আদি-আমেরিকানদের যে বৈপ্লবিক আবিষ্কারসমূহ এখনও ব্যবহৃত হয়

পৃথিবীর ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করে জন্মলগ্ন থেকে আধুনিক যুগে পৌঁছানোর পেছনে অনেকগুলো অঞ্চলের একাধিক সভ্যতার ইতিহাস পাওয়া যায়। বর্তমান প্রজন্ম যে সুন্দর, নিরাপদ ও দ্রুততর পৃথিবীতে বসবাস করছে, তা সম্ভব হয়েছে অতীতের কিছু যুগান্তকারী আবিষ্কারের কল্যাণে। কোনো একক সম্প্রদায় পৃথিবীতে বিরাজমান সকল প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আবিষ্কার করেনি। পূর্ব এশিয়ানদের এগিয়ে যাওয়ার পেছনে চীনের হান রাজবংশীয় লোকেদের আবিষ্কার ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তেমনিভাবে মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপীয়দের অগ্রযাত্রায় সুমেরীয় সভ্যতার আবিষ্কারগুলো বেশি প্রভাবিত করেছে।

আদিবাসী আমেরিকান; Image Source: Daily Mail

দেরিতে হলেও গবেষকরা আদিবাসী আমেরিকানদের আবিষ্কার সম্পর্কে প্রজন্মকে জানাতে পেরেছেন। ইতিহাস ঘাঁটাঘাঁটি করলে উত্তর মহাসাগরীয় অঞ্চল সম্পর্কে খুব বেশি দূর জানা একপ্রকার অসম্ভব। আধুনিক প্রত্নতত্ত্ববিদরা ঐ অঞ্চলের আদিবাসীদের এমন কিছু আবিষ্কারের বিষয়ে উল্লেখ করেছেন, যেগুলো পৃথিবীর আধুনিকায়ন এবং দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তাদের সৃষ্টিকর্মগুলো আজও পৃথিবীজুড়ে ব্যবহৃত হচ্ছে। আবার কিছু কিছু জিনিসপত্র নতুনত্ব পেয়েছে। তবে সেগুলো যেখানেই ব্যবহৃত হোক না কেন, যতদিন এগুলোর অস্তিত্ব টিকে থাকবে ততদিন সেগুলো শুধুমাত্র আদিবাসী আমেরিকানদের পরিচয়টুকুই তুলে ধরবে।

আদিবাসী আমেরিকান; Image Source: native American history

কলম্বাস আমেরিকায় পৌঁছানোর পূর্বে আদিবাসী আমেরিকানরা অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য কায়াক এবং বরফ থেকে চোখ রক্ষার্থে গগলস ব্যবহার করতেন। অতঃপর ব্যথা উপশমের পাশাপাশি জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও আবিষ্কার করেন তারা। তবে এখানেই থেমে থাকেনি আদিবাসীদের নতুন নতুন আবিষ্কারের পরিধি।

খাদ্যশস্যকে প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রদ্ধতি, বেদনাদায়ক রোগের ঔষধও তাদের দ্বারাই সৃষ্টি। শত শত বছর পূর্বেকার ভ্রমণকারী ইউরোপিয়ানরা আমেরিকায় পৌঁছে অভাবনীয় এসব আবিষ্কার দেখে বিস্মিত হতেন। কোনো কোনো ইতিহাসবিদ মনে করেন, উল্লেখযোগ্য কিছু আবিষ্কার এবং খাদ্য সহজলভ্য হওয়ায় ইউরোপীয়রা স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আমেরিকায় জমায়েত হতে শুরু করে।

