দর্জিদের সেলাই মেশিনের শব্দে মুখরিত হয়ে আছে মধ্যরাতের নিউ মার্কেট। প্রমাণ সাইজের আয়তাকার সবুজ কাপড়ের উপর টকটকে লাল রঙের একটি বৃত্ত সেলাই করে জুড়ে দেয়ার কাজে ব্যস্ত তারা। সারাদিনের কাজ শেষে ক্লান্ত দেহে শয্যাগমনের সুখটুকু হাসিমুখে বিসর্জন দিয়ে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। কাজ শেষে মজুরিটুকুও নিলেন না তারা। সেলাই করা লাল বৃত্তওয়ালা সবুজ কাপড়খানা টেবিলের উপর মেলে বিছানো হলো। স্বাধীনতাকামী একদল ছাত্রনেতা তৃপ্তির দৃষ্টি মেলে পরখ করে নিলেন কাপড়খানা। সেলাইয়ের কাজ শেষ হবার পরেও কিছু কাজ বাকি ছিল। সেই কাজের ভার পড়লো ছাত্রনেতা শিবনারায়ণ দাসের কাঁধে।
তিনি আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলেন। বেশ যত্ন সহকারে কাপড়খানা হাতে নিলেন। তারপর হলুদ রঙ মাখানো ম্যাচের কাঠির সাহায্যে সতর্কতার সাথে বাংলাদেশের মানচিত্রখানা ফুটিয়ে তোলেন সেই কাপড়ের মাঝের লাল বৃত্তের উপর। কাজ শেষে ছাত্রনেতারা কাপড়খানা নিয়ে ছুটে গেলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায়। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ বাংলার মাটিতে গৌরবের সাথে উত্তোলিত হলো সেই লাল-সবুজ কাপড়। কি মহিমা সেই কাপড়ের! ধীরে ধীরে সেই কাপড় দেশের আনাচে-কানাচে, অলিতে-গলিতে ছড়িয়ে পড়লো। প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে জাতীয়তাবাদের মন্ত্র শোনাতে লাগলো সেই কাপড়। কী বিশেষত্ব সেই কাপড়ের মাঝে? বাংলাদেশিরা কী এমন খুঁজে পেলো সেই লাল-সবুজের নকশার মাঝে?
সেই লাল-সবুজ কোনো সাধারণ নকশা নয়! সেটি ছিল একটি জাতির পরিচয়। যার রঙের মাঝে লুকিয়ে ছিল এক অবিস্মরণীয় বিজয়গাঁথা। সেটি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। জাতীয় পতাকা একটি জাতির অহংকার। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর প্রতিটি দেশের সার্বভৌমত্বের সাক্ষী হিসেবে উত্তোলিত হয় তাদের নিজস্ব পতাকা। কিন্তু ইতিহাসের শুরুর দিকে এই পতাকা ব্যবহারের কোনো চল ছিল না। প্রচলনের শুরুতেও তার ব্যবহার বর্তমান যুগের চেয়ে ছিল সম্পূর্ণ আলাদা।
পতাকা কী?
Encyclopedia Britannica অনুযায়ী, কোনো সার্বভৌম জাতি, সম্প্রদায়, সশস্ত্র বাহিনী অথবা কোনো সংগঠনের পরিচয়চিহ্ন হিসেবে ব্যবহৃত নকশা কিংবা সংকেত সম্বলিত কাপড়, নিশানা কিংবা অনুরূপ কিছুর নামই পতাকা। মূলত যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাপ্রধানরা আত্মপক্ষের পরিচয়চিহ্ন হিসেবে পতাকার প্রচলন করেছিলেন। বর্তমানে বিভিন্ন দেশের জাতীয় পতাকা আয়তাকার হলেও পূর্বে এর নির্দিষ্ট কোনো আকারের বাধ্যবাধকতা ছিল না।
ধীরে ধীরে মানবসভ্যতায় পতাকার গুরুত্ব বৃদ্ধি পেতে থাকে। পরিচয়চিহ্ন পতাকা একসময় রাজ্যের সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হওয়া শুরু করে। এমনকি ‘পতাকাবাহীর পতন মানে পুরো বাহিনীর পতন‘- এমন রীতির প্রতিও রাজারা শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। মধ্যযুগে যুদ্ধক্ষেত্র ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে পতাকার চল শুরু হয়। আমাদের অতি পরিচিত জাতীয় পতাকার প্রচলন করা হয় সপ্তদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে।
