ইতিহাসের পাতা উল্টালে গণহত্যার যেসব দৃষ্টান্ত দেখতে পাওয়া যায়, জার্মান নাৎসি বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত হলোকাস্ট এর নৃশংসতম উদাহরণ। বিভিন্ন ধাপে সংগঠিত এই গণহত্যা কার্যক্রমের একটি ধাপ ছিল “অ্যাকশন টি-ফোর”। হলোকাস্টের কিছুকাল আগ থেকে শুরু করে, হলোকাস্ট চলাকালীন এই গণহত্যা কার্যক্রমের প্রধান শিকার ছিল শারীরিক এবং মানসিক প্রতিবন্ধীরা।
শারীরিকভাবে অক্ষম নবজাতক এবং শিশুরা, যারা পৃথিবী এবং দেশের কোনো কাজেই আসে না বলে মনে করা হতো, তাদেরকে সমাজ থেকে নির্মূল করার জন্য পরিচালিত, ইউথেনেসিয়া কার্যক্রম থেকেই মূলত এই গণহত্যার সূত্রপাত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জনশ্রুতি নেই বললেই চলে, কারণ সর্বাঙ্গিন এবং সক্ষম জাতি গঠনের উদ্দেশ্যে এই চুড়ান্ত হত্যা মহড়ার (হলোকাস্টের মহড়া) কোনো আনুষ্ঠানিক নাম ছিলো না। এই নীরব হত্যাকাণ্ড সংঘটনের প্রধান সদর দফতরের ঠিকানা: ৪ টিয়ারগার্টেনট্রাসা, বার্লিনের নামানুসারেই এই গণহত্যা কার্যক্রমের নামকরণ করা হয় অ্যাকশন টি-ফোর।
অ্যাকশন টি-ফোরের মূল ভিত্তি এবং প্রেক্ষাপট
অ্যাকশন টি-ফোরের মতাদর্শিক ভাবনা নাৎসি বাহিনীর মধ্যে অনেক আগে থেকেই ছিলো। এমনকি হিটলার তার আত্মজৈবনিক বইতে (দ্য মেইন ক্যাম্প) অনেকটা একই রকম নাৎসি ধারণার উদাহরণ দেন। তিনি তার বইতে লিখেছিলেন, “আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যবান শিশু জন্মদান নিশ্চিত করতে হবে।” নাৎসিরা বিশ্বাস করতো, এই পদ্ধতি অনুসরণ করে, বেসামরিক ক্ষেত্রে সেবা দান এবং কর্মসংস্থানের জন্য উপযুক্ত একটি সুস্থ সবল জার্মান জাতি গঠন করা যাবে। এমনকি নাৎসি বাহিনী ১৯৩৩ সালে ক্ষমতায় যাবার পর আইন প্রণয়নের মাধ্যমে শারীরিক এবং মানসিকভাবে অক্ষমদের নির্বীজন (Sterilization) বাধ্যতামূলক করেছিলো। নির্বীজন প্রক্রিয়ায় যাদেরকে পাঠানো হতো তাদের বেশিরভাগই ছিল ‘ভুয়া রোগনির্ণয়’ কার্যক্রমের শিকার।
এই নির্বীজন প্রক্রিয়ায় জার্মানরা অনেকটা গায়ের জোরেই সর্বোপরি ৪ লক্ষ শারীরিকভাবে অক্ষম লোককে হত্যা করেছিল। আর ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার পর এই নির্দোষ শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীদেরকে হত্যা করার জন্য নাৎসিদের নীল নকশা আরো প্রকট হয়ে ওঠে।
প্রাথমিক পরীক্ষামূলক নির্বীজন বা হত্যা
১৯৩৯ এর শুরু দিকে জার্মান নাৎসি পার্টি চ্যান্সেলর অফিসে অদ্ভুত একটি চিঠি আসে। নাৎসি ধ্যানধারণায় বিশ্বাসী রিচার্ড ক্রেশমারের লেখা এই চিঠিতে তিনি নিজের প্রতিবন্ধী সন্তান গেরহার্ডকে বৈধ উপায়ে নির্বীজন প্রক্রিয়ায় মেরে ফেলার কথা জানিয়ে হিটলারের অনুমতি চেয়েছিলেন। এই চিঠি লেখার কয়েকমাস আগে গেরহার্ড শারীরিক এবং মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। হিটলারের কাছে লেখা চিঠিতে ক্রেশমার নিজ সন্তানকে দৈত্য হিসেবে চিহ্নিত করে নিজ সন্তানকে বৈধ উপায়ে মৃত্যু দান করার অনুমতি চেয়েছিলেন। চিঠি পাবার পর হিটলার তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক কার্ল ব্র্যান্ডটকে ঘটনার তদন্তের জন্য পাঠিয়েছিলেন। সরেজমিনে গেরহার্ডের রোগ নির্ণয় করে কার্ল জানান, ”এই নির্বোধের