আমেরিকান উপজাতি; Image Source: Daily Mail

দক্ষিণ অ্যারিজোনার তোহানো ওডাম উপজাতির সদস্য ডি গেনেরোর মতে, বহুকাল আগে থেকেই আদিবাসীরা নিজেদের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করছে। ফলস্বরূপ, এক গোষ্ঠীর আবিষ্কার অন্যদের মাঝে সহজেই ছড়িয়ে পড়ত। ডি গেনেরো মনে করেন, আদিবাসীরা তাদের পূর্বপুরুষদের আবিষ্কারগুলো নিয়ে গর্বিত। আজকের সেই আদিবাসী আমেরিকানদের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার নিয়েই আলোচনা করা হবে। গবেষকরা মনে করেন পৃথিবী যতই আধুনিক হোক না কেন এসবের প্রয়োজন কখনও ফুরাবে না।

ভুট্টা

সর্বপ্রথম ভুট্টা চাষ করা হয়েছিল প্রায় ১০ হাজান বছর পূর্বে। তখন মানুষ এটি সম্পর্কে জানলেও এর উৎপাদন কীভাবে বাড়ানো যায়, সে সম্পর্কে কিছুই জানত না। প্রথমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এটি চাষ শুরু করে আমেরিকান আদিবাসীরা। হাজার বছর আগে থেকে গুয়েতেমালা এবং মেক্সিকোর আদিবাসী কৃষকরা ব্যাপকভাবে ভুট্টা চাষ করতেন। অতঃপর ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনামলে ইউরোপিয়ানরাও এটি সম্পর্কে ধারণা অর্জন করে। আদিবাসীদের কাছ থেকে ভুট্টা চাষের প্রক্রিয়া শিখে ইউরোপে তারা বাণিজ্যিকভাবে ভুট্টা চাষ শুরু করে।

ভুট্টা ক্ষেত; Image Source: GeoOnderland.blogspot

সময়ের সাথে সাথে ভুট্টার জনপ্রিয়তা আমেরিকা ও ইউরোপ ছাড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ দক্ষিণপূর্ব এশিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমান সময়ে অবশ্য আমেরিকা মহাদেশেই সবচেয়ে বেশি ভুট্টা উৎপাদন ও ব্যবহার হয়। অধিকাংশ মার্কিন নাগরিক সকালের নাস্তায় ভুট্টা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন রকম খাবার খায়। ব্যাপক পরিমাণে আমিষে পরিপূর্ণ এই শস্যদানা শিশুখাদ্য হিসেবেও নিরাপদ এবং ব্যাপক জনপ্রিয়। খাদ্য বিশেষজ্ঞদের মতে ধান ও গমের চেয়ে ভুট্টার পুষ্টিগুণ বেশি।

রাবার

ইউরোপীয়দের শিল্প বিপ্লবে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করা রাবার প্রথমবার ব্যবহার করেন আমেরিকান আদিবাসীরা। তাদের আবিষ্কৃত এই প্রাকৃতিক উপাদানটি এখন সারাবিশ্বে বহুল ব্যবহৃত। আদিবাসীরা রাবার গাছ থেকে রাবার কেন সংগ্রহ করতেন, তা নিয়ে নানারকম বিতর্ক রয়েছে। তবে দৈনন্দিন জীবনে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হতো বলেই ধারণা অধিকাংশ গবেষকের।

রাবার গাছ থেকে রাবার সংগ্রহ; Image Source: freepik.com

ডি গেনেরোর মতে, ইউরোপে সর্বপ্রথম রাবার নিয়ে যান কলম্বাস। অতঃপর চার্লস গুডিয়ার ১৮৩০ এর দশকে রাবার শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনেন। তার আবিষ্কৃত ভলকানাইজেশন পদ্ধতিতে রাবারকে প্রক্রিয়াজাত করে তাপ ও ঠান্ডা সহনশীল করা হয়। এতে করে খুব অল্প সময়ে ইউরোপে রাবার শিল্পের বিকাশ ঘটে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীন হওয়ার পর ব্রিটিশরা রাবার শিল্পের কাঁচামাল সংগ্রহের জন্য বেছে নেয় ভারতীয় উপমহাদেশ। এই অঞ্চলে প্রায় অর্ধশত নতুন রাবার বাগান তৈরি করে তারা। এতে করে আমেরিকান আদিবাসীদের আবিষ্কৃত রাবারের বিস্তৃতি ছড়িয়ে পড়ে এশিয়া মহাদেশেও।

