১
১৫৩৯ সালে চৌসায় আর ১৫৪০ সালে কনৌজের যুদ্ধে শের শাহ পরাজিত করলেন দ্বিতীয় মুঘল সম্রাট নাসিরউদ্দিন মুহাম্মদ হুমায়ুনকে। গুরুত্বপূর্ণ এই দুটি যুদ্ধে পরাজয়ের ফলে সম্রাট হুমায়ুন হিন্দুস্তানের উপর নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লাহোরের দিকে পিছু হটলেন। সাময়িক সময়ের জন্য হিন্দুস্তানের ইতিহাস থেকে মুঘলদের বিদায় ঘটলো। একই সাথে উত্থান ঘটলো নতুন শক্তি সুরি সাম্রাজ্যের।
সুরি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা শের শাহ সুরি ১৫৪৫ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত দুর্দান্ত দাপটের সাথে হিন্দুস্তান শাসন করেন। এই সময়ের মাঝে একে একে তিনি জয় করে নেন মালব, রাইসিন, সিন্ধু, মুলতান আর রাজস্থানসহ হিন্দুস্তানের বিস্তীর্ন অঞ্চল। কাশ্মীর, গুজরাট আর আসাম ছাড়া হিন্দুস্তানের উত্তরাঞ্চলের প্রায় পুরোটাই শের শাহের পদানত হয়েছিল। ১৫৪৪ সালে শের শাহ তার জীবনের শেষ অভিযানটি পরিচালনা করেন বুন্দেলখণ্ডের রাজপুতদের বিরুদ্ধে। এ সময় শের শাহ মূলত রাজপুতদের কালিঞ্জর দুর্গটি অবরোধ করেছিলেন।
কালিঞ্জর দুর্গটি ও এর দেয়াল বেশ শক্তিশালী হওয়ায় অবরোধের প্রথম কয়েক মাস তেমন সাফল্য পাওয়া যায়নি। বিরক্ত হয়ে সম্রাট দুর্গের দেয়াল উড়িয়ে দিতে মাইন ব্যবহারের নির্দেশ দিলেন। মাইন ব্যবহার করে দেয়াল ভাঙার কাজও শুরু হলো। সম্রাট নিজে ব্যক্তিগতভাবে সব পর্যবেক্ষণ করছিলেন। মাইন চার্জের একপর্যায়ে মাইনের বিস্ফোরণে একটি গোলার স্তুপে আগুন ধরে গেল। হিন্দুস্তানের মহান এ সম্রাটের দুর্ভাগ্য, তিনি সেসময় বিস্ফোরণস্থলেই অবস্থান করছিলেন। এ বিস্ফোরণেই আহত হয়ে ১৫৪৫ সালের ২২ মে মৃত্যুবরণ করলেন হিন্দুস্তানের ইতিহাসের অন্যতম সফল এই সম্রাট শের শাহ সুরি।
শের শাহের মৃত্যুর ৫ দিন পর সুরি সাম্রাজ্যের উত্তরাধীকারী হিসেবে মসনদে বসলেন তারই পুত্র ইসলাম শাহ। মসনদে বসে যখন তিনি নিজের মতো করে প্রশাসন গোছানোর চেষ্টা করছিলেন, তখন বাংলার গভর্নর হিসেবে নিয়োজিত করলেন শামসউদ্দিন মুহাম্মদ খান সুরিকে। একজন ন্যয়নিষ্ঠ শাসক হিসেবে বেশ সুনামও ছিল বাংলার এই গভর্নরের।
২
১৫৫৩ সালের ৩০ অক্টোবর মাত্র ৯ বছর হিন্দুস্তান শাসন করে মৃত্যুবরণ করলেন ইসলাম শাহ। ইসলাম শাহের মৃত্যুর পর তার ১২ বছর বয়স্ক বালক পুত্র ফিরোজ শাহ সুরি বসলেন হিন্দুস্তানের মসনদে। বিপত্তিটা বাঁধল এখানেই। বয়স অল্প হওয়ার সুযোগ নিয়ে শের শাহের ভাই নিজাম খানের পুত্র মুবারিজ খান এই তরুণ সুলতান ফিরোজ শাহ সুরিকে হত্যা করেন। এরপর নিজেই মুহাম্মদ আদিল শাহ নাম নিয়ে মসনদে বসেন। এই ঘটনা ফিরোজ শাহ সুরি সুলতান হওয়ার মাত্র ৩ দিন পরের ঘটনা।
