এই লেখায়। 

স্যাভো আইল্যান্ড যুদ্ধের আর্টিকেলে বলা হয়েছিল যে, মিত্রবাহিনী জাপান অধিকৃত প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলোকে এক এক করে মুক্ত করার সমন্বিত পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামে। এজন্য সলোমন আইল্যান্ড ক্যাম্পেইন ও গুয়াডালক্যানেল ক্যাম্পেইন নামে কাছাকাছি সময়ে দুটি মেজর অফেন্সিভ অপারেশন শুরু করে। দ্বিতীয়টির সাথে নামে নামে মিল থাকলেও ইস্টার্ন সলোমন যুদ্ধটি আসলে গুয়াডালক্যানেল ক্যাম্পেইনের অন্তর্ভুক্ত। ছয় মাসব্যাপী যুদ্ধের এই পিরিয়ডে তিনটি স্থলযুদ্ধ ছাড়াও মোট সাতটি বড় ধরনের নৌযুদ্ধ হয়েছিল। এছাড়া এমন কোনো দিন বাকি ছিল না যে যেদিন কোনো আকাশযুদ্ধ হয়নি। সুতরাং বুঝতেই পারছেন কতটা ভয়াবহ ছিল গুয়াডালক্যানেল ক্যাম্পেইন। আজকের লেখার আলোচ্য ইস্টার্ন সলোমন যুদ্ধটি ১৯৪২ সালের ২৪-২৫ আগস্ট সংগঠিত হয়।

ইস্টার্ন সলোমন যুদ্ধের ম্যাপ; Image Source : history.navy.mil

শক্তিমত্তা

চলুন দেখে নেয়া যাক কার শক্তিমত্তা কেমন ছিল। মার্কিনীদের নেতৃত্বে ছিলেন অ্যাডমিরাল ফ্র্যাংক জ্যাক ফ্লেচার এবং থমাস কিনকিড। তাদের বাহিনীতে ছিল দুটি ফ্লিট ক্যারিয়ার এবং ১৭৬টি এয়ারক্রাফট। এদের নিরাপত্তার জন্য একটি ব্যাটলশিপ, তিনটি হেভি ক্রুজার, একটি লাইট ক্রুজার, এগারোটি ডেস্ট্রয়ার সাথে ছিল।

জাপানীদের নেতৃত্বে ছিলেন অ্যাডমিরাল চুইচি নাগুমো, নাবুটাকে কন্ডো, গুনিচি মিকাওয়া। তাদের ফ্লিটে ছিল দুটি ফ্লিট ক্যারিয়ার, একটি লাইট ক্যারিয়ার, এবং একটি সি-প্লেন টেন্ডার। অর্থাৎ ছোট-বড় সব মিলিয়ে চারটি বিমানবাহী রণতরী জাপানীদের নৌবহরে ছিল। কিন্তু সব মিলিয়ে বিমানের সংখ্যা ছিল ১৭১-১৭৭টি। আগের দুটি যুদ্ধে তাদের কেমন ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছিল তা বিমান সংখ্যা দেখেই অনুমান করা যায়। এই নৌবহরকে নিরাপত্তা দিতে সাথে তিনটি ব্যাটলশিপ, তেরোটি হেভি ক্রুজার, তিনটি লাইট ক্রুজার, ত্রিশটি ডেস্ট্রয়ার শ্রেণীর যুদ্ধজাহাজ সঙ্গে ছিল। তবে জাপানীদের মূল টার্গেট ছিল গুয়াডালক্যানেলে সেনা নামানো। এজন্য সাথে চারটি পেট্রোল বোট ও তিনটি ছোট ট্রান্সপোর্ট জাহাজ ছিল। উল্লেখ্য, এই যুদ্ধটি ছিল নাগুমো এবং ফ্লেচারের মধ্যকার দ্বিতীয় লড়াই। আগেরবার মিডওয়ে যুদ্ধে তারা লড়াই করেছিলেন, যেখানে কৌশলগত পরাজয় হয়েছিল নাগুমোর।

এই যুদ্ধ ছিল অ্যাডমিরাল ফ্লেচার (ডানে) এবং অ্যাডমিরাল নাগুমোর (বামে) মধ্যকার দ্বিতীয় লড়াই; Image Source : warhistoryonline.com