পতাকার উৎপত্তি
পতাকার ইতিহাস সম্পর্কে ইতিহাসবিদগণ দুটি ভিন্ন মতে বিভক্ত আছেন। অনেকের মতে, পতাকার উৎপত্তিস্থল ফারাওদের দেশ মিশরে। তবে Encyclopedia Britannica অনুযায়ী, পতাকার উৎপত্তিস্থল এশিয়ার পরাশক্তি চীনে। পতাকার জন্মসালের ক্ষেত্রে কোনো দ্বিধা নেই। ১০০০ খ্রিস্টপূর্বের দিকে সর্বপ্রথম পতাকার ব্যবহার শুরু হয়।
তদানীন্তন চীনা ঝাও সাম্রাজ্যের শাসকগণ একটি সাদা কাপড়কে পতাকা হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করেন। চীনে পতাকার গুরুত্ব কেমন ছিল, তা জানার জন্য একটি ঘটনাই যথেষ্ট। ৬৬০ খ্রিস্টাব্দে এক চীনা রাজকুমার পতাকার প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করে। এই ঘটনায় সম্রাট স্বয়ং রাজকুমারের বিচার করেন এবং চূড়ান্ত সাজা প্রদান করেন। একজন রাজকুমার হয়েও তিনি পতাকার অসম্মান করে রক্ষা পাননি। পরবর্তীতে চীনের বিভিন্ন প্রদেশে ভিন্ন পতাকার ব্যবহার শুরু হয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে একটি লাল পাখি, সাদা বাঘ এবং নীল রঙের ড্রাগনের সমন্বয়ে নতুন পতাকার নকশা করা হয়। রাজ পরিবারের সদস্যদের ঘোড়ার গাড়িতে শোভা পেতে থাকে সেসব পতাকা। নতুন রাজ্য জয়ের পর চীনা সাম্রাজ্যের আধিপত্যের প্রতীক হিসেবে প্রধান প্রবেশদ্বারে পতাকা উত্তোলন করার চল শুরু হয়। চীনের রাজাদের জন্য স্বতন্ত্র পতাকার ব্যবহার করা হতো। রাজার পতাকাকে রাজার মতোই সম্মান প্রদর্শন করতে হতো। রাজ পতাকাবাহীকে স্পর্শ করা দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত করা হতো। যুদ্ধে পতাকাবাহীর পতনকে পরাজয় হিসেবে গণ্য করা হতো।
অপরদিকে Flags Through the Ages and Across the World বইয়ে হুইটনি স্মিথ পতাকার উৎপত্তির সাথে মিশরীয় সভ্যতার যোগসূত্র স্থাপন করেন। প্রাচীন মিশরে পতাকা হিসেবে যা ব্যবহৃত হতো, তার সাথে চীনা কাপড়ের তৈরি পতাকার আকাশ পাতাল তফাৎ। মিশরীয়রদের পতাকাগুলো কাঠ কিংবা বিভিন্ন ধাতু দ্বারা তৈরি করা হতো। কাঠের দণ্ডের উপর বিভিন্ন ধাতব প্রাণীর মূর্তি সংযোজনের মাধ্যমে মিশরে পতাকার প্রচলন শুরু হয়। এগুলো ‘ভেক্সিলয়েড’ নামে পরিচিত। মজার ব্যাপার হচ্ছে, পতাকা সংক্রান্ত বিজ্ঞান ‘ভেক্সিলোলজি‘-এর নামকরণের পেছনে মিশরীয় ভেক্সিলয়েডের প্রত্যক্ষ প্রভাব বিদ্যমান। তারা বিভিন্ন ধর্মীয় কাজে পতাকা ব্যবহার করতো। পতাকার মূর্তিগুলোকে ঐশ্বরিক হিসেবে গণ্য করা হতো। এই পতাকাগুলো ছিল ‘একের ভেতরে দুই’ জাতীয়। কারণ, কাঠের তৈরি শক্ত পতাকার সাহায্যে খুব সহজেই শত্রুদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তাই তারা যুদ্ধের ময়দানে পতাকাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতো। অস্ত্র ‘পতাকা’ কীভাবে সময়ের আবর্তে ধীরে ধীরে সম্মানজনক ‘পতাকা’-তে রূপান্তরিত হলো, তা ভাবতেই অবাক লাগে! মিশরীয়দের প্রাণীমূর্তি সম্বলিত পতাকার ধারা একদম হারিয়ে যায়নি। রোমান সাম্রাজ্যে পতাকা দণ্ডের মাথায় ঈগল ব্যবহার করা হতো। বর্তমান যুগেও বিভিন্ন দেশের পতাকা দণ্ডে রাজকীয়তার প্রতীকস্বরূপ ঈগলসহ বিভিন্ন প্রাণী ব্যবহার করা হয়।