নিজের সম্রাটের মৃত্যুর পর তার পুত্রের উপর এমন নির্মম আঘাত সহ্য করতে পারলেন না বাংলার গভর্নর মুহাম্মদ খান। তিনি বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন। আদিল শাহের আনুগত্য অস্বীকার করে শামসুদ্দিন আবু জাফর মুহাম্মদ শাহ উপাধী নিয়ে নিজেকে বাংলার স্বাধীন সুলতান দাবী করলেন। এরপর চুনার, জৈনপুর আর কাল্পীতে সামরিক অভিযান পরিচালনা শুরু করলেন।
এদিকে নতুন সুলতান আদিল শাহও যে বসে ছিলেন তা না, বাংলার সুলতান মুহাম্মদ খানের বিরুদ্ধে তিনি প্রেরণ করলেন তার হিন্দু জেনারেল হিমুকে। এই সেই হিমু, যাকে পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে পরাজিত করে হিন্দুস্তানে মুঘল সাম্রাজ্যের ভবিষ্যতকে পাকাপোক্ত করেছিলেন সম্রাট আকবর ও তার অভিভাবক বৈরাম খান।
৩
কাল্পী থেকে কিছুটা দূরে চপরঘাটা নামক স্থানে মুহাম্মদ খান ও হিমুর বাহিনী মুখোমুখি হলো। মুহাম্মদ খানের জন্য দিনটি ভালো ছিল না, তিনি পরাজিত হলেন এবং যুদ্ধক্ষেত্রেই প্রাণ দিলেন। একজন স্বাধীন সুলতান হিসেবে মুহাম্মদ খান বাংলা শাসন করতে পেরেছিলেন ১৫৫৩ সাল থেকে ১৫৫৫ সাল পর্যন্ত।
যুদ্ধ শেষে মুহাম্মদ খানের বাহিনীর যেসব নেতৃস্থানীয় লোক বেঁচে ফিরতে পেরেছিলেন, তারা ঝাসিতে একত্রিত হলেন। ঝাসিতেই তারা পরবর্তী সুলতান হিসেবে মুহাম্মদ খানের পুত্র খিজির খানকে মনোনীত করলেন। গিয়াসউদ্দিন বাহাদুর শাহ উপাধী নিয়ে খিজির খান হলেন বাংলার সুলতান, যদিও বাংলা ততদিনে বেদখল হয়ে গেছে। বাংলার ক্ষমতায় এখন আদিল শাহের পাঠানো গভর্নর শাহবাজ খান।
বাহাদুর শাহ দায়িত্ব পেয়েই বাংলায় অভিযানের জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলেন। পিতার মৃত্যুর বছরেই তিনি বাংলায় আক্রমন চালালেন। যুদ্ধে শাহবাজ খান পরাজিত ও নিহত হলেন। বাংলা বাহাদুর শাহের অধিকারে চলে আসলো। এরপর তিনি ছুটলেন আদিল শাহের পেছনে। মুঙ্গেরের সুরজগড়ে কেওল নদীর তীরে আদিল শাহ আর বাহাদুর শাহ মুখোমুখি হলেন। আদিল শাহের মোকাবেলায় বাহাদুর শাহকে সাহায্য করেছিলেন দক্ষিণ বিহারের শাসক সুলায়মান কররানী। সুলায়মান কররানী শের শাহের আমল থেকেই দক্ষিণ বিহারের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
১৫৫৭ সালে মুঙ্গেরের এই যুদ্ধে আদিল শাহ শোচনীয়ভাবে পরাজিত হলেন এবং নিহত হলেন। এভাবেই তিনি ভ্রাতুষ্পুত্রকে হত্যার দায় মেটালেন। বিজয়ী সুলতান বাহাদুর শাহ ১৫৬১ সাল পর্যন্ত বাংলা শাসন করতে পেরেছিলেন।