বাঁচার বা শারীরিক উন্নতির কোনো আশা নেই।” এরপর ১৯৩৯ সালের ২৫ জুলাই, গেরহার্ডকে মারাত্মক ইনজেকশন প্রদান করে হত্যা করা হয়। এভাবেই গণহত্যার ইতিহাসের নিকৃষ্টতম দৃষ্টান্ত হলোকাস্টের প্রাথমিক ধাপ- অ্যাকশন টি-ফোরের জন্ম হয়। ময়নাতদন্তে গেরহার্ডের মৃত্যুকে হৃদযন্ত্রের দুর্বলতার ফলাফল হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এরপর হিটলার এবং নাৎসি বাহিনী শারীরিক এবং মানসিক প্রতিবন্ধীদের হত্যা করার পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন।
মূল অ্যাকশন টি-ফোর কার্যক্রমের জন্ম
ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ লরেন্স রিস এবং ইয়ান কারশ অ্যাকশন টি-ফোরের কার্যক্রমকে হিটলার সরকারের নৈরাজ্যবাদী প্রবৃত্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলেই আখ্যায়িত করেন। তৎকালীন সময়ে হিটলার তার কোনো পরিকল্পনা বা ইচ্ছার কথা তার অধীনস্থদের সামনে প্রকাশ করতে দেরি হতো, সেই প্রেক্ষিতে পূর্ণাঙ্গ কৌশল এবং পরিকল্পনা তৈরি করতে তার অনুসারীরা দেরি করতো না। অ্যাকশন টি-ফোর কার্যক্রমের দ্রুত সম্প্রসারণ তারই উদাহরণ। গেরহার্ড ক্রেশমারের হত্যাকাণ্ডের তিন সপ্তাহের মাথায়, পুরো জার্মানির সব ডাক্তার এবং ধাত্রীদেরকে কাগজে কলমে নির্দেশনা দানের মাধ্যমে পুরো দেশ জুড়ে এই বিশাল আমলাতান্ত্রিক পরিকল্পনা ছড়িয়ে পড়ে। জন্মগত এবং বংশগত রোগীদের তালিকা তৈরি করার জন্য হিটলার রাই কমিটিকে অনুমোদন দান করে। প্রতিবন্ধী শিশু নিবন্ধনের এই কার্যক্রমের নেতৃত্বে ছিলেন ভিক্টর ব্র্যাক, কার্ল ব্রান্ডট এবং ফিলিপ বোহলার। তারপর এই তিন ব্যক্তির হাত ধরেই অ্যাকশন টি-ফোর কার্যক্রমের মারাত্মক পদ্ধতি জন্ম নেয়।
প্রতিটি শিশুর জন্মক্ষণে, একজন সরকারী কর্মকর্তা শিশুর শারীরিক বা অন্যান্য সমস্যা নির্ণয় করে একটি ফর্ম পূরণ করতেন। এরপর তিনজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ফর্মটি পর্যালোচনা করে তাদের সিদ্ধান্ত জানাতেন। তারা যদি মনে করতেন শিশুটিকে হত্যা করা উচিৎ, তাহলে তারা নিজেরা শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করেই ফর্মে একটি ক্রস চিহ্ন এঁকে দিতেন। একটি শিশুকে হত্যা করার জন্য ফর্মের তিনটি ঘরের মধ্যে দুটি ক্রসই যথেষ্ট বলে মনে করা হতো। রাই কমিটি কর্তৃক রাতারাতি এমন ব্যাপক একটি হত্যাকাণ্ড পরিচালনার পরিকল্পনা তৈরিই বলে দেয় যে, হত্যাকাণ্ড শুরু করার জন্য এমন একটি কৌশল আগে থেকেই তাদের বিবেচনায় ছিল।
হত্যা পদ্ধতি
গেরহার্ডের নির্বীজন বা হত্যা অ্যাকশন টি-ফোরের অংশ হিসেবে সংঘটিত হোক বা না হোক, কিন্তু এরপর থেকেই নাৎসিরা হত্যাকাণ্ডের এত বৃহৎ একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে, যা বিশ্ববাসী আগে কখনো দেখেনি-শোনেনি। ১৯৩৯ এর গ্রীষ্মকাল শেষ হবার আগেই, শত শত নবজাতক ও ছোট শিশুকে বাসা এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সরিয়ে ছয়টি এসাইলাম সাইটে নিয়ে যাওয়া হয়। জায়গাগুলো ছিল কার্যত আশ্রয় শিবির। তাই শিশুদেরকে স্থানান্তরিত করতে নাৎসিদের তেমন কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি।একবার সেখানে স্থানান্তরিত হবার পর, শিশুদেরকে লুমিনাল বা মরফিনের মারাত্মক বিষাক্ত ডোজ দেয়া হতো। কখনো কখনো হত্যা পদ্ধতিতে আরো বেশি বর্বরতা অনুসরণ করা হতো।