এক্ষেত্রে মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, চীনারা কাঠের পরিবর্তে পতাকা হিসেবে কাপড় ব্যবহার কেন করতেন? এর কারণ হিসেবে ইতিহাসবিদগণ বলেন, চীনদেশে উন্নতমানের রেশম উৎপাদিত হতো। তাই রেশমী কাপড়ের তৈরী পতাকাগুলো চীনা গৌরবের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
ভারতবর্ষের পতাকা
ভারতবর্ষে পতাকার চল শুরু হয় সংকেত প্রেরণের মাধ্যম হিসেবে। তবে খুব দ্রুত তা যুদ্ধক্ষেত্রে স্থান লাভ করে। ভারতবর্ষের চতুর সৈনিকরা যুদ্ধের শুরুতেই পতাকাবাহীকে আক্রমণ করতো। তবে তারা চীনাদের ন্যায় পতাকাবাহীর পতনের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের পরাজয়ে বিশ্বাসী ছিল না। বরং পতাকাবাহীর পতনের মাধ্যমে শত্রুপক্ষকে দ্বিধায় ফেলে দিতো তারা। ভারতীয়দের পতাকাগুলো চীনাদের ন্যায় কাপড়ে তৈরি হলেও তা মোটেও আয়তাকার ছিল না। বরং ত্রিভুজাকৃতির রঙিন পতাকায় শোভিত হতো ভারতবর্ষের সৈন্যদল। ভারতবর্ষের ন্যায় আরব মুলুকেও পতাকার ব্যবহার শুরু হয়ে যায়।
একসময়ে ভারতবর্ষের হাতির বেশ সুনাম ছিল। যুদ্ধক্ষেত্রে অতিকায় হস্তিবাহিনীর ব্যবহার ছাড়াও যানবাহন হিসেবেও হাতি ব্যবহার করা হতো। হাতির মালিকগণ নিজের দলের হাতির পরিচায়ক হিসেবে পতাকা ব্যবহার করতেন। ভারতের পতাকাগুলো বেশিরভাগ সবুজ রঙের কাপড়ের উপর সোনালি সুতার নকশা করা বিভিন্ন প্রাণী কিংবা প্রাকৃতিক বস্তুর ছবি সম্বলিত ছিল। তবে মোঘল আমলে পতাকার সাথে পশুর চামড়া কিংবা লেজের কাটা অংশের ব্যবহারের কথাও জানা যায়।
১৫৪২ খ্রিস্টাব্দে ভারত এবং চীনে সাদা পতাকার মাধ্যমে সন্ধি স্থাপনের সংকেত আদান প্রদান করা শুরু হয়। বিভিন্ন বণিকদের মাধ্যমে ভারতবর্ষ থেকে পতাকার ব্যবহার তৎকালীন বার্মা, শ্যাম দেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে।
আরব থেকে ইউরোপ
মধ্যযুগে মুসলিম শাসিত বিভিন্ন অঞ্চলে কারুকার্যখচিত পতাকার ব্যবহার করা হতো। তবে মুসলিমদের পতাকায় কোনো প্রাণীর নকশা ব্যবহার করা নিষেধ ছিল। অটোমান সাম্রাজ্যের বিভিন্ন রাজ্যে ইসলামিক পতাকার ব্যবহার হতো। মূলত, আরবের বণিকগণ ইউরোপের মাটিতে পতাকার প্রচলন শুরু করেন। ইউরোপের যোদ্ধারা ধাতব বর্ম দ্বারা নিজেদের মস্তকের সম্পূর্ণ অংশ আবৃত করে রাখতেন। এদের ‘ক্রুসেড যোদ্ধা’ হিসেবে অভিহিত করা হতো। ফলে দূর থেকে তাদের পক্ষ সম্পর্কিত কোনো ধারণা লাভ করা যেত না। তাই যোদ্ধাদের পরিচয়চিহ্ন হিসেবে সর্বপ্রথম ইউরোপের বুকে পতাকার প্রচলন শুরু হয়।
কিন্তু অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় ইউরোপের পতাকাগুলো জটিলতর ছিল। কারণ, প্রত্যেকের শ্রেণী, পেশা, ক্ষমতা, ভূমি এবং বংশীয় পদবি অনুযায়ী আলাদা পতাকার চল ছিল। তারা পতাকায় বিভিন্ন প্রাণীর ছবিও ব্যবহার করতো। আরবদের ন্যায় ইউরোপের পতাকায় ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটে। আরবদের চাঁদ-তারার ন্যায় ইউরোপের পতাকায় শোভা পায় খ্রিস্টানদের পবিত্র ক্রস।