বাহাদুর শাহের মৃত্যুর পর তার তার ভাই জালাল শাহ বাংলার মসনদে বসেন। ১৫৬৩ সালে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি বাংলা শাসন করতে পেরেছিলেন। জালাল শাহের মৃত্যুর পর তার এক পুত্র বাংলার মসনদে বসেন। অবশ্য তিনি বেশি দিন মসনদে থাকতে পারেননি। গিয়াসউদ্দিন নামক এক ব্যক্তির হাতে তিনি খুন হলেন। এর সাথে সাথেই শেষ হলো বাংলায় মুহাম্মদ শাহের বংশধরদের শাসন। এদিকে উড়ে এসে জুড়ে বসা ঘাতক গিয়াসউদ্দিনও বেশিদিন মসনদ ধরে রাখতে পারেননি। ১ বছরের মাথাতেই তাজ খান কররানীর হাতে পরাজিত হয়ে তার ইতি ঘটে।
৪
তাজ খান কররানী ছিলেন ইসলাম শাহের একজন আমির। তিনি সম্ভলের গভর্নর ছিলেন। পরবর্তীতে আদিল শাহের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন তিনি। আদিল শাহ ধাওয়া দিলে তাজ খান কররানী বাংলার দিকে পালিয়ে যান। তবে আকবরারবাদ থেকে কিছুটা দূরে চাপরামপুরে তাজ খানকে আদিল শাহের বাহিনীর সাথে বোঝাপড়ায় নামতে হলো। সেবার সামরিক শক্তি কম থাকায় তিনি পরাজিত হয়ে চুনারের দিকে পিছু হটলেন। আদিল শাহও সেনাবাহিনী নিয়ে তাজ খান কররানীর পথ অনুসরন করলেন।
গঙ্গার তীরে তাজ খান কররানীকে আবারও আদিল শাহের বাহিনীর মুখোমুখি হতে হলো। অবশ্য তিনি এবারও পরাজিত হলেন। পরাজিত হয়ে এবার কোথাও না থেমে সোজা ছুটলেন বাংলা সীমান্তের দিকে। আদিল শাহ এবার আর তাজ খান কররানীর পিছু পিছু বাংলার দিকে যেতে পারলেন না। তিনি পড়ে গেলেন আরেক বিপদে।
আদিল শাহের বিরুদ্ধে যারা বিদ্রোহী মনোভাব প্রদর্শন করেছিলেন, তাদের মাঝে আদিল শাহেরই ভগ্নিপতি ইব্রাহীম খান সুরি অন্যতম। বিদ্রোহ দমনে যখন আদিল শাহ কঠোর হচ্ছিলেন, ইব্রাহীম খান তখন পালিয়ে বিয়ানার দিকে চলে যান। তাকে দমন করতে আদিল শাহ ঈসা খান নিয়াজীকে পাঠালেন। ইব্রাহীম খান সুরি ঈশা খান নিয়াজিকে পরাজিত করে সোজা দিল্লির দিকে অগ্রসর হয়ে দিল্লি অধিকার করে ফেললেন। নিজেকে সুরি সাম্রাজ্যের সুলতান ঘোষণা নিয়ে এবার আগ্রাও অধিকার করে নিলেন।
তাজ খান কররানীকে দমন করতে গিয়ে আদিল শাহ তখন চুনারে অবস্থান করছিলেন। দিল্লি আর আগ্রার মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ দুটি শহরের এতো দ্রুত পতনে তিনি হতভম্ব হয়ে গেলেন। দ্রুত তিনি দিল্লির দিকে ছুটলেন। কারও পৌষ মাস কারও সর্বনাশ। দিল্লি আর আগ্রার পতন তাজ খান কররানীকে স্বস্তি দিলো। তিনি আদিল শাহের হাত থেকে রেহাই পেলেন।
তাজ খান কররানী যখন কোথাও থিতু হয়ে বসতে পারছিলেন না, তখনই বাংলার সুলতান জালাল শাহের পুত্রের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই হত্যাকাণ্ডের পূর্ণ সুযোগ নিলেন তিনি। হত্যাকারী গিয়াসউদ্দিনকে ক্ষমতাচ্যুত করে তিনিই বাংলার মসনদে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে ফেললেন।