কায়াক

দ্রুত সময়ে অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্য এবং যোগাযোগের জন্য আমেরিকান আদিবাসীরা একধরনের ছোট নৌকা তৈরি করেন। এর মৌলিক এবং একমাত্র নাম কায়াক। গঠনগত দিক থেকে এটি নৌকা থেকে কিছুটা ভিন্ন। চালকের শরীরে অর্ধেকাংশ কায়াকের ভেতরে থাকে। একপ্রকার বিমানের ককপিটের মতোই চালককে রক্ষা করে এটি। ছোট হওয়ার সুবাদে যানটি খুব দ্রুতগতিতে ছুটে চলে।

কায়াকে যাত্রা; Image Source: History.com

কানাডিয়ান প্রযুক্তিগত ইতিহাসবিদ ডেভিড জনসন এবং টম জেঙ্কিসের মতে, কায়াক সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপকরণ দ্বারা তৈরি হতো। কাঠ বা তিমির হাড় দিয়ে তৈরি কাঠামো পশুর অথবা তিমির চামড়া দিয়ে ঢাকা থাকত। তবে বর্তমান সময়ে সারাবিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয় কায়াক প্লাস্টিক অথবা কার্বন ফাইবারের তৈরি। অতীতে শুধুমাত্র একজন যাত্রী বহনকারী কায়াক দেখা গেলেও বর্তমান সময়ের নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো একাধিক যাত্রী বহনযোগ্য কায়াক তৈরি করছে।

গগলস

আদিবাসী আমেরিকানদের মধ্যে ইনোইট উপজাতি অন্যতম। কাঠের জিনিসপত্র তৈরির জন্য বিখ্যাত ছিলেন তারা। ইনোইটরা কাঠ দিয়ে এমন সব জিনিসপত্র তৈরি করেছেন, যা সেকালে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এমনকি আধুনিক যুগে কাঠের তৈরি অনেক গুরুত্বপূর্ণ আসবাবপত্রের ধারণাও নাকি এই আদিবাসী আমেরিকানদের থেকে পাওয়া। আমেরিকার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি অঞ্চলে তীব্র তুষারপাত ঘটে। এই তুষারপাতে জীবনযাত্রা সক্রিয় রাখার পাশাপাশি চোখকে সুরক্ষিত রাখার জন্য সুরক্ষা-চশমার বিকল্প নেই।

গগলস এবং সংরক্ষণকারী বাক্স; Image Source: History.com

বর্তমান সময়ে অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান নামিদামি চশমা তৈরি করছে। অথচ শত শত বছর পূর্বেই এর ধারণা দিয়ে গেছেন তুষারপাতের সঙ্গে লড়াই করে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা আদিবাসীরা। পশুর হাড়, চামড়া দিয়ে সুরক্ষা চশমা তৈরি করেই থেমে থাকেনি আদিবাসীদের উদ্ভাবনী কার্যক্রম। একে সংরক্ষণের জন্য কাঠের মজবুত বাক্সও তৈরি করেছিলেন তারা। বর্তমান সময়ে তৈরি চশমা এবং সংরক্ষণ বাক্সগুলো আদিবাসী আমেরিকানদের তৈরি চশমা ও বাক্সের সঙ্গে অনেকাংশেই মিলে যায়।