যুদ্ধের কারণ

১৯৪২ সালের ৭ আগস্ট ইউএস মেরিন সেনারা গুয়াডালক্যানাল, তুলাগি এবং ফ্লোরিডা দ্বীপে অবতরণ করে। এসব দ্বীপে থাকা জাপানী বিমানঘাঁটিগুলো অস্ট্রেলিয়া থেকে আগত মিত্রবাহিনীর সাপ্লাই রুটের উপর হামলার উদ্দেশ্যে বানানো হয়েছিল। সেগুলো দখলে নিতে এই অভিযান শুরু হয়, যা সামরিক ভাষায় গুয়াডালক্যানাল ক্যাম্পেইন নামে পরিচিত। এই ক্যাম্পেইন শুরুর মাধ্যমে প্যাসিফিকে জাপানীদের অন্যতম শক্তিশালী ঘাঁটি ‘রাবাউল’ দ্বীপকে ঘিরে ফেলা সম্ভব হয় যা আসন্ন নিউ গুয়েনা ক্যাম্পেইনে মিত্রবাহিনীকে সাপোর্ট দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মার্কিন এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারের সাপোর্ট পেয়ে প্রায় বাধাহীনভাবে অবতরণ করে মেরিন সেনারা। অতঃপর ক্যারিয়ার টাস্কফোর্স পার্ল হারবারে ফেরার পথ ধরার পর প্রথম রাতেই ঘটে বিপত্তি। সেনা অবতরণের পর প্রয়োজনীয় রসদ জাহাজ থেকে আনলোড করার আগেই ৮-৯ আগস্ট রাতে স্যাভো আইল্যান্ড যুদ্ধে ভয়াবহ জাপানি এম্বুশের সম্মুখীন হয় মিত্রবাহিনী। অ্যাডমিরাল গুনিচি মিকাওয়া রাতের অন্ধকারে শত্রু যুদ্ধজাহাজগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেন।

কিন্তু পরদিন সকালেই এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপের পাল্টা হামলার ভয়ে সাপ্লাই জাহাজগুলোকে ধ্বংস না করেই পিছু হটেন। যার ফলে কয়েক দিনের মাথায় জাপানিরা আবারো হামলা চালাতে বাধ্য হয়। ততদিনে মার্কিনীরা গুয়াডালক্যানাল দ্বীপের পরিত্যাক্ত বিমানঘাঁটি সংস্কার করে বিমান উড্ডয়ন-অবতরণের ব্যবস্থা করে ফেলেছে। হেন্ডারসন ফিল্ড নামে পরিচিত এই ঘাঁটি পুরো গুয়াডালক্যানাল যুদ্ধের মূল কেন্দ্র ছিল। জাপানিরা বার বার এই ঘাঁটিতে হামলা করে ধ্বংস/পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করে। মার্কিনীরাও এই ঘাঁটি থেকে জাপানিদের উপর একাধিক সফল মিশন পরিচালনা করে। এর রেডিও কলসাইন ছিল ক্যাঁকটাস। তবে সুবিধার চেয়ে অসুবিধা বেশি থাকায় এই ঘাঁটিকে ‘ক্যাঁকটাস ফোর্স’ নাম দিয়েছিল মিত্রবাহিনী।

আকাশ থেকে তোলা ছবিতে হেন্ডারসন ফিল্ডের অতীত-বর্তমান এবং সেখানকার মার্কিন বিমানবহর; Image Source : National Archives and Records Administration

জাপানি অপারেশন প্ল্যান

জাপানি নেভাল ফোর্সের প্রধান অ্যাডমিরাল ইসোরোকু ইয়ামামোতো গুয়াডালক্যানেল পুনর্দখল করতে ‘Operation Ka’ এর পরিকল্পনা করেন। পার্ল হারবার আক্রমণ এবং মিডওয়ে যুদ্ধে তিনি যেই মার্কিন এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারগুলো ধ্বংসের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল, সেগুলোই এখন পূর্ব সলোমন সাগর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এবার এদেরকে ধ্বংসের জন্য বিশাল এক নৌবহর পাঠান। তারা পৌঁছার আগেই ১৬ আগস্ট, ১৯৪২ সালে রাবাউল থেকে ১,৪১১ জন সৈনিকের একটি নৌবাহিনী গুয়াডালক্যানালের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এদেরকে পাহারা দিচ্ছিল রিয়ার অ্যাডমিরাল রাইজু তানাকার নৌবহর। তার বহরে ছিল একটি লাইট ক্রুজার, আটটি ডেস্ট্রয়ার ও চারটি পেট্রোল বোট। কিন্তু এগুলো এই অপারেশনের জন্য যথেষ্ট ছিল না। এজন্য ইয়ামামোতো অ্যাডমিরাল মিকাওয়াকে চারটি হেভি ক্রুজারসহ সহায়ক বাহিনী হিসেবে তানাকার সাহায্যে পাঠান। উল্লেখ্য, পেট্রোল বোটগুলো ব্যতীত তাদের পৃথক কোনো অ্যাম্ফিবিয়াস ল্যান্ডিং শিপ ছিল না, যা পরবর্তীতে গুরুতর ভুল হিসেবে দেখা দেয়।