তাজ খান কররানী অবশ্য বেশি দিন বাংলা শাসন করতে পারেননি। ১৫৬৪ সালে মসনদে বসে ১৫৬৬ সালে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত বাংলা শাসন করেছিলেন। তার মৃত্যুর পর তার ভাই সুলায়মান কররানী বাংলার মসনদে আরোহণ করেন। তার সময়ই বাংলার রাজধানী গৌড় থেকে তাণ্ডায় স্থানান্তর করা হয়।
৫
সুলায়মান কররানীর বাংলা মূলত বাংলা, বিহার আর ত্রিহুতের বিস্তীর্ন অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত ছিল। তবে এটুকু নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না। বাংলার মসনদে বসেই তাই তিনি রাজ্য বিস্তারে মনযোগ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৫৬৮ সালে উরিষ্যায় একটি সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন। অভিযানটি সফল হয়, উড়িষ্যায় বাংলার আধিপত্য কায়েম হয়। উড়িষ্যা বিজয়ের পর তিনি কুচবিহারও জয় করে নেন।
এদিকে দিল্লিতেও অনেক আগে থেকেই রাজনৈতিক পালাবদল চলছিল। ইতোমধ্যেই মুঘল সম্রাট হুমায়ুন পারস্য থেকে ফিরে এসে পুনরায় দিল্লি আর আগ্রা দখল করে নেন। এমনিতেই গৃহযুদ্ধে সুরিরা তখন নাকাল ছিল, তার উপর দুর্ধর্ষ এই মুঘল আঘাত আর সইতে পারলো না তারা। চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লো। পতন হলো বিশাল সুরি সাম্রাজ্যের।
একজন শাসক হিসেবে সুলায়মান কররানী বেশ বিচক্ষণ ও দূরদর্শী মানুষ ছিলেন। ১৫৫৫ সালের দিকে সম্রাট হুমায়ুন যখন পুনরায় দিল্লি ও আগ্রা দখল করে মুঘল সাম্রাজ্যকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে ফেললেন, তখনই তিনি বুঝে গিয়েছিলেন হিন্দুস্তান মুঘলদের, আর মুঘলরা আবার হিন্দুস্তান শাসন করবেন। তাই তিনি হিন্দুস্তান বিজয় উপলক্ষে সম্রাট হুমায়ুনকে শুভেচ্ছা ও উপঢৌকন পাঠিয়ে সুসম্পর্ক স্থাপন করে বাহ্যত মুঘলদের আনুগত্য স্বীকার করে নিয়েছিলেন।
তবে বাংলার সুলতান হওয়ার পরও তিনি সরাসরি কোনোদিন মুঘলদের চ্যালেঞ্জ করেননি। বরং সম্রাট হুমায়ুনের পুত্র আকবরকেও প্রায়ই শুভেচ্ছা ও উপঢৌকন পাঠিয়ে সুসম্পর্ক বজায় রাখতেন। অবশ্য বাংলাতে সুলায়মান কররানীর নামেই মুদ্রা প্রচলিত ছিল আর খুতবাও তার নামেই পড়া হতো। তবে পদ হিসেবে নিজেকে সম্রাট, সুলতান বা বাদশাহ পরিচয় দিতেন না তিনি। তিনি নিজেকে ‘হযরতে আলা’ বা ‘সর্বপ্রধান’ পরিচয় দিতেন। এটাও তার বিচক্ষণতারই অংশ ছিল! ফলে মুঘলরাও সুলায়মান কররানীকে কখনো হুমকি মনে করেনি।