নানাবিধ ব্যথা উপশমের ঔষধ

প্রাকৃতিক গাছগাছালি দ্বারা ঔষধ তৈরি এবং এই সম্পর্কিত চিকিৎসা পদ্ধতি বহুকাল আগে থেকেই চলে আসছে। আদিবাসীদের মধ্যেও বংশ পরম্পরায় এসবের ব্যবহার বৃদ্ধি পেত। তবে অভ্যন্তরীণ ব্যথা নিরাময় এবং ভাঙা অংশের চিকিৎসার জন্য প্রথম ভেষজ ঔষধ আবিষ্কার করেন ভার্জিনিয়ার আদিবাসীরা। জিমসন বা ধুতুরা গাছকে তারা চিকিৎসার কাজে বেশি ব্যবহার করতেন। ধুতুরার পাতা ব্যথা উপশমে, শেকড়বাকড় ভাঙা হাড় জোড়া লাগানোর জন্য বাহ্যিকভাবে ব্যবহার করা হতো।

ধুতুরা গাছ; Image Source: History.com

এছাড়াও নানারকম চা জাতীয় উদ্ভিদ ব্যবহার করতেন আদিবাসীরা। ডি গেনারোর দেওয়া তথ্যমতে, ব্ল্যাক উইলো নামক চা ব্যথা উপশমে কাজে ব্যবহার হয়। এটি রাসায়নিক স্যালিসিন বহন করে। যখন স্যালিসিন মানবদেহে প্রবেশ করে, তখন এটি স্যালিসাইলিক এসিড উৎপন্ন করে, অতঃপর সাময়িক সময়ের জন্য ব্যথা কমিয়ে দেয়। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় বহুল ব্যবহৃত ট্যাবলেটের সঙ্গে এর কার্যক্রম অনেকাংশে মিলে যায়।

দড়ির ঝুলন্ত সেতু

পাহাড়ি অঞ্চলে প্রাচীনকাল থেকেই ঝুলন্ত সেতু ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়। ইতিহাসবিদদের মতে সর্বপ্রথম ঝুলন্ত সেতু তৈরি করেন চীনারা। প্রাচীন হান রাজবংশের শাসনামলে কাঠের তৈরি ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ করেছিলেন তারা। বর্তমানে সময়ে পৃথিবীর কয়েকটি দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতুর অবস্থান চীনে। যদিও এখনকার ব্রিজগুলো কংক্রিটের তৈরি।

ঝুলন্ত সেতু; Image Source: History.com

চীনাদের মতো পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে অন্য আরেক ধরণের ঝুলন্ত সেতু তৈরি করেছিলেন আমেরিকান আদিবাসীরা। ইনকা সভ্যতার লোকেরা গাছের লতাগুল্ম, আঁশযুক্ত শাকসবজি এবং গাছের বাকল দিয়ে তৈরি করতেন এসব সেতু।

কোনো কোনো গবেষকের মতে, আদিবাসীদের তৈরি ঝুলন্ত সেতুগুলো আধুনিক যুগে ইউরোপে নির্মিত বড় বড় সেতুগুলোর থেকেও দীর্ঘ ছিলো। বড় পাহাড় এবং গিরিখাতের মাঝে নির্মাণ করা হতো এসব সেতু। পৃথিবীতে এখন অবধি টিকে থাকা ঘাসের দড়ির তৈরি একমাত্র ঝুলন্ত সেতুটির অবস্থান পেরুর ক্যানাস প্রদেশে।

মাউথওয়াশ এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

প্রাচীন জনগোষ্ঠী এবং তাদের জীবনযাপন সম্পর্কে পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বেশিরভাগ মানুষই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে উদাসীন ছিলেন। কারণ এসবের থেকেও শিকার করা কিংবা খাবার খুঁজতে বেশি সময় ব্যয় হতো তাদের। তবে গবেষকদের দাবি, দাঁতের মাড়ির ব্যথা উপশমে কয়েকটি নির্দিষ্ট ফুল এবং পাতার রস পানিতে মিশিয়ে মুখ ধুতেন উত্তর আমেরিকার আদিবাসীরা।