অ্যাডমিরাল তানাকার প্ল্যান ছিল ২৪ তারিখ সেনাদের অবতরণ করানো হবে। এজন্য মিকাওয়া ২৩ তারিখ রাতে তার উভচর বিমানগুলো ব্যবহার করে হেন্ডারসন ফিল্ডে একদফা বিমান হামলা চালিয়েই ফুল স্পিডে উত্তর দিকে পিছু হটেন। ইয়ামামোতো যে তার নৌবহরকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করছে, সেটা ভালো করে জানতেন তিনি। মার্কিন ক্যারিয়ার টাস্কফোর্স এবার তাকে খুঁজতে আসবে। তখন হামলা চালাবে অ্যাডমিরাল নাগুমোর এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার।

যথারীতি এবারও ইয়ামামোতোর প্ল্যান আপাতদৃষ্টিতে খুবই নিখুঁত হলেও বাস্তবে তা কাজে আসেনি। পরদিন সকালে মার্কিন গোয়েন্দা বিমানগুলো মিকাওয়ার বহরকে খুঁজে না পাওয়ায় অ্যাডমিরাল ফ্লেচার আর অদৃশ্য শত্রুর পিছু ধাওয়া করেননি। তিনি গুয়াডালক্যানালে ১৯-২০ আগস্টের যুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা জাপানি সেনাদের উপর বিমান হামলা চালাতে ব্যস্ত থাকেন। একইসাথে আশেপাশের দ্বীপগুলো থেকে আসা শত্রু বিমানের হামলা থেকে মেরিন সেনাদের রক্ষা করতে দ্বীপের চারপাশে কমব্যাট এয়ার পেট্রোল মিশন চালান।

এদিকে ২১ তারিখ তুর্ক আইল্যান্ড থেকে মূল জাপানি নৌবহর রওনা দিয়েছিল। মিকাওয়ার উপর হামলা না হওয়ার খবর পেয়ে ইয়ামামোতোর প্ল্যান একটু নতুন করে সাজান অ্যাডমিরাল চুইচি নাগুমো। মিডওয়ে যুদ্ধের কৌশলের মতো জাপানি নৌবহর তিনটি ভাগে বিভক্ত। নাগুমোর ‘মেইন ফোর্স’ এ রয়েছে ফ্লিট এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার ‘শকাকু’ এবং ‘যুইকাকু’ এবং তুলনামূলক ছোট (লাইট) ক্যারিয়ার র‍্যুজু। এদের সাহায্যে ছিল একটি হেভি ক্রুজার এবং আটটি ডেস্ট্রয়ার। রিয়ার অ্যাডমিরাল হিরোয়েকি আবের নেতৃত্বাধীন ‘ভ্যানগার্ড ফোর্স’ হিসেবে থাকবে দুটি ব্যাটলশিপ, তিনটি হেভি ক্রুজার, একটি লাইট ক্রুজার, এবং ছয়টি ডেস্ট্রয়ার। নামে ভ্যানগার্ড হলে এরা আসলে থাকবে নাগুমোর মূল বাহিনীর একটু সামনে। তার আরেকটু সামনে থাকবে ভাইস অ্যাডমিরাল নাবুটাকে কন্ডোর নেতৃত্বাধীন ‘অ্যাডভান্স ফোর্স’। এতে ছিল একটি ব্যাটলশিপ, পাঁচটি হেভি ক্রুজার, একটি লাইট ক্রুজার, আটটি ডেস্ট্রয়ার ও একটি সি-প্লেন টেন্ডার শিপ। এদের অপারেশনাল সাপোর্ট দিতে একশোর বেশি ল্যান্ডবেজড বোম্বার ও রিকনসিস বিমান আশেপাশের জাপানি ঘাঁটিগুলোতে স্ট্যান্ডবাই ছিল। বিরাট নৌবহরকে এভাবে ভাগ করার কারণ হচ্ছে, কারো উপরেই আক্রমণ হলেই মার্কিন নৌবহরের অবস্থান অনুমান করা যাবে। সেক্ষেত্রে সমস্ত শক্তি দিয়ে একবারে হামলা করবে জাপানি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার।