৬
হজরতে আলা সুলায়মান কররানী মৃত্যুবরণ করেন ১৫৭২ সালে। তার মৃত্যুর পর তার পুত্র বায়জিদ কররানী বাংলার মসনদে বসেন। কিন্তু অভিষেকের মাত্র ১ মাসের মাথায় নিজেরই চাচাতো ভাইয়ের হাতে নির্মমভাবে খুন হন তিনি। অবশ্য চাচাতো ভাই হাঁসোও ২/৩ দিনের মাথায় খুন হন। এরপরে দৃশ্যপটে হাজির হন মরহুম সুলতান বায়জিদের ভাই দাউদ খান। আবুল মুজাফফর দাউদ শাহ নাম নিয়ে তিনি বাংলার মসনদে আরোহণ করেন। মুঘল সাম্রাজ্যের সাথে বাংলার সমস্যার শুরু এই বাদশাহ দাউদ শাহের সময় থেকেই।
মসনদে আরোহন করেই দাউদ শাহ নিজের অবস্থানকে শক্তিশালী করে তুললেন। ১ লাখ ৪০ হাজার পদাতিক সৈন্য, ৪০ হাজার অশ্বারোহী, আর প্রায় সাড়ে তিন হাজার রণহস্তী নিয়ে দাউদ শাহের সেনাবাহিনী ছিল প্রচণ্ড শক্তিশালী। আর্টিলারির দিকে দিয়েও বাংলার সেনাবাহিনী বেশ এগিয়ে ছিল তখন। নিজের এই প্রচণ্ড সামরিক শক্তির উপর ভর করে দাউদ শাহ দখল করে নিলেন কামরূপ আর ত্রিপুরাকে।
দাউদ শাহের শাসনকালে বাংলা সামরিক দিক দিয়ে এতটাই উন্নতি করেছিল যে, গোটা হিন্দুস্তানে মুঘল সাম্রাজ্যের মুখোমুখি হয়ে দাঁড়ানোর মতো সক্ষমতা যদি কোন সাম্রাজ্যের থাকে, তবে তা ছিল একমাত্র বাংলা।
এদিকে মুঘল সম্রাট আকবর তখন সাম্রাজ্য বিস্তার নীতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। ফলশ্রুতিতে একের পর এক ভূখণ্ড মুঘল সাম্রাজ্যের সাথে যুক্ত হচ্ছিল। মজার বিষয় হলো, বাদশাহ দাউদ শাহও তখন নিজের সীমানা বৃদ্ধি করতে চাইছিলেন। আবার একই সাথে তিনি অনুধাবন করলেন আজ হোক কাল হোক, পরাক্রমশালী মুঘল সাম্রাজ্যের চ্যালেঞ্জের মুখে তাকে পড়তেই হবে। কাজেই মৌচাকে ঢিল ছোড়ার দায়িত্বটুকু নিজের কাঁধেই তুলে নিলেন তিনি। এবং নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলটি করে বসলেন।
দাউদ শাহ তার সেনাবাহিনীর সক্ষমতা আর সাফল্যে আত্মবিশ্বাসী হয়ে গোলযোগ সৃষ্টি করলেন মুঘল সীমান্তে। হামলা চালালেন উত্তর প্রদেশের জামানিয়া দুর্গে। সম্রাট আকবর তখন গুজরাটে অভিযানে ব্যস্ত ছিলেন। তার কানে যখন দাউদ শাহের এ ধরনের তৎপরতার খবর গেল, তৎক্ষণাৎ তিনি মুনিম খানকে বাংলা সীমান্তে পাঠিয়ে দিলেন। শুরু হয়ে গেল মুঘল সাম্রাজ্যের সাথে বাংলার এক দীর্ঘ লড়াই!
[এই সিরিজের পূর্বে প্রকাশিত পর্বটি পড়ুন এখানে। সিরিজের সবগুলো লেখা পড়তে চাইলে ক্লিক করুন এখানে।]
ইতিহাসের চমৎকার, জানা-অজানা সব বিষয় নিয়ে আমাদের সাথে লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কে: https://roar.media/contribute/
মোগলদের সম্পর্কে আরও জানতে পড়তে পারেন এই বইগুলোঃ