অ্যাকশন টি-ফোরে নিয়োজিত একজন ডাক্তার হারমান ফ্যানমুলার শিশুদেরকে অনাহারে রেখে ধীরে ধীরে মেরে ফেলার একটি বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করতেন। তার মতে, মারাত্মক ইনজেকশন দিয়ে বিষক্রিয়ায় হত্যা করার চাইতে এটি অনেক বেশি শান্তিপূর্ণ হত্যা পদ্ধতি।
প্রথমদিকে কেবলমাত্র প্রতিবন্ধী শিশুরা অ্যাকশন টি-ফোরের শিকার হলেও পরবর্তীতে বয়স্ক প্রতিবন্ধীদেরকেও এই গণহত্যার আওতাধীন করা হয়েছিল। হত্যাযজ্ঞের পরিধি বৃদ্ধির সাথে সাথে হত্যা প্রক্রিয়ারও উন্নতি সাধন করা হয়েছিল।
অবশেষে নাৎসি বাহিনীর শিকার প্রতিবন্ধীদেরকে ‘বিশেষ চিকিৎসা’ প্রদানের নাম করে গণহত্যা সেন্টারে পাঠানো হতো। সেখানে তাদেরকে কার্বন মনোক্সাইড চেম্বারে বিষাক্ত ঝর্ণাধারার মধ্যে রেখে গোসল করানো হতো। ’গোসল এবং মৃত্যু’ কৌশল প্রণয়নের মূল হোতা ফিলিপ বউলেলার। উচ্চপদস্থ নাৎসিদের কাছে এই পদ্ধতি প্রশংসিত হয় এবং হলোকাস্টের সময় এই পদ্ধতিটি আরো ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল।
অ্যাকশন টি-ফোর গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ
ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সাথে জার্মান নাৎসিদের সবসময়েই কিছুটা বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। এটা বললে ভুল হবে যে, তারা সবসময় সকল খারাপ কাজের বিরুদ্ধে ছিল। কিন্তু নাৎসিদের একনায়কতন্ত্রের বিপক্ষে ক্যাথলিকরা একটি পৃথক এবং স্বাধীন ক্ষমতা নিয়ে দাঁড়িয়েছিল।
এর আগে জার্মান শিশুদের পড়াশোনা এবং শিক্ষাদানের কাজ ক্যথলিক চার্চগুলোর অধীনে ছিল। ধরা হয়, ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত ছিল। অথবা ১৯৪০ সালে অ্যাকশন টি-ফোরের গোপনীয়তা ফাঁস হয়ে যাওয়ার আগপর্যন্ত শিক্ষাদানের এই প্রথা চালু ছিল। যতই গোপনীয়তা অবলম্বন করা হোক না কেন, এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়াটাই ছিল অনিবার্য। যেসব প্রতিবন্ধী শিশু বা প্রাপ্তবয়স্কদের হত্যা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হতো তাদের সকলের পরিবারের অভিজ্ঞতা ছিল একই রকম। এসব পরিবারকে বলা হয়েছিল, তাদের অসুস্থ সন্তানদেরকে রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহার করার জন্য দাতব্য সেবা এবং চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলা হবে।
প্রিয়জনের অপেক্ষায় থাকা এসব পরিবারের কাছে কোনো চিঠি আসতো না, তথাকথিত আশ্রমে যাওয়া তাদের প্রিয়জনদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। স্বজনহারা একটি পরিবার আরেকটি স্বজনহারা পরিবারের কাছ থেকে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি শুনে এবং ছয়টি গণহত্যা কেন্দ্র থেকে একই রকম প্রতিক্রিয়া পাওয়ার পর, তারা দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে বুঝতে পেরেছিল, তাদের অক্ষম স্বজনদের ভাগ্যে একই পরিণতি ঘটতে যাচ্ছে।
এসব বুঝতে পারার পর, ক্যাথলিক চার্চ থেকে সবার আগে অ্যাকশন টি-ফোরের প্রতিরোধ সংঘটিত করেছিল। সচেতনতা বৃদ্ধি, বক্তৃতা প্রদান এমনকি লিফলেট বিতরণ করে, নাৎসি বাহিনীর এই হত্যাযজ্ঞ জার্মানদের দৃষ্টিগোচর করতে এবং এর প্রতিরোধে অংশগ্রহণ করতে উবুদ্ধ করেছিল।
বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলো অ্যাকশন টি-ফোরের বিরুদ্ধে আরো জোরেশোরে লেগেছিল। আমেরিকান সাংবাদিক উইলিয়াম এল সিরার ‘দ্য বার্লিন ডায়েরি’ বইতে উল্লেখ করেন, “আমি যে নাৎসিদের এই বর্বরতার ব্যাপারে অবগত ছিলাম, এই নিয়ে একটা শব্দ করলে আমাকে তারা মেরে ফেলতো।” বইটি প্রকাশিত হবার পর অন্যান্য বিদেশি সাংবাদিকরা নাৎসিদের এই হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে অবগত হয়েছিল। তারা তাদের পক্ষে যতদূর করা সম্ভব সেটুকু করেছিলেন, কিন্তু যুদ্ধকালীন গোপনীয়তার কারণে এই গণহত্যা সম্পর্কে মানুষজন খুব একটা অবগত ছিল না।
অ্যাকশন টি-ফোরের সমাপ্তি এবং হলোকাস্টের শুরু
একের পর এক বাঁধা, ক্যাথলিক ক্ষমতাবানদের প্রতিরোধ এবং বিদেশী সাংবাদিকদের বিরোধীতার মুখে ১৯৪১ সালের আগস্ট মাসে হিটলার অ্যাকশন টি-ফোর এর সকল কার্যক্রম তুলে নিতে সম্মতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এর আগেই এই গণহত্যায় প্রাণ হারায় প্রায় ৩ লক্ষ প্রতিবন্ধী মানুষ, যাদের প্রায় সকলেই ছিল অস্ট্রিয়ান বা জার্মান এবং এদের অর্ধেকই ছিল শিশু। অ্যাকশন টি-ফোরের সমাপ্তি ঘোষণা করা হলেও পরবর্তীতে এই হত্যা পদ্ধতিকে তথা গণহত্যা কার্যক্রমটিকে, গণহত্যার চূড়ান্ত ধাপ হলোকাস্টের জন্মলগ্নেই এর অন্তর্ভুক্ত করে ফেলে নাৎসিরা। ফলে প্রকৃতপক্ষে কতজন শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিবন্ধীকে এই কার্যক্রমের অধীনে হত্যা করা হয়েছিল তার সঠিক অংক ধারণা করা যায় না। অ্যাকশন টি-ফোর এর মতাদর্শ, কৌশল, যন্ত্রপাতি এবং কর্মীরা হলোকাস্টের কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পের জন্য অধিক যুতসই হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় তাদেরকে হলোকাস্টের কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পে বদলি করে দেয়া হয়েছিল। পুরো কার্যক্রমটিকে হলোকাস্টের অন্তর্ভুক্ত করে ফেলার ফলস্বরূপ অ্যাকশন টি-ফোর কার্যক্রমে অংশ নেয়া হাতেগোনা কয়েকজন নাৎসি সদস্য ছাড়া বাকিদের কোনো বিচার হয়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ডাক্তার ফিলিপ বোহলারকে আটক করার পর তিনি আত্মহত্যা করেন। অন্যদিকে, ১৯৪৬-৪৭ সালে এই হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার জন্য ডাক্তার ব্র্যান্ডট সহ কয়েকজন তথাকথিত ডাক্তারকে বিচারের আওতায় এনে মৃত্যুদণ্ড দান করে ইন্টারন্যাশনাল মিলিটারি ট্রাইবুনাল।
অবশেষে ১৯৫১ সালে ৪৪০টি হত্যার দায়ে ডাক্তার ফ্যানমুলারকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে। পরবর্তীতে তিনি আপিলের মাধ্যমে সফলভাবে সাজা কমিয়ে চার বছরে নিয়ে আসেন। ১৯৫৫ সালে সাজামুক্তির ছয় বছর পর মিউনিখে নিজ বাড়িতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বার্লিনের যে স্থানে অ্যাকশন টি ফোর কার্যক্রমের সদরদপ্তর অবস্থিত ছিল এবং নাৎসিরা গণহত্যা চালিয়েছিল, সেখানে এখন মৃতদের স্মরণে একটি স্মারকস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।
Feature Image: Wikimedia Commons