ইউরোপের বণিকরা তাদের জাহাজেও পতাকার ব্যবহার শুরু করেন। বণিকদের দেখাদেখি জলদস্যুরাও কালো পতাকায় জোড়া হাড় এবং মাথার খুলির সমন্বয়ে পতাকা উড্ডয়ন করা শুরু করে। বেতার পূর্ব যুগে পতাকার মাধ্যমে সমুদ্রে জাহাজগুলো তথ্য আদান প্রদান করতো। ইউরোপীয়রা যুদ্ধে জয়লাভ করলে প্রতিপক্ষের পতাকা দখল করে আনন্দ জয়োল্লাস করতো। কোনো জাহাজের নাবিক কিংবা যাত্রীরা কালাজ্বর জাতীয় কোনো মহামারিতে ভুগতে থাকলে সতর্কতার জন্য জাহাজের পতাকা বদলে হলুদ পতাকা উত্তোলিত হতো।
জাতীয় পতাকা
ইউরোপের বণিকরা সমুদ্র ভ্রমণে পতাকার ব্যবহার শুরু করা মাত্রই বিভিন্ন অঞ্চলের পরিচায়ক নির্দিষ্ট পতাকার উদ্ভব হয়। একটি অঞ্চলের জন্য নির্দিষ্ট পতাকা ব্যবহার করতেন তারা। সেখান থেকে জাতীয় পতাকার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। তবে জাতীয় পতাকার প্রচলন শুরু হয় খ্রিস্টানদের ধর্মযুদ্ধ ক্রুসেডের সময়। সেইন্ট জর্জ, এন্ড্রু এবং ডেভিডের ক্রস একীভূত করে ১৬০৩ সালে নকশা করা হয় বিখ্যাত ‘ইউনিয়ন জ্যাক’। ইউনিয়ন জ্যাকের সমন্বয়ে ব্যবহৃত যুক্তরাজ্যের পতাকাটি এখনও প্রচলিত আছে। শুধু যুক্তরাজ্য নয়, ইউরোপের অধিকাংশ রাষ্ট্রেই ক্রুসেডকালীন ক্রসচিহ্নিত পতাকা এখনও ব্যবহৃত হয়। ইউরোপ, আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলো প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো সাথে মিলিয়ে পতাকার প্রচলন করতে থাকে। ক্রুসেডের পরেও পতাকাগুলো ব্যবহৃত হতে থাকে ইউরোপ জুড়ে।
অন্যদিকে স্পেন, পর্তুগালের মতো রাষ্ট্রে পতাকার মাঝে জাতীয় প্রতীকের নকশা জুড়ে দেয়া হয়। জাতীয় প্রতীক, ক্রস ছাড়াও আরেক ধরনের পতাকার প্রচলন শুরু হয়। লাল, কমলা, সবুজ, নীল ইত্যাদি রঙের ব্যবহারে ডোরাকাটা পতাকার প্রচলন করা হয় নেদারল্যাণ্ড, ফ্রান্স, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে। ইউরোপের আদতে এশিয়া, আফ্রিকা এবং আমেরিকা মহাদেশে জাতীয় পতাকার প্রচলন শুরু হয়। তবে ইউরোপের মতো প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে সমন্বয়ের রীতি থেকে বিরত থাকে এশিয়ার দেশগুলো। এর কারণ হিসেবে এশীয়দের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং জীবনধারাকে ধরা হয়। একদিকে জাপানীরা পতাকায় সূর্যের নকশা জুড়ে দেয়, অপরদিকে ভুটানিরা বেছে ন্যায় উড়ন্ত ড্রাগনকে। এভাবে দেশে দেশে রঙিন বৈচিত্র্যময় পতাকার নকশা হতে থাকে। আরব দেশগুলো ইউরোপের ন্যায় ধর্মীয় বিশ্বাসকে প্রতিফলিত করতে থাকে জাতীয় পতাকায়। সৌদি আরব, ইরাক, ইরানের পতাকায় ইসলামি বাণী এবং আল্লাহর নাম ব্যবহার করা হয়।
জাতীয় পতাকার প্রচলনের সাথে সাথে বাড়তে থাকে এর ব্যবহারের গণ্ডি। একসময় শুধু রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহৃত পতাকাগুলো বর্তমানে জাতীয়তাবাদের প্রতীক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এমনকি শোকাবহ ঘটনায় একাত্মতা প্রকাশের মাধ্যম হয়ে উঠেছে কালো পতাকা। অর্ধনমিত জাতীয় পতাকায় ফুটে উঠেছে জাতীয় শোক। স্কুলে যাওয়া কিশোরের আদুরে আঙুল কপালে ছুঁয়ে জাতীয় পতাকার প্রতি প্রদর্শিত সম্মান এবং শ্রদ্ধার মাধ্যমে আমরা নিজ দেশের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করি। প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিক তার দেশের প্রতি অসীম ভালোবাসার প্রমাণস্বরূপ নিজ নিজ জাতীয় পতাকাকে সম্মান জানায়।
ফিচার ইমেজ: BBC