জাপানি যুদ্ধজাহাজ বহর ও এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার; Image Source : ullstein bild via Getty Images)

২৩ তারিখ সকাল দশটায় অ্যাডমিরাল তানাকার নৌবহরকে শনাক্ত করে একটি পিবিওয়াই ক্যাটালিনা উভচর বিমান। বিমানটি দেখতে পান অ্যাডমিরাল নিজেও। আক্রমণ আসন্ন ভেবে তিনি গুয়াডালক্যানাল এর উত্তরে মিকাওয়ার পথ ধরে পালিয়ে যান। এর কয়েক ঘণ্টা পর অ্যাডমিরাল ফ্লেচার আক্রমণ করার জন্য বিমানবহর পাঠিয়ে বোকা বনে যান। তানাকার বহর যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। যেহেতু সেনাবহনকারী ল্যান্ডিং ফোর্স দেখা গেছে, তার মানে মূল জাপানি নৌবহর কয়েকশো কিলোমিটারের মধ্যেই আছে। তার কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল যে ২৩-২৬ তারিখের মধ্যে একটি বড় ধরনের হামলার সম্ভাবনা রয়েছে। তানাকার নৌবহর সেই সম্ভাবনাকে কিছুটা সত্য প্রমাণ করেছে। এদিকে জ্বালানী ফুরিয়ে আসছে, যেকোনো সময় যুদ্ধ শুরু হবে। অ্যাডমিরাল ফ্লেচার তাই তার বহরের তিন ভাগের একভাগ জাহাজ দ্রুত রিফুয়েলিং করতে আরো দক্ষিণের অ্যাফেট আইল্যান্ডের নৌঘাঁটিতে পাঠান। এই ভাগে ছিল এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার ইউএসএস ওয়াস্প, দুটি হেভি ক্রুজার, একটি লাইট ক্রুজার এবং সাতটি ডেস্ট্রয়ার শ্রেণীর যুদ্ধজাহাজ। এসব জাহাজগুলো শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে অংশ নিতে পারেনি। গুয়াডালক্যানালের দক্ষিণে রয়ে গেছে শুধু ইউএসএস এন্টারপ্রাইজ ও সারাটোগা নামের দুটো এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার, এবং তাদের এসকর্ট যুদ্ধজাহাজ। ২৩ আগস্ট সারাদিন ধরে দুই পক্ষ একাধিক গোয়েন্দা বিমান পাঠিয়ে পরস্পরের অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।

২৪ তারিখ রাত পৌনে দুটোর দিকে অ্যাডমিরাল নাগুমো নতুন টোপ ফেলেন। সকাল বেলা রিয়ার অ্যাডমিরাল চুইচি হারাকে তার লাইট ক্যারিয়ার র‍্যুজু দিয়ে হেন্ডারসন ফিল্ডে হামলা চালাতে নির্দেশ দেন। একইসাথে তানাকাকে আবারো ফিরে আসতে বলেন। নাগুমোর উদ্দেশ্য ছিল হেন্ডারসন ফিল্ডের মার্কিন বিমানবহরের উড্ডয়ন সক্ষমতা ধ্বংস করে দেয়া এবং ফ্লেচারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। র‍্যুজু ছোট আকারের বিমানবাহী রণতরী হলেও একে ধ্বংস করার সুযোগ মার্কিনীরা হাতছাড়া করবে না। ওদিকে অ্যাডমিরাল ফ্লেচার সকাল থেকে এক ডজন রিকনসিস বিমান আকাশে উড়িয়েছেন। সকাল সাড়ে নয়টায় অ্যাডমিরাল চুইচি হারা এর লাইট ক্যারিয়ার বহর শনাক্ত হয়। কিন্তু নাগুমোর মেইন ফোর্সের দেখা পাওয়ার আশায় তিনি আক্রমণ শুরু করেননি। দুপুর নাগাদ সবগুলো বিমানের গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে জাপানি ভ্যানগার্ড ও অ্যাডভান্স ফোর্সের সমস্ত জাহাজ তো বটেই, অ্যাডমিরাল মিকাওয়া ও তানাকার বর্তমান লোকেশন জানা গেছে। শুধু নাগুমোর মেইন ফোর্সকে শনাক্ত করতে পারেনি স্কাউট বিমানগুলো। সবগুলো বহরের যুদ্ধজাহাজগুলোর গতিবিধি দেখে বোঝা যাচ্ছে- গুয়াডালক্যানেল দ্বীপ আজ রাতে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে এগিয়ে জাপানিরা।