আদিবাসী মা এবং শিশু; Image Source: Daily Mail

এছাড়াও জন্মনিয়ন্ত্রণ এবং গর্ভবতী মায়েদের চিকিৎসার জন্য ভেষজ চিকিৎসা পদ্ধতিও আবিষ্কার করেন আদিবাসীরা। কলম্বিয়া পুকোন নামক গাছের বীজ থেকে তারা জন্মনিরোধক বড়ি তৈরি করতেন। কিছুকাল আগেও ভাবা হতো, আধুনিক যুগের চিকিৎসকরাই সর্বপ্রথম জন্মনিয়ন্ত্রক বড়ি আবিষ্কার করেছেন। কিন্তু এই ধারণাটিকে সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করেছেন কয়েকজন গবেষক।

সমতল ভূমিতে চাষাবাদ পদ্ধতি

ফসল উৎপাদনের ইতিহাস হাজার বছরের পুরনো। তবে প্রাচীনকালে পাহাড়ি ভূমিতেই ফসল উৎপাদন হতো। বেশিরভাগ সময় প্রকৃতির দয়ার ওপরেই বেঁচে থাকতেন উপজাতিরা। পরবর্তীতে পাহাড়ের ঢালে চাষাবাদ করে ফসল উৎপাদনের প্রচলন শুরু হয়। কিন্তু একসময় পাহাড়ি ভূমিতে উৎপাদিত ফসল দিয়ে নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে পারতেন না আদিবাসীরা। কারণ প্রতিনিয়তই জনসংখ্যা বেড়ে চলছিল।

সমতল ভূমিতে চাষাবাদ; Image Source: History.com

অতঃপর ইন্ডিয়ান উপজাতিরা সমতল ভূমিতে চাষযোগ্য জমি প্রস্তুত করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। অতীতে কখনও চাষাবাদ হয়নি এমন জায়গায় চাষযোগ্য জমি তৈরি করেন তারা। মূলত সেসব জমিতে শাকসবজির চাষ হতো। এতে করে পাহাড়ি অঞ্চল ছেড়ে আদিবাসীরা সমতল ভূমির দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। গবেষকদের মতে আধুনিক চাষাবাদ ব্যবস্থা অনেকাংশে আদিবাসী আমেরিকানদের থেকে অনুকরণ করা।

দোলনা

কথিত আছে, ক্রিস্টোফার কলম্বাস ক্যারিবিয়ান উপকূলে পৌঁছানোর পর সর্বপ্রথম দোলনা দেখতে পান। দুটো গাছের সঙ্গে লতাগুল্ম দিয়ে ঝুলন্ত সেসব দোলনায় মানুষ আরাম-আয়েশ করার পাশাপাশি ঘুমাতেও পারতো। কলম্বাসের বরাত দিয়ে জানা যায়, তিনি এমন দোলনা আমেরিকান উপকূলীয় অঞ্চলেও দেখেছিলেন।

দোলনা; Image Source: History.com

পরবর্তীতে ইউরোপিয়ান নাবিকেরা আদিবাসীদের কাছ থেকে দোলনা তৈরির কৌশল শিখে ইউরোপে এর প্রচলন ঘটায়। এছাড়াও নাবিকরা সমুদ্রযাত্রায় আরাম-আয়েশের জন্য জাহাজে দোলনা স্থাপন করতেন। কলম্বাসের চিঠি অনুসারে, বর্তমানে যেসব দোলনা পাওয়া যায়, সেগুলোর সঙ্গে আদিবাসীদের দোলনাগুলোর ব্যাপক মিল রয়েছে।

ইতিহাসের চমৎকার, জানা-অজানা সব বিষয় নিয়ে আমাদের সাথে লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কে: https://roar.media/contribute/

This Bengali article is about Native Americans Inventions. Some of their historic invention still using at our modern world. Most of them getting change day by day but their importance also growing.

Necessary references have been hyperlinked inside.

Featured Image Source: Daily Mail

Related Articles

Exit mobile version