ইউএসএস ওয়াস্প থেকে তোলা ছবিতে সারাটোগা এবং এন্টারপ্রাইজকে দেখা যাচ্ছে; Image Source : US Navy

কিন্তু ফ্লেচারের কেন যেন সন্দেহ হলো। এত বড় একটি ইনভেশন অপারেশন কাভার দিতে ইয়ামামোতো একটি মাত্র এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার পাঠাবেন- এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এজন্য তিনি দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করে পৌনে দুটোর দিকে ইউএসএস সারাটোগার অর্ধেক বিমান (৩৮টি) র‍্যুজুকে আক্রমণ করতে পাঠান। বাকি বিমানসহ ইউএসএস এন্টারপ্রাইজের পুরো এয়ারগ্রুপকে সতর্কতাবশত রিজার্ভ রাখেন। র‍্যুজুর দূরত্ব একটু বেশি হওয়ায় টর্পেডো এবং ডাইভ বোম্বারের নিরাপত্তার জন্য এফ-৪ ওয়াইল্ডক্যাট ফাইটারগুলোকে পাঠানো হলো না। এদের বদলে হেন্ডারসন ফিল্ডের ফাইটার বিমানগুলো ওদের নিরাপত্তা দেবে। জাহাজে রয়ে যাওয়া ওয়াইল্ডক্যাট যুদ্ধবিমানগুলোকে নিজেদের দুই এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারের চারপাশে পালাক্রমে কমব্যাট এয়ার পেট্রোলিং এর কাজে লাগানো হলো। অ্যাডমিরাল ফ্লেচারের শুধুমাত্র এই একটি সিদ্ধান্তের কারণে যুদ্ধের আবহাওয়া কীভাবে মার্কিনীদের অনুকূলে চলে আসে, তা বলা হবে পরের পর্বে।   

[শেষ পর্ব পড়তে ক্লিক করুন এখানে]

This is a Bangla article about the battle of the Eastern Solomons.

Reference :

1) Book : The Guadalcanal Campaign by Major John L. Zimmerman

2) Battle of Guadalcanal

3) The Battles of the Eastern Solomons

4) USS Enterprise (CV6) War History

5) Battles of the Eastern Solomons

6) Fast Facts About The Battle of Guadalcanal

 

Related Articles

  • তুর্কি গোয়েন্দা সংস্থা এবং ১৯৯৫ সালের ব্যর্থ আজারবাইজানি অভ্যুত্থান (পর্ব–২)

    article
    ইতিহাস
    জুলাই 28, 2021
  • মিখিয়েল ডি রুইটার (পর্ব-১৬): শনভেল্ডের সংঘর্ষ

    article
    ইতিহাস
    এপ্রিল 2, 2022
  • নেপোলিয়নের অমীমাংসিত মৃত্যুরহস্য

    article
    ইতিহাস
    মে 23, 2017
  • বিলুপ্ত কয়েকটি কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা

    article
    ইতিহাস
    মে 2, 2018
  • ক্যাফে রেসার: এক যুগান্তকারী বাইক বিপ্লবের সূচনা

    article
    ইতিহাস
    ডিসেম্বর 14, 2019
  • সালেম উইচ ট্রায়াল: কথিত ডাইনিদের বিরুদ্ধে কুখ্যাত বিচার

    article
    ইতিহাস
    অক্টোবর 31, 2017
  • বশির আহমেদ: মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিদের প্রথম আত্মসমর্পণের নায়ক

    article
    ইতিহাস
    নভেম্বর 15, 2019
  • শেফার্ড বুশ’স মার্ডার: যে ঘটনা কাঁপিয়ে দিয়েছিলো পুরো ইংল্যান্ড

    article
    ইতিহাস
    জুলাই 17, 2019
Roar logo

Roar Media is a global storytelling platform.

  • About
  • Brand Partnerships
  • Content Policy
  • Contact

Copyright © 2025 Roar Media. A Roar